জীববিজ্ঞানের কিছু ধারণা (Concepts of Biology)
জীববিজ্ঞানকে ইংরেজিতে Biology বলে। এটি গঠিত হয়েছে গ্রিক bios (জীবন) এবং logos (জ্ঞান) শব্দ দুটির সংযোগের মাধ্যমে।
ভৌত জীববিজ্ঞান (Physical Biology)
ভৌত জীববিজ্ঞান শাখায় তত্ত্বীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়ে থাকে। এতে সাধারণত নিচে উল্লিখিত বিষয়গুলো আলোচনা করা হয়:
(a) অঙ্গসংস্থান (Morphology): জীবের সার্বিক অঙ্গসংস্থানিক বা দৈহিক গঠন বর্ণনা এ শাখার আলোচ্য বিষয়। দেহের বাহ্যিক বর্ণনার বিষয়কে বহিঃঅঙ্গসংস্থান (External Morphology) এবং দেহের অভ্যন্তরীণ বর্ণনার বিষয়কে অন্তঃঅঙ্গসংস্থান (Internal Morphology) বলা হয়।
(b) শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা বা ট্যাক্সোনমি (Taxonomy): জীবের শ্রেণিবিন্যাস এবং তার রীতিনীতিগুলো এ শাখার আলোচিত বিষয়।
(c) শারীরবিদ্যা (Physiology): জীবদেহের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গের জৈব-রাসায়নিক কার্যাদি, যেমন: শ্বসন, রেচন, সালোকসংশ্লেষণ ইত্যাদি বিষয় এ শাখায় আলোচিত হয়।
(d) হিস্টোলজি (Histology): জীবদেহের টিস্যুসমূহের গঠন, বিন্যাস এবং কার্যাবলি এ শাখায় আলোচনা করা হয়।
(e) ভ্ৰূণবিদ্যা (Embryology): জনন কোষের উৎপত্তি, নিষিক্ত জাইগোট থেকে ভ্রূণের সৃষ্টি, গঠন, পরিস্ফুটন, বিকাশ প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা এ শাখার প্রধান বিষয়।
(f) কোষবিদ্যা (Cytology): জীবদেহের কোষের গঠন, কার্যাবলি ও বিভাজন সম্পর্কে যাবতীয় আলোচনা এ শাখার বিষয়।
(g) বংশগতিবিদ্যা বা জেনেটিক্স (Genetics): জিন ও জীবের বংশগতিধারা সম্পর্কে এ শাখায় আলোচনা করা হয়।
(h) বিবর্তনবিদ্যা (Evolution): পৃথিবীতে প্রাণের বিকাশ, জীবের বিবর্তন এবং ক্রমবিকাশের তথ্যসমূহের আলোচনা এ শাখার বিষয়।
(i) বাহুবিদ্যা (Ecology): এ শাখায় প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে জীবের আন্তঃসম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করা হয়।
(j) এন্ডোক্রাইনোলজি (Endocrinology): জীবদেহে হরমোনের (hormone) কার্যকারিতা বিষয়ক আলোচনা এ শাখার বিষয়।
(k) জীবভূগোল (Biogeography): এ শাখায় পৃথিবীর বিভিন্ন ভৌগোলিক সীমারেখায় জীবের বিস্তৃতি এবং অভিযোজন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
ফলিত জীববিজ্ঞান (Applied Biology)
এ শাখায় রয়েছে জীবন-সংশ্লিষ্ট প্রায়োগিক বিষয়গুলো। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য শাখার কথা নিচে উল্লেখ করা হলো:
(a) জীবাশ্মবিজ্ঞান (Palaeontology): প্রাগৈতিহাসিক জীবের বিবরণ এবং জীবাশ্ম সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(b) জীবপরিসংখ্যানবিদ্যা (Biostatistics): জীবপরিসংখ্যান-বিষয়ক বিজ্ঞান।
(c) পরজীবীবিদ্যা (Parasitology): পরজীবিতা, পরজীবী জীবের জীবনপ্রণালি এবং রোগ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(d) মৎস্যবিজ্ঞান (Fisheries): মাছ, মাছ উৎপাদন, মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(e) কীটতত্ত্ব (Entomology): কীটপতঙ্গের জীবন, উপকারিতা, অপকারিতা, ক্ষয়ক্ষতি, দমন ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(f) অণুজীববিজ্ঞান (Microbiology): ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, আণুবীক্ষণিক ছত্রাক এবং অন্যান্য অণুজীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(g) কৃষিবিজ্ঞান (Agriculture): কৃষিবিষয়ক বিজ্ঞান।
(h) চিকিৎসাবিজ্ঞান (Medical Science): মানবদেহ, রোগ, চিকিৎসা ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(i) জিনপ্রযুক্তি (Genetic Engineering): জিনপ্রযুক্তি ও এর ব্যবহার সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(j) প্রাণরসায়ন (Biochemistry): জীবের প্রাণরাসায়নিক কার্যপ্রণালি, রোগ ইত্যাদি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(k) পরিবেশবিজ্ঞান (Environmental Science): পরিবেশ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(I) সামুদ্রিক জীববিজ্ঞান (Marine Biology): সামুদ্রিক জীব সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(m) বনবিজ্ঞান (Forestry): বন, বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(n) জীবপ্রযুক্তি (Biotechnology): মানব এবং পরিবেশের কল্যাণে জীব ব্যবহারের প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিজ্ঞান।
(o) ফার্মেসি (Pharmacy): ঔষধশিল্প ও প্রযুক্তিবিষয়ক বিজ্ঞান।
(p) বন্য প্রাণিবিদ্যা (wildlife): বন্যপ্রাণী বিষয়ক বিজ্ঞান।
(q) বায়োইনফরমেটিকস্ (Bioinformatics): কম্পিউটার প্রযুক্তিনির্ভর জীববিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য, যেমন: ক্যান্সার বিশ্লেষণ বিষয়ক বিজ্ঞান।
জীববিজ্ঞানের স্বতন্ত্র শাখা গড়ে উঠেছে, যার নাম ট্যাক্সোনমি বা শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা। শ্রেণিবিন্যাসের লক্ষ্য মূলত একটাই। তা হচ্ছে এই বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় জীবজগৎকে সহজভাবে অল্প পরিশ্রমে এবং অল্প সময়ে সঠিকভাবে জানা।
জীবজগৎ (The Living World)
ক্যারোলাস লিনিয়াসের সময়কাল থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত জীবজগৎকে উদ্ভিদজগৎ ও প্রাণিজগৎ হিসেবে বিবেচনা করে দু’টি রাজ্যে (Kingdom) শ্রেণিবিন্যাস করা হতো। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় বর্তমানে কোষের DNA এবং RNA-এর প্রকারভেদ, জীবদেহে কোষের বৈশিষ্ট্য, কোষের সংখ্যা ও খাদ্যাভ্যাসের তথ্য-উপাত্তের উপর ভিত্তি করে আর. এইচ. হুইটেকার (R. H. Whittaker) 1969 সালে জীবজগৎকে পাঁচটি রাজ্য বা ফাইভ কিংডমে (Five Kingdom) ভাগ করার প্রস্তাব করেন। পরবর্তীকালে মারগুলিস (Margulis) 1974 সালে Whittaker-এর শ্রেণিবিন্যাসের (classification) পরিবর্তি ও বিস্তারিত রূপ দেন। তিনি সমস্ত জীবজগৎকে দুটি সুপার কিংডমে ভাগ করেন এবং পাঁচটি রাজ্যকে এই দুটি সুপার কিংডমের আওতাভুক্ত করেন।
সুপার কিংডম 1 (Super Kingdom 1)প্রোক্যারিওটা (Prokaryotae) :
এরা আদিকোষ (নিউক্লিয়াস সুগঠিত নয়) বিশিষ্ট এককোষী, আণুবীক্ষণিক জীব।
(i) রাজ্য 1: মনেরা (Monera)
মনেরার বৈশিষ্ট্য (Properties):
- এরা এককোষী, ফিলামেন্টাস (একটির পর একটি কোষ লম্বালম্বিভাবে যুক্ত হয়ে ফিলামেন্ট গঠন করে), কলোনিয়াল।
- কোষে ক্রোমাটিন বস্তু থাকে কিন্তু নিউক্লিওলাস ও নিউক্লিয়ার পর্দা নেই।
- এদের কোষে প্লাস্টিড, মাইটোকন্ড্রিয়া, এন্ডোপ্লাজমিক জালিকা ইত্যাদি নেই
- রাইবোজোম আছে।
- কোষ বিভাজন দ্বিবিভাজন প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়।
- প্রধানত শোষণ পদ্ধতিতে খাদ্যগ্রহণ করে। তবে কেউ কেউ ফটোসিনথেসিস বা সালোকসংশ্লেষণ পদ্ধতিতে খাদ্য প্রস্তুত করে।
উদাহরণ: নীলাভ সবুজ শৈবাল, ব্যাকটেরিয়া।
সুপার কিংডম 2 (Super Kingdom 2) ইউক্যারিওটা (Eukaryota):
এরা প্রকৃত কোষ (নিউক্লিয়াস সুগঠিত) বিশিষ্ট এককোষী বা বহুকোষী জীব। এরা এককভাবে অথবা কলোনি আকারে দলবদ্ধভাবে বসবাস করে।
(i) রাজ্য 2: প্রোটিস্টা (Protista)
প্রোটিস্টার বৈশিষ্ট্য (Properties):
- এরা এককোষী বা বহুকোষী, একক বা কলোনিয়াল (দলবদ্ধ) বা ফিলামেন্টাস এবং সুগঠিত নিউক্লিয়াস বিশিষ্ট।
- কোষে ক্রোমাটিন বস্তু নিউক্লিয়ার পর্দা দ্বারা পরিবৃত্ত থাকে।
- ক্রোমাটিন বস্তুতে DNA, RNA ও প্রোটিন থাকে।
- কোষে সকল ধরনের অঙ্গাণু থাকে।
- খাদ্য গ্রহণ শোষণ বা ফটোসিনথেটিক পদ্ধতিতে ঘটে।
- মাইটোসিস কোষ বিভাজনের মাধ্যমে অযৌন প্রজনন ঘটে এবং কনজুগেশনের মাধ্যমে অর্থাৎ জৈবনিকভাবে ভিন্ন কিন্তু গঠনগতভাবে এক, এরূপ দুটি গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে যৌন প্রজনন ঘটে।
- কোনো ভ্রুণ গঠিত হয় না।
উদাহরণ: অ্যামিবা (Amoeba), প্যারামেসিয়াম, এককোষী ও বহুকোষী শৈবাল।
(ii) রাজ্য 3: ফানজাই বা ছত্রাক (Fungi)
ছত্রাকের বৈশিষ্ট্য (Properties):
- অধিকাংশই স্খলজ, মৃতজীবী বা পরজীবী।
- দেহ এককোষী অথবা মাইসেলিয়াম (সরু সুতার মতো অংশ) দিয়ে গঠিত।
- এগুলোর নিউক্লিয়াস সুগঠিত।
- কোষপ্রাচীর কাইটিন বস্তু দিয়ে গঠিত।
- খাদ্যগ্রহণ শোষণ পদ্ধতিতে ঘটে।
- ক্লোরোপ্লাস্ট অনুপস্থিত।
- হ্যাপ্লয়েড স্পোর দিয়ে বংশবৃদ্ধি ঘটে।
উদাহরণ: Penicillium, মাশরুম (Mushroom)।
(iii) রাজ্য 4: প্লানটি (Plantae)
বৈশিষ্ট্য (Properties):
- এরা প্রকৃত নিউক্লিয়াসযুক্ত সালোকসংশ্লেষণকারী উদ্ভিদ।
- এদের দেহে উন্নত টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান
- এদের ভ্রূণ সৃষ্টি হয় এবং তা থেকে ডিপ্লয়েড পর্যায় শুরু হয়।
- প্রধানত স্থলজ, তবে অসংখ্য জলজ প্রজাতি আছে।
- এদের যৌন জনন অ্যানাইসোগ্যামাস (anisogamous) অর্থাৎ আকার, আকৃতি অথবা শারীরবৃত্তীয় পার্থক্যবিশিষ্ট ভিন্নধর্মী দুটি গ্যামেটের মিলনের মাধ্যমে যৌন জনন সম্পন্ন হয়।
- এরা আর্কিগোনিয়েট অর্থাৎ আর্কিগোনিয়াম বা স্ত্রীজনন অঙ্গবিশিষ্ট উদ্ভিদ। এরা সপুষ্পক।
উদাহরণ: উন্নত সবুজ উদ্ভিদ।
প্লানটির বিভাগগুলো ছকের মাধ্যমে দেখানো হলো :
(iv) রাজ্য 5: অ্যানিমেলিয়া (Animalia)
বৈশিষ্ট্য (Properties):
- এরা নিউক্লিয়াসবিশিষ্ট ও বহুকোষী প্রাণী।
- এদের কোষে কোনো জড় কোষপ্রাচীর, প্লাস্টিড ও কোষগহ্বর নেই।
- প্লাস্টিড না থাকায় এরা হেটারোট্রোফিক অর্থাৎ পরভোজী এবং খাদ্য গলাধঃকরণ করে, দেহে জটিল টিস্যুতন্ত্র বিদ্যমান।
- এরা প্রধানত যৌন জননের মাধ্যমে বংশবৃদ্ধি করে।
- পরিণত ডিপ্লয়েড পুরুষ এবং স্ত্রী প্রাণীর জনানঙ্গ থেকে হ্যাপ্লয়েড গ্যামেট উৎপন্ন হয়।
- ভ্রূণ বিকাশকালীন সময়ে ভ্রুণীয় স্তর সৃষ্টি হয়।
উদাহরণ: প্রোটোজোয়া ব্যতীত সকল অমেরুদণ্ডী এবং মেরুদণ্ডী প্রাণী।
শ্রেণিবিন্যাসের বিভিন্ন ধাপ (Different stages of classification)
একটি জীবকে প্রজাতি পর্যায়ে বিন্যাসে মূলত আন্তর্জাতিক কোড চিহ্নিত সাতটি ধাপ আছে।
- রাজ্য (Kingdom)
- পর্ব (Phylum)/ বিভাগ (Division)
- শ্রেণি (Class)
- বর্গ (Order)
- গোত্র (Family)
- গণ (Genus)
- প্রজাতি (Species)
মানুষের (Homo sapiens) শ্রেণিবিন্যাস:
রাজ্য (Kingdom): Animalia; কারণ, সুকেন্দ্রিক কোষবিশিষ্ট, বহুকোষী, পরভোজী এবং জটিল টিস্যুতন্দ্র আছে।
পর্ব (Phylum): Chordata; কারণ, জীবনের কোনো এক পর্যায়ে নটোকর্ড থাকে।
শ্রেণি (Class): Mammalia; কারণ, বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ায় এবং লোম/চুল আছে।
বর্গ (Order): Primate; কারণ, আঁকড়ে ধরার উপযোগী হাত এবং ঘ্রাণ অপেক্ষা দৃষ্টিশক্তি বেশি উন্নত।
গোত্র (Family): Hominidae; কারণ, শিম্পাঞ্জি, গরিলা, বানর প্রভৃতির সাথে সাদৃশ্য আছে।
গণ (Genus): Homo; কারণ, দেহের অনুপাতে মস্তিষ্ক সবচেয়ে বড় এবং খাড়াভাবে দুই পায়ে হাঁটতে পারে।
প্রজাতি (Species): Homo sapiens; কারণ, চওড়া এবং খাড়া কপাল, খুলির হাড় Homo গণের অন্য প্রজাতির তুলনায় পাতলা এবং বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উন্নত।
দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতি (Binomial Nomenclature System)
একটি জীবের বৈজ্ঞানিক নাম দুটি অংশ বা পদ নিয়ে গঠিত হয়। প্রথম অংশটি তার গণের নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি তার প্রজাতির নাম। যেমন গোল আলুর বৈজ্ঞানিক নাম Solanum tuberosum। এখানে Solanum গণ নাম এবং tuberosum প্রজাতির নাম বুঝায়, এরূপ দুটি পদ নিয়ে গঠিত নামকে দ্বিপদ নাম এবং নামকরণের প্রক্রিয়াকে দ্বিপদ নামকরণ (binomial nomenclature) পদ্ধতি বলে।
আন্তর্জাতিকভাবে কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতি মেনে জীবের বৈজ্ঞানিক নাম নির্ধারণ করা হয়। উদ্ভিদের নাম International Code of Botanical Nomenclature (ICBN) কর্তৃক এবং প্রাণীর নাম International Code of Zoological Nomenclature (ICZN) কর্তৃক স্বীকৃত।
1753 সালে সুইডিশ বিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াস Species plantarum বইটি রচনা করেন। এর প্রকাশনার মাধ্যমে তিনি দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতির প্রবর্তন করেন এবং গণ ও প্রজাতির সংজ্ঞা দেন।
- নামকরণ ল্যাটিন ভাষায় কিংবা ল্যাটিন ভাষার মতো করে উপস্থাপন করতে হবে।
- বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশটি গণ নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতি নাম। যেমন: Labeo rohita। এটি রুই মাছের বৈজ্ঞানিক নাম, এখানে Labeo গণ এবং rohita প্রজাতিক পদ।
- জীবজগতের প্রতিটি বৈজ্ঞানিক নামকে অনন্য (unique) হতে হয়।
- বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষর হবে, বাকি অক্ষরগুলো ছোট অক্ষর হবে এবং দ্বিতীয় অংশটির নাম ছোট অক্ষর দিয়ে লিখতে হবে। যেমন- পিঁয়াজ Allium cepa, সিংহ Panthera leo ।
- বৈজ্ঞানিক নাম মুদ্রণের সময় সর্বদা ইটালিক অক্ষরে লিখতে হবে। যেমন; ধান Oryza sativa, কাতল মাছ Catla catla।
- হাতে লেখার সময় গণ ও প্রজাতিক নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে। যেমন: Oryza sativa, Catla catla।
- যদি কয়েকজন বিজ্ঞানী একই জীবকে বিভিন্ন নামকরণ করেন, তবে অগ্রাধিকার আইন অনুসারে প্রথম বিজ্ঞানী কর্তৃক প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে।
- যিনি প্রথম কোনো জীবের বিজ্ঞানসম্মত নাম দিবেন। তাঁর নাম প্রকাশের সালসহ উক্ত জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে সংক্ষেপে সংযোজন করতে হবে। যেমন: Homo sapiens. L.,1758; Oryza sativa L., 1753 (এখানে L লিনিয়াসের নামের সংক্ষিপ্ত রূপ, তবে দৈনন্দিন গবেষণা ও পাঠে এটুকু অনেক সময় লেখা হয় না)।
কয়েকটি জীবের দ্বিপদ নাম:
সাধারণ নাম | বৈজ্ঞানিক নাম (scientific names |
ধান | Oryza sativa |
পাট | Corchorus capsularis |
আম | Mangifera indica |
কাঁঠাল | Artocarpus heterophyllus |
শাপলা | Nymphaea nouchali |
জবা | Hibiscus rosa-sinensis |
কলেরা জীবাণু | Vibrio cholerae |
ম্যালেরিয়া জীবাণু | Plasmodium vivax |
আরশোলা | Periplaneta americana |
মৌমাছি | Apis indica |
ইলিশ | Tenualosa ilisha |
কুনো ব্যাঙ | Duttaphrynus melanostictus (Bufo melanostictus) |
দোয়েল | Copsychus saularis |
রয়েল বেঙ্গল টাইগার | Panthera tigris |
মানুষ | Homo sapiens |