রাসায়নিক বন্ধন এবং এর গঠন (Chemical Bonds)
রাসায়নিক বন্ধন (Chemical bonds)
যোজ্যতা ইলেকট্রন (Valence electron):
কোনো মৌলের সর্বশেষ প্রধান শক্তিস্তরের মোট ইলেকট্রন সংখ্যাকে সেই মৌলের যোজনী ইলেকট্রন বা যোজ্যতা ইলেকট্রন বলে। শেষ কক্ষপথকে যোজনী শেল বলা হয়।
- যোজনী ইলেকট্রন সংখ্যা হতে সহজেই কোনো মৌলের যোজনী বের করা যায়।
ব্যাখ্যা (Explanation):
পটাশিয়ামের ও অক্সিজেনের ইলেকট্রন বিন্যাসে সর্বশেষ কক্ষপথে যথাক্রমে 1টি ও 6টি করে ইলেকট্রন বিদ্যমান। সুতরাং, K এর যোজ্যতা ইলেকট্রন 1টি ও অক্সিজেনের (O) এর যোজ্যতা ইলেকট্রন 6টি।
Example-1 : Li, Na, O, F এর কোনটির যোজ্যতা ইলেকট্রন কত ?
Na_{11}\rightarrow 2, 8, 1\Rightarrow Na এর যোজ্যতা ইলেকট্রন 1টি
Li_{3}\rightarrow 2, 1\Rightarrow Li এর যোজ্যতা ইলেকট্রন 1টি
O_{8}\rightarrow 2, 6\Rightarrow O এর যোজ্যতা ইলেকট্রন 6টি
F_{9} \rightarrow 2, 7 \Rightarrow F এর যোজ্যতা ইলেকট্রন 7টি
সুতরাং, কোনো মৌলের সর্বশেষ কক্ষপথের ইলেকট্রন সংখ্যাই ঐ মৌলের যোজ্যতা ইলেকট্রন।
Example-2 :- মৌলের যোজ্যতা ইলেকট্রন
মৌল | ইলেকট্রন বিন্যাস | যোজ্যতা ইলেকট্রন | |||
K কক্ষ | L কক্ষ | M কক্ষ | N কক্ষ | ||
N (7) | 2 | 5 | 5 | ||
P (15) | 2 | 8 | 5 | 5 | |
Cl (17) | 2 | 8 | 7 | 7 | |
Ca (20) | 2 | 8 | 8 | 2 | 2 |
যোজনী এবং যোজ্যতা (Valence and Valency)
যোজনী (Valence):
কোনো ধাতব মৌলের সবচেয়ে বাইরের স্তরের ইলেকট্রন সংখ্যা এবং কোনো অধাতব মৌলের সবচেয়ে বাইরের স্তরের বিজোড় ইলেকট্রন সংখ্যাকে যোজনী বলে।
যোজ্যতা (Valency):
কোনো মৌলের সবচেয়ে বাইরের স্তরের সর্বমোট ইলেকট্রন সংখ্যাকে ঐ মৌলের যোজ্যতা বলে।
এখানে O এর সবচেয়ে বাইরের স্তরের মোট ইলেকট্রন সংখা 6, তাই এর যোজ্যতা 6 এবং O এর সবচেয়ে বাইরের স্তরের বিজোড় ইলেকট্রন সংখ্যা ২টি, তাই এর যোজনী 2 এবং অক্সিজেন একটি অধাতু।
ব্যাখ্যা (Explanation):
সাধারণত মৌলের যোজনী তার যোজ্যতা ইলেকট্রন সংখ্যার সমান হয়। অথবা, 8 হতে যোজ্যতা ইলেকট্রন সংখ্যা বাদ দিলে যে সংখ্যা থাকে তার সমান হয়। এর কারণ হচ্ছে যৌগ গঠন করার সময়ে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করতে যে কয়টি ইলেকট্রন বর্জন-গ্রহণ বা শেয়ার করে সেই সংখ্যা ঐ মৌলের যোজনী নির্দেশ করে।
সংজ্ঞা (Definition):
- কোনো মৌলের একটি পরমাণু যতগুলো ঐ পরমাণু বা H পরমাণু বা Cl পরমাণুর সাথে যুক্ত হতে পারে সেই সংখ্যাই হলো ঐ মৌলের যোজনী বা যোজ্যতা। এবং H পরমাণুর যোজনী সর্বদা 1 ধরা হয়।
- কোন পরমাণুর সাথে যতটি অক্সিজেন পরমাণু যুক্ত হয় তার সংখ্যার দ্বিগুণ করলে ঐ পরমাণুর যোজনী বা যোজ্যতা হয়। Note: H এর যোজনী সর্বদা 1 ধরা হয়।
Example:
1:- HCl অণুতে, একটি H পরমাণুর সাথে 1টি Cl পরমাণু যুক্ত হয়েছে তাই ক্লোরিনের যোজনী 1।
2:- H_2O অণুতে O এর একটি পরমাণু H এর 2 টি পরমাণুর সাথে যুক্ত হয়েছে তাই অক্সিজেনের যোজনী 2।
3:- CaO – ক্যালসিয়ামের (Ca) একটি পরমাণু একটি অক্সিজেন (O) পরমাণুর সাথে যুক্ত এবং O পরমাণুর সংখ্যা 1। এই সংখ্যাকে দ্বিগুণ করলে হয় 2। কাজেই Ca এর যোজনী 2।
4:- NaCl – একটি Na পরমাণু একটি Cl পরমাণুর সাথে যুক্ত। সুতরাং, Na এর যোজনী 1।
সুপ্ত যোজনী (Latent valency):
কোনো মৌলের একাধিক যোজনী থাকলে সেই মৌলের যোজনীকে পরিবর্তনশীল যোজনী বলে। যেমন: Fe এর পরিবর্তনশীল যোজনী 2 এবং 3।
কোনো মৌলের সর্বোচ্চ যোজনী ও সক্রিয় যোজনীর পার্থক্যকে ঐ মৌলের সুপ্ত যোজনী বলে।
যেমন : FeCl_2 যৌগে Fe এর সক্রিয় যোজনী 2 কিন্তু Fe এর সর্বোচ্চ যোজনী 3। অতএব FeCl_2 যৌগে Fe এর সুপ্তু যোজনী 3-2=1 ।
বিভিন্ন মৌলের যোজনী (Valence of different elements):
মৌল | যোজনী | মৌল | যোজনী | মৌল | যোজনী |
H | 1 | Na | 1 | Fe | 2, 3 |
F | 1 | K | 1 | Cu | 1, 2 |
Cl | 1 | Cl | 2.5 | Zn | 2 |
Br | 1 | Mg | 2 | ||
I | 1 | Al | 3 |
বিভিন্ন পরমাণুর যোজনী এবং যৌগ (Valency of different atoms with its compound):
ধাতব পরমাণু | যোজনী | যৌগ |
লিথিয়াম (Li) | 1 | LiCl |
সোডিয়াম (Na) | 1 | NaCl |
পটাসিয়াম (K) | 1 | KCl |
ক্যালসিয়াম (Ca) | 2 | CaCl_2 |
ম্যাগনেসিয়াম (Mg) | 2 | MgCl_2 |
অ্যালুমিনিয়াম (Al) | 3 | AlCl_3 |
জিংক (Zn) | 2 | ZnCl_2 |
আয়রন (Fe) | 2 | FeCl_2 |
3 | FeCl_3 | |
লেড (Pb) | 2 | PbCl_2 |
3 | PbCl_4 |
অধাতব পরমাণু | যোজনী | যৌগ |
ব্রোমিন (Br) | 1 | NaBr |
বোরন (B) | 3 | BCl3 |
অক্সিজেন (O) | 2 | H2O |
যৌগমূলক ও তাদের যোজনী (Radical and their valency):
সংজ্ঞা (Definition):
একাধিক মৌলের কতিপয় পরমাণু বা আয়ন পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে ধনাত্মক বা ঋণাত্মক আধানবিশিষ্ট একটি পরমাণুগুচ্ছ তৈরি করে এবং একটি মৌলের আয়নের ন্যায় আচরণ করে। এ ধরনের পরমাণুগুচ্ছকে যৌগমূলক বলে।
ব্যাখ্যা (Explanation):
যৌগমূলক ঋণাত্মক কিংবা ধনাত্মক আধানবিশিষ্ট হতে পারে। এদের আধান সংখ্যাই মূলত এদের যোজনী নির্দেশ করে।
Example:
NH_4^{+} এ একটি N পরমাণুর সাথে তিনটি H পরমাণু ও একটি H_{+} যুক্ত হয়ে অ্যামোনিয়াম (NH_4^{+}) আয়ন নামক যৌগমূলকের সৃষ্টি করে। এর আধান সংখ্যা +1। সুতরাং, এর যোজনী এক (1)।
বিভিন্ন যৌগমূলকের নাম, সংকেত, ও যোজনী (Name, Formula, Charge and Valence of Different types of Radical):
অধাতব পরমাণু | সংকেত | আধান | যোজনী |
অ্যামোনিয়াম | NH_4^{+} | +1 | 1 |
কার্বনেট | CO_3^{2-} | -2 | 2 |
হাইড্রোজেন কার্বনেট | HCO_3^{-} | -1 | 1 |
সালফেট | SO_4^{2-} | -2 | 2 |
হাইড্রোজেন সালফেট | HSO_4^{-} | -1 | 1 |
সালফাইট | SO_3^{2-} | -2 | 2 |
নাইট্রেট | NO_3^{-} | -1 | 1 |
ফসফেট | PO_4^{3-} | -3 | 3 |
রাসায়নিক বন্ধন ও রাসায়নিক বন্ধন গঠনের কারণ (The reason for the formation of chemical bonds and chemical bonds)
সংজ্ঞা (Definition): অণুতে পরমাণুসমূহ যে আকর্ষণের মাধ্যমে একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে তাকেই রাসায়নিক বন্ধন বলে।
রাসায়নিক বন্ধন গঠনের মূল কারণ (Main reason for the formation of chemical bonds): পরমাণুগুলো সর্বশেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রনগুলো নিষ্ক্রিয় গ্যাসের স্থিতিশীল ইলেকট্রন বিন্যাস (দ্বিত্ব বা অষ্টক) লাভের প্রবণতা।
যেমন: H_2 অণু গঠনকালে ২টি H পরমাণু ১টি করে ইলেকট্রন শেয়ার করে।
এভাবে ইলেকট্রন আদান-প্রদান বা শেয়ারের মাধ্যমে বন্ধন গঠিত হয়।
রাসায়নিক বন্ধন গঠনের প্রয়োজন তথ্য (Information needed to form chemical bonds):
- কোনো মৌলের শেষ শক্তিস্তরের ইলেকট্রন বন্ধন গঠনে অংশগ্রহণ করে।
- প্রতিটি পরমাণুরই লক্ষ্য থাকে তার নিকটবর্তী নিষ্ক্রিয় মৌলের ইলেকট্রন বিন্যাস লাভ করা।
- 1-17 পারমাণবিক সংখ্যাবিশিষ্ট মৌলসমূহ বন্ধন গঠনে খুব সহজেই দুই বা অষ্টক নিয়ম অনুসরণ করে।
আয়নিক বন্ধন বা তড়িৎযোজী বন্ধন (Ionic bonds)
সংজ্ঞা (Definition): ইলেকট্রন আদান প্রদানের মাধ্যমে গঠিত ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নসমূহ যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল দ্বারা যুক্ত থাকে তাকে আয়নিক বন্ধন বলে।
ব্যাখ্যা (Explanation): ধাতুগুলোর আয়নিকরণ শক্তির মান অনেক কম হওয়ায় এরা অতি সহজে সর্বশেষ শক্তিস্তরের এক বা একাধিক ইলেকট্রন ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়ন বা ক্যাটায়নে পরিণত হয় এবং অধাতুর আয়নীকরণ শক্তির মান বেশি হওয়ায় ইলেকট্রন গ্রহণ করে ঋণাত্মক আয়ন তথা অ্যানায়নে পরিণত হয়। এভাবে সৃষ্ট বিপরীত আধানবিশিষ্ট ক্যাটায়ন ও অ্যানায়নের মধ্যে স্থির বৈদ্যুতিক আকর্ষণ বল কাজ করে। আর এই বলের মাধ্যমে তারা একে অপরের সাথে যুক্ত থাকে। এটাই আয়নিক বন্ধন।
যেমন : MgO যৌগের আয়নিক বন্ধন –
MgO অণুতে Mg 2টি ইলেকট্রন ত্যাগ করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস Ne এর মতো ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে অর্থাৎ সর্বশেষ শক্তিস্তরে 4 টি ইলেকট্রন গঠন করে Mg^{2+} এ পরিণত হয়।
Mg\rightarrow Mg^{2+}+2e^-
আবার, O পরমাণু ঐ 2 টি ইলেকট্রন গ্রহণ করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস Ne এর মতো ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে অর্থাৎ সর্বশেষ শক্তিস্তরে 4 টি ইলেকট্রন গঠন করে O_2– এ পরিণত হয়।
O+2e^-\rightarrow O^{2-}
এবার Mg^{2+} এবং O^{2-} কাছাকাছি এসে আয়নিক বন্ধন গঠন করে।
ব্যাতিক্রম (Exception)
(i) 13 নং গ্রুপের Al মৌলটি 1 ও 2 নম্বর গ্রুপের মৌল না হওয়া সত্ত্বেও আয়নিক বন্ধন তৈরি করে।
সমযোজী বন্ধন (Covalent bond)
সংজ্ঞা (Definition): পরমাণুর সর্বশেষ শক্তিস্তরে স্থায়ী ইলেকট্রন বিন্যাস লাভের জন্য ইলেকট্রন শেয়ারের মাধ্যমে বন্ধন গঠিত হয়, একে সমযোজী বন্ধন বলে।
ব্যাখ্যা (Explanation): সমযোজী বন্ধনে পরমাণুসমূহ ইলেকট্রন শেয়ার করে, তাদের এ শেয়ারকৃত ইলেকট্রন উভয় নিউক্লিয়াসের মধ্যবর্তী স্থানে পরিভ্রমণ করে এবং উভয় পরমাণু কার্যকরভাবে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে শেয়ার করা ইলেকট্রন উভয় নিউক্লিয়াসের মধ্যবর্তী স্থানে পরিভ্রমন করার ফলে পরমাণু দুইটি পরস্পরে সাথে সমযোজী বন্ধন সৃষ্টি করে।
যেমন :
H পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাস হলো, H(1)\rightarrow 1s^1 । দুটি H পরমাণু যখন কাছাকাছি আসে উভয় পরমাণুর একটি করে ইলেকট্রন শেয়ার করে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের মতো ইলেকট্রন বিন্যাস অর্জন করে। অর্থাৎ সর্বশেষ শক্তিস্তরে 2 টি ইলেকট্রন গঠন করে সমযোজী বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত থাকে।
আয়নিক ও সমযোজী বন্ধনের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of ionic and covalent bonds):
গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক (Melting point and boiling point):
- আয়নিক যৌগে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধান থাকে। এ আধানদ্বয় পরস্পরের সাথে দুর্বলভাবে আবদ্ধ থাকে।
- আয়নিক যৌগে এরূপ অসংখ্য ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আধান পরস্পরের কাছাকাছি থেকে ত্রিমাত্রিকভাবে সুবিন্যস্ত হয়ে ১টি স্ফটিক তৈরি করে। এতে তাদের আন্ত-আণবিক আকর্ষণ বল অনেক বেশি হয়।
- ফলে তাদেরকে একে অপরের কাছ থেকে দূরে সরাতে অনেক বেশি তাপের প্রয়োজন হয়। কাজেই তাদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক বেশি।
অপরদিকে,
- সমযোজী অণুসমূহের মধ্যে আন্তঃআণবিক আকর্ষণ মূলত দুর্বল ভ্যান্ডারওয়ালস বলের কারণে হয়ে উঠে। কাজেই এতে আন্ত-আণবিক আকর্ষণ বল অনেক কম।
- এজন্য তাদেরকে সামান্য তাপ প্রয়োগ করলে এরা পরস্পরের থেকে দূরে সরে যায়। অর্থাৎ এদের গলনাঙ্ক ও স্ফুটনাঙ্ক কম।
দ্রাব্যতা/দ্রবণীয়তা (Solubility):
- পানিতে আয়নিক যৌগ যোগ করলে পানির অণুর ধনাত্মক প্রান্ত আয়নিক যৌগের ধনাত্মক প্রান্ত বা অ্যানায়নকে আকর্ষণ করে।
- কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া সকল আয়নিক যৌগ পানিতে দ্রবণীয়
- AgCl আয়নিক যৌগ হওয়া সত্ত্বেও তা পানিতে অদ্রবণীয় অবস্থায় থাকে।
অপরদিকে,
- সমযোজী যৌগে আয়নিক যৌগের মতো ধনাত্মক – ঋণাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয় না, ফলে আকর্ষণ – বিকর্ষণ ঘটে না।
- সমযোজী যৌগটি পানিতে আয়ন আকারে ভাঙ্গে না, ফলে সমযোজী যৌগটি পানিতে দ্রবীভূত হয় না।
- তবে কিছু কিছু সমযোজী যৌগে আংশিক ধনাত্মক – ঋণাত্মক প্রান্তের সৃষ্টি হয় অর্থাৎ পোলারিটি দেখা যায়।
- যেমন : ইথানল (C_2H_5OH), HCl ইত্যাদি।
বিদ্যুৎ পরিবাহিতা (Electrical conductivity):
আয়নিক যৌগে (Ionic compound)-
- আয়নিক যৌগ জলীয় দ্রবণে বিদ্যুৎ পরিবহন করে।
- খাদ্য লবণে (NaCl) জলীয় দ্রবণে ধনাত্মক আয়ন হিসেবে (Na^+) ও ঋণাত্মক আয়ন হিসেবে (Cl^-) বিদ্যুৎ পরিবহন করে।
- যেহেতু জলীয় দ্রবণে আয়নিক যৌগসমূহ বিচ্ছিন্ন ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়ন হিসেবে অবস্থান করে কাজেই সকল আয়নিক যৌগ জলীয় দ্রবণে বিদ্যুৎ পরিবহন করে।
- For example CaCl_2 দ্রবণে, Ca^{2+} ও Cl^- থাকে এরা বিদ্যুৎ পরিবহন করে।
সমযোজী যৌগে (Covalent compound)-
- সমযোজী যৌগসমূহে বিদ্যুৎ পরিবহন করে না।
- বিদ্যুৎ পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় আধান এ যৌগে নেই।
- সমযোজী যৌগে বিচ্ছিন্ন আয়ন তৈরি হয় না ; আর দ্রবণে আয়ন না থাকলে তা কখনো বিদ্যুৎ পরিবহন করতে পারে না।
Note:
আয়নিক যৌগে কঠিন অবস্থায় তড়িৎ পরিবহন করে না ; শুধুমাত্র জলীয় দ্রবণে বিদ্যুৎ পরিবহন করে।
ধাতব বন্ধন (Metallic bonding)
সংজ্ঞা (Definition): ধাতুর পরমাণুসমূহ যে আকর্ষণ বল দ্বারা পরস্পরের সাথে যুক্ত থাকে তাকে ধাতব বন্ধন বলে।
ব্যাখ্যা (Explanation): অর্থাৎ এক খণ্ড ধাতুর মধ্যে পরমাণুসমূহ যে আকর্ষণের মাধ্যমে যুক্ত থাকে সেটাই ধাতব বন্ধন।
- তামার (কপার) তার লোহার (আয়রন) তৈরি ছুরি, কাঁচি আলুমিনিয়ামের তৈরি জানালো। সোনার অলংকারের মধ্যে একই ধাতুর অসংখ্য পরমাণু পরস্পরের সাথে ধাতব বন্ধনের মাধ্যমে যুক্ত থাকে।
- ধাতুতে পরমাণুসমূহ তার সর্বশেষ শক্তিস্তরের এক বা একাধিক ইলেকট্রনকে ত্যাগ করে ধনাত্মক আয়নে পরিণত হয় ; এই ধনাত্মক আয়নকে পারমাণবিক শাঁস বলে।
- ধাতব পরমাণু কর্তৃক ত্যাগকৃত ইলেকট্রনগুলো শাঁসের মধ্যবর্তী স্থানে ঘোরাফেরা করে যাদের সঞ্চরণশীল ইলেকট্রন বলে।
ধাতুর বিদ্যুৎ পরিবাহিতা এবং ধাতুর তাপ পরিবাহিতা (Electrical conductivity and thermal conductivity of metals):
- এক খণ্ড ধাতব প্রান্তের এক প্রান্তকে আগুনের উপর রেখে উত্তপ্ত করলে দেখা যাবে অপর প্রান্তটি বেশ তাড়াতাড়ি গরম হতে শুরু করছে, এর অর্থ ধাতুগুলো তাপ পরিবাহিতা প্রদর্শন করে।
- সঞ্চরণশীল ইলেকট্রন শক্তি গ্রহণ করে এবং তাদের গতিবেগ বেড়ে যায় এবং ইলেকট্রনগুলো অধিক তাপমাত্রার প্রান্ত থেকে কম তাপমাত্রার প্রান্তের দিকে স্থানান্তরিত হয়, এর ফলে ধাতুর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে তাপের পরিবহন ঘটে।