10 Minute School
Log in

ফেনল (Phenol)

ফেনল (Phenol)

প্রশ্নঃ আলকাতরা হতে ফেনল নিষ্কাশন প্রণালী বর্ণনা কর। (Phenol extraction from tar)

উত্তরঃ খনিজ কয়লার বিধ্বংসী পাতনের ফলে প্রাপ্ত উদ্বায়ী অংশকে ঘনীভূত করার পর উৎপন্ন কালো বর্ণের গাঢ় তরল পদার্থকে আলকাতরা

বলে। আলকাতরাকে আংশিক পাতন করা হলে ১৭০°-২৩০°C তাপমাত্রায় প্রাপ্ত তরলকে মধ্যম তৈল বলা হয়। মধ্যম তৈলে ফেনল থাকায় তা হতে ফেনল নিষ্কাশন করা হয়। 

মধ্যম তৈলে অধিক পরিমাণে ফেনল, সামান্য পরিমাণে ফেনলের সমগোত্রীয় যৌগ ক্রিসোল এবং ন্যাপথালিন থাকে। এই তৈলকে শীতল করা হলে ন্যাপথালিন কেলাসরূপে পৃথক হয় । ফিল্টার করে কেলাসিত ন্যাপথালিন পৃথক করার পর পরিত হিসেবে প্রাপ্ত তৈল অংশকে ১০% NaOH দ্রবণ দ্বারা আলোড়িত করা হলে এতে বিদ্যমান ফেনল ও ক্রিসোল জাতীয় সমগোত্রীয় যৌগ সোডিয়াম লবণে পরিণত হয়ে উপরের জলীয় স্তরে চলে আসে এবং তৈলাক্ত ভেজাল হতে পৃথক হয়ঃ

জলীয় স্তরকে পৃথকীকরণ ফানেলের সাহায্যে পৃথক করে H2SO4 যোগ করা হলে ফেনল ও সমগোত্রীয় যৌগসমূহ সোডিয়াম লবণ হতে যুক্ত হয়ে গাঢ় কালো বর্ণের তৈল স্তররূপে ভেসে উঠেঃ

তৈল স্তরকে পৃথক করার পর পানি দ্বারা কয়েকবার ধৌত করার পর পাতন করা হয়। ১৮০°-১৮২°C তাপমাত্রায় প্রায় বিশুদ্ধ ফেনল পাওয়া যায়। প্রাপ্ত তরলকে শীতল করা হলে বিশুদ্ধ ফেনল কেলাস হিসেবে পাওয়া যায়। ক্রেসল দ্রবনে থেকে যায়। এভাবে আলকাতরা হতে ফেনল পাওয়া যায।

ফেনল সংশ্লেষণের দুইটি পদ্ধতি লিখ । (Two methods of phenol synthesis)

ডাউ পদ্ধতিঃ (Dow process): ডাউ পদ্ধতির সাহায্যে বেনজিন হতে ফেনল সংশ্লেষণ করা যায়। এতে নিন্মলিখিত বিক্রিয়া সংঘটিত হয় । 

(i) হ্যালোজেন বাহক আয়রণ চূর্ণের উপস্থিতিতে সাধারণ তাপমাত্রায় বেনজিনে ক্লোরিন চালনা করা হলে বিক্রিয়ার মাধ্যমে ক্লোরোবেনজিন পাওয়া যায়ঃ

(ii) উৎপন্ন ক্লোরোবেনজিনকে ১০% NaOH দ্রবণের সাথে উচ্চ চাপে এবং ৩৬০°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হলে সোডিয়াম ফিনেট, NaCl এবং H2O উৎপন্ন হয়।

(iii) উৎপন্ন ফিনেট দ্রবণকে HCl এসিড যোগে এসিডিয় করে ফেনল মুক্ত করা হয় এবং অতঃপর প্রাপ্ত তরলে আংশিক পাতন করলে ১৮০°-১৮২°C তাপমাত্রায় পাতিত তরলই ফেনল 

(খ) কিউমিন ফেনল পদ্ধতিঃ (Cumene phenol method): সর্বাধুনিক এ পদ্ধতিতে প্রায় ৯০% ব্যবহৃত ফেনলের শিল্পোৎপাদন করা হয়। এই সংশ্লেষণ পদ্ধতি দু’ধাপে সম্পন্ন হয়। যেমন-

(i) প্রথম ধাপে, পেট্রোলিয়াম থেকে প্রাপ্ত বেনজিন বাষ্প ও প্রোপিন ফিডেল ক্রাফট বিক্রিয়ার সাহায্যে কিউমিন প্রস্তুত করা হয়। এ বিক্রিয়ায় ২৫০°C তাপমাত্রা, ৩০atm চাপ ও H3 PO4 প্রভাবকরূপে ব্যবহৃত হয়।

(ii) দ্বিতীয় ধাপে, কিউমিনকে ধাতব প্রভাবকের উপস্থিতিতে ১৩০°C তাপমাত্রায় O2, দ্বারা জারিত করে কিউমিন হাইড্রোপারঅক্সাইডে পরিণত করা হয়। অতঃপর লঘু H2SO4 দ্বারা আর্দু বিশ্লেষিত করে ফেনল এবং প্রোপানোন বা অ্যাসিটোন পাওয়া যায়। 

এভাবে কিউমিন ফেনল পদ্ধতিতে ফেনল সংশ্লেষণ করা যায়। 

প্রশ্নঃ পরীক্ষাগারে ফেনল প্রস্তুতির মূলনীতি লিখ । (Phenol preparation in the laboratory)

উত্তরঃ ফুটন্ত অধিক পরিমাণ লঘু সালফিউরিক এসিডের মধ্যে বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড ফোটায় ফোঁটায় মিশ্রিত করলে ফেনল ও নাইট্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন হয়।

প্রশ্নঃ ফেনল হতে এনিসোল বা ফিনাইল মিথাইল ইথার। (Anisole or Methyl Phenyl Ether from Phenol)

উত্তরঃ ফেনল ও সোডিয়াম হাইড্রক্সাইডের (NaOH) বিক্রিয়ায় সোডিয়াম ফিনেট লবণ ও পানি উৎপন্ন হয়। সোডিয়াম ফিনেট এর সাথে মিথাইল আয়োডাইড (CH3I) বিক্রিয়া করে অ্যানিসোল উৎপন্ন হয় সাথে Nal পাওয়া যায় । 

প্রশ্নঃ ফেনল হতে বেনজিন। (Phenol to Benzene)

উত্তরঃ ফিনলকে দস্তা গুঁড়া (Zn) সহ পাতন করা হলে ফেনল জিংক দ্বারা বিজারিত হয়ে বেনজিনে পরিণত হয় এবং Zn জারিত হয়ে জিংক অক্সাইডে পরিণত হয়।

প্রশ্নঃ ফেনল হতে ২, ৪, ৬ ট্রাইব্রোমো ফেনল। (Phenol to 2,4,6-Tribromophenol)

উত্তরঃ ফেনলে লাল বর্ণের ব্রোমিন (Br2) পানি চালনা করা হলে ২, ৪, ৬ ট্রাইব্রোমো ফেনলের সাদা বর্ণের অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়। 

প্রশ্নঃ ফেনল হতে স্যালিসাইলডিহাইড বা অর্থো হাইড্রক্সি বেনজালডিহাইড। (Phenol to Salicylaldehyde or Ortho Hydroxy Benzaldehyde)

উত্তরঃ ফেনলকে ক্লোরোফর্ম (CHCl3) ও NaOH এর জলীয় দ্রবণের সাথে ৬০°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হলে ফেনলের -OH মূলকের ‘

সম্পর্কে অর্থোস্থানের একটি H- পরমাণু একটি অ্যালডিহাইড মূলক (-CHO) দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে স্যালিসাইল অ্যালডিহাইড উৎপন্ন করে। একে রাইমার টাইম্যান বিক্রিয়া বলে।

প্রশ্ন ফেনল হতে প্যারাসিটামল। (Phenol to Paracetamol)

উত্তরঃ

প্রশ্নঃ ফেনল হতে স্যালিসাইলিক এসিড। (Phenol to Salicylic acid)

উত্তরঃ ফেনল এবং কষ্টিক সোডার (NaOH) বিক্রিয়ায় সোডিয়াম ফিনেট উৎপন্ন হয়। উক্ত দ্রবণে ১২৫°C তাপমাত্রায় এবং ৪-৭৪ atm বায়ুচাপে CO, গ্যাস চালনা করা হলে ফিনলের অর্থোস্থানে ক্টিকার্বক্সিলেশন ঘটে সোডিয়াম স্যালিসাইলেট উৎপন্ন হয়। উক্ত দ্রবণকে HCl যোগে এসিডিয় করা হলে স্যালিসাইলিক এসিড তথা অর্থো হাইড্রক্সি বেনজয়িক এসিড পাওয়া যায়।  বিক্রিয়াটিকে কোব বিক্রিয়া বলে।

প্রশ্নঃ ফেনল হতে অ্যাসপিরিন কিরূপে পাওয়া যায় । (Phenol to Aspirin)

উত্তরঃ

ফেনলের নাইট্রেশন। (Nitration of Phenol)

উত্তরঃ কক্ষ তাপমাত্রায় লঘু HNO3 ও ফেনলের বিক্রিয়ায় অর্থোনাইট্রোফেনল ও প্যারা নাইট্রোফেনল ও পানি উৎপন্ন হয়। 

 

টীকা লিখ

  • মিথিলেটেড স্পিরিটঃ (Methylated spirit)

পরিচিতি ও অসেবনীয় বা স্বভাবচ্যৎ অ্যালকোহলকে মিথিলেটেড স্পিরিট বলে। 

প্রস্তুতিঃ  ইথানল এর সাথে সামান্য পরিমাণে (৫%) মিথানল, ৩-৫% দুর্গন্ধময় পিরিডিন মিশ্রিত করে মিথিলেটেড স্পিরিট পাওয়া যায়। 

ব্যবহারঃ ইহা রং ও বার্ণিশ প্রস্তুতির কাজে দ্রাবকরূপে ব্যবহৃত হয়। জ্বালানী রূপে ব্যবহৃত হয়। 

  • পাওয়ার অ্যালকোহল পরিচিতিঃ (Prepration of power alcohol): ও শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত অ্যালকোহল মিশ্রিত জ্বালানীকে পাওয়ার অ্যালকোহল বলে। 

প্রস্তুতিঃ ২০-৩০% বিশুদ্ধ ইথানলের সাথে পেট্রোল ও তৃতীয় কোন দাহ্য পদার্থ যেমন-ইথার, বেনজিন প্রভৃতি মিশ্রিত করে পাওয়ার অ্যালকোহল পাওয়া যায়। 

ব্যবহারঃ যে সব দেশে পেট্রোলিয়াম কম পাওয়া যায় সে সব দেশে পাওয়ার অ্যালকোহল মোটর গাড়ীর জ্বালানী রূপে ব্যবহার করা হয় ।

  • অ্যাবসোলিউট অ্যালকোহল (পরম অ্যালকোহল) : (Absolute Alcohol)

পরিচিতিঃ ১০০% বিশুদ্ধ বা অনার্স ইথানলকে বিশুদ্ধ অ্যালকোহল বলা হয়। 

প্রস্তুতিঃ ও রেকটিফাইড স্পিরিট (৯৫.৬% ইথানল এবং ৪.৪% পানি) এর সাথে অনার্দ্র কলিচুন (CaO) মিশ্রিত করে কয়েকদিন রেখে দিলে কলিচুন দ্বারা শোষিত হয়। অতঃপর পাতন করে বিশুদ্ধ ইথানল সংগ্রহ করা হয়। এভাবে পরম অ্যালকোহল প্রস্তুত করা হয়। 

ব্যবহারঃ বিভিন্ন রাসায়নিক কাজে বিশুদ্ধ অ্যালকোহল ব্যবহৃত হয়। ইহা গ্যাসোলিন ও অন্যান্য হাইড্রোকার্বনকে সকল অনুপাতে দ্রবীভূত করতে পারে। যা রেকটিফাইড স্পিরিট করতে পারে না। ব্যবসায় ক্ষেত্রে ইহা দ্রাবকরূপে ব্যবহৃত হয়। 

রেকটিফাইড স্পিরিট (Rectified spirit)

পরিচিতিঃ ৯৫.৬% ইথানল ও ৪.৪% পানির মিশ্রণকে রেকটিফাইড স্পিরিট বলে ।

গাজন বা ফারমেন্টেশন বা চোলাইকরণ 

সংজ্ঞাঃ জটিল অণু বিশিষ্ট জৈব যৌগকে এনজাইম নামক জটিল পদার্থের প্রভাবে বিযোজিত বা পানি বিশ্লেষিত করে ক্ষুদ্রতর অণুবিশিষ্ট পদার্থে পরিণত করার প্রক্রিয়াকে ফারমেন্টেশন বলে। উল্লেখ্য যে, এনজাইম হল এক প্রকার প্রাণ শক্তিহীন, অদানাদার, নাইট্রোজেন বিশিষ্ট, অজানা রহস্যপূর্ণ জটিল জৈব পদার্থ। ঈষ্ট এবং অন্যান্য ক্ষুদ্র এক কোষী ক্ষুদ্র জীবকোষ হতে এনজাইম নিঃসৃত হয়। 

উদাহরণঃ গ্লুকোজ (C6H12O6) এর লঘু পানিয় দ্রবণে কিছু ঈষ্ট মিশিয়ে ২০-২৫°C তাপমাত্রায় রেখে দিলে জীবন্ত ঈষ্ট কোষ হতে নিঃসৃত ‘জাইমেস’ নামক এনজাইমো প্রভাবে গুকোজে বিযোজিত হয়ে অ্যালকোহল ও CO2 এ পরিণত হয়।

C6H12O6জাইমেস→20-250C  2C2H5OH+ 2CO2

এই বিক্রিয়াকে ফারমেন্টেশন বলে। 

ব্যবহারঃ চিটাগুড়, চিনি, ইক্ষুরস হতে ফারমেন্টেশন পদ্ধতিতে ইথানল প্রস্তুত করা হয়। 

পিকরিক এসিড (Picric Acid)

পরিচিতিঃ ২, ৪, ৬ ট্রাই নাইট্রোফেনলকে পিকরিক এসিড বলে। এর সংকেত নিম্নরূপঃ

প্রস্তুতিঃ ক্লোরোবেনজিন হতে আধুনিক পদ্ধতিতে পিকরিক এসিড প্রস্তুত করা যায়। ক্লোরোবেনজিনকে প্রথমে গাঢ় HNO3 এবং গাঢ় H2SO4 মিশ্রণ দ্বারা নাইট্রেশন করে ২, ৪ ডাই নাইট্রোক্লোরো বেনজিনে পরিণত করা হয়। অতঃপর উৎপন্ন যৌগকে Na2CO3 দ্রবণ দ্বারা আর্দ্র বিশ্লেষণ করা হলে ২, ৪ ডাই নাইট্রোফেনলে পরিণত হয়। শেষে উৎপন্ন ২, ৪ ডাই নাইট্রোফেনলকে গাঢ় HNO3 ও গাঢ় H2SO4  সহযোগে নাইট্রেশন করলে হলুদ বর্ণের ২, ৪, ৬ ট্রাই নাইট্রোফেনল বা পিকরিক এসিড পাওয়া যায়।

ধর্মঃ

(ক) এটি হলুদ বর্ণের কেলাসাকার যৌগ।

(খ) পিকরিক এসিডের গলনাংক ১২২°C 

ব্যবহারঃ

(ক) বিস্ফোরক যৌগ তৈরীতে ।

(খ) পশমী ও রেশমী বস্ত্রের রঞ্জন শিল্পে এবং

(গ) পোড়া ক্ষতের জ্বালা ও পচন নিবারণে মলম তৈরীতে পিকরিক এসিড ব্যবহৃত হয় ।

সনাক্তকরণ (Identification)

(ক) অ্যালকোহল সনাক্তকরণঃ (Alcohol identification)

জৈব যৌগে অ্যালকোহলিক -OH মূলকের সনাক্তকরণ নিম্নোক্ত পরীক্ষা দ্বারা করা যায়।

 (১) ধাতব Na সহ পরীক্ষা ও বিশুদ্ধ জৈব দ্রাবক যেমন ইথার দ্রবীভূত কোন জৈব যৌগ সোডিয়াম ধাতুর সঙ্গে বিক্রিয়া দ্বারা H2গ্যাস উৎপন্ন করলে ঐ যৌগে -OH মূলকের অর্থাৎ অ্যালকোহলের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়। যেমন ইথানল সোডিয়ামের সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম ইথোক্সাইড ও H2 গ্যাস উৎপন্ন করে!

2CH3CH2 – OH + 2Na → 2CH3CH3CH2ONa+H2 

(২) PCl5 দ্বারা পরীক্ষা ও অনার্দ্র জৈব বা নিষ্ক্রিয় দ্রাবকে দ্রবীভূত জৈব যৌগকে PCl5  এর সঙ্গে উত্তপ্ত করা হলে যদি HCl গ্যাস নির্গত 

PCl5  এর সাথে উত্তপ্ত করা হলে ইথাইল ক্লোরাইড, ফসফরাস অক্সিক্লোরাইড ও HC1 গ্যাস উৎপন্ন হয়। যা NH3 এর সাথে ঘনসাদা। ধোয়া উৎপন্ন করে।

CH3CH2 – OH + PCl5→ CH3CH2 – C1 + POCI3 + HClgNH3 + HCI – NH4Cl

(৩) লুকাস বিকারক দ্বারা পরীক্ষা ও গাঢ় HCl অনার্স ZnCl, এরশ্রণ কার্ড বিকারক বলে। লুকাস বিকারক দ্বারা অ্যালকোহল সনাক্ত করা যায়। শুধু তাই নয় বিভিন্ন শ্রেণির অ্যালকোহলের বিক্রিয়ার গতিবেগের বিভিন্নতার উপর এই পরীক্ষা নির্ভরশীল বিধায় এর সাহায্যে ১, ২, ৩° অ্যালকোহলের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা যায়। যেমন৩° অ্যালকোহলে লুকাস বিকারক যোগ করা মাত্রই সাদা অধঃক্ষেপ বা তৈলাক্তস্তর সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ

উদাহরণঃ 

CH33C – OH + HCl  ZnCl2→            250C -CH33C- Cl + H2O

  ৩° বিউটাইল অ্যালকোহল সিলেটেইল ক্লোরাইড (সাদা অধঃক্ষেপ)

২° অ্যালকোহলে লুকাস বিকারক যোগ করার ৫-১০ মিনিটের মধ্যে অধঃক্ষেপ বা তৈলাক্তস্তর সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ 

R2CH – OH + HClZnCl2→ R2CH-Cl+H2O

উদাহরণঃ 

CH32CH – OH + HCl  ZnCl2→             250CCH32CH -Cl + H2O 

প্রোপানল-২ (২0)       ২-ক্লোরো প্রোপেন

 ১° অ্যালকোহলে লুকাস বিকারক যোগ করা হলে সহজে অধঃক্ষেপ সৃষ্টি হয় না। যথেষ্ট সময় ধরে উত্তপ্ত করা হলে অধঃক্ষেপ বা তৈলাক্ত র সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ

  R- CH2 – OH + HClZnCl2 →+ RCH2 – Cl + H2

উদাহরণঃ 

CH3-CH2-CH2 – OH + HClZnCl2→  CH3-CH2-CH2-Cl + H2O 

প্রোপানল-১ (১) ১-ক্লোরো প্রোপেন

(খ) ফেনল শনাক্তকরণ: (Phenol identification)

নিমলিখিত পরীক্ষার সাহায্যে ফেনল সনাক্ত করা যায়$। ফেরিক ক্লোরাইড দ্রবণ পরীক্ষা ও ফেনলের জলীয় দ্রবণে কয়েক ফোঁটা ফেরিক ক্লোরাইড (FeCl3) দ্রবণ যোগ করা হলে ডাইফেরিক হেক্সাফিনেট নামক জটিল যৌগের বেগুনী বর্ণের দ্রবণ উৎপন্ন হয়।

 6C6H5 – OH + 2FeCl3 → C6H5O6Fe2+ 6HCl

ডাইফেরিক হেক্সাফিনেট

২। ব্রোমিন পানি পরীক্ষা: (Bromine Water test)

ফেনলের দ্রবণের সাথে ব্রোমিনের জলীয় দ্রবণ ফোটায় ফোঁটায় যোগ করা হলে ব্রোমিন দ্রবণের লাল বর্ণ দূরীভূত হয় এবং ট্রাই ব্রোমো ফেনলের সাদা বর্ণের অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়। 

৩। লিবারম্যান পরীক্ষা: (Liebermann test)

ফেনলের সাথে সোডিয়াম নাইট্রাইট (NaNO2) ও কয়েক ফোটা গাঢ় H2SO4 মিশ্রিত করে। উত্তপ্ত করলে সবুজ অথবা নীল বর্ণের দ্রবণ উৎপন্ন হয়। এ দ্রবণের মধ্যে পানি যোগ করলে সে দ্রবণের বর্ণ হালকা লাল দেখায়। উক্ত লাল দ্রবণের মধ্যে অধিক NaOH দ্রবণ যোগ করলে পুনরায় সবুজ বর্ণ অথবা নীল বর্ণ ফিরে আসে। এ বিক্রিয়ার সাহায্যে ফেনল শনাক্ত করা যায়।

অ্যালকোহল, ফেনল, ইথার (Alcohol, phenol, ether)

প্রশ্নঃ ইথানল এবং ফেনলের মধ্যে কিরূপে পার্থক্য নির্ণয় করা যায়? (Difference between Ethanol and Phenol)

উত্তরঃ ইথানল ও ফেনলের মধ্যে পার্থক্য নিম্নে দেওয়া হলোঃ

বিষয় ফেনল (Phenol) ইথানল (Ethanol)
১. FeCl3  দ্রবণ FeCl3 দ্রবণের সাথে ফেনলের বিক্রিয়ায় | ডাইফেরিক হেক্সাফিনেট নামক জটিল যৌগের বেগুনী বর্ণের দ্রবণ উৎপন্ন হয় ।
6C6H5 – OH + 2FeCl3 → C6H5O6Fe2+ 6HCl
কোন অধঃক্ষেপ পড়ে না।
২. আয়াোডোমফর্ম বিক্রিয়া বিক্রিয়া ঘটে না ইথানল আয়োডিন ও KOH এ মিশ্রণকে উত্তপ্ত করা বিক্রিয়া হলে আয়োডোফর্ম এর হলুদ বর্ণের অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়।
CH3 – CH2 – OH + 4I2 + 6KO→ CHI3 + HCOOK + 5KI + 5H2O

প্রশ্নঃ ইথার এবং অ্যালকোহলের মধ্যে পার্থক্য লিখ। (Difference between Ether and Alcohol)

উত্তরঃ

বিকারকসমূহ ইথার R-0-R অ্যালকোহল R-0-H
  ১। ধাতব সোডিয়ামসহ বিক্রিয়া ১। ইথার সোডিয়াম ধাতুর সাথে কোন ১। অ্যালকোহল ও সোডিয়াম ধাতুর বিক্রিয়ায় বিক্রিয়া দেয় না।বুদবুদসহ H, গ্যাস ও সোডিয়াম অ্যালকোক্সাইড উৎপন্ন হয়। 2C2H5OH + 2Na → 2C2H5ONa +H2(g)
২। অ্যাসিটাইল ক্লোরাইডসহ বিক্রিয়া ২। ইথার অ্যাসিটাইল ক্লোরাইডসহ ৩। অ্যালকোহল ও অ্যাসিটাইল ক্লোরাইডের বিক্রিয়ায় এস্টার ও HCl গ্যাস উৎপন্ন হয়। যেমন, CH3COCI + C2H5OH+CH3COOC2H5+ HCl(g)
৩। PCl5 সহ বিক্রিয়া ৩। ইথার ও PCl5 এর বিক্রিয়ায় অ্যালকাইল ক্লোরাইড ও POCl3 উৎপন্ন হয়। HCl উৎপন্ন হয় না। যেমন,
  C2H5OC2H5+PCl5→2C2H5Cl+POCl3
৩। অ্যালকোহল ও PCl5 এর বিক্রিয়ায় অ্যালকাইল ক্লোরাইড এর বিক্রিয়ায় বুদ্‌বুদ্‌সহ গ্যাস নির্গত হয়, যা সিক্ত কাচ দণ্ডের সংস্পর্শে সাদা ঘন ধোঁয়া সৃষ্টি করে। এর সাথে অ্যালকাইল ক্লোরাইড ও NH4Cl উৎপন্ন হয়। যেমন, C2H5OH+PCl5C2H5Cl+POCl3+HClgHClg+NH3g→NH4Cl(সাদা ধোঁয়া) 
৪। জারক পদার্থ (অষ্ট্ৰীয়) K2Cr2O7 সহ বিক্রিয়া ৪। ইথার জারক পদার্থ দ্বারা সহজে জারিত হয় না ৪। অ্যালকোহল জারক পদার্থ যেমন, অম্লীয় K2Cr2O7 দ্বারা জারিত হয়ে প্রথমে অ্যালডিহাইড ও পরে কার্বক্সিলিক এসিড উৎপন্ন করে। যেমন, C2H5OH{O}→), CH3CHO- CH3COOH

প্রশ্নঃ মিথানল এবং ইথানলের মধ্যে কিরূপে পার্থক্য নির্ণয় করা যায়? (Difference between Methanol and Ethanol)

উত্তরঃ নিমের দুটি পরীক্ষার মাধ্যমে ইথানল ও মিথানলের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা যায়

(ক) আয়োডাফরম পরীক্ষা (iodoform test): ইথানলকে আয়োডিন ও NaOH সহযোগে উত্তপ্ত করা হলে হলুদ বর্ণের আয়োডাফরমের অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়। 

C2H5OH + 4I2 + 65NaOH60°C→ CHI3 + HCOONa + 5Nal + 5H2O

আয়োডোফরম

 কিন্তু মিথানল এই বিক্রিয়া দেখায় না। 

(খ) অনার্দ্র CH3COOH: (Anhydrous CH3COOH): এবং গাঢ় H2SO4 সহ উত্তপ্ত করা হলে মিথানল হতে মিথাইল এসিটেট পাওয়া যায় যার কোন গন্ধ পাওয়া যায় না, কিন্তু ইথানল হতে প্রাপ্ত ইথাইল এসিটেট ফর তিনি গন্ধ আছে

CH3OH + CH3COOH → CH3COOCH3 + H2O

C2H5OH-CH3COOH → CH3COOC2H5 + H2O 

ফেনল (Phenol)

প্রশ্নঃ ফেনল একটি অম্লধর্মী যৌগ-ব্যাখ্যা কর । (Phenol is an acidic compound)

উত্তরঃ নিমোক্ত কারণে ফেনল একটি অম্লধর্মী যৌগ।

(ক) পানিতে দ্রবীভূত অবস্থায় ফেনল সামান্য পরিমাণে বিয়োজিত হতে H+ আয়ন দান করে, ফলে ফেনল অম্লধর্মী হয়। তবে ফেনল একটি দুর্বল এসিড। ইহা নীল লিটমাসকে লাল করে।

এর কারণ হিসেবে বলা যায় ফেনুলের বেনজিন চক্রের সাথে যুক্ত -OH মূলকের অক্সিজেন পরমাণুর এক জোড়া নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন বেনজিন বলয় দ্বারা আকর্ষিত হয় অণুরণনের মাধ্যমে এ ইলেকট্রন জোড় বেনজিন বলয়ে দ্ভূিত হয়। ফলে অক্সিজেন পরমাণু ধনাত্বক চার্জযুক্ত হয়। কাজেই -OH বন্ধন হতে H পরমাণু সহজে প্রোটন (H’) হিসেবে বিচ্যুত হয়। তাছাড়া উৎপন্ন ফিনক্সাইড আয়নটি অণুরণন কারণে সুস্থিত হয় যা নিমে দেখানো হলো

(খ) ফেনল ক্ষার এর সাথে বিক্রিয়া করে লবণ সোডিয়াম ফিনক্সাইড ও পানি উৎপন্ন করে।

তবে কার্বনেট লবণ হতে CO2 উৎপন্ন করতে পারে না বলে ফেনল কার্বনিক এসিড অপেক্ষা একটি দুর্বল এসিড।

প্রশ্নঃ ‘অ্যালকোহল অপেক্ষা ফেনল অধিক অম্লধর্মী’- ব্যাখ্যা কর। (Phenol is more acidic than alcohol)

উত্তরঃ অ্যালকোহল অপেক্ষা ফেনল অধিক অম্লধর্মী। যেমন-ইথানল ও ফেনলের pka যথাক্রমে ১৬.০ এবং ১০.০, যা উপরোক্ত উক্তির প্রমাণ

বহন করে। এর কারণ নিমরূপ-

পানিতে দ্রবীভূত অবস্থায় ফেনল সামান্য পরিমাণে বিয়োজিত হয়ে H+ আয়ন দান করতে পারে। ফলে ফেনল অম্লধর্মী।

ফেনলের অধর্মের কারণ হিসেবে বলা যায়। ফেনলের বেনজিন চক্রের সাথে যুক্ত –OH মূলকের অক্সিজেন পরমাণুর এক জোড়া নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন বেনজিন বলয় কর্তৃক আকর্ষিত হয় এবং অণুরণনের মাধ্যমে এই ইলেকট্রন জোড় বেনজিন বলয়ে বিস্তৃত হয়। ফলে অক্সিজেন। পরমাণু ধনাত্মক চার্জযুক্ত হয়। কাজেই -O-H বন্ধন হতে H পরমাণু সহজে (H+) হিসেবে বিচ্যুত হয়। তাছাড়া উৎপন্ন ফিনক্সাইড আয়নটি অণুরণন কারণে সুস্থিত হয়, যা নিমে দেখানো হল-

অপরদিকে অ্যালকোহল হতে H পরমাণু H’ হিসেবে বিচ্যুত হলে যে অ্যালকক্সাইড আয়ন তৈরি হয় তাতে কোন রকম অণুরণন সুস্থিতি সম্ভব নয়। ফলে পুনরায় পশ্চাৎ বিক্রিয়া সংঘটিত হয় বিধায় অ্যালকোহলের অধর্ম খুবই কম-  

R – O – H H2O⇌ R -O-+ H+

অ্যালকক্সাইড আয়ন

প্রশ্নঃ ফেনল, অর্থো নাইট্রো ফেনল এবং অম্ল মিথাইল ফেনলের মধ্যে অম্লত্ত্বের ক্রম আলোচনা কর। (Order of acidity between phenol, ortho nitro phenol and acid methyl phenol)

উত্তরঃ

অর্থাৎ ফেনলের বেনজিন চক্রের সাথে সক্রিয়কারী মূলকযুক্ত থাকলে অম্লত্ব হ্রাস পায় কিন্তু নিষ্ক্রিয়কারী মূলকযুক্ত থাকলে অম্লত্ব বৃদ্ধি পায়।

প্রশ্নঃ অ্যালকোহল পানিতে দ্রবণীয় কেন? (Alcohol is water soluble)

উত্তরঃ পানিতে অ্যালকোহলের দ্রাব্যতার মূলে দুটি কারণ কাজ করে থাকে। 

(১) প্রথম কারণ হল পানি অণু ও অ্যালকোহল অণু উভয়ই পোলার অণুর। তাই এ দুটির প্রত্যেকের মধ্যে আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে ‘অণুর সংবন্ধন’ ঘটে।

(২) দ্বিতীয় কারণ হল, অ্যালকোহলের – OH অংশ ও অ্যালঙ্ককাইল মূলক (-R) অংশের মধ্যে ভরের অনুপাতের পরিমাণ। অ্যালকাইল (- R) মূলক অংশটি হল পানিতে অদ্রবণীয় অ্যালকেন (R – H) এর অংশ এবং এ অংশ কোন হাইড্রোজেন বন্ধন করতে পারে না। এই অদ্রবণীয় অ্যালকাইল অংশ (- R) আকারে বড় বা এর আনুপাতিক ভর খুব বেশি হয়ে গেলে – OH অংশ তখন এটাকে টেনে পানি ‘অণুর সংবন্ধন’ ভেঙে নতুন হাইড্রোজেন বন্ধন করতে পারে না। তাই উচ্চতর অ্যালকোহল পানিতে দ্রবীভূত হয় না। ইথানল পানিতে সহজেই দ্রবীভূত হয়। তখন (C2H5OH) অণু ও পানি অণুর মধ্যে নতুন করে H- বন্ধন সৃষ্টি হয়। ইথেন (CH3 – CH3) হল অপোলার হাইড্রোকার্বন যৌগ, তাই পানিতে ইথেন অদ্রবণীয় ।

            R-Oδ–Hδ+   •••••O|R-H••••••O|R-H••••••O|R-H

পোলার অণু

চিত্রঃ  (ক) অ্যালকোহল পোলার অণু (খ) অ্যালকোহল অণুর মধ্যে H বন্ধন

(৩) অ্যালকোহলের ফুটনাঙ্ক এদের অনুরূপ অ্যালকো থেকে অনেক উচ্চ। এর কারণ হল -O–H+ মূলকের অত্যন্ত পোলারিকরণ প্রবণতা; এর ফলে অ্যালকোহল অণুগুলো আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন দ্বারা অধিক ‘আণবিক সংবন্ধন’ অবস্থায় থাকে। অধিক তাপশক্তি প্রয়োগের ফলে এদের আন্তঃআণবিক হাইড্রোজেন বন্ধন শক্তি বিনষ্ট করতে হয়। তখন অ্যালকোহল অণুগুলো আণবিক সংবন্ধন থেকে মুক্ত হয়ে মনোমারে পরিণত হয় এবং বাষ্পীভূত হয়। ফলে অ্যালকোহলের ফুটনাঙ্ক বেশি হয়। কিন্তু অ্যালকেন অপোলার হওয়ায় তাদের মধ্যে। হাইড্রোজেন বন্ধন ও আণবিক সংবন্ধন ঘটে না। যেমন, মিথেন, ইথেন ও প্রোপেন এর ফুটনাঙ্ক যথাক্রমে – 161°c, – 89°C ও – 42°C ।  কিন্তু মিথানল ও ইথানলের স্ফুটনাঙ্ক হল যথাক্রমে 65°C ও 78.3°C । আণবিক ভর বৃদ্ধির সঙ্গে অ্যালকোহলের স্ফুটনাঙ্ক যথাক্রমে প্রতি – CH2 – মূলকের পার্থক্যের জন্য প্রায় 20°C তাপমাত্রা পার্থক্যসহ ক্রম বৃদ্ধি পায়।

R-Oδ–Hδ+ •••••O|R-H••••••O|R-H••••••O|R-H 

পোলার অণু

চিত্রঃ (ক) অ্যালকোহল পোলার অণু (খ) অ্যালকোহল অণুর মধ্যে H বন্ধন।

প্রশ্নঃ ইথার অপেক্ষা অ্যালকোহলের, গলনাংক ফুটনাংক বেশী কেন? (The melting point of alcohol is higher than that of ether)

উত্তরঃ অ্যালকোহলের সমাণুক ইথারগুলো অ্যালকোহল থেকে কম ফুটনাঙ্ক বিশিষ্ট হয়ে থাকে। কারণ ইথার অণুগুলোর মধ্যে অ্যালকোহল অণুর মত হাইড্রোজেন বন্ধন সহজে হতে পারে না। ডাইমিথাইল ইথার ও ইথানল উভয়ের আণবিক সংকেত হল, C2H6O অর্থাৎ উভয় যৌগ সমাণু। কিন্তু হাইড্রোজেন বন্ধন গঠনে সক্ষম ইথানল এর স্ফুটনাঙ্ক হল 78.3°C। কিন্তু ডাইমিথাইল ইথারের মধ্যে H বন্ধন গঠন সম্ভব না হওয়ায় ইথারের অণুগুলোর মধ্যে কেবল দুর্বল ভ্যানডার ওয়ালস্ আকর্ষণ বল থাকে। তাই ডাইমিথাইল ইথারের স্ফুটনাঙ্ক হল – 24°c। অর্থাৎ ডাইমিথাইল ইথার হল গ্যাসীয়। সাধারণ তাপমাত্রায় ইথানল হল তরল। অর্থাৎ অ্যালকোহল পোলার ইস্টার্ন্ড অপোলার। 

প্রশ্নঃ অ্যালকোহল, ফেনল ও ইথারের মধ্যে সক্রিয়তা ব্যাখ্যা কর। (Activation between alcohol, phenol and ether)

উত্তরঃ অ্যালকোহল, ফেনল ও ইথারের মধ্যে রাসায়নিক সক্রিয়তার বেশ পার্থক্য দেখা যায়। অ্যালকোহল অণুতে অক্সিজেন পরমাণু, কার্বন ও হাইড্রোজেন (C -O – H) উভয় পরমাণু থেকে ইলেকট্রন ঘনত্ব

নিজের দিকে টেনে নেয়। ফলে উভয় পরমাণুতে আংশিক ধনাত্মক চার্জ (Cδ+-O2δ–Hδ+) সৃষ্টি হয়। এজন্য অ্যালকোহল অণুতে উভয় সমযোজী বন্ধনের ভাঙন সহজেই ঘটতে পারে। তাই অ্যালকোহলসমূহ। সহজেই প্রতিস্থাপন, জারণ ও নিরুদন প্রভৃতি বিক্রিয়া দিয়ে থাকে। অপরদিকে ফেনল অণুর বেনজিন চক্রে অনুরণনের কারণে অক্সিজেন পরমাণুর ইলেকট্রন কিছুটা আকৃষ্ট হয় বলে ফেনলের C -O বন্ধন বেশ দৃঢ় হয়; কিন্তু ফেনলের O – H বন্ধনে বেশ পোলারিটি সৃষ্টি হয় । এজন্য ফেনলও বেশ সক্রিয়। কিন্তু অ্যালিফেটিক ও অ্যারোমেটিক উভয় শ্রেণীর ইথার অণুতে দুটি অ্যালকাইল বা ফিনাইল মূলক অক্সিজেন। পরমাণুর সঙ্গে যুক্ত হয়ে নিমরূপ গাঠনিক সংকেত সৃষ্টি করে। ইথারীয় অক্সিজেন পরমাণুটি নিষ্ক্রিয়। এর দুই জোড়া নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন থাকে ।

আমরা জানি, অ্যালকোইল মূলক ইলেকট্রন বিকর্ষী বা ধনাত্মক আবেশধৰ্মী। তাই এদের প্রভাবে অ্যালিফেটিক ইথার অণুর C-O- C বন্ধনদ্বয়ের অক্ষ বরাবর ইলেকট্রন ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। ফলে ইথারীয় বন্ধন সুদৃঢ় হয়। আবার অ্যারোমেটিক ইথারের অণুতে বেনজিন চক্রে অনুরণনের কারণে ইথারীয় অক্সিজেন পরমাণুটি বেনজিন চক্রের কার্বন পরমাণুর সাথে বেশ দৃঢ়ভাবে যুক্ত থাকে। সুতরাং সুস্পষ্ট হল যে, ইথারীয় বন্ধন (C –O – C) বেশ সুদৃঢ় এবং অ্যালকোহল ও ফেনলের কার্যকরী মূলকের বন্ধন ভাঙনের মত ইথারীয় বন্ধন ভাঙন সহজ নয়। এ জন্য অ্যালকোহল ও ফেনল রাসায়নিকভাবে সক্রিয় হলেও ইথারের রাসায়নিক সক্রিয়তা খুবই কম। তাই ইথারসমূহ সর্বাপেক্ষা কম সক্রিয় জৈব যৌগের অন্যতম।

প্রশ্নঃ ইথার কখন বিস্ফোরিত হয়? (Time when the ether explodes)

উত্তরঃ বায়ু বা ওজনের সংস্পর্শে প্রায় সব অ্যালিফেটিক ইথার ধীরে ধীরে বিস্ফোরণধর্মী পারঅক্সাইড যৌগ গঠন করে। জলীয় বাষ্পের

অনুপস্থিতিতে কিন্তু অতিবেগুনি রশির উপস্থিতিতে পারঅক্সাইড গঠন ত্বরান্বিত হয়। যেমন, ডাই ইথাইল ইথারকে দীর্ঘ সময় বায়ুতে ঝাকালে গন্ধযুক্ত পারঅক্সাইড উৎপন্ন হয়।

C2H5 -O-C2H5 + 12O2 → CH3 -O-O-C2H5 

ডাইইথাইল ইথার ডাইইথাইল পারক্সাইড

পুরানো বায়ু মিশ্রিত ইথারকে পাতন কালে শেষের দিকে প্রায়ই বিস্ফোরণ ঘটে। এর কারণ ঐ ইথারে পার অক্সাইডের উপস্থিতি। তাই পুরানো ইথার ও জলীয় KI দ্রবণের সঙ্গে যদি হলুদ বাদামি I, দ্রবণ উৎপন্ন হয়, তবে পারঅক্সাইডের উপস্থিতি ধরা পড়ে। এক্ষেত্রে পুরানো

ইথারকে বিজারক পদার্থ অশ্লীয় ফেরাস সালফেটসহ ঝাকায়ে পারঅক্সাইড বিনষ্ট করে পান করা উচিত। 

প্রশ্নঃ ইথার প্রস্তুতির দুটি পদ্ধতি লিখ। (There are two methods of preparing ether)

উত্তরঃ

1. অ্যালহোকলের নিরুদনের মাধ্যমেঃ

2R-OH অতিরিক্ত+ H2SO4 গাঢ়140°c→ R– OR + H2SO4. H2O

2C2 H5OH অতি+ HH2SO4 গাঢ়140°c→ – C2H5-O + C2H5+H2SO4.H2O

2. উইলিয়ামসন ইথার সংশ্লেষণের মাধ্যমেঃ

R-O- Na + R – X →R-O- R + NaX 

CH3 – ONa + C2H5C1 => CH3 – O – C2H5 + NaCl