10 Minute School
Log in

প্ৰাণিটিস্যু (Animal tissue)

বহুকোষী প্রাণিদেহে অনেক কোষ একত্রে কোনো বিশেষ কাজে নিয়োজিত থাকে। একই ভ্রুণীয় কোষ থেকে উৎপন্ন হয়ে এক বা একাধিক ধরনের কিছুসংখ্যক কোষ জীবদেহের কোনো নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে সমষ্টিগতভাবে একটা কাজে নিয়োজিত থাকলে ঐ কোষগুলো সমষ্টিগতভাবে টিস্যু (Tissue) বা তন্ত্র তৈরি করে। একটি টিস্যুর কোষগুলোর উৎপত্তি, কাজ এবং গঠন একই ধরনের হয়। টিস্যু নিয়ে আলোচনাকে টিস্যুতত্ত্ব (Histology) বলে। কোষ এবং টিস্যুর মধ্যে পার্থক্য খুবই নির্দিষ্ট। কোষ হচ্ছে টিস্যুর গঠনগত ও কার্যকরী একক, যেমন লোহিত কণিকা, শ্বেত কণিকা এবং অনুচক্রিকা বিভিন্ন ধরনের তন্ত্রকোষ। আবার এরা একত্রে তরল যোজক টিস্যু নামে এক ধরনের টিস্যু হিসেবে পরিচিত। তরল যোজক টিস্যু রক্ত দেহের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় শারীরবৃত্তীয় কাজে অংশ নেয়।

প্রাণিটিস্যুর প্রকারভেদ: প্রাণীটিস্যু তার গঠনকারী কোষের সংখ্যা, বৈশিষ্ট্য এবং তাদের নিঃসৃত পদার্থের বৈশিষ্টের  ভিত্তিতে প্রধানত চার ধরণের হয়-  

  1. (a) আবরণী টিস্যু
  2. (b) যোজক টিস্যু
  3. (c) পেশি টিস্যু এবং
  4. (d) স্নায়ু টিস্যু।

 

(a) আবরণী টিস্যু (Epithelial Tissue): 

এই টিস্যু বিভিন্ন অঙ্গের আবরণ (lining) হিসেবে কাজ করে। তবে অঙ্গকে আবৃত রাখাই আবরণী টিস্যুর একমাত্র কাজ নয়। এই টিস্যুর আরও চারটি কাজ হলো: অঙ্গকে আবৃত রাখা, সেটিকে বইরের আঘাত থেকে রক্ষা করা (protection), প্রোটিনসহ বিভিন্ন পদার্থ ক্ষরণ বা নিঃসরণ করা (secretion), বিভিন্ন পদার্থ শোষণ করা (absorption) এবং কোষীয় স্তর পেরিয়ে সুনির্দিষ্ট পদার্থের পরিবহন (transcellular transport)। 

আবরণী টিস্যুর কোষগুলো ঘন সন্নিবেশিত এবং একটি ভিত্তিপর্দার উপর বিন্যস্ত থাকে। কোষের অকৃতি, প্রাণিদেহে তার অবস্থান এবং কাজের প্রকৃতিভেদে এ টিস্যু তিন ধরনের হয়। যেমন:

(i) স্কোয়ামাস আবরণী টিস্যু (Squamous Epithelial Tissue):

এই টিস্যুর কোষগুলো মাছের আঁশের মতো চ্যাপটা এবং এদের নিউক্লিয়াস বড় আকারের হয়। উদাহরণ: বৃক্কের বোম্যান্স ক্যাপসুল প্রাচীর। এই টিস্যু প্রধানত আবরণ ছাড়াও ছাঁকনির কাজ করে থাকে।

(ii) কিউবয়ডাল আবরণী টিস্যু (Cuboidal Epithelial Tissue):

এই টিস্যুর কোষগুলো ঘনাকার বা কিউব আকৃতির অর্থাৎ কোষগুলোর দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং উচ্চতা প্রায় সমান। উদাহরণ: বৃক্কের সংগ্রাহক নালিকা। এই টিস্যু প্রধানত পরিশোষণ এবং আবরণ কাজে লিপ্ত থাকে।

(iii) কলামনাৱ আৰৱণী টিস্যু (Columnar Epithelial Tissue):

এই টিস্যুর কোষসমূহ স্তম্ভের মতো সরু এবং লম্বা। উদাহরণ: প্রাণীর অন্ত্রের অন্তঃপ্রাচীরের কোষগুলো প্রাধনত ক্ষরণ, রক্ষণ এবং শোষণ কাজ করে থাকে।

প্রাণিদেহে ভিত্তিপর্দার উপর সজ্জিত কোষগুলোর সংখ্যার ভিত্তিতে এপিথেলিয়াল বা আবরণী টিস্যুকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

(i) সাধারণ আবরণী টিস্যু: ভিত্তিপর্দার উপর কোষসমূহ একস্তরে সজ্জিত। উদাহরণ: বৃক্কের বোম্যান্স ক্যাপসুল বৃক্কের সংগ্রাহক নালিকা, অন্ত্র প্রাচীর।

(ii) স্ট্র্যাটিফাইড আবরণী টিস্যু: ভিত্তিপর্দার উপর কোষগুলো একাধিক স্তরে সজ্জিত। এমন স্ট্রাটিফাইড আবরণী টিস্যুও আছে যার স্তরের সংখ্যা মিনিটের মধ্যে পাল্টে যেতে পারে- কখনো দেখা যায় তিন-চারটি স্তর আবার পরক্ষণেই দেখা যায় সাত-আটটি স্তর। তাই একে বলে ট্রানজিশনাল আবরণী। উদাহরণ: মেরুদণ্ডী প্রাণিদের ত্বক।

(iii) সিউডো-স্ট্র্যাটিফাইড আবরণী টিস্যু: এই টিস্যুর কোষগুলো ভিত্তিপর্দার উপর একস্তরে বিন্যস্ত থাকে। তবে কোষগুলো বিভিন্ন উচ্চতার হওয়ায় এই টিস্যুকে দেখতে স্তরীভূত টিস্যু মনে হয়। উদাহরণ: ট্রাকিয়া।

আবরণী টিস্যুর কোষগুলো আবার বিভিন্ন কাজের জন্য নানাভাবে রূপান্তরিত হয়। যেমন- 

(i) সিলিয়াযুক্ত আবরণী টিস্যু: মেরুদণ্ডী প্রাণীদের শ্বাসনালির প্রাচীরে দেখা যায়।

(ii) ফ্লাজেলাযুক্ত আবরণী টিস্যু: হাইড্রার এন্ডোডার্মে থাকে।

(iii) ক্ষণপদযুক্ত আৰৱণী টিস্যু: হাইড্রার এন্ডোডামে এবং মেরুদন্ডী প্রাণীদের মধ্যে দেখা যায়। 

(iv) জনন অঙ্গের আবরণী টিস্যু: বিশেষভাবে রূপান্তরিত আবরণী টিস্যু যা থেকে শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু কোষ উৎপন্ন হয়। এরা প্রজননে অংশগ্রহণ করে প্রজাতির ধারা অক্ষুন্ন রাখে।

(v) গ্রন্থি আবরণী টিস্যু: বিভিন্ন ধরনের রস নিঃসরণ করে।

(b) যোজক টিস্যু (Connective Tissue): 

যোজক বা কানেকটিভ টিস্যুতে মাতৃকার (Matrix) পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি এবং কোষের সংখ্যা কম। গঠন এবং কাজের ভিত্তিতে কানেকটিভ টিস্যু প্রধানত তিন ধরনের হয়। যথা-

 

(i) ফাইব্রাস যোজক টিস্যু (Fibrous Connective Tissue): 

এই ধরনের যোজক টিস্যু দেহত্বকের নিচে পেশির মধ্যে থাকে। এদের মাতৃকায় বিভিন্ন ধরনের তন্তুর আধিক্য দেখা যায় 

(ii) স্কেলিটাল যোজক টিস্যু (Skeletal Connective Tissue): 

দেহের অভ্যন্তরীণ কাঠামো গঠনকারী টিস্যুকে স্কেলিটাল যোজক টিস্যু বলে। এই টিস্যু দেহের অভ্যন্তরীণ কাঠামো গঠন করে দেহকে নির্দিষ্ট আকৃতি এবং দৃঢ়তা দেয়। অঙ্গ সঞ্চালন এবং চলনে সহায়তা করে। মস্তিষ্ক, মেরুরজ্জু, ফুসফুস, হৃদপিন্ড এরকম দেহের নরম ও নাজুক অঙ্গগুলোকে রক্ষা করে। বিভিন্ন ধরনের তন্ত্রকণিকা উৎপাদন করে। ঐছিক পেশিগুলোর সংযুক্তির ব্যবস্থা করে। গঠনের ভিত্তিতে স্কেলিটাল যোজক টিস্যু দুধরনের হয়। যেমন- কোমলাস্থি এবং অস্থি।

 

কোমলাস্থি (Cartilage): কোমলাস্থি এক ধরনের নমনীয় স্কেলিটাল যোজক টিস্যু। মানুষের নাক ও কানের পিনা কোমলাস্থি দিয়ে তৈরি। 

অস্থি: অস্থি বিশেষ ধরনের দৃঢ় ভঙ্গুর এবং অনমনীয় স্কেলিটাল কানেকটিভ টিস্যু। এদের মাতৃকায় ক্যালসিয়াম জাতীয় পদার্থ জমা হয়ে অস্থির দৃঢ়তা প্রদান করে। 

 

(iii) তরল যোজক টিস্যু (Fluid connective tissue):

তরল টিস্যুর মাতৃকা তরল। মাতৃকায় বিভিন্ন ধরনের জৈব পদার্থ দ্রবীভূত অবস্থায় থাকে। এই টিস্যুর প্রধান কাজ দেহের অভ্যন্তরে বিভিন্ন দ্রব্যাদি পরিবহন করা, রোগ প্রতিরোধ করা এবং রক্ত জমাট বাঁধায় বিশেষ ভূমিকা রাখা। তরল যোজক টিস্যু দুই ধরনের,

  • রক্ত এবং
  • লসিকা।

রক্ত (Blood): 

রক্ত এক ধরনের ক্ষারীয়, ঈসৎ লবণাক্ত এবং লালবর্ণের তরল যোজক টিস্যু। ধমনি, শিরা ও কৈশিকনালির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে রক্ত অভ্যন্তরীণ পরিবহনে অংশ নেয়। উষ্ণ রক্তবাহী প্রাণীর দেহে রক্ত তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষা করে। রক্তের উপাদান দুটি- রক্তরস ও রক্তকণিকা। রক্তরস (Plasma) রক্তের তরল অংশ, এর রং ঈসৎ হলুদাভ। এর প্রায় 91-92% অংশ পানি এবং 8-9% অংশ জৈব ও অজৈব পদার্থ। এসব রক্তরসের বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন এবং বর্জ্য পদার্থ থাকে। রক্তকলিকা তিন ধরনের, যথা- লোহিত রপ্তকণিকা (Erythrocyte বা red blood corpuscles বা RBC), শ্বেত রক্তকণিকা (Leukocyte বা white blood corpuscles WBC) এবং অনুচক্রিকা (Thrombocytes Blood platelet)।

  1. লোহিত রক্তকণিকায় হিমোগ্লোবিন নামে একটি লৌহজাত যৌগ থাকে, যার জন্য রক্ত লাল হয়। হিমোগ্লোবিন অক্সিজেনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি অক্সিহিমোগ্লোবিন যৌগ গঠন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেন পরিবহন করে।
  2. শ্বেত রক্ত কণিকা জীবাণু ধ্বংস করে দেহের প্রকৃতিগত আত্মরক্ষায় অংশ নেয়।
  3. অনুচক্রিকা রক্ত জমাট বাধায় অংশ নেয়। 

লসিকা:

মানবদেহে বিভিন্ন টিস্যুর মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানে (Intercellular space) যে জলীয় পদার্থ জমা হয় তাকে লসিকা বলে। লসিকা ঈসৎ হলুদ বর্ণের তরল পদার্থ। এর মধ্যে কিছু রোগপ্রতিরোধী কোষ থাকে, এদের লসিকাকোষ (Lymphoid cell) বলে।

(c) পেশি টিস্যু (Muscular Tissue): 

ভ্রূণের মেসোডার্ম থেকে তৈরি সংকোচন ও প্রসারণশীল বিশেষ ধরনের টিস্যুকে পেশি টিস্যু বলে। এদের মাতৃকা প্রায় অনুপস্থিত। পেশিকোষগুলো সরু লম্বা এবং তন্তুময়। যেসব তন্তুতে আড়াআড়ি ডোরাকাটা থাকে, তাদের ডোরাকাটা পেশি (Striated muscle) এবং ডোরাবিহীন তন্তুকে মসৃণ পেশি (Smooth muscle) বলে। পেশিকোষ সংকোচন এবং প্রসারণের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অঙ্গ সঞ্চালন, চলন ও অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ঘটায়। অবস্থান গঠন এবং কাজের ভিত্তিতে পেশি টিস্যু তিন ধরনের, 

  1. (i) ঐচ্ছিক পেশি 
  2. (ii) অনৈচ্ছিক পেশি এবং 
  3. (iii) হৃৎপেশি।

অভ্যন্তরীণ পরিবহন ঘটায়। অবস্থান, গঠন এবং কাজের ভিত্তিতে পেশি টিস্যু তিন ধরনের, ঐচ্ছিক পেশি, অনৈচ্ছিক পেশি এবং হৃদপেশি।

 

(i) ঐচ্ছিক পেশি (Voluntary) বা ডোরাকাটা পেশি (Striated muscle): 

  1. এই পেশি প্রাণীর ইচ্ছানুযায়ী সংকুচিত বা প্রসারিত হয়। 
  2. ঐচ্ছিক পেশিটিস্যুর কোষগুলো নলাকার, শাখাবিহীন ও আড়াআড়ি ডোরাযুক্ত হয়। এদের সাধারণত একাধিক নিউক্লিয়াস থাকে। 
  3. এই পেশি দ্রুত সংকুচিত এবং প্রসারিত হতে পারে। ঐচ্ছিক পেশি অস্থিতন্ত্রে সংলগ্ন থাকে। উদাহরণ: মানুষের হাত এবং পায়ের পেশি।

 

(ii) অনৈচ্ছিক পেশি (Involuntary muscle) মসৃণ পেশি (Smooth muscle): 

  1. এই পেশি টিস্যুর সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়।
  2. এ পেশির কোষগুলো মাকু আকৃতির। এদের গায়ে আড়াআড়ি দাগ থাকে না। এজন্য এ পেশিকে মসৃণ পেশি বলে।
  3. মেরুদণ্ডী প্রাণীদের রক্তনালি, পৌষ্টিকনালি ইত্যাদির প্রাচীরে অনৈচ্ছিক পেশি থাকে।
  4. অনৈচ্ছিক পেশি প্রধানত দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ্যাদির সঞ্চালনে অংশ নেয়। যেমন- খাদ্য হজম প্রক্রিয়ায় অন্ত্রের ক্রমসংকোচন।

 

(iii) কার্ডিয়াক পেশি বা হৃদপেশি (Cardiac muscle): 

এ পেশি মেরুদন্ডী প্রাণীদের হৃৎপিন্ডের এক বিশেষ ধরণের অনৈচ্ছিক পেশি। এই টিস্যুর কোষগুলো নলাকৃতির (অনেকটা ঐচ্ছিক পেশির মতো), শাখান্বিত ও আড়াআড়ি দাগযুক্ত। এই টিস্যুর কোষগুলোর মধ্যে ইন্টারক্যালাটেড ডিস্ক (Intercalated disc) থাকে। এদের সংকোচন ও প্রসারণ প্রাণীর ইচ্ছাধীন নয়। অর্থাৎ কার্ডিয়াক পেশির গঠন ঐচ্ছিক পেশির মতো হলেও কাজ অনৈচ্ছিক পেশির মত। কার্ডিয়াক পেশির কোষগুলো শাখার মাধ্যমে পরস্পর যুক্ত থাকে। হৃদপিন্ডের সব কার্ডিয়াক পেশি সমন্বিতভাবে সাকুচিত ও প্রসারিত হয়। মানব ভ্রূণ সৃষ্টির একটা বিশেষ পর্যায় থেকে মৃত্যুর পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত হৃদপিন্ডের কার্ডিয়াক পেশি একটা নির্দিষ্ট গতিতে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়ে দেহের মধ্যে রক্ত চলাচল প্রক্রিয়া সচল রাখে।

(d) স্নায়ু টিস্যু (Nerve tissue)

দেহের বিশেষ সংবেদী কোষ নিউরন বা স্নায়ুকোষগুলো একত্রে স্নায়ু টিস্যু গঠন করে। স্নায়ু টিস্যু অসংখ্য নিউরন দিয়ে গঠিত। স্নায়ু টিস্যু পরিবেশ থেকে উদ্দীপনা, যেমন তাপ, স্পর্শ, চাপ ইত্যাদি গ্রহণ করে দেহের ভিতরে মস্তিষ্কে বহন করে এবং মস্তিষ্কের বিশ্লেষণের পর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত কাজ করে থাকে। একটি আদর্শ নিউরনের তিনটি অংশ থাকে- কোষদেহ, ডেনড্রাইট এবং অ্যাক্সন। নিউরন কোষ বহুভুজাকৃতি এবং নিউক্লিয়াসযুক্ত। কোষের সাইটোপ্লাজমে মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজিবডি, রাইবোজোম, এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলাম ইত্যাদি থাকে। তবে নিউরনের সাইটোপ্লাজমে সক্রিয় সেন্ট্রিওল থাকে না বলে নিউরন বিভাজিত হয় না। কোষদেহের চারদিকের শাখাযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রলম্বিত অংশকে ডেনড্রন বলে। ডেনড্রন থেকে যে শাখা বের হয়, তাদের ডেনড্রাইট বলে। ডেনড্রাইটের সংখ্যা এক একাধিক হতে পারে।

নিউরনের কোষদেহ থেকে একটি লম্বা স্নায়ুতন্ত্র পরবর্তী নিউরনের ডেনড্রাইটের সাথে যুক্ত থাকে, তাকে অ্যাক্সন বলে। একটি নিউরনের একটিমাত্র অ্যাক্সন থাকে। পরপর দুটি নিউরনে প্রথমটির আক্সন এবং পরেরটির ডেনড্রাইটের মধ্যে একটি স্নায়ুসন্ধি গঠিত হয়, তাকে সিন্যাপস (Synapse) বলে। সিন্যাপসের মধ্য দিয়েই একটি নিউরন থেকে উদ্দীপনা পরবর্তী নিউরনে পরিবাহিত হয়। স্নায়ুটিস্যু উদ্দীপনা গ্রহণ করে মস্তিষ্কে প্রেরণ করে এবং তাতে সাড়া দেয়। উচ্চতর প্রাণীতে স্নায়ুটিস্যু স্মৃতি সংরক্ষণ (Memorise) করাসহ দেহের বিভিন্ন অংশের কাজ নিয়ন্ত্রণ এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে।