10 Minute School
Log in

একমুখী উভমুখী বিক্রিয়া (Irreversible and Reversible Reaction)

প্রশ্ন : উভমুখী ও একমুখি বিক্রিয়া কী? (What is Irreversible and Reversible Reaction)

উত্তর:

যে বিক্রিয়ায় উৎপন্ন পদার্থগুলো তাদের আন্তঃক্রিয়ার কারণে পুনরায় মূল বিক্রিয়ক পদার্থে পরিণত হয় না, তাকে একমুখী (Irreversible) বিক্রিয়া বলে। ভিন্নভাবে বলা যায়, যে বিক্রিয়া শুধু সম্মুখদিকে অগ্রসর হয় তাকে একমুখী বিক্রিয়া বলে এরূপ বিক্রিয়া লেখার সময় তীর (\rightarrow) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।

উদাহরণ: (Example) 

১। পটাশিয়াম ক্লোরেট \left(\mathrm{KClO}_{3}\right) কে খোলা পাত্রে উত্তপ্ত করলে পটাশিয়াম ক্লোরাইড (\mathrm{KCl}) ও অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। কিন্তু \mathrm{KCl}\mathrm{O}_{2} বিক্রিয়া করে পুনরায় \mathrm{KClO}_{3} উৎপন্ন করে না। সুতরাং, \mathrm{KClO}_{3} এর তাপীয় বিয়োজন একটি একমুখী বিক্রিয়া।

2 \mathrm{KClO}_{3}(s) \stackrel{\Delta}{\longrightarrow} 2 \mathrm{KCl}(s)+3 \mathrm{O}_{2}(g)

২। অধিকাংশ আয়নিক বিক্রিয়াই একমুখী। যেমন, \mathrm{AgNO}_{3} ও \mathrm{KCl} এর জলীয় দ্রবণ পরস্পর মিশ্রিত করলে \mathrm{AgCl} অধঃক্ষেপ পড়ে ও \mathrm{KNO}_{3} উৎপন্ন হয়। কিন্তু অধঃক্ষেপ \mathrm{AgCl} \mathrm{KNO}_{3} পরস্পরে বিক্রিয়া করে পুনরায় \mathrm{AgNO}_{3} ও \mathrm{KCl} উৎপন্ন করে না। 

\mathrm{AgNO}_{3}(\mathrm{aq})+\mathrm{KCl}(\mathrm{aq}) \longrightarrow \mathrm{AgCl}(\mathrm{s}) \downarrow+\mathrm{KNO}_{3}(\mathrm{aq})

একমুখী বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য: (Characteristics of Irreversible Reaction):

১। বিকারক পদার্থ জবা পদার্থগুলো সম্পূর্ণ বিক্রিয়া করে উৎপাদ পদার্থ উৎপন্ন করে।

২। উৎপন্ন উৎপাদ পদার্থ বা পদার্থগুলো বিভিন্ন করে পুনরায় বিকারক পদার্থে রূপান্তরিত হতে পারে না।

৩। মুক্তশক্তি পরিবর্তন (\Delta G) শূন্য অপেক্ষা কম অর্থাৎ, ঋণাত্মক হয়। \Delta G=-v e

কোন বিক্রিয়ায় বিক্রিয়ক পদার্থসমূহের মধ্যে বিক্রিয়ার ফলে যেমন উৎপাদ তৈরি হয়, তেমনি উৎপাদসমূহের মধ্যে বিক্রিয়ার ফলে বিক্রিয়ক পদার্থগুলো পুনরায় তৈরি হতে পারে, এরূপ বিক্রিয়াকে উভমুখী (Reversible) বিক্রিয়া বলে। প্রকৃতপক্ষে একটি উভমুখী বিক্রিয়া দুটি বিক্রিয়ার সমষ্টি। এর মধ্যে প্রথমটি সম্মুখ বিক্রিয়া এবং দ্বিতীয়টি পশ্চাৎমুখী বিক্রিয়া। এরূপ বিক্রিয়ার সমীকরণে উৎপাদ ও বিক্রিয়কের মধ্যে একটি বিপরীতমুখী জোড়া তীর চিহ্ন (\rightleftharpoons) থাকে। যেমন, 2 \mathrm{HI} \rightleftharpoons \mathrm{H}_{2}+\mathrm{I}_{2}

এই বিক্রিয়ার সম্মুখমুখী বিক্রিয়া হলো 2 \mathrm{HI} \rightarrow \mathrm{H}_{2}+\mathrm{I}_{2} এবং বিক্রিয়াটির পশ্চাৎমুখী বিক্রিয়া হলো     2 \mathrm{HI} \rightarrow \mathrm{H}_{2}+\mathrm{I}_{2} নিচে উভমুখী বিক্রিয়ার আরও কয়েকটি উদাহরণ দেয়া হলো :

\mathrm{N}_{2}+3 \mathrm{H}_{2} \rightleftharpoons 2 \mathrm{NH}_{3} ; \mathrm{NH}_{3}+\mathrm{HCl} \rightleftharpoons \mathrm{NH}_{4} \mathrm{Cl} ; \mathrm{PCl}_{5} \rightleftharpoons \mathrm{PCl}_{3}+\mathrm{Cl}_{2}

উভমুখী বিক্রিয়ার বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Reversible Reaction):

১। উভমুখী বিক্রিয়ায় সম্মুখ ও বিপরীত দিকে বিক্রিয়া একই সাথে সংঘটিত হয়।

২। উভমুখী বিক্রিয়া অসম্পূর্ণতার জন্য এ ধরণের বিক্রিয়ায় বিক্রিয়কগুলো কখনোই নিঃশেষিত হয় না।

৩। এ ধরণের বিক্রিয়ায় সম্মুখ ও বিপরীত দিকে বিক্রিয়ার হার সমান হলে বিক্রিয়াটি সাম্যাবস্থা অর্জন করে।

৪। \Delta G=0

উভমুখী বিক্রিয়াকে একমুখী করার উপায় (Way to make Reversible Reaction as Irreversible Reaction): উভমুখী বিক্রিয়াকে বিভিন্নভাবে একমুখী করা যায়। কারণ, উভমুখী বিক্রিয়া অসম্পূর্ণ। যেমন, কোন বিক্রিয়ার একটি উৎপাদকে যদি ক্রমাগত বিক্রিয়াস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া যায়, তাহলে বিপরীত বিক্রিয়াটি সংঘটিত হতে পারে না। অর্থাৎ, তখন উভমুখী সাম্যাবস্থা আর থাকে না। 

এ সংক্রান্ত কতিপয় উদাহরণ হচ্ছে (Few Examples): 

১। বিক্রিয়কগুলো যদি কঠিন অথবা তরল হয় এবং একটি উৎপাদ গ্যাসীয় হলে তা সহজেই বিক্রিয়াস্থল থেকে অপসারিত হয়ে পড়ে। ফলে উভমুখী বিক্রিয়াটি একমুখী হয়। যেমন, বদ্ধ পাত্রে ক্যালসিয়াম কার্বনেটের তাপীয় বিয়োজন উভমুখী; কিন্তু খোলা পাত্রে ও বিক্রিয়া চালালে বিক্রিয়াটি একমুখী হয়। কারণ উৎপাদ CO2 গ্যাস উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথেই বিক্রিয়া বিক্রিয়াস্থল ত্যাগ করে যায়।

\mathrm{CaCO}_{3}(s) \stackrel{\Delta}{\leftrightharpoons} \mathrm{CaO}(s)+\mathrm{CO}_{2}(g)( বদ্ধ পাত্রে ) ; \mathrm{CaCO}_{3}(s) \stackrel{\Delta}{\longrightarrow} \mathrm{CaCO}(s)+\mathrm{CO}_{2}(g)( খোলা পাত্রে ) 

২। কোন বিক্রিয়ার দ্রবণ থেকে একটি উৎপাদ অধঃক্ষিপ্ত হলে বিক্রিয়াটি একমুখী হয়। যেমন, সোডিয়াম সালফেটের দ্রবণে বেরিয়াম ক্লোরাইডের দ্রবণ যোগ করলে বেরিয়াম সালফেটের অধঃক্ষেপ উৎপন্ন হয়।

\mathrm{Na}_{2} \mathrm{SO}_{4}(a q)+\mathrm{BaCl}_{2}(a q) \longrightarrow \mathrm{BaSO}_{4}(s)+2 \mathrm{NaCl}(a q)

3। বিক্রিয়ার পরিবেশ থেকে কোন উৎপাদকে রাসায়নিকভাবে সরিয়ে নেয়া হলে উভমুখী বিক্রিয়া একমুখী হয়। যেমন, ইথাইল ইথানয়েট এর সাথে পানির বিক্রিয়ায় ইথানল ও ইথানোয়িক এসিড উৎপন্ন হয়। এ বিক্রিয়া একটি উভমুখী বিক্রিয়া।

\mathrm{CH}_{3} \mathrm{COOHC}_{2} \mathrm{H}_{5}+\mathrm{H}_{2} \mathrm{O} \leftrightharpoons \mathrm{C}_{2} \mathrm{H}_{5} \mathrm{OH}+\mathrm{CH}_{3} \mathrm{COOH}

                 ইথাইল ইথানয়েট        পানি              ইথানল         ইথানোয়িক এসিড

বিক্রিয়ার মিশ্রণের মধ্যে সোডিয়াম হাইড্রোক্সাইড যোগ করলে, তা সাথে সাথে উৎপাদিত ইথানোয়িক এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে সোডিয়াম ইথানোয়েট ও পানি উৎপন্ন করে। ফলে বিপরীত বিক্রিয়া সংঘটিত হতে পারে না। তখন সম্পূর্ণ বিক্রিয়াকে নিম্নলিখিতভাবে প্রকাশ করা যায়।

\begin{array}{l} \begin{array}{lllll} & \mathrm{CH}_{3} \mathrm{COOHC}_{2} \mathrm{H}_{5} & +\mathrm{H}_{2} \mathrm{O} \longrightarrow \mathrm{CH}_{3} \mathrm{COOH} & +\mathrm{C}_{2} \mathrm{H}_{5} \mathrm{OH} \\ & \mathrm{CH}_{3} \mathrm{COOH} & +\mathrm{NaOH} \longrightarrow \mathrm{CH}_{3} \mathrm{COONa} & +\mathrm{H}_{2} \mathrm{O} \\ \text { যোগ করে, } & \mathrm{CH}_{3} \mathrm{COOC}_{2} \mathrm{H}_{5} & +\mathrm{NaOH} \longrightarrow \mathrm{C}_{2} \mathrm{H}_{5} \mathrm{OH} & +\mathrm{CH}_{3} \mathrm{COONa} \\ \hline & \text { ইথাইল ইথানোয়েট } &  \text { ইথানল } & \text { সোডিয়াম ইথানেট } \end{array}\\ \end{array}

বিক্রিয়ার হার, বিক্রিয়া হার ধ্রুবক এবং বিক্রিয়ার হারের উপর বিস্তারকারী নিয়ামক সমূহ(Reaction Rate, Constant Reaction Rate and Regulators influencing the reaction rate)

প্রশ্ন : রাসায়নিক বিক্রিয়ার হার ধ্রুবক কী (What is the Reaction Rate constant)?

উত্তর:

একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক ঘনমাত্রার বিক্রিয়কসমূহের বিক্রিয়ার হারকে ঐ তাপমাত্রায় প্রদত্ত বিক্রিয়ার হার ধ্রুবক বলে। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বিক্রিয়কগুলোর একক ঘনমাত্রায়, কোনো বিক্রিয়ার হার কিরূপ হবে তা বিক্রিয়াটির হার ধ্রুবক দ্বারা প্রকাশ করা যায়। 

উদাহরণ (Example): 

একটি সাধারণ বিক্রিয়া a A+b B \rightarrow c C+d D বিবেচনা করা যাক। যদি বিক্রিয়াটি হার সমীকরণে বিক্রিয়ক A ও B এর ঘনমাত্রার ঘাত (Power) a ও b হয় তবে বিক্রিয়াটির হার \alpha[A]^{a}[B]^{b} বা, বিক্রিয়ার হার=k[A]^{a}[B]^{b}, এখানে k একটি ধ্রুবক, একে বিক্রিয়ার হার ধ্রুবক বলে। যদি প্রতিটি বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা একক হয় অর্থাৎ, [A]=1 M এবং [B]=1 M হয় তবে বিক্রিয়ার হার =k

হার ধ্রুবকের বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Constant Reaction Rate):

(ক) একটি নির্দিষ্ট বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় হার ধ্রুবকের মান নির্দিষ্ট হয়।

(খ) একটি নির্দিষ্ট বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে হার ধ্রুবকের মান বিক্রিয়কের ঘনমাত্রার উপর নির্ভর করে না।

(গ) কোন বিক্রিয়ার হার ধ্রুবকের মান জানা থাকলে বিক্রিয়ার হার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। যেমন, হার ধ্রুবকের মান বেশি হলে বিক্রিয়ার হার বেশি হয় এবং হার ধ্রুবকের মান কম হলে বিক্রিয়ার হার কম হয়।

বিক্রিয়ার হার বা বেগ এবং হার ধ্রুবকের মধ্যে পার্থক্য লিখ (Differences between Reaction Rate and Constant Reaction Rate):

বিক্রিয়ার হার  বিক্রিয়ার হার ধ্রুবক
(১) প্রতি একক সময়ে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়া যতটুকু সম্পন্ন হয়, তাকে ঐ বিক্রিয়ার বিক্রিয়ার-হার বলে। (১) বিক্রিয়কগুলোর একক মোলার ঘনমাত্রা কোনো বিক্রিয়ার হারকে ঐ বিক্রিয়ার হার-ধ্রুবক বলে।
(২) তাপমাত্রার পরিবর্তন বিক্রিয়ার হার পরিবর্তিত হয়। (২) তাপমাত্রার পরিবর্তনে বিক্রিয়ার হার ধ্রুবকের মানও পরিবর্তিত হয়।
(৩) তাপমাত্রা স্থির রেখে বিক্রিয়কগুলোর ঘনমাত্রার পরিবর্তন করলে বিক্রিয়ার হারের পরিবর্তন ঘটে। (৩) তাপমাত্রা স্থির রেখে বিক্রিয়কগুলোর ঘনমাত্রা পরিবর্তন করলেও হার ধ্রুবকের মানের কোনো পরিবর্তন ঘটে না।
(৪) বিক্রিয়ার হার ঘনমাত্রার ওপর নির্ভর করে। (৪) হার ধ্রুবক (k) ঘনমাত্রার ওপর নির্ভর করে না।
(৫) বিক্রিয়ার হারের একক \operatorname{molL}^{-1} s^{-1} বা, M s^{-1}। (গ্যাসীয় বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে \left.a t m s^{-1}\right)।  (৫) হার ধ্রুবকের একক হার সূত্রমতে পরীক্ষা নির্ভর বিক্রিয়ার ক্রম (reaction order) এর ওপর নির্ভর করে। 

প্রশ্ন : উভমুখী বিক্রিয়ার মুক্ত শক্তির পরিবর্তন শূন্য কেন (Why the change in the free energy of the bilateral reaction is zero)?

উত্তর:

উভমুখী বিক্রিয়ার সাম্যাবস্থায় মুক্ত শক্তির পরিবর্তন শূন্য। কারণ উভমুখী বিক্রিয়ার সাম্যাবস্থায় সম্মুখ বিক্রিয়ার গতিবেগ পশ্চাৎমুখী বিক্রিয়ার গতিবেগের সমান। তাই সম্মুখ বিক্রিয়ায় মুক্ত শক্তির যে পরিবর্তন ঘটে, বিপরীত বিক্রিয়ায় তার সমান কিন্তু বিপরীত চিহ্নের মুক্ত শক্তির পরিবর্তন ঘটে। এ কারণে মুক্ত শক্তির পরিবর্তন উভমুখী বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে শূন্য হয়।

প্রশ্ন : রাসায়নিক বিক্রিয়ার হার কী? গাণিতিকভাবে ব্যাখ্যা কর। (What is Reaction Rate)

উত্তর :

প্রতি সেকেন্ডে বা একক সময়ে বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা যে পরিমাণ হ্রাস পায় অথবা উৎপাদের ঘনমাত্রা যে পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাকে বিক্রিয়ার হার বলে।

অর্থাৎ, বিক্রিয়ার হার =\frac{\text { বিক্রিয়ক বা উৎপাদের ঘনমাত্রা পরিবর্তন }}{\text { ঐ পরিবর্তনের ব্যয়িত সময় }} 

বিক্রিয়ার হারের একক =\frac{\text { মোল/লিটার }}{\text { সেকেন্ড }} 

= মোল/লিটার/সেকেন্ড

বিক্রিয়ার হারের একক = মোল লিটা^{-1}সেকেন্ড^{-1}\left(\operatorname{molL}^{-1} s^{-1}\right)

বিক্রিয়ার হারকে গাণিতিকভাবে নিম্নরূপে প্রকাশ করা যায়।

মনে করি, A \rightarrow P বিক্রিয়ার জন্য t_{1} সময়ে A-এর ঘনমাত্রা x_{1} \mathrm{molL}^{-1} ; t_{2} সময়ে আরও A উৎপাদ P-তে পরিণত হওয়ার A-এর ঘনমাত্রা হ্রাস পেয়ে x_{2} \mathrm{molL}^{-1} হলো।

এক্ষেত্রে A-এর ঘনমাত্রায় পরিবর্তন \left(x_{2}-x_{1}\right)=d x \operatorname{mol} L^{-1}

তাহলে A-এর ঘনমাত্রায় হ্রাস =x_{1}-x_{2}=\left(x_{2}-x_{1}\right)=-d x \operatorname{mol} L^{-1} 

(এখানে x_{2}<x_{1} হওয়ায় d x ঋণাত্মক)

এবং সময়ের পরিবর্তন =t_{2}-t_{1}=d t

d t সময়ে বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা হ্রাস =-d x \operatorname{mol} L^{-1}

অতএব, একক সময়ে বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা হ্রাস =-\frac{d x}{d t} \operatorname{molL}^{-1} s^{-1}

অর্থাৎ, একক সময়ে একটি বিক্রিয়ার বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা হ্রাসের পরিমাণকে ঐ বিক্রিয়ার হার বলে।

একইভাবে, ঐ একই সময় t_{1}-এ উৎপাদ P-এর ঘনমাত্রা y_{1} \operatorname{molL}^{-1} এবং t_{2} সময়ে y_{2} \operatorname{molL}^{-1} হলে একক সময়ে উৎপাদের ঘনমাত্রা বৃদ্ধির হার =\frac{y_{2}-y_{1}}{t_{2}-t_{1}}=\frac{d y}{d t} \operatorname{mol} L^{-1} s^{-1}

(যেহেতু সময়ের সাথে উৎপাদের ঘনমাত্রা বৃদ্ধি পায় তাই y_{2}>y_{1} এবং এ জন্য \frac{d y}{d t} ধনাত্মক)

লেখচিত্রের সাহায্যেও বিক্রিয়ার হারকে ব্যাখ্যা করা যায়। একটি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সময়ের সাথে বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা বৃদ্ধি পায়। বিক্রিয়ক ও উৎপাদের ঘনমাত্রার পরিবর্তন সময়ের বিপরীতে বসিয়ে গ্রাফ অঙ্কন করলে নিম্ন রূপচিত্র পাওয়া যায়।

সময় বনাম ঘনমাত্রা

ঘনমাত্রা বনাম সময় লেখচিত্রের যে কোনো বিন্দুতে স্পর্শক এঁকে তার ঢাল থেকে বিক্রিয়ার হার নির্ণয় করা যায়।

সময়ের সাথে বিক্রিয়ক ও উৎগাদের ঘনমাত্রা পরিবর্তন

এ লেখচিত্র মতে বিক্রিয়ার হার =\frac{-d c}{d t}=\frac{d x}{d t}

‘ক’ বক্র রেখার স্পর্শকের ঢাল =-\frac{d x}{d t}=\frac{-\text { বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা বৃদ্ধি }}{\text { ঘনমাত্রা বৃদ্ধিতে ব্যয়িত সময় }}= বিক্রিয়ার হার 

অনুরূপভাবে ‘খ’ বক্র রেখার স্পর্শকের ঢাল =\frac{d y}{d t}=\frac{\text { উৎপাদের ঘনমাত্রা বৃদ্ধি }}{\text { ঘনমাত্রা বৃদ্ধিতে ব্যয়িত সময় }}= বিক্রিয়ার হার 

image not found sheet 3

মনে করি, বিক্রিয়া শুরুর পর 15 সেকেন্ড সময়ে বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা 0.1 মোল লিটার^{-1}30 সেকেন্ড পর বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা যদি হ্রাস পেয়ে 0.05 মোল লিটার^{-1} হয় তাহলে – 

(30-15)=15 সেকেন্ডে বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা হ্রাস =(0.1-0.05) মোল লিটার^{-1} 

=0.05 মোল লিটার^{-1} 

অতএব, 1 সেকেন্ডে বিক্রিয়কের ঘনমাত্রা হ্রাস = 0.05/15 মোল লিটার^{-1} 

=0.0033 মোল লিটার^{-1} 

আবার, যদি বিক্রিয়া শুরুর 15 সেকেন্ড পর উৎপাদের ঘনমাত্রা 0.7 মোল লিটার^{-1} এবং 30 সেকেন্ড পর উৎপাদের ঘনমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে 0.12 মোল লিটার^{-1} হয়।

তাহলে – 

(30-15)=15 সেকেন্ডে উৎপাদের ঘনমাত্রা বৃদ্ধি = (0.12-0.07) মোল লিটার^{-1} 

=0.05 মোল লিটার^{-1} 

অতএব, 1 সেকেন্ডে উৎপাদকের ঘনমাত্রা বৃদ্ধি =\frac{0.05}{15} মোল লিটার^{-1} 

=0.0033 মোল লিটার^{-1} 

বিক্রিয়ক এবং উৎপাদের সাপেক্ষে বিক্রিয়ার হার সমান হবে কী (What will be the reaction rate equal to the reactant and the product)?

উত্তর:

বিক্রিয়ক এবং উৎপাদের মোলসংখ্যা না হলে -\frac{d c}{d t} \neq \frac{d x}{d t}। তখন মোল আনুপাতিক সম্পর্কের মাধ্যমে বিক্রিয়ার হার সমান ধরা হয়। যেমন – একটি সাধারণ বিক্রিয়া a A+b B \rightarrow d D+e E এর জন্য

বিক্রিয়ার হার =-\frac{\Delta[A]}{a \Delta t}=-\frac{\Delta[B]}{b \Delta t}=\frac{\Delta[D]}{d \Delta t}=\frac{\Delta[E]}{e \Delta t}

এখানে, \frac{\Delta[A]}{\Delta t}, \frac{\Delta[B]}{\Delta t}, \frac{\Delta[D]}{\Delta t} এবং \frac{\Delta[E]}{\Delta t} যথাক্রমে A, B, D এবং E– এর সাপেক্ষে বিক্রিয়ার হার।

প্রশ্ন : রাসায়নিক বিক্রিয়ার সংঘর্ষ তত্ত্ব ব্যাখ্যা কর (Define the collision theory of chemical reactions)

উত্তর :

সংঘর্ষ তত্ত্ব (Collision Theory): গ্যাসীয় অবস্থায় দ্বি-আণবিক বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে সংঘর্ষ তত্ত্ব দ্বারা বিক্রিয়ার ধারা ব্যাখ্যা করা প্রথমত সম্ভব হলেও তা দ্রবণে বিক্রিয়কসমূহের বেলায়ও সমভাবে কার্যকরী প্রমাণিত হয়।

বিক্রিয়া সংঘটনের –

প্রথম শর্ত হলো (First Condition) – বিক্রিয়ার অংশগ্রহণকারী কণাগুলো যেমন – অণু, পরমাণু বা আয়ন এর মধ্যে সংঘর্ষ হতে হবে।

দ্বিতীয় শর্ত হলো (Second Condition) – বিক্রিয়ক পদার্থের মধ্যে সংঘটিত “সংঘর্ষ” অবশ্যই একটি নির্দিষ্ট ন্যূনতম শক্তি সহযোগে হতে হবে।

তৃতীয় শর্ত হলো (Third Condition) – বিক্রিয়ক পদার্থের মধ্যে “সংঘর্ষ” একটি নির্দিষ্ট দিক বিন্যাস সহযোগে হতে হবে।

উপরোক্ত শর্তগুলোকে আরহেনিয়াসের সমীকরণ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। যেমন –

image not found sheet 4

ব্যাখ্যা (Explanation): প্রথম শর্ত ও দ্বিতীয় শর্ত মতে বিক্রিয়কগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটতে হবে এবং সংঘর্ষটি একটি নির্দিষ্ট ন্যূনতম শক্তি সহকারে হতে হবে। ফলে বিক্রিয়ক অণু বা কণাগুলো একে অপরের সাথে ধাক্কা খেয়ে পুরাতন বন্ধন ভেঙ্গে নতুন বন্ধন সৃষ্টি করতে পারে। অনুগুলোর মধ্যে সংঘর্ষকে নিম্নরূপ দেখানো যায় –

চিত্রঃ বিক্রিয়ক পদার্থের অণুগুলোর মধ্যে ব্যর্থ সংঘর্ষ ও সার্থক সংঘর্ষ

প্রশ্ন : রাসায়নিক বিক্রিয়ায় সংঘর্ষ তত্ত্ব ব্যাখ্যা কর। (Define the collision theory of chemical reaction).

উত্তর :

চিত্র থেকে সুস্পষ্ট যে, ১ম চিত্রে পর্যাপ্ত শক্তি সহকারে সংঘর্ষ না ঘটায় অণুর পুরাতন বন্ধনের ভাঙ্গন ঘটেনি। অণুগুলো ফিরে গেছে পূর্বের অবস্থায়। কিন্তু ২য় চিত্রে পর্যাপ্ত শক্তিসহকারে উভয় অণুর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটেছে। তাই A ও B এর মধ্যবর্তী পুরানো বন্ধন ভেঙ্গে নতুনভাবে B ও C এর মধ্যে বন্ধন সৃষ্টি হওয়ায় নতুন অণু BC উৎপন্ন হয়েছে। এক্ষেত্রে গতিশক্তি স্থিতিশক্তি রূপে বন্ধন শক্তিতে রাপান্তরিত হয়েছে। । এখন তৃতীয় শর্ত মতে এ সংঘর্ষ উপযুক্ত শক্তিতে অণুর নির্দিষ্ট দিক থেকে ঘটতে হয়। এর ব্যাখ্যা নিম্নরূপ :

কোনো বিক্রিয়ক অণুর যে দিকে বড় গ্রুপ বা পরমাণু থাকে তার বিপরীত দিক থেকে কেন্দ্রীয় পরমাণুর সাথে অপর বিক্রিয়ক কণাগুলোর সংঘর্ষ ঘটলে তখন বিক্রিয়া ঘটতে পারে; নতুবা বিক্রিয়া ঘটবে না। বড় গ্রুপের স্থানিক বিন্যাসের কারণে আক্রমণকারী বিক্রিয়ক যে বাধা পায়, একে বড় গ্রুপ কর্তৃক স্থানিক বাধা বা স্টেরিক বাধা (Steric hindrance) বলা হয়। যেমন –

ক্লোরোফরম \left(\mathrm{CHCl}_{3}\right) অণুতে একটি কার্বন পরমাণুর সাথে তিন দিক থেকে তিনটি বড় আকারের ক্লোরিন পরমাণু ও অপরদিকে একটি ছোট আকারের \mathrm{H}-পরমাণু যুক্ত আছে; আলোর উপস্থিতিতে \mathrm{CHCl}_{3} এবং \mathrm{Cl}_{2} – এর বিক্রিয়াকালে প্রথমে ক্লোরিন অণু (\mathrm{Cl}) আলো শক্তির প্রভাবে বিয়োজিত হলে অধিক সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু বা ফ্রি-রেডিকেলে পরিণত হয়।

এখন, অধিক সক্রিয় ক্লোরিন পরমাণু প্রত্যাশিত শক্তি নিয়ে \mathrm{CHCl}_{3} অণুকে আক্রমণ করলেও তাদের মধ্যে বিক্রিয়া ঘটবে কী ঘটবে না তা নির্ভর করে সংঘর্ষকালীন ক্লোরোফরম অণুর \mathrm{H}-পরমাণুর ও \mathrm{Cl}-পরমাণুর সঠিক দিক বিন্যাসের উপর। ক্লোরোফরম অণুর যে দিকে \mathrm{H}-পরমাণু থাকে সেদিকে \mathrm{Cl}-পরমাণুর আক্রমণ ঘটলে, তবে বিক্রিয়া ঘটবে। অন্য তিনদিকে আক্রমণ করলে বিক্রিয়া ঘটবে না।

image not found sheet 4

\mathrm{Cl }_{2}  বা, \mathrm{Cl} \bullet \bullet \mathrm{Cl} \frac{\mathrm{hv}}{\text { আলো }} \mathrm{Cl} \bullet+\bullet \mathrm{Cl}

ক্লোরিন অণু                            ক্লোরিন পরমাণু

\mathrm{Cl}_{3} \mathrm{C} \bullet \bullet \mathrm{H}+\bullet \mathrm{Cl} \longrightarrow \mathrm{Cl}_{3} \mathrm{C} \bullet+\mathrm{H} \bullet \bullet \mathrm{Cl}
\mathrm{Cl}_{3} \mathrm{C} \bullet+\mathrm{Cl} \bullet \bullet \mathrm{Cl} \longrightarrow \mathrm{CCl}_{4}+\mathrm{Cl} \bullet
\mathrm{Cl}_{3} \mathrm{C} \bullet+\bullet \mathrm{Cl} \longrightarrow \mathrm{Cl}_{3} \mathrm{C} \bullet \bullet \mathrm{Cl }  বা, \mathrm{CCl}_{4}

image not found sheet 4

image not found sheet 4

সুতরাং, তত্ত্বের সারকথা : 

  1. বিক্রিয়ক কণাগুলোর মধ্যে ন্যূনতম শক্তির সংঘর্ষ ঘটবে; যা দ্বারা পুরাতন বন্ধন ভাঙবে এবং নতুন বন্ধন গড়বে। 
  2. স্থানিক সঠিক দিক থেকে সংঘর্ষ ঘটতে হবে।

প্রশ্ন : বিক্রিয়ার সক্রিয়ণ শক্তি এবং সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগ বলতে কি বুঝ (Activation energy)?

উত্তর:

কোনো বিক্রিয়ায় পারস্পরিক আণবিক সংঘর্ষ দ্বারা বা অন্য কোনো উপায়ে বিক্রিয়কের একটি অংশ বিক্রিয়কের গড়শক্তি অপেক্ষা যে অধিক শক্তি লাভ করে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণের উপযুক্ততা অর্জন করে, তাকে ঐ বিক্রিয়ার সক্রিয়ণ (activation energy, E_{a}) শক্তি বলে। বিক্রিয়কের যে অণুসমূহ উক্ত সক্রিয়ণ শক্তি লাভ করে তাদেরকে বলা হয় সক্রিয় অণু। সক্রিয় অণুগুলোই কেবল বিক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে এবং অবশিষ্ট অণুগুলো সক্রিয়ণকৃত না হওয়া পর্যন্ত বিক্রিয়ায় অংশ নিতে পারে না।

প্রয়োজনীয় সক্রিয়ণ শক্তি লাভ করার পর যখন দুটি সক্রিয় অণু পরস্পর নিকটে আসে, তখন তারা তাদের মধ্যস্থ পূর্বের বন্ধন ভেঙ্গে নতুন বন্ধন গড়তে থাকে। উভয় সক্রিয় অণুর মধ্যস্থ বন্ধন ভাঙা-গড়ার ক্ষণস্থায়ী এরূপ অবস্থাকে সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগ (activated complex) গঠন অবস্থা বলে। রাসায়নিক বিক্রিয়ার হার তাদের প্রস্তুতির উপর নির্ভর করে। পরে সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগ নির্দিষ্ট হারে বিয়োজিত হয়ে উৎপাদ সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ নিম্নোক্ত বিক্রিয়াটি বিবেচনা করা যাক। 

এখানে A অণু যখন BC এর নিকটে আসতে থাকে তখন B ও C এর মধ্যকার বন্ধন ক্রমশ দুর্বল হবে এবং A ও B এর মধ্যে নতুন বন্ধন সৃষ্টি হতে থাকবে। শেষে A, B ও C একত্রে একটি সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগ সৃষ্টি করবে যা বিয়োজিত হয়ে বিক্রিয়ার উৎপাদ তৈরি করবে।

A      +      B-C \longrightarrow A \ldots B \ldots \ldots . C \longrightarrow A-B    +    C

সক্রিয় অণু  সক্রিয় অণু       সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগ               উৎপাদ

সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগের স্থিতিশক্তি বিক্রিয়ক বা উৎপাদ অপেক্ষা বেশি এবং সর্বোচ্চ। বিক্রিয়ক উৎপাদে পরিণত হবার সময় স্থিতিশক্তির পরিবর্তন ঘটে। (A+B C) এর বর্তমান শক্তি এবং সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগের শক্তির মধ্যে পার্থক্যই হলো সক্রিয়ণ শক্তি \Delta E_{a}

বিক্রিয়ার অবস্থান্তর অবস্থা ও শক্তি-পর্বত (The transition state of the reaction):

বিক্রিয়ক থেকে উৎপাদে পরিণত হতে হলে বিক্রিয়ককে অবশ্যই একটি ‘শক্তির বাধা অতিক্রম করতে হবে। শক্তির এ বাধাকে শক্তি-পর্বত (Energy hill) বলে। সক্রিয় অণু দ্বারা শক্তি-পর্বত অতিক্রমের চূড়ান্ত পর্যায়ে অর্থাৎ, যে অবস্থায় সক্রিয় অনুগুলো উৎপাদ অণুতে রূপান্তরিত হতে শুরু করে সে মুহূর্তে একদিকে পরমাণু গুলোর মধ্যে পূর্বের বন্ধনের ভাঙ্গন ঘটে; অপরদিকে ঐ সব পরমাণুর মধ্যে নতুন বন্ধন গঠন শুরু হয়। সক্রিয় অণুগুলোর মধ্যে পূর্বের বন্ধন ভাঙ্গন ও নতুন বন্ধন গঠনের এরূপ অবস্থাকে বিক্রিয়ার অবস্থান্তর অবস্থা বলা হয়। বিক্রিয়ার এ অবস্থান্তর অবস্থাকে সক্রিয়ণকৃত জটিল গঠন অবস্থাও বলা হয়। শক্তি পর্বতের শীর্ষে সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগ এবং বামদিকের পাদদেশে বিক্রিয়ক এবং ডান দিকের পাদদেশে উৎপাদ অবস্থান করে। পাদদেশে অবস্থানকালে  বিক্রিয়কের স্থিতিশক্তি ও উৎপাদের স্থিতিশক্তির পার্থক্য হলো বিক্রিয়ার এনথালপি \Delta H=\left(E_{1}-E_{2}\right)। যদি বিক্রিয়কের স্থিতিশক্তি স্তর \left(E_{r}\right) অপেক্ষা উৎপাদের স্থিতিশক্তি স্তর \left(E_{p}\right) নিচে হয় তবে বিক্রিয়াটি তাপোৎপাদী, বিক্রিয়কের স্থিতিশক্তি স্তর\left(E_{r}\right) অপেক্ষা উৎপাদের স্থিতিশক্তি স্তর \left(E_{p}\right) উপরে থাকলে বিক্রিয়াটি তাপহারী হবে। উভয় চিত্র থেকে স্পষ্ট যে, \Delta H এর মান \left(E_{r}-E_{p}\right) এর মানের উপর নির্ভরশীল কিন্তু সক্রিয়ণ শক্তির উপর নির্ভরশীল নয়।

বিক্রিয়ার অগ্রগতি (%)

(ক)

বিক্রিয়ার অগ্রগতি (%)

(খ)

 স্থিতি শক্তি বনাম বিক্রিয়ার অগ্রগতি(%)

প্রশ্ন : বিক্রিয়ার হার ও সক্রিয়ণ শক্তির মাত্রার মধ্যে সম্পর্ক ব্যাখ্যা কর (Explain the relationship between reaction rate and activation energy level)?

উত্তর:

কোনো বিক্রিয়ায় সক্রিয়ণ শক্তি লাভ করে বিক্রিয়ক যে হারে সক্রিয়ণকৃত জটিল যৌগ গঠন করে মোট বিক্রিয়াটির পরীক্ষালব্ধ হার তার সমান হয়। অতএব, যে বিক্রিয়ার সক্রিয়ণ শক্তি বেশি তার গতির হার কম হবে এবং যে বিক্রিয়ার সক্রিয়ণ শক্তি কম তার গতির হার বেশি হবে। কেননা, সক্রিয়ণ শক্তি বেশি হলে অণুসমূহের পক্ষে সে পরিমাণ শক্তি সংগ্রহ করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। অন্য কথায় বলা যায়, বিক্রিয়ক অণুসমূহের মধ্যে খুবই কমসংখ্যক অণু প্রয়োজনীয় অধিক সক্রিয়ণ শক্তি সম্পন্ন হয়ে সক্রিয় অণুতে পরিণত হয় এবং বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে। ফলে ঐ বিক্রিয়ার হার কম হয়।

অপরদিকে সক্রিয়ণ শক্তি কম হলে একই সময়ে অনেক বেশি-সংখ্যক বিক্রিয়ক অণু প্রয়োজনীয় কম সক্রিয়ণ শক্তি সম্পন্ন হয়ে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারে। ফলে ঐ বিক্রিয়ার হার বেশি হয়। সুতরাং, বিক্রিয়ার হার সক্রিয়ণ শক্তির মাত্রার ব্যাস্তানুপাতিক। অর্থাৎ, বিক্রিয়ার হার \alpha \frac{1}{E_{a}}