ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক (Max Planck, 1858-1947)
ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক (Max Planck, 1858-1947)
বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক (Max Planck, 1858-1947) ছিলেন জার্মানির প্রখ্যাত পদার্থবিদ। 1900 খ্রিস্টাব্দে তিনি তেজকণাবাদ (Quantum theory) আবিষ্কার করেন। এই আবিষ্কারের মাধ্যমে পদার্থবিজ্ঞানে বিপ্লব সূচিত হয়। বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটন এবং সমকালীন বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতেন যে আলো কণা প্রকৃতির।
এই তত্ত্ব অনুযায়ী যে কোনো দীপ্ত বস্তু (Luminous body) হতে অনবরত অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কণিকা ঝাঁকে ঝাঁকে নির্গত হয়। 1802 সালে আলােকের ব্যতিচারের ক্ষেত্রে ইয়ং-এর দ্বিচিড় পরীক্ষা প্রমাণ করে যে আলো তরঙ্গ প্রকৃতির। আলোর বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণে ও ব্যাখ্যার সাফল্য এই তত্ত্বকে প্রতিষ্ঠিত করে। ইয়ং-এর পরীক্ষার প্রায় একশ বছর পরে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক কৃষ্ণ বস্তুর বিকিরণ ব্যাখ্যায় আলোকের কণাতত্ত্ব পুনর্জীবিত করেন। এই প্রবন্ধ এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীদের পরীক্ষালব্ধ ফলাফল থেকে এ ধারণা সৃষ্টি হয় যে আলো এবং সকল ধরনের তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গই অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শক্তিগুচ্ছের সমন্বয়ে গঠিত।
প্ল্যাঙ্কের অভিমত অনুসারে কোনো বস্তু হতে শক্তির বিকিরণ বা বিভিন্ন ধাতুর মধ্যে শক্তির বিনিময় নিরবচ্ছিন্নভাবে ঘটে না। এই প্রক্রিয়ায় কোনো ধারাবাহিকতা নেই। শক্তির নিঃসরণ বা শোষণ বিচ্ছিন্নভাবে খণ্ড খণ্ড আকারে বা এক একটি গুচ্ছ বা প্যাকেটে নির্গত বা শোষিত হয়। প্রতিটি শক্তিকণা বা শক্তিগুচ্ছ এক একটি অবিভাজ্য একক। তিনি শক্তির এ ক্ষুদ্র গুচ্ছের নাম দেন কোয়ান্টা (Quanta)। প্রতিটি কোয়ান্টার শক্তি বিকিরণ কম্পাঙ্কের সমানুপাতিক। এই শক্তি কোয়ান্টা পরবর্তীতে ফোটন হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। ফোটন বিদ্যুৎ নিরপেক্ষ এবং এর কোনো ভর নেই। কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ ব্যাখ্যায় তাঁর আবিষ্কৃত কোয়ান্টাম তত্ত্ব সঠিকভাবে বর্ণনা করতে সক্ষম।