এককের পদ্ধতি | System of Units
তিনটি প্রাথমিক একককে প্রকাশ করার জন্য তিনটি পদ্ধতি আছে। এছাড়া পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার প্রয়োজন উপযোগী অতিরিক্ত এক বা একাধিক প্রমাণ রাশি ও তার একক যুক্ত করে পরিমাপের আরও দুটি পদ্ধতি প্রচলিত আছে। পদ্ধতিগুলো নিম্নে আলোচনা করা হলো।
(১) সেন্টিমিটার-গ্রাম-সেকেন্ড পদ্ধতি বা মেট্রিক পদ্ধতি বা ফ্রেঞ্চ পদ্ধতি (Centimeter-Gram-Second System or Metric system or French system) :
এ পদ্ধতিকে সংক্ষেপে সি. জি, এস. (C. G. S) বা সেমি. গ্রাম সেকেন্ড পদ্ধতি বলা হয়।
এখানে,
সি. অক্ষরটি বুঝাচ্ছে সেন্টিমিটার – দৈর্ঘ্যের একক
জি. অক্ষরটি বুঝাচ্ছে গ্রাম – ভরের একক
এস. অক্ষরটি বুঝাচ্ছে সেকেণ্ড – সময়ের একক
অর্থাৎ এই পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একক সেন্টিমিটার, ভরের একক গ্রাম এবং সময়ের একক সেকেন্ড। এই পদ্ধতিকে দশমিক পদ্ধতি (Decimal system) বলে।
(২) মিটার-কিলােগ্রাম-সেকেন্ড পদ্ধতি (Metre-Kilogramme-Second system) :
এই পদ্ধতিকে সংক্ষেপে এম. কে. এস. (M, K. S.) পদ্ধতি বলা হয়। এখানে,
এম. অক্ষরটি বুঝাচ্ছে মিটার দৈর্ঘ্যের একক
কে. অক্ষরটি বুঝাচ্ছে কিলোগ্রাম ভরের একক
এস. অক্ষরটি বুঝাচ্ছে সেকেন্ড সময়ের একক
অর্থাৎ, এ পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একক মিটার, ভরের একক কিলোগ্রাম এবং সময়ের একক সেকেন্ড।
(৩) আন্তর্জাতিক পদ্ধতির একক বা এস. আই. একক (International System of Units or S. I. Units) :
বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতির এককের প্রচলন আছে। কোথাও এফ. পি. এস. পদ্ধতি, কোথাও সি. জি, এস, পদ্ধতি, আবার কোথাও এম. কে. এস. পদ্ধতি। পরিমাপের এই বৈষম্যের জন্য বাস্তব ক্ষেত্রে বেশ অসুবিধা হয়। এই অসুবিধা দূর করার উদ্দেশ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা পরিমাপের উপরোক্ত তিনটি পদ্ধতি ছাড়াও 1960 সালে পরিমাপের একটি নতুন পদ্ধতি প্রচলন করেন। এটাই আন্তর্জাতিক পদ্ধতির একক বা এস. আই. একক (S.I .Units) পূর্বের এম. কে. এস. পদ্ধতির সাথে আরও কয়েকটি প্রমাণ রাশি ও উহার একক যোগ করে এই পদ্ধতি তৈরি করা হয়। এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন মৌলিক রাশি এবং তাদের একক ও প্রতীক নিচের তালিকায় উল্লেখ করা হলো। এই পদ্ধতিতে সর্বমোট নয়টি রাশি আছে।
আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে এই নয়টি মূল এককের সাহায্যে বস্তু জগতের পরিমাপ বিষয়ক সর্বপ্রকার একক পাওয়া যায়।
আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে লব্ধ একক ও তাদের প্রতীকসমূহ
(৪) M.K.S.A. পদ্ধতি (Meter-Kilogram-Second-Ampere System)
পরিমাপের পূর্বোক্ত পদ্ধতি ছাড়াও বলবিদ্যা, তড়িৎ ও চুম্বকের সমষ্টিগত প্রয়োজনে আর একটি নতুন পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এর নাম মিটার-কিলোগ্রাম-সেকেন্ড-অ্যাম্পিয়ার পদ্ধতি । সংক্ষেপে একে M.K.S.A. System বা এম. কে. এস. এ পদ্ধতি বলা হয়। এটা একটি সুসংগত পদ্ধতি। এটি চারটি প্রমাণ একক নিয়ে গঠিত, যথা-

মৌলিক এককসমূহ, এগুলোর গুণিতক ও উপগুণিতক
আমরা জানি মৌলিক একক তিনটি; যথা-
(ক) দৈর্ঘ্যের একক,
(খ) ভরের একক এবং
(গ) সময়ের একক।
(ক) দৈর্ঘ্যের একক :
সি. জি. এস. পদ্ধতিতে দৈর্ঘ্যের একক সেন্টিমিটার। 9০ ভাগ প্লাটিনাম ও 10 ভাগ ইরিডিয়ামের সংকর নির্মিত দণ্ডের উপর দুইটি নির্দিষ্ট দাগের মধ্যবর্তী দূরত্বকে আন্তর্জাতিক মিটার (International Proto-type Meter) বলে। আন্তর্জাতিক ওজন ও পরিমাপ সংস্থার রক্ষণশালায় দণ্ডটি বিশেষভাবে রক্ষিত আছে। তাপমাত্রার বৃদ্ধি বা হ্রাসের প্রভাব যাতে এর উপর না পড়ে, সেজন্য দণ্ডটিকে 0°C তাপমাত্রায় রাখা হয়। এই দূরত্বের এক শ’ ভাগের এক ভাগকে এক সেন্টিমিটার বলে।

কয়েকটি উপসর্গের (Prefixes) অর্থ :


