ইনট্রিন্সিক (স্বকীয় বা বিশুদ্ধ) ও এক্সট্রিনসিক (বহিঃজাত বা অবিশুদ্ধ) সেমিকন্ডাক্টর (Intrinsic and extrinsic semiconductors)
ইনট্রিন্সিক (স্বকীয় বা বিশুদ্ধ) ও এক্সট্রিনসিক (বহিঃজাত বা অবিশুদ্ধ) সেমিকন্ডাক্টর (Intrinsic and extrinsic semiconductors)
অর্ধপরিবাহী পদার্থেকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা—
(ক) ইনট্রিন্সিক (Intrinsic) সেমিকন্ডাক্টর বা স্বকীয় বা বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহী
(খ) এক্সট্রিন্সিক (Extrinsic) সেমিকন্ডাক্টর বা বহিঃজাত বা অবিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহী।
ক) ইনট্রিন্সিক সেমিকন্ডাক্টর : পূর্বেই বলা হয়েছে যে জার্মেনিয়াম বা সিলিকনের বাইরের কক্ষে 4টি যোজন ইলেকট্রন থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেশী পরমাণুর সঙ্গে ইলেকট্রন ভাগাভাগি করে সমযোজী বন্ধনের সাহায্যে বিশুদ্ধ কেলাস (Intrinsic crystal) গঠন করে। এগুলাকে বলে বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহী। নিম্ন তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে কোনো মুক্ত ইলেকট্রন না থাকায় এরা অন্তরকের ন্যায় আচরণ করে। অর্থাৎ, যে সকল অর্ধপরিবাহীতে কোনো অপদ্রব্য মিশ্রিত থাকে না তাকে ইনট্রিন্সিক সেমিকন্ডাক্টর বলে।
(খ) এক্সট্রিন্সিক সেমিকন্ডাক্টর : বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহী তাপমাত্রা বৃদ্ধি করলে কিছু কিছু সমযোজী বন্ধন থেকে ইলেকট্রন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সাধারণ তাপমাত্রায়ও তাপীয় আলোড়নের ফলে এগুলা যথেষ্ট পরিমাণ শক্তি অর্জন করে যোজন ব্যান্ড থেকে পরিবহন ব্যান্ডে চলে যেতে পারে এবং মুক্ত ইলেকট্রনের ন্যায় আচরণ করে। তবে সাধারণ তাপমাত্রায় এ ধরনের ইলেকট্রন বাহকের সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে যদি খুবই সামান্য পরিমাণ বিশেষ ধরনের অপদ্রব্য মেশানো হয় তাহলে প্রচুর পরিমাণে তড়িৎ বাহক পাওয়া যায়।এ মিশ্রণকে ডোপিং বলা হয়। এ ধরনের কেলাসকে বলা হয় বহিঃজাত বা অবিশুদ্ধ কেলাস (Extrinsic crystal)।
জার্মেনিয়াম, সিলিকন কেলাসে, এন্টিমনি, অ্যালুমিনিয়াম, আর্সেনিক ইত্যাদি অপদ্রব্য মিশিয়ে ডোপিং করা হয়। যোজন ব্যান্ড এবং পরিবহন ব্যান্ডের মধ্যে শক্তি ব্যবধান অনেক কমে আসে। ফলে কেলাসে আধান বাহকের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়। এ ধরনের কেলাসের পরিবাহিতা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ যে প্রক্রিয়া বা পদ্ধতিতে বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর সাথে সামান্য পরিমাণ অপদ্রব্য মিশ্রিত করে অর্ধপরিবাহীর তড়িৎ পরিবাহিতা বহুল পরিমাণে বৃদ্ধি করা হয়, তাকে ডোপিং বলে। মিশ্রিত অপদ্রব্যকে বলা হয় ডোপ্যান্ট (Dopant)। ত্রিযোজী মৌল যেমনঃ অ্যালুমিনিয়াম (Al), বোরন (B), ইন্ডিয়াম (In) অথবা পঞ্চযোজী মৌল যেমন- ফসফরাস(P), আর্সেনিক (As),বিসমাথ (Bi)-কে বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীর সাথে ডোপিং করে এক্সট্রিন্সিক সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করা হয়।
একটি অবিশুদ্ধ তড়িৎ অর্ধপরিবাহীর তড়িৎ পরিবাহিতা কীসের উপর নির্ভর করে?
একটি বিশুদ্ধ অর্ধপরিবাহীতে অসম সংখ্যক ইলেকট্রন ও হোলের উপর তড়িৎ পরিবাহিতা নির্ভর করে।