অ্যামিন (Amine)
অ্যামিন (Amine)
প্রশ্নঃ আলিফ্যাটিক অ্যামিন প্রস্তুতির সাধারণ পদ্ধতিগুলো উল্লেখ কর। (General methods of preparation of Aliphatic Amine)
উত্তর:
(i) অ্যালকাইল হ্যালাইড এবং অ্যামোনিয়া হতে (From Alkyl Halide and Ammonia):
ইথানল দ্রবীভূত অ্যালকাইল হ্যালাইড ও অ্যামোনিয়া গ্যাসের মিশ্রণকে আবদ্ধ পাত্রে উত্তপ্ত করা হলে অ্যামোনিয়ার H-পরমাণু অ্যালকাইল মূলক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে 1,° 2°, 3° অ্যামিনসমূহ এবং 4°-অ্যামিমানিয়া লবণের মিশ্রণ উৎপন্ন হয়।
যেমন- RX alc+ NH3 (alc) → [R-NH3]X-
উদাহরণ:
CH3I+NH3→ R-NH3X –
CH3I + CH3NH3I- →CH32-NH+H2O+KI
CH3I + CH33NH2I- → CH33NHI- + HI
CH3I + CH33NHI-CH34 NI- + HI
উৎপন্ন অ্যামিনসমূহের মিশ্রণে পটাশিয়াম হাইড্রক্সাইড ক্ষার দ্রবণ যোগ করে আংশিক পাতন করলে পৃথক পৃথকভাবে 1° ,2° , 3° অ্যামিন পাওয়া যায়।
যেমন-
CH3NH3I + KOH → CH3 – NH2 + H2O+ KI
CH32NH2I- + KOH → CH32 – NH + H20+ KI
CH33NHI- + KOH + CH32N +H20+ KI
4° অ্যামোনিয়াম লবণ পাতিত হয় না বিধায় এটি পাতন ফ্লাস্কে থেকে যায়। এভাবে 1°,2°,3° অ্যামিন প্রস্তুত করা যায় ।
(ii) অ্যালকেন নাইট্রাইল বা অ্যালকাইল সায়ানাইড হতে (From Alkene nitrile or Alkyl Cyanide): শুষ্ক ইথারে দ্রবীভূত লিথিয়াম অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রাইড (LiAIH4) দ্বারা অ্যালকাইল সায়ানাইডকে বিজারিত করে প্রাইমারী অ্যামিন প্রস্তুত করা যায় ।
R-CN +4HLiAlH→ শুষ্ক ইথার R – CH2 – NH2
উদাহরণ:
CH3- CN + 4[H] LiAlH→CH3– CH2-NH2
মিথাইল সায়নাইড ইথাইল অ্যামিন
অনুরুপে,
CH3 –NC + 4HLiAlH→ CH3– NH-CH3 (2° অ্যামিন)
মিথাইল আইসো সায়ানাইড ডাই মিথাইল অ্যামিন
(iii) নাইট্টো যৌগের বিজারণ দ্বারা (Reduction of Nitto compounds): নাইট্রো অ্যালকেনকে টিন এবং HCl সহযোগে উত্তপ্ত করা হলে বিজারনের মাধ্যমে প্রাইমারী অ্যামিন পাওয়া যায়।
R– NO2 + 6[H] Sn+HCl→ R– NH2 + 2H2O
উদাহরণ:
CH3– NO2 + 6HSn+HCl→ CH3 – NH2+ 2H2O
নাইট্টো মিথেন মিথাইল অ্যামিন
প্রশ্ন: পরীক্ষাগারে মিথাইল অ্যামিন প্রস্তুতি বর্ণনা কর। (Preparation of Methyl Amine in the laboratory)
উত্তর: মূলনীতি ও ইথান্যামাইড (CH3CONH2), ব্রোমিন ও গাঢ় কষ্টিক পটাশ দ্রবণকে একত্রে উত্তপ্ত করে পরীক্ষাগারে মিথাইল অ্যামিন (CH3 – NH2) প্রস্তুত করা যায়। এ বিক্রিয়ায় অতিরিক্ত উৎপাদ পটাশিয়াম ব্রোমাইড, পটাশিয়াম কার্বনেট ও পানি উৎপন্ন হয়। এ বিক্রিয়াকে হফম্যান ডিগ্রেডেশন বিক্রিয়া বলে।
CH3CONH2 + Br2 + 4KOH∆→ CH3 – NH2 + 2KBr + K2CO3 + 2H2O
প্রশ্ন: মিথাইল অ্যামিন হতে কিভাবে মিথাইল কাৰ্বিল অ্যামিন বা মিথাইল আইসো সায়ানাইড পাওয়া যায়? (How to get Methyl Carbylamine or Methyl isocyanate from Methyl Amine?)
উত্তর: ক্লোরোফম CHCl3 ও কস্টিক পটাশ KOH দ্রবণের সাথে মিথাইল অ্যামিন উত্তপ্ত করা হলে উগ্র গন্ধযুক্ত মিথাইল
কার্বিল অ্যমিন (CH3-NC) উৎপন্ন হয়।
CH2-NH2CHCl-3KOH + CH3-NC+3KCl+3H2O
প্রশ্ন: বিভিন্ন ধরনের অ্যামিনের সাথে নাইটাস এসিডের বিক্রিয়ায় কি ঘটে? অথবা 𝟏,° 𝟐°, 𝟑° এ্যালিফেটিক অ্যামিনের মধ্যে কিরুপে পার্থক্য নির্ণয় করা যায়? (What happens when Nitrous acid reacts with different types of amines)
উত্তর:
(i) প্রাইমারী অ্যামিনের সাথে বিক্রিয়া (Reaction with primary amine): ইথাইল অ্যামিন নাইট্রাস এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে বুদবুদ আকারে নাইট্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন। করে সাথে ইথানল এবং H2O উৎপন্ন হয়।
C2H5+ NH2+ HNO3NaNO3+HCl→ C2H5 – OH + N2(q) +H2O
ইথানল
(ii) সেকেন্ডারী অ্যামিনের সাথে বিক্রিয়া (Reaction with secondary amine): ডাইমিথাইল অ্যামিন নাইট্রাস এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে ডাই মিথাইল নাইট্রোসো অ্যামিন নামক হলুদ বর্ণের তৈলাক্ত পদার্থ উৎপন্ন করে সাথে H2O উৎপন্ন হয়।
CH32NH + HNO3NaNO3+HCl→ CH32N-NO + H2O
ডাই মিথাইল নাইট্রোসো অ্যামিন
iii টারশিয়ারী অ্যামিনের সাথে বিক্রিয়া (Reaction with tertiary amine): টাই মিথাইল অ্যামিন নাইট্রাস
এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে ট্রাই মিথাইল অ্যামোনিয়াম। নাইট্রাইট নামক দ্রবণীয় লুবণ উৎপন্ন হয়।
CH33 N + HNO2NaNO2+HCl→CH32N+HNO-2
ট্রাই মিথাইল অ্যামোনিয়াম নাইট্রাইট
প্রশ্ন: অ্যারোমেটিক অ্যামিন প্রস্তুতির সাধারণ পদ্ধতিগুলো উল্লেখ কর। (General methods of preparing of Aromatic Amines)
উত্তর:
i নাইট্রো যৌগের বিজারণের মাধ্যমে ও অ্যারোমেটিক নাইট্রো যৌগকে টিন এবং HCl এসিড দ্বারা বিজারিত করা হলে
অ্যারোমেটিক প্রাইমারী অ্যামিন উৎপন্ন হয়।
Ar – NO2 + 6HSn+HCl→ Ar – NH2 + 2H2O
উদাহরণ:
(ii) অ্যামাইড যৌগ হতে: অ্যারাইল অ্যামাইডকে ব্রোমিন ও গাঢ় KOH দ্রবণসহ উত্তপ্ত করা হলে প্রাইমারী
অ্যারোমেটিক অ্যামিন উৎপন্ন হয়। এ বিক্রিয়াকেও হ্যাফম্যান ডিগ্রেডেশন বিক্রিয়া বলে।
Ar – CONH2 + Br2 + 4KOH→ Ar – NH2 + 2KBr+K2CO3 + 2H2O
উদাহরণ:
অ্যামিন (Amine)
অ্যানিলিন (Aniline)
প্রশ্ন : অ্যানিলিনের পরীক্ষাগার প্রস্তুতি বর্ণনা কর। (Laboratory preparation of aniline)
উত্তর: পরীক্ষাগারে নাইট্রোবেনজিনকে টিন ও গাঢ় HCl দ্বারা উত্তপ্ত করা হলে Sn এবং FICI এর বিক্রিয়ায়
উৎপন্ন জায়গান হাইড্রোজেন নাইট্রোবেনজিনকে বিজারিত করে অ্যানিলিনে পরিণত করে।
প্রশ্ন: অ্যানিলিনের সাথে ইথানোয়িল ক্লোরাইডের বিক্রিয়ায় কি ঘটে? (Reaction between Aniline and Ethanoyl chloride)
উত্তর: অ্যানিলিন ইথানায়িল ক্লোরাইড বা এসিটাল ক্লোরাইড (CH3COCI) সাথে বিক্রিয়া করে
N-ফিনাইল ইথানামাইড বা এসিটানিলাইড উৎপন্ন করে।
প্রশ্ন: অ্যানিলিন হতে কিভাবে ফেনল পাওয়া যায়? (Aniline to Phenol)
উত্তর: অ্যানিলিনকে NaNO2 এবং HCl এর মিশ্রণে উত্তপ্ত করা হলে NaNO2, এবং HCl এর বিক্রিয়ায়
উৎপন্ন নাইট্রাস এসিড (HNO2) অ্যানিলিনের সাথে বিক্রিয়া করে ফেনল উৎপন্ন হয়। সাথে N2 এবং H2O উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন: অ্যানিলিন হতে কিভাবে ফিনাইল কাৰ্বিল অ্যামিন পাওয়া যায়? (Aniline to Phenyl carbylamine)
উত্তর: অ্যানিলিন, ক্লোরোফরম CHCl3 এবং অ্যালকোহলীয় KOH দ্রবণের সাথে উত্তপ্ত করা হলে
উগ্র গন্ধযুক্ত ফিনাইল কাৰ্বিল অ্যামিন বা ফিনাইল আইসো সায়ানাইড পাওয়া যায়।
প্রশ্ন: অ্যানিলিন হতে কিভাবে সালফানিলিক এসিড পাওয়া যায়? (Aniline to Sulfanilic acid)
উত্তর: অ্যানিলিনকে ধুমায়িত সালফিউরিক এসিডের সাথে 180-200°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে উভয়ের মধ্যে বিক্রিয়ার মাধ্যমে সালফানিলিক এসিড বা 4-অ্যামিনো বেনজিন সালফোনিক এসিড ও পানি উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন: অ্যানিলিন ব্রোমিন দ্রবণে চালনা করা হলে কী ঘটে? (What happens when Aniline is treated with Aqueous Bromine)
উত্তর: অ্যানিলিন ব্রোমিনের জলীয় দ্রবণে চালনা করা হলে উভয়ের মধ্যে দ্রুত বিক্রিয়ার মাধ্যমে 2, 4, 6-ট্রাই ব্রোমো অ্যানিলিন উৎপন্ন হয়।
ডায়াজোনিয়াম লবণ (Diazonium salts)
প্রশ্ন: ডায়াজোনিয়াম লবণ কাকে বলে? (Diazonium salts)
উত্তর: দুটি নাইট্রোজেন পরমাণু বিশিষ্ট ডায়াজো (-N+ = N) মূলকের একটি যোজনী বেনজিন বলয়ের একটি কার্বন পরমাণুর সাথে এবং অপর যোজনী একটি অজৈব এসিড মূলক (যেমন- CI-, Br- , NO3- ইত্যাদি) এর সাথে যুক্ত হয়ে যে যৌগ উৎপন্ন করে, তাদেরকে ডায়াজোনিয়াম লবণ বলে।
উদাহরণ: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড একটি ডায়াজোনিয়াম লবণ। যার সংকেত-
প্রশ্ন: ডায়াজোটাইজেশন বা ডায়াজোকরণ বলতে কী বুঝ? (Diazotization)
উত্তর: যে প্রক্রিয়ায় কোন অ্যারোমেটিক প্রাইমারী অ্যামিন নিম তাপমাত্রায় (0 – 5°C) খনিজ এসিডের উপস্থিতিতে নাইট্রাস এসিডের সাথে বিক্রিয়া করে ডায়াজোনিয়াম লবণে রূপান্তরিত হয় তাকে ডায়াজোকরণ বলে ।
উদাহরণ: অ্যানিলিন, সোডিয়াম নাইট্রাইট (NaNO2) ও HCl এর মিশ্রণকে 0 – 5°C তাপমাত্রার নিচে শীতল করা হলে বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডের পরীক্ষাগারে বর্ণনা কর। (Describe Benzene diazonium chloride in the laboratory)
উত্তর :
মূলনীতি: পরীক্ষাগারে হাইড্রোক্লোরিক এসিড দ্রবীভূত অ্যানিলিন দ্রবণের তাপমাত্রাকে 0 – 5°C তাপমাত্রার নিচে নামিয়ে এর মধ্যে ধীরে ধীরে সোডিয়াম নাইট্রাইট (NaNO2) দ্রবণ যোগ করলে বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন।
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড হতে বেনজিন কিরূপে পাওয়া যায়? (How Benzene is obtained from Benzenediazonium chloride)
উত্তর: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডকে হাইপোফসফরাস এসিডের সাথে উত্তপ্ত করা হলে হাইপোফসফরাস (H3PO2) এসিড ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডকেজিারিত করে বেনজিনে পরিণত করে। সাথে ফসফরাস এসিড (H3PO3), N2 এবং HCl উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড হাতে ফেনল কিভাবে পাওয়া যায়? (How Phenol is obtained from Benzenediazonium chloride)
উত্তর: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডকে এসিডের উপস্থিতিতে আর্দ্র বিশ্লেষণ করা হলে আর্দ্র বিশ্লেষণের ফলে ফেনল, N2 গ্যাস ও HCl – উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড হতে ক্লোরো বেনজিন কিভাবে পাওয়া যায়? (How to get Chlorobenzene from Benzenediazonium chloride)
উত্তর: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডের সাথে সমপরিমাণ কপার (I) ক্লোরাইড ও গাঢ় HCl এসিড মিশ্রিত করে ঐ মিশ্রণকে 100°c তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করা হলে ডায়াজোনিয়াম লবণের ডায়াজোমূলক ক্লোরিন পরমানু দ্বারা প্রতিস্থাপতি হয়ে ক্লোরোবেনজিন উৎপন্ন হয়। এ বিক্রিয়াকে স্যান্ডমেয়ার বিক্রিয়া বলে।
অনুরূপে,
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড হতে বেনজয়িক এসিড কিভাবে পাওয়া যায়? (Benzenediazonium chloride to Benzoic acid)
উত্তর: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম লবণকে পটাশিয়াম সায়ানাইডের জলীয় দ্রবণে দ্রবীভূত কিউপ্রাস সায়ানাইড, Cu2CN2 এর সাথে উত্তপ্ত করা হলে ডায়াজোমূলক (-N2Cl) সায়ানাইড মূলক (-CN) দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়ে ফিনাইল সায়ানাইড উৎপন্ন করে। উৎপন্ন সায়ানাইডকে অন্নীয় মাধ্যমে আর্ল বিশ্লেষণ করা হলে বেনজয়িক এসিড এবং অ্যামোনিয়া উৎপন্ন করে।
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড হেত বেনজাইল অ্যামিন কিভাবে পাওয়া যায়? (Benzenediazonium chloride to Benzyl Amine)
উত্তর: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম লবণকে পটাশিয়াম সায়ানাইডের (KCN) জলীয় দ্রবণে দ্রবীভূত কিউপ্রাস সায়ানাইড, Cu2CN2 এর সাথে উত্তপ্ত করা হলে ফিনাইল সায়ানাইড পাওয়া যায়। উৎপন্ন ফিনাইল সায়ানাইডকে লিথিয়াম অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রাইড দ্বারা বিজারিত করে বেনজাইল অ্যামিন উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড হতে আয়োডোবেনজিন কিভাবে পাওয়া যায়? (Benzenediazonium chloride to Iodobenzene)
উত্তর: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডকে পটাশিয়াম আয়োডাইডের সাথে উত্তপ্ত করলে আয়োডো বেনজিন উৎপন্ন হয়। সাথে N2KCl পাওয়া যায়।
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড হতে কিভাবে অ্যানিলিন পাওয়া যায়? (Benzenediazonium chloride to Aniline)
উত্তর : বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডকে Zn এবং HCl এর মিশ্রণ বা LiAlH4 দ্বারা বিজারিত করা হলে অ্যানিলিন ও অ্যামোনিয়াম। ক্লোরাইড (NH4Cl) উৎপন্ন হয়।
প্রশ্ন: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড হতে ফিনাইল হাইড্রাজিন কিভাবে পাওয়া যায়? (Benzenediazonium chloride to Phenyl Hydrazine)
উত্তর: বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডকে টিন (II) ক্লোরাইড (SnCl2) এবং HCl মিশ্রণ থেকে উৎপন্ন জায়গায় হাইড্রোজেন দ্বারা বিজারিত করলে ফিনাইল হাইড্রাজিন ও HCl উৎপন্ন হয়।
অ্যামিন (Amine)
প্রশ্ন: মিথাইল অ্যামিন অ্যামোনিয়া অপেক্ষা তীব্রতর ক্ষারক কেন? (Methylamine is a stronger base than ammonia)
উত্তর: প্রোটনীয় মতবাদ অনুসারে কোন যৌগের পোটন (H+) গঠrণর ক্ষমতা যৌগটির সঞ্চারধর্মের পরিমাপ বাদ অনুসারে কোন যৌগের প্রোটন (li’) গ্রহণের ক্ষমতা যৌগটির ক্ষারধর্মের পরিমাপক। উপরের গঠন হতে দেখা যায় উভয়ের নাইট্রোজেন পরমাণুতে নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন জোড় আছে। লুইস মতবাদ অনুযায়ী নাইট্রোজেনের উপর নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন যুগলের প্রাপ্যতা যত বৃদ্ধি পাবে, প্রোটন গ্রহণ ক্ষমতা তত বাড়বে এবং সাথে সাথে ক্ষারকের শক্তিও তত বেড়ে যাবে। মিথাইল অ্যামিনের নাইট্রোজেন পরমাণুর সাথে যুক্ত মিথাইল মূলকের ধণাত্মক আবেশীয় (+I) ধর্ম আছে বিধায় এটি নাইট্রোজেন পরমাণুর দিকে ইলেক্ট্রন ঠেলে দিয়ে নাইট্রোজেন পরমাণুর ইলেক্ট্রন ঘনত্ব বৃদ্ধি করে।
ফলে প্রোটনের (H’) সাথে বিক্রিয়ার জন্য ইলেক্ট্রনের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পায়। তাই মিথাইল অ্যামিনের ক্ষেত্রে নিমোক্ত বিক্রিয়া অধিকতর সম্মুখমুখী হয়। ফলে দ্রবণে OH- আয়নের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় kb এর মান বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ Pkb এর মান হ্রাস পায় কিন্তু অ্যামোনিয়ার অণুতে এ ধরনের প্রভাব সম্ভব নয়। ফলে মিথাইল অ্যামিন অ্যামোনিয়া অপেক্ষা তীব্রতর ক্ষারক।
CH3 – NH2+ H20 Pkb=3.36↔CH3- NH3 + OH-
NH3 + H20Pkb=4.74↔ NH4++ OH-
প্রশ্ন: ১°, ২°, ৩° অ্যামিনের ক্ষারকন্তু এর তুলনামূলক আলোচনা কর। (Alkalinity of 1°, 2°, 3° Amine)
উত্তর: মিথাইল অ্যামিন (১°), ডাই মিথাইল অ্যামিন (২°) এবং টারশিয়ারী অ্যামিনের (৩°) গঠন নিয়ে দেওয়া গেল-
প্রোটনীয় মতবাদ অনুসারে কোন যৌগের প্রোটন (H+) গ্রহণের ক্ষমতা যৌগটির ক্ষারধর্মের পরিমাপক। উপরের গঠন হতে দেখা যায় তিন যৌগের নাইট্রোজেন পরমাণুতে নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন জোড় আছে। লুইস মতবাদ অনুসারে নাইট্রোজেনের উপর নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন যুগলের প্রাপ্যতা যত বৃদ্ধি পাবে, প্রোটন গ্রহণ ক্ষমতা তত বাড়বে এবং সাথে সাথে ক্ষারকের শক্তিও তত বেড়ে যাবে। মিথাইল অ্যামিনের নাইট্রোজেন পরমাণুর সাথে যুক্ত মিথাইল মূলকের ধণাত্মক আবেশীয় ধর্ম আছে বিধায় এটি নাইট্রোজেন পরমাণুর দিকে ইলেক্ট্রন ঠেলে দিয়ে পরমাণুর ইলেক্ট্রন ঘনত্ব বৃদ্ধি করে, ফলে প্রোটনের সাথে বিক্রিয়ার জন্য ইলেক্ট্রনের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পায়।
ফলে মিথাইল অ্যামিনের ক্ষারকত্ব বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে ডাইমিথাইল অ্যামিনে দুটি মিথাইল মূলক N-পরমাণুর সাথে যুক্ত থাকে। ফলে ডাইমিথাইল অ্যামিনের N-পরমাণুতে ইলেক্ট্রন। ঘনতু মিথাইল অ্যামিনের N-পরমাণুর ইলেক্ট্রন ঘনত্ব অপেক্ষা অধিক হয় এবং ডাই মিথাইল অ্যামিন অপেক্ষা অধিক প্রোটন আকর্ষী হয়। কিন্তু ট্রাইমিথাইল অ্যামিনে তিনটি মিথাইলমূলক যুক্ত থাকলেও এর ক্ষারকীয় ধর্ম ডাই মিথাইল অ্যামিন অপেক্ষা কম। এর কারণ ট্রাই মিথাইল অ্যামিনে তিনটি মিথাইল মূলক থাকায় ষ্টেরিক বাধার কারণে N-পরমাণুতে প্রোটন যুক্ত হতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। যার কারণে ট্রাইমিথাইল অ্যামিনের ক্ষারীয় ধম ডাই মিথাইল অ্যামিনের ক্ষারীয় ধর্ম হতে অপেক্ষাকৃত কম। ষ্টেরিক বাধা এবং ইলেক্ট্রনের প্রাপ্যতা এই দুইয়ের উপর ভিত্তি করে P এর মান হতে ক্ষারকত্নের ক্রম নিমরূপে সাজানো যায়।
২° অ্যামিন >১° অ্যামিন > ৩° অ্যামিন
প্রশ্ন: মিথাইল অ্যামিন এবং অ্যানিলিনের ক্ষারধর্মীতার তুলনামূলক আলোচনা কর। (Discussion of the alkalinity of Methyl Amine and Aniline)
উত্তর: মিথাইল অ্যামিন (CH3NH2) এবং অ্যামিনিলের গাঠনিক সংকেত নিম্নরূপ-
প্রোটনীয় মতবাদ অনুসারে কোন যৌগের প্রোটন (H+) গ্রহণের ক্ষমতা যৌগটির ক্ষারধর্মের পরিমাপক। উপরের গঠন হতে দেখা যায় উভয়ের নাইট্রোজেন পরমাণুতে নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন জোড় আছে। লুইস মতবাদ অনুযায়ী নাইট্রোজেনের উপর নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন যুগলের প্রাপ্যতা যত বৃদ্ধি পাবে, প্রোটন গ্রহণ ক্ষমতা তত বাড়বে এবং সাথে সাথে ক্ষারকের শক্তিও তত বেড়ে যাবে।
মিথাইল অ্যামিনের নাইট্রোজেন পরমাণুর সাথে যুক্ত মিথাইল মূলকের ধণাত্মক আবেশীয় (+I) ধর্ম আছ বিধায় এটি নাইট্রোজেন পরমানুর দিকে ইলেক্ট্রন ঠেলে দিয়ে নাইট্রোজেন পরমাণুর ইলেক্ট্রন ঘনত্ব বৃদ্ধি করে। ফলে প্রোটনের (H+) সাথে বিক্রিয়ার জন্য ইলেক্ট্রনের প্রাপ্যতা বৃদ্ধি পায়। তাই মিথাইল অ্যামিনের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত বিক্রিয়া অধিকতর সম্মুখমূখী হয়। ফলে দ্রবণে OH- আয়নের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় kb এর মান বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ Pkb এর মান হ্রাস পায়।
CH3- NH2+ H20Pk = 3.36→ CH3 — NH3 + OH-
অপরদিকে অ্যানিলিন অণুতে NH2 মূলকের সঙ্গে যুক্ত N পরমাণুর নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন যুগল অনুরণনের মাধ্যমে আংশিকভাবে বেনজিন বলয়ের সঞ্চারণশীল ইলেক্ট্রনের সাথে মিলিত হয়। ফলে অ্যানিলিনের নাইট্রোজেন পরমাণুর উপর ইলেক্ট্রন ঘনত্ব কমে যায়। ফলে অ্যানিলিনের প্রোটন গ্রহণের ক্ষমতা কমে যায়। এ ক্ষেত্রে নিমোক্ত বিক্রিয়া সম্মুখমূখী কম ঘটায় হাইড্রক্সাইডের পরিমাণ কমে যাওয়ায় kb এর মান হ্রাস পায় অর্থাৎ Pkb এর মান বৃদ্ধি পায়।
C6H5 – NH2+ H2 Pb = 9.4↔C6H5 – NH3+ OH-
এ কারণে মিথাইল অ্যামিন অ্যানিলিন অপেক্ষা শক্তিশালী ক্ষারক।
প্রশ্ন: অ্যানিলিনের ক্ষারধর্মীতা ব্যাখ্যা কর। (Alkalinity of Aniline)
উত্তর: অ্যানিলিনের গাঠনিক সংকেত নিম্নরূপ-
প্রোটনীয় মতবাদ অনুসারে কোন যৌগের প্রোটন (H+) গ্রহণের ক্ষমতা যৌগটির ক্ষারধর্মের পরিমাপক। লুইস মতবাদ অনুযায়ী ইলেক্ট্রন জোড় দানে সক্ষম রাসায়নিক সত্ত্বাকে ক্ষারক বলে। অ্যানিলিনের N-পরমাণুতে এক জোড়া নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন থাকায় উহা এসিড প্রদত্ত প্রোটন গ্রহণ করে ধণাত্মক অ্যানিলিয়াম আয়ন ও শেষে অ্যানিলিয়াম লবণ উৎপন্ন করে, ফলে ইহা ক্ষারক হিসেবে আচরণ করে । হাইড্রোক্লোরিক এসিডের
সাথে অ্যানিলিনের বিক্রিয়া নিমরূপে দেখানো যায়-
তবে, অ্যানিলিনের N-পরমাণুর নি:সঙ্গ ইলেক্ট্রন যুগল অনুকরণনের মাধ্যমে আংশিকভাবে বেনজিন বলয়ের সঞ্চারণশীল পাই ইলেক্ট্রনের সাথে মিলিত হয়। ফলে নাইট্রোজেনের মুক্ত জোড় ইলেক্ট্রন ঘনত্ব কমে যায়। ফলে অ্যানিলিন দুর্বল ক্ষারধর্মী হয়। অর্থাৎ অ্যানিলিন দুর্বল ক্ষারক।
প্রশ্ন: ফিনাইল অ্যামিন বা অ্যানিলিন ডায়াজোনিয়াম লবণ গঠন করলেও মিথাইল অ্যামিন বা এলিফেটিক অ্যামিন ডায়াজোনিয়াম লবণ তৈরী করে না কেন?
অথবা, মিথাইল অ্যামিন ডায়াজোনিয়াম লবণ গঠন করে না কেন?
(Phenyl Amine or Aniline forms Diazonium salts but Methyl amines or Aliphatic amines do not form Diazonium Salts
OR, Methyl amine does not form diazonium salts)
উত্তর: অ্যালিফেটিক প্রাইমারী অ্যামিন যেমন- CH3NH2 ও নাইট্রাস এসিডের বিক্রিয়ায় “মধ্যক” রূপে অস্থায়ী অ্যালকাইল যেমন, মিথাইল ডায়াজোনিয়াম আয়ন (CH3 – N ≡ N) উৎপন্ন হয়। পরে এটি বিয়োজিত হয়ে N, গ্যাস ও কার্বোক্যাটায়ন যেমন, মিথাইল কার্বোনিয়াম আয়ন (CH3+) তৈরি করে। পরে দ্রবণে বিদ্যমান ঋণাত্মক আয়নের সাথে কার্বোক্যাটায়ন বা মিথাইল কার্বোনিয়াম আয়ন যুক্ত হয়ে অ্যালকোহল উৎপন্ন করে। যেমন-
H2O → H+ + OH-
CH3NH2 + H+→ CH3NH3+
CH3 – NH3+ HNO2 → CH3 – N = N + 2H2O
মিথাইল অ্যামোনিয়াম আয়ন
CH3 -N+ ≡N → CH3++ N2
C+H3+OH-→CH3OH
অপরদিকে বেনজিন ডায়াজোনিয়াম আয়ন (C6H5 – N ≡ N) অ্যালকাইল যেমন, মিথাইল ডায়াজোনিয়াম আয়ন (CH3- N≡ N) এর তুলনায় অধিকতর স্থিতিশীল । এর স্থিতিশীলতা লাভের কারণ হল বেনজিন বলয়ের পাই ইলেক্ট্রনের সাথে ডায়াজোমূলক (-N ≡ N)। এর অনুরণন বা রেজোন্যান্স গঠন, তা নিমের অরবিটাল চিত্র দ্বারা দেখানো হল-
চিত্র থেকে সুস্পষ্ট যে, এক্ষেত্রে C – N বন্ধনটি আংশিকভাবে দ্বিবন্ধনের বৈশিষ্ট্য লাভ করেছে। তাই অ্যারোমেটিক প্রাইমারী অ্যামিন ডায়াজোনিয়াম লবণ গঠন করে। কিন্তু অ্যালকাইল বা মিথাইল ডায়াজোনিয়াম (CH3 N2) আয়ন অস্থিতিশীল হওয়ায় অ্যালিফেটিক প্রাইমারী অ্যামিন যেমন- মিথাইল অ্যামিন ডায়াজোনিয়াম যৌগ তৈরি করে না। কারণ মিথাইল ডায়াজোনিয়াম আয়নে কোন অণুরণন ঘটে
প্রশ্ন: অ্যামিনো মূলক অর্থো-প্যারা নির্দেশক হলেও অ্যানিলিনের নাইট্রেশনকালে মেটা যৌগ উৎপন্ন হয় কেন? (Amino acid is ortho-para indicator, meta compounds are formed during the nitration of aniline)
উত্তর: প্রায়ই 60° -70°C তাপমাত্রায় অ্যামিলিনকে গাঢ় HNO3 এবং গাঢ় H2SO4 সহ উত্তপ্ত করলে মেটা নাইট্রো অ্যানিলিন উৎপন্ন হয়।
অ্যামিনো মূলক অর্থো-প্যারা নির্দেশক মূলক হলেও এক্ষেত্রে মেটা অবস্থানে নাইট্রেশন ঘটার কারণ হলো, নাইট্রেশনকালে অ্যানিলিনের সঙ্গে এসিডের বিক্রিয়ায় প্রথমে অ্যানিলিয়াম আয়ন (C6H5 – NH3) উৎপন্ন হয় যা পরে নাইট্রেশন বিক্রিয়ার মাধ্যমে নাইট্রো যৌগে পরিণত হয়। কিন্তু অ্যানিলিয়াম আয়নে N পরমাণু ধনাত্মক চার্জযুক্ত হওয়ায় তা নিষ্ক্রিয়কারী মূলকে পরিণত হয়। তাই মেটা নির্দেশক বিধায় এটি পরবর্তী ধাপে মেটা নাইট্রো অ্যানিলিন উৎপন্ন করে।
অ্যামিন (Amine)
টীকা লিখ
হফম্যান ডিগ্রেডেশন বা ক্ষুদ্রাংশকরণ বিক্রিয়া (Hofmann degradation or Minimization reaction):
অ্যালকাইল অ্যামাইড বা অ্যারাইল অ্যামাইডকে ব্রোমিন ও গাঢ় কষ্টিক সোডা দ্রবণ সহ উত্তপ্ত করলে প্রাইমারী অ্যালিফ্যাটিক বা অ্যারোমেটিক অ্যামিন উৎপন্ন হয়। এ পদ্ধতিতে উৎপন্ন অ্যামিনে মূল মাতৃযৌগ অ্যামাইড অপেক্ষা একটি কার্বন কম থাকে। তাই এ পদ্ধতিকে আবিষ্কারের নাম অনুসারে হফম্যান ক্ষুদ্রাংশকরণ বিক্রিয়া বলে।
R-CONH2 + Br2 + 4KOH > R-NH2 + 2KBr + K2CO3 + 2H20
উদাহরণ:
CH3 – CONH2+ Br2 + 4KOH→Ar –NH2 + 2KBr + K2CO3 + 2H2O
ইথান্যামাইড
আবার,
Ar -CONH2+ Br2 + 4KOH → Ar – NH2 + 2KBr + K2CO3 + 2H2O
উদাহরণ:
C6H5 – CONH2 + Br2 + 4KOH → C6H5 – NH2 + 2KBr + K2CO3 + 2H2O
বেনজামাইড
যুগল গঠন বা কাপলিং বিক্রিয়া (Pair formation or coupling reaction):
অ্যারোমেটিক ডায়াজোনিয়াম আয়নসমূহ যেমন, বেনজিন ডায়াজোনিয়াম আয়ন, (C6H5 – N≡ N) হল দুর্বল ইলেকট্রোফাইল । তাই ডায়াজোনিয়াম ক্যাটায়নসমূহ ফেনল ও অ্যারোমেটিক অ্যামিনের সক্রিয় নিউক্লিওফিলিক প্রান্ত যেমন, 4অবস্থানে আক্রমণ করে ডায়াজো মূলক (-N ≡ N) দ্বারা ফেনল অথবা প্রাইমারী অ্যামিনের বেনজিন বলয়ের সাথে যুক্ত হয়ে রঙিন অ্যাজো যৌগ গঠন করে। এরূপ বিক্রিয়াকে অ্যাজো কাপলিং বা অ্যাজো যুগল গঠন বিক্রিয়া বলে। এসব অ্যাজো কাপলিং দ্বারা ডায়াজোনিয়াম লবণ সনাক্ত করা যায়।
উদাহরণ:
(১) লঘু ক্ষারীয় দ্রবণে বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডের সাথে ফেনলে বিক্রিয়া করলে দুটি বেনজিন বলয় ডায়াজোমূলক (-N ≡ N-) দ্বারা যুক্ত হয়ে কমলা বর্ণের প্যারা হাইড্রক্সি অ্যাজো বেনজিন গঠিত হয়।
(২) অতি লঘু অশ্লীয় দ্রবণে বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইডের সাথে অ্যানিলিন বিক্রিয়া করলে দুটি বেনজিন বলয় ডায়াজোমূলক (-N- N-) দ্বারা যুক্ত হয়ে হলুদ বর্ণের প্যারা অ্যামিনো অ্যাজো বেনজিন গঠিত হয়।
কাৰ্বিল অ্যামিন বিক্রিয়া (Carbylamine reaction):
ক্লোরোফরম ও অ্যালকোহলীয় KOH দ্রবণের সাথে প্রাইমারী অ্যালিফেটিক বা অ্যারোমেটিক অ্যামিনকে 60 -70°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে উগ্র গন্ধযুক্ত আইসো সায়ানাইড বা কাৰ্বিল অ্যামিন উৎপন্ন হয়। এই বিক্রিয়াকে কাৰ্বিল অ্যামিন বিক্রিয়া বলা হয়।
CH3 – NH2 + CHCl3+ 3KOH ∆→ CH3 – NC + 3KCl + 3H2O
মিথাইল আইসো সায়ানাইড
C6H5 – NH2 + CHCl3 + 3KOH ∆→ C6H5 – NC + 3KCl + 3H2O
ফিনাইল আইসো সায়ানাইড
প্রশ্ন: কিরূপে ১° অ্যালিফেটিক বা অ্যারোমেটিক অ্যামিন সনাক্ত করা যায়? (Way to identify 1° Aliphatic or Aromatic Amine)
উত্তর: কাৰ্বিল অ্যামিন বিক্রিয়ার সাহায্যে ১° অ্যালিফেটিক অ্যামিন (মিথাইল অ্যামিন) এবং ১৭ অ্যারোমেটিক অ্যামিন (অ্যানিলিন) সনাক্ত করা যায়। ক্লোরোফরম ও অ্যালকোহলীয় KOH দ্রবনের সাথে প্রাইমারী
অ্যালফেটিক বা অ্যারোমেটিক অ্যামিনকে 60 -70°C তাপমাত্রায় উত্তপ্ত করলে উগ্র গন্ধযুক্ত আইসো সায়ানাইড বা কাৰ্বিল অ্যামিন উৎপন্ন হয়। এই বিক্রিয়াকে কাৰ্বিল অ্যামিন বিক্রিয়া বলা হয়।
CH3 – NH2 + CHCl3+ 3KOH ∆→ CH3 – NC + 3KCl + 3H2O
মিথাইল আইসো সায়ানাইড
C6H5 – NH2 + CHCl3 + 3KOH ∆→ C6H5 – NC + 3KCl + 3H2O
ফিনাইল আইসো সায়ানাইড
প্রশ্ন: ১° অ্যালিফেটিক অ্যামিন এবং ১° অ্যারোমেটিক অ্যামিনের মধ্যে কিরূপে পার্থক্য করা যায়? (Difference between 1° Aliphatic Amine and 1° Aromatic Amine)
উত্তর: হাইড্রোক্লোরিক এসিড দ্রবীভূত ১° অ্যারোমেটিক অ্যামিন বা অ্যানিলিন দ্রবণের তাপমাত্রাকে 0 – 5°C তাপমাত্রার নিচে নামিয়ে এর মধ্যে ধীরে ধীরে সোডিয়াম নাইট্রাইট (NaNO) দ্রবণ যোগ করলে বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড উৎপন্ন হয়।
বেনজিন ডায়াজোনিয়াম ক্লোরাইড কিন্তু হাইড্রোক্লোরিক এসিডে দ্রবীভূত ১° অ্যালিফেটিক অ্যামিন বা মিথাইল অ্যামিনের দ্রবণে সোডিয়াম নাইট্রেট দ্রবণ যোগ করলে মিথাইল অ্যালকোহল উৎপন্ন হয়। এক্ষেত্রে ডায়াজোনিয়াম লবণ উৎপন্ন হয় না। কারণ অ্যালকাইল ডায়াজোনিয়াম আয়নের স্থিতিশীলতা নেই।
CH3- NH2 + HNO2NaNO2+HCl→ CH3 – OH + N2 + H2O