10 Minute School
Log in

সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি (Base of Number System)

সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি (Base of number system)

কোনো সংখ্যা পদ্ধতির ভিত বা বেস হচ্ছে ওই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত মৌলিক চিহ্নসমূহের মোট সংখ্যা। যেমন দশমিক পদ্ধতিতে দশটি মৌলিক চিহ্ন আছে; যথা— 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9সুতরাং এর ভিত্তি বা বেস 10। সংখ্যা পদ্ধতির বেস বা ভিতের উপর নির্ভর করে পজিশনাল সংখ্যা পদ্ধতি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। ডিজিটাল সার্কিটে চার ধরনের গাণিতিক সিস্টেম ব্যবহৃত হয়। এগুলি হলো:

১। দশমিক বা 10 ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। 

২। বাইনারি বা 2 ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি 

৩। অক্টাল বা ৪ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি।

৪। হেক্সাডেসিমেল বা 16 ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি ইত্যাদি

 

ইলেকট্রনিকস বর্তনীর শ্রেণিবিভাগ (Types of electronic circuits)

ইলেকট্রনিকস বর্তনীকে মোটামুটি দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথা-

             (i) এনালগ ইলেকট্রনিক বর্তনী (Analogue electronic circuit) এবং

             (ii) ডিজিটাল ইলেকট্রনিক বর্তনী (Digital electronic circuit)

 

এনালগ বর্তনী: এই ধরনের বর্তনীতে প্রবাহমাত্রা এবং ভোল্টেজ সংকেত (signal) সময়ের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিবর্তিত হয়। এই সংকেতগুলোকে এনালগ বা নিরবচ্ছিন্ন (continuous) সংকেত বলে। চিত্রে একটি এনালগ সংকেতের প্রকৃতি দেখানো হয়েছে। স্পষ্টতই এটি সময়ের সাথে সাইন তরঙ্গরূপে পরিবর্তিত দেখানো হয়েছে। এর সর্বোচ্চ মান 4V। ভোল্টমিটার, অ্যামিটার, মাল্টিমিটার, গ্যালভানোমিটার ইত্যাদি এনালগ বর্তনীর উদাহরণ।

Analog circuit - Base of Number system

(ii) ডিজিটাল বর্তনী : এই ধরনের বর্তনীতে প্রবাহমাত্রা এবং ভোল্টেজের সংকেতের মাত্র দুটি অবস্থা বা স্তর (level) থাকে; যথা- অন (ON) বা অফ (OFF) অথবা 0 বা 1। এই ধরনের সংকেতগুলোকে ডিজিটাল সংকেত বলে। অর্থাৎ ডিজিটাল পদ্ধতি হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যাতে আলাদা আলাদা একক বা ডিজিট (0, 1) ব্যবহূত হয়। এই একক বা ইউনিটগুলো এককভাবে বা গুচ্ছাকারে ব্যবহার করে পূর্ণ সংখ্যা প্রকাশ করা হয়।

Digital circuit - Base of Number system

চিত্রে একটি ডিজিটাল সংকেত দেখানো হয়েছে। এই বর্তনীতে বাইনারি সংখ্যা ব্যবহার করা হয়। ডিজিটাল বর্তনীতে এক ভোল্টেজ স্তর থেকে অন্য ভোল্টেজ স্তরে যেতে সুইচ হিসেবে ডায়োড বা ট্রানজিস্টর ব্যবহার করা হয়।

১। ডেসিমাল বা দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি (Decimal Number System) :

দশমিক পদ্ধতির ভিত্তি বা বেস হচ্ছে 10। কারণ এই পদ্ধতিতে মোট 10টি মৌলিক চিহ্ন আছে। যথা- 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9

স্থানীয় মানঃ আমাদের প্রয়োজনীয় গাণিতিক কাজ গুলো সাধারণত দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে করা হয়। দশমিক পদ্ধতির একটি সংখ্যা যেমন 528 ধরা যাক। এই সংখ্যাটির 5 অঙ্কটির নিজের মান 5, এই সংখ্যাটি তৃতীয় অবস্থানে অর্থাৎ শতকের ঘরে রয়েছে। এখানে সংখ্যা পদ্ধতির বেস বা ভিত 10। সংখ্যাটিকে গাণিতিক ভাষায় লেখা যায়,

\begin{array}{l} 528=5 \times 100+2 \times 10+8 \times 1 \\ \text { বা, } 5 \times 10^{2}+2 \times 10^{1}+8 \times 10^{0} \end{array}

উল্লেখ্য, শূন্য ছাড়া যে কোনো সংখ্যার ঘাত (Power) শূন্য হলে তার মান 1 হয়।

কোনো একটি দশমিক সংখ্যা প্রকাশের জন্য একক, দশক, শতকের ঘর অর্থাৎ 10^{0}, 10^{1}, 10^{2} ইত্যাদির ঘর আছে।

এখানে প্রত্যেকটি স্থানকেই 10 এর পাওয়ার (Power) হিসেবে দেখানো হয়েছে। যেমন- 432.45-কে ডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে নিম্নলিখিত উপায়ে লেখা যায়।

432.45_{10}=4 \times 10^{2}+3 \times 10^{1}+2 \times 10^{0}+4 \times 10^{-1}+5 \times 10^{-2}

 

২। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি (Binary Number System) :

বাইনারি পদ্ধতিতে 0 এবং 1 এই দুটি মাত্র অঙ্ক ব্যবহার করা হয়। এজন্য এই পদ্ধতিকে দ্বিমিক সংখ্যা পদ্ধতিও বলা হয়। এ সংখ্যা পদ্ধতির ভিত্তি বা বেস 2। এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত 0 বা 1 অঙ্ককে বিট বলা হয়। সাধারণত ৪টি বিট সমন্বয়ে একটি বাইট (byte) গঠিত হয়।

দশমিক পদ্ধতিতে 0 থেকে 9 পর্যন্ত গণনার জন্য একটি স্থান প্রয়োজন এবং তার পরে দ্বিতীয় বা অন্যান্য স্থান ব্যবহার করা হয়। যেমন- 9 এর পরে 10 হয়। তেমনি বাইনারি পদ্ধতির 0 এবং 1 গণনার জন্য একটি স্থান, তারপরে দ্বিতীয় বা অন্যান্য স্থান প্রয়োজন হয়। নিচের সারণিতে দশমিক ও সমকক্ষ বাইনারি নিয়মে গণনা দেখানো হয়েছে।

দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি  বাইনারি পদ্ধতি 
0 0
1 1
2 10
3 11
4 100
5 101
6 110
7 111
8 1000
9 1001
10 1010

বাইনারি পদ্ধতি হলো সরলতম গণনা পদ্ধতি। বাইনারি বা 2 ভিত্তিক পদ্ধতি কম্পিউটারের জন্য প্রযোজ্য। ০ এবং 1 কে বিভিন্নভাবে সাজিয়ে সকল সংখ্যাকে বাইনারি সংখ্যায় লেখা যায়। এই পদ্ধতির বিট দুটিকে সহজে ইলেকট্রনিক উপায়ে নির্দেশ করা সম্ভব। কম্পিউটার বা ইলেকট্রনিক যন্ত্র দুটি অবস্থা সহজেই অনুধাবন করতে পারে। একটি হলো লজিক লেভেল ০, একে OFF, LOW, FALSE কিংবা NO-ও বলা হয়। অন্যটি হলো লজিক লেভেল 1, একে ON, HIGH, TRUE কিংবা YES-ও বলা হয়।

Binary Number System - Base of Number system

বাইনারি নম্বর থেকে ডেসিমেল নম্বরে রূপান্তর (Conversion of binary number to decimal number)

বাইনারি থেকে ডেসিমেলে রূপান্তর করতে প্রত্যেকটি ডিজিটের স্থানীয় মানকে 2 এর সূচক হিসেবে লিখতে হয়। কোনো ডিজিটের ডান পার্শ্বে যতটি ডিজিট থাকবে ডিজিটকে 2 এর তত সূচক দিয়ে গুণ করতে হবে। এভাবে প্রত্যেকটি ডিজিটকে 2 এর সূচক দিয়ে গুণ করে যোগ করে ডেসিমেলের মান পাওয়া যায় এবং ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে 2^{-1}, 2^{-2}, 2^{-3} ইত্যাদি দিয়ে প্রথম থেকে পরপর ক্রমানয়ে গুণ করে গুণফলকে যোগ করে ডেসিমেলের মান পাওয়া যায়।

উদাহরণ I: বাইনারি 101011-কে ডেসিমেলে প্রকাশ কর।

বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে, 

\begin{array}{l} 101011_{2}=1 \times 2^{5}+0 \times 2^{4}+1 \times 2^{3}+0 \times 2^{2}+1 \times 2^{1}+1 \times 2^{0} \\ =32+0+8+0+2+1=43 \\ \therefore \therefore 101011_{2}=43_{10} \text { (ডেসিমেলে প্রকাশিত) } \end{array}

 

উদাহরণ II: (1100.11)_{2} কে ডেসিমেলে প্রকাশ কর। 

\begin{aligned} (1100.11)_{2}=1 \times 2^{3}+& 1 \times 2^{2}+0 \times 2^{1}+0 \times 2^{0}+1 \times 2^{-1}+1 \times 2^{-2} \\ &=8+4+0+0+\frac{1}{2}+\frac{1}{4} \\ &=12+\frac{1}{2}+\frac{1}{4} \\ &=12+\frac{1+2}{4} \\ &=12+\frac{3}{4} \\ &=12+0.75=(12.75)_{10} \end{aligned}

ডেসিমেল নম্বরকে বাইনারি নম্বরে রূপান্তর

Conversion of decimal number to binary number

কোনো ডেসিমেল পদ্ধতির বেস হলো 10 এবং বাইনারি পদ্ধতির বেস হলো 2ডেসিমেল পদ্ধতি থেকে বাইনারি পদ্ধতিতে রূপান্তরের দুটি ধারা হলো—

(১) ডেসিমেল নম্বরকে 2 দ্বারা বার বার ভাগ করতে হবে যতক্ষণ না ভাগফল শূন্য হয়।

(২) ভাগশেষ বা অবশিষ্টকে উল্টো দিক থেকে পরপর পাশাপাশি সাজিয়ে বাইনারি নম্বর পাওয়া যাবে।

Decimal number to Binary number

 

কোনো ডেসিমেল নম্বরের ভগ্নাংশকে বাইনারি নম্বরে রূপান্তর করতে হলে নম্বরটিকে পরপর 2 দ্বারা গুণ করতে হবে। গুণ করে কোনো পূর্ণ সংখ্যা পাওয়া গেলে হাতে রাখতে হবে এবং প্রাপ্ত ভগ্নাংশকে আবার 2 দ্বারা গুণ করতে হবে যতক্ষণ না ভগ্নাংশটি শূন্য হয়। একই ভগ্নাংশ দু’বার হলে আর গুণ করতে হবে না। এরপর হাতে রাখা পূর্ণ সংখ্যা ওপর থেকে নিচের দিকে পাশাপাশি সাজাতে হবে।

 

উদাহরণ (ii):  0.75 এর বাইনারিতে রূপান্তর কর।

 

0.75

2

1 .50

2

1 .00

 

\therefore(0.75)_{10}=(0.11)_{2}

 

উদাহরণ (iii): ডেসিমেল 25.625_{10}-কে বাইনারিতে রূপান্তর কর। 

Decimal number to Binary number conversation

সুতরাং, \therefore 25.625_{10}=(11001.101)_{2}

বিট (bit): বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির  এবং  এই দুটি মৌলিক ডিজিটকে বিট বলে।

বাইট (byte): আটটি বিটের গ্রুপ নিয়ে গঠিত শব্দকে বাইট বলা হয়। এক বাইটকে এক ক্যারেক্টারও বলে।

8 bit= 1 byte

1024 byte = 1 kilobyte(KB)

1024 kilobyte = 1 Megabyte (MB)

1024 Megabyte= 1 Gigabyte(GB)

 

৩। অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি (Octal Number System) :

অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতির বেস ৪। এই পদ্ধতির আটটি অঙ্ক হলো 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6 ও 7। আধুনিক কম্পিউটার উন্নয়নের প্রাথমিক অবস্থায় এই গণনা পদ্ধতি ব্যবহার করা হতোসারণিতে অক্টাল পদ্ধতিতে গণনার রীতি দেখানো হয়েছে।

 

 সারণি – ২

 

দশমিক পদ্ধতি অক্টাল পদ্ধতি
0 0
1 1
2 2
3 3
4 4
5 5
6 6
7 7
8 10
9 11
10 12
11 13

 

উদাহরণ i: 56_{10} সংখ্যাকে অক্টাল বা 8 ভিত্তিক সংখ্যায় রূপান্তর কর।

Number conversation To octal Number

উদাহরণ ii: 352_{8}– কে বাইনারিতে রূপান্তর কর। 

 

প্রথমে প্রত্যেক ডিজিটের অবস্থান মান জানতে হবে যা এর বিভিন্ন পাওয়ার দ্বারা বির্দেশিত হয়, যেমন-

             \begin{array}{l} 3 \quad 5 \quad 2 \\ 8^{2} 8^{1} 8^{0} \\ 6 4 8  1 \\ \begin{aligned} \therefore 352 &=3 \times 8^{2}+5 \times 8^{1}+2 \times 8^{0} \\ &=3 \times 64+5 \times 8+2 \times 1 \\ &=192+4+2 \\ &=234_{10} \end{aligned} \end{array}

উদাহরণ iii: 206.104_{8^{-}}– কে ডেসিমালে রূপান্তর কর। 

প্রথমে প্রত্যেক ডিজিটের অবস্থান মান (position value) জানতে হবে যা এর বিভিন্ন পাওয়ার দ্বারা নির্দেশিত হয় যেমন-

\begin{array}{l} 2 \quad 0 \quad 6 \\ 8^{2}  8^{1}  8^{0} \\ 206=2 \times 8^{2}+0 \times 8^{1}+6 \times 8^{0}=134 \\ \therefore 206.104_{8}=\left(134+\frac{17}{128}\right) \end{array} \begin{array}{ccc} 1 & 0 & 4 \\ & 8^{-1} 8^{-2} 8^{-3} \\ & 0.104 \frac{1}{8}+\frac{4}{8^{3}}=\frac{17}{128} \end{array}

 

হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি (Hexadecimal Number System) :

হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতির বেস 16। এই পদ্ধতির গণনার জন্য 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, A, B, C, D, E, F এই 16টি চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতিতে গণনার রীতি সারণি-৩ এ দেখানো হয়েছে। ছোট বড় প্রায় সকল কম্পিউটারে এই গণনা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

 

সারণি ৩ : বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতির গণনা

 

দশমিক পদ্ধতি বাইনারি পদ্ধতি অক্টাল পদ্ধতি হেক্সাডেসিমেল
0 0 0 0
1 1 1 1
2 10 2 2
3 11 3 3
4 100 4 4
5 101 5 5
6 110 6 6
7 111 7 7
8 1000 10 8
9 1001 11 9
10 1010 12 A
11 1011 13 B
12 1100 14 C
13 1101 15 D
14 1110 16 E
15 1111 17 F
16 1000 20 10
17 10001 21 11

 

বাইনারি থেকে হেক্সাডেসিমেলে রূপান্তর করতে প্রাপ্ত সংখ্যাকে ও বিট গ্রুপে বিভক্ত করে নিতে হবে।

 

উদাহরণ i: 1011010111_{2} কে হেক্সাডেসিমেলে রূপান্তর কর।

0010 \quad 1101\quad 0111

2 \quad \quad \quad\mathrm{D} \quad \quad 7

\therefore \quad 1011010111=2 \mathrm{D} 7_{16}

 

উদাহরণ II 10001100_{2}-কে হেক্সাডেসিমেলে রূপান্তর কর।

\begin{array}{l} 1000 \quad 1100 \\ \quad 8 \quad \quad C \\ \therefore 10001100=8 C_{16} \end{array}

 

উদাহরণ III: E A C F_{16} কে বাইনারিতে রূপান্তর কর।

 \begin{array}{l} E-1110, A-1010, C-1100, F-1111 \\ \therefore E A C F_{16}=1110  1010  1100  1111 \end{array}

 

উদাহরণ IV: A B CDEF যোগ কর এবং ফলাফল হেক্সাডেসিমেলে প্রকাশ কর।

\begin{array}{l} (A B C): \rightarrow 1010 \quad 1011 \quad 1100 \\ (D E F): \rightarrow 1101 \quad 1110 \quad 1111 \\ \hline 18 \quad A B \quad 0001 \quad 1000 \quad 1010 \quad 1011 \end{array}

 

৫। অক্টাল-হেক্সাডেসিমেল রূপান্তর (Octal-hexadecimal conversion) :

অক্টাল-হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পারস্পরিক রূপান্তরের ক্ষেত্রে প্রথম সংখ্যাটিকে দশমিকে অথবা বাইনারিতে রূপান্তর করে তারপর কাঙ্খিত সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তর করা হয়। এই দুই পদ্ধতির মধ্যে বাইনারি পদ্ধতির মধ্যস্থতায় রূপান্তরই সহজতম পদ্ধতি।

 

উদাহরণ I: (12 \mathrm{~A})_{16} কে অক্টালে রূপান্তর কর।

Number conversation To octal Number

উদাহরণ ii: (127)_{8} কে হেক্সাডেসিমেলে রূপান্তর কর। 

Number conversation To Hexadecimal Number

সংখ্যা পদ্ধতির রূপান্তর (Conversion of Number System)

দৈনন্দিন জীবনে আমরা ডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করি। কিন্তু কম্পিউটারে বাইনারি, অক্টাল কিংবা হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। এখন আমরা বিভিন্ন সংখ্যা পদ্ধতির রূপান্তর আলোচনা করব।

দশমিক সংখ্যা পদ্ধতি হতে অন্য যে কোনো সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তরের নিয়ম:- কোনো সংখ্যার দুটি অংশ। থাকতে পারে, যথা—পূর্ণাংশ ও ভগ্নাংশ। পূর্ণাংশ ও ভগ্নাংশ রূপান্তরের নিয়ম ভিন্নতর।

পূর্ণাংশের ক্ষেত্রে রূপান্তর :

যে দশমিক পূর্ণ সংখ্যাকে পরিবর্তন করতে হবে তাকে কাঙ্ক্ষিত পদ্ধতির ভিত্তি বা বেস দ্বারা ভাগ করতে হবে। যেমন- বাইনারির ক্ষেত্রে 2 দ্বারা, অক্টালের ক্ষেত্রে ৪ এবং হেক্সাডেসিমেলের ক্ষেত্রে 16 দ্বারা ভাগ করতে হবে। ভাগশেষকে সংরক্ষণ করতে হবে

উপরের ধাপে প্রাপ্ত ভাগফলকে বেস দ্বারা ভাগ করতে হবে এবং ভাগশেষকে সংরক্ষণ করতে হবে। এভাবে ভাগফলকে বেস বা ভিত্তি দ্বারা ভাগ করার প্রক্রিয়া ততক্ষণ পর্যন্ত চলতে থাকবে যতক্ষণ না ভাগফল শূন্য হয়। প্রাপ্ত ভাগশেষগুলোকে নিচের দিক থেকে উপরের দিকে সাজিয়ে লিখলেই রূপান্তরিত সংখ্যার পূর্ণাংশ পাওয়া যাবে।

 

উদাহরণঃ {(198) }_{10}=\text { (?) }_{2}

Number conversation To any Number

\therefore(198)_{10}=(11000110)_{2}

ভগ্নাংশের ক্ষেত্রে রুপান্তরঃ- এক্ষেত্রে যে ভগ্নাংশকে পরিবর্তন করা হবে সেটিকে কাঙ্খিত পদ্ধতির বেস বা ভিত্তি দ্বারা গুণ করতে হবে। যেমন- বাইনারির ক্ষেত্রে ২ দ্বারা, অক্টালের ক্ষেত্রে ৮ দ্বারা এবং হেক্সাডেসিমেলের ক্ষেত্রে ১৬ দ্বারা গুণ করতে হবে। প্রাপ্ত গুণফলের পূর্ণাংশকে সংরক্ষণ করতে হবে।

উপরের ধাপে প্রাপ্ত গুণফলের ভগ্নাংশকে পুনরায় কাঙ্ক্ষিত বেস বা ভিত্তি দ্বারা গুণ করে প্রাপ্ত পূর্ণাংশকে সংরক্ষণ করতে হবে এবং প্রাপ্ত ভগ্নাংশকে বেস বা ভিত্তি দ্বারা গুণ করার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে যতক্ষণ না গুণফল শূন্য হয়।

র‍্যাডিক্স (Radix) পয়েন্টের পরে প্রাপ্ত ভগ্নাংশগুলোকে উপরের প্রাপ্ত পূর্ণকের দিক থেকে নিচের প্রাপ্ত পূর্ণকের দিকে সাজিয়ে লিখলেই রূপান্তরিত সংখ্যার ভগ্নাংশ পাওয়া যাবে।

পূর্ণাংশ  ভগ্নাংশ

 0.375

      2

0 0.750

     2

1 0.500

      ×2

1 .000
\therefore(.375)_{10}=(011)_{2}

 

দশমিক থেকে অক্টালে রূপান্তর :

দশমিক সংখ্যাকে পর্যায়ক্রমে ৪ দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষগুলোকে নিচের দিক থেকে একত্র করে দশমিক সংখ্যাটির অকটাল সংখ্যা পাওয়া যায়।

পূর্ণাংশের ক্ষেত্রেঃ

উদাহরণঃ(669)_{10}=(?)_{8}

Number conversation To octal Number

ভগ্নাংশের ক্ষেত্রেঃ 

দশমিক ভগ্নাংশকে অক্টালে রুপান্তরের জন্য গুণফল 0 না হওয়া পর্যন্ত সংখ্যাটিকে অনবরত 8 দিয়ে গুণ করতে হবে।

 

(0.046875)_{10}=(?)_{8}
পূর্ণাংশ  ভগ্নাংশ

 0.375

      2

0 0.750

     2

1 0.500

      ×2

1 .000

 

\therefore(0.046875)_{10}=(0.03)_{8}

 

দশমিক থেকে অক্টালে রুপান্তরঃ 

দশমিক সংখ্যাকে পর্যায়ক্রমে 8 দিয়ে ভাগ করে ভাগশেষগুলোকে নিচের দিক থেকে একত্রে করে দশমিক সংক্যাটির অক্টাল পাওয়া যায়।

পূর্ণাংশের ক্ষেত্রে –

উদাহরণঃ (669)_10=(?)_{8}

Number conversation To octal Number

ভগ্নাংশের ক্ষেত্রেঃ 

দশমিক ভগ্নাংশকে অক্টালে রুপান্তরের জন্য গুণফল 0 না হওয়া পর্যন্ত সংখ্যাটিকে অনবরত 8 দিয়ে গুণ করতে হবে।

উদাহরণঃ (0.046875)_{10}=(?)_{8}

 

পূর্ণাংশ  ভগ্নাংশ

 0.046875

           2

0 0.375

     2

3 000
\therefore(0.046875)_{10}=(0.03)_{8}

দশমিক থেকে হেক্সাডেসিমেলে রুপান্তরঃ 

দশমিক সংখ্যাকে হেক্সাডেসিমেলে রুপান্তরের জন্য পুর্ণসংখ্যাকে 16 দিয়ে ভাগ এবং ভগ্নাংশকে 16 দ্বারা গুণ করতে হয়।

পূর্ণাংশের ক্ষেত্রে-

উদাহরণঃ (886) _{10}=(?)_{16}

Number conversation To Hexadecimal Number

ভগ্নাংশ:

উদাহরণঃ  (0.850)_{10}=(?)_{16}

 

পূর্ণাংশ  ভগ্নাংশ

 0.850

  16

13 0.60

16

9 0.60

16

9 0.60

16

9 0.60
\therefore(0.850)_{10}=(0.0999)_{16}

যেকোনো সংখ্যা পদ্ধতি থেকে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তর:

বাইনারি অথবা অক্টাল বা হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি থেকে দশমিক সংখ্যা পদ্ধতিতে রূপান্তরের জন্য নিম্নের পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এক্ষেত্রে পূর্ণাংশ এবং ভগ্নাংশের জন্য একই নিয়ম ব্যবহৃত হয়।

রূপান্তরের সাধারণ নিয়ম : প্রদত্ত সংখ্যাটির বেস বা ভিত্তি সনাক্ত করে সংখ্যাটির অন্তর্গত প্রত্যেকটি অঙ্কের স্থানীয় মান বের করতে হয়। এরপর সংখ্যায় অন্তর্গত প্রত্যেকটি অঙ্কের নিজস্ব মানকে তার স্থানীয় মান দিয়ে গুণ করতে হয়। সবশেষে গুণফলের যোগফলই হবে সমতুল্য দশমিক সংখ্যা।

উদাহরণঃ (10101.101)_{2}=(?)_{10}

10101.101 এর দশমিক বিন্দুর বামের অংশ 10101 এবং দশমিক বিন্দুর ডানের অংশ 101

দশমিক বিন্দুর বামের অংশ 1 0 1 0 1 দশমিক বিন্দুর ডানের অংশ 1 0 1 0 1
\begin{array}{l} 1 \times 2^{0}=1 \\ 1 \times 2^{1}=0 \\ 1 \times 2^{2}=4 \\ 1 \times 2^{3}=0 \\ 1 \times 2^{4}=16 \end{array} 1 \times 2^{-1}=\frac{1}{2}=0.500

0 \times 2^{-2}=0 \times \frac{1}{4}=000

1 \times 2^{-3}=\frac{1}{8}=0.125

যোগফল =21 যোগফল = 0.625

দশমিক বিন্দুর বামের ও ডানের সংখ্যাগুলো মানের যোগফল =21+0.625=21.625

 

অক্টাল থেকে দশমিক রুপান্তরঃ 

অক্টাল সংখ্যার প্রতিটি স্থানীয় মান যোগ করে সংখ্যাটির সমতুল্য দশমিক মান নির্ণয় করা যায়।

উদাহরণঃ (123.540)_{8}=(?)_{10}

\begin{array}{l} \begin{array}{l} (123.540)_{8}=1 \times 8^{2}+2 \times 8^{1}+3 \times 8^{0}+5 \times 8^{-1}+4 \times 8^{-2}+0 \times 8^{-3} \\ =64+16+3+5 \times \frac{1}{8}+4 \times \frac{1}{8^{2}}+0 \\ =83+0.625+0.0625=83.6875</p> <p>\end{array} \\ \therefore(123.540)_{8}=(83.6875)_{10} \end{array}

হেক্সাডেসিমেল থেকে দশমিকে রূপান্তর :

হেক্সাডেসিমেল থেকে দশমিকে রূপান্তর করতে প্রথমে প্রদত্ত সংখ্যার প্রতিটি অঙ্ককে উহার নিজস্ব স্থানীয় মান দ্বারা গুণ করতে হয়। পরে ওই সমস্ত গুণফলকে যোগ করে হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাটির দশমিক সংখ্যার মান পাওয়া যায়।

 

\begin{array}{l} \text { উদাহরণ : (B5D.44) }_{16}=(?)_{10} \\ \text { সমাধান : (B5D.44) }_{16}=\mathrm{B} \times 16^{2}+5 \times 16^{1}+\mathrm{D} \times 16^{0}+4 \times 16^{-1}+4 \times 16^{-2} \\ =11 \times 256+80+13+0.25+0.016 \\ =2816+80+13+0.25+0.016 \\ =(2909.266)_{10} \end{array}

 

হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ চার বিট কেন দরকার হয় ? 

হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাকে সমতুল্য বাইনারিতে রূপান্তরের জন্য হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার প্রতিটি ডিজিটকে আলাদাভাবে চার বিটের বাইনারি গ্রুপে রূপান্তরিত করা হয় এবং প্রাপ্ত গ্রুপগুলোকে পরপর সাজালে উক্ত হেক্সাডেসিমেল সংখ্যার সমতুল্য বাইনারি সংখ্যা পাওয়া যায়। এজন্য হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতিতে সর্বোচ্চ চার বিট দরকার হয়।