10 Minute School
Log in

ম্যালেরিয়া জীবাণুর জীবন চক্রে জনুক্রম ব্যাখ্যা, ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ, ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ

ম্যালেরিয়া জীবাণুর জীবন চক্রে জনুক্রম ব্যাখ্যা 

(Explanation of  alternation of generation in the life cycle of malaria bacterium)

কোনো জীবের জীবন চক্রে হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড দশার পর্যায়ক্রমিক আবর্তনকে জনুক্রম (alternation of generation) বলে। ম্যালেরিয়া জীবাণু একটি অন্তঃপরজীবী প্রোটোজোয়া প্রাণী। এদের জীবন চক্রে জনুক্রম ঘটে। 

হ্যাপ্লয়েড (n) দশা 

স্পোরোজয়েট দশা (n) : মশকীর দেহে স্পোরোগনির ফলে সৃষ্টি হয় স্পোরোজয়েট দশা (n)। এই স্পোরোজয়েটবাহী মশকী মানুষকে দংশন করার সময় লালা নিঃসরণ করে। এ লালা এন্টিকোয়াগুলেন্ট হিসেবে করে, জায়গাটিকে অবশ ও পিচ্ছিল করে। আর এ লালার সাথে জীবাণু মানুষের দেহে প্রবেশ করে। 

মাইক্রো-মেটাক্রিপ্টোমেরোজয়েট (n) : স্পোরোজয়েট (n) মানুষের যকৃতকে আক্রমণ করে সেখানে হেপাটিক সাইজোগনি চক্র সম্পন্ন করে। হেপাটিক সাইজোগনির ফলে সৃষ্টি হয় মাইক্রো-মেটাক্রিপ্টোমেরোজয়েট (n)। মাইক্রো-মেটাক্রিপ্টোমেরোজয়েট মানুষের লোহিত রক্ত কণিকাকে আক্রমণ করে এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি চক্র সম্পন্ন করে। এর ফলে সৃষ্টি হয় মাইক্রোগ্যামিটোসাইট (n) ও ম্যাক্রোগ্যামিটোসাইট (n)।  

ডিপ্লয়েড (2n) দশা 

জাইগোট দশা (2n) : মশকীর দেহে গ্যামিটোগনির ফলে সৃষ্টি হয় স্ত্রী গ্যামিট ও পুং গ্যামিট। স্ত্রী ও পুং গ্যামিটের মিলনের ফলে জাইগোট (2n) সৃষ্টি হয়। 

উওকিনেট (2n) : জাইগোট রূপান্তরিত হয়ে সৃষ্টি করে উওকিনেট (2n)। পরে উওকিনেট উওসিস্ট (2n)-এ পরিণত হয়। ডিপ্লয়েড (2n) উওসিস্ট মায়োসিস পদ্ধতিতে বিভাজিত হয়ে হ্যাপ্লয়েড (n) স্পোরোজয়েট সৃষ্টি করে। এ হ্যাপ্লয়েড স্পোরোজয়েট দশা মশকীর লালার মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করে। উপরোক্ত আলোচনা থেকে দেখা যায় যে, ম্যালেরিয়া জীবাণুর জীবন চক্রে হ্যাপ্লয়েড ও ডিপ্লয়েড দশা পর্যায়ক্রমিকভাবে আবর্তিত হয়। সুতরাং ম্যালেরিয়া জীবাণুর জীবন চক্রে সুস্পষ্ট জনুক্রম বিদ্যমান। 

জনুক্রমের তাৎপর্য (Significance of Alternation of Generation) 

১। জনুক্রমে জীবাণুর প্রজাতির ধারাকে অক্ষুণ্ণ রাখে।  

২। জনুক্রম জীবাণুর জীবনীশক্তি ফিরিয়ে আনে।  

৩। জনুক্রম জীবাণুর বিস্তৃতিতে সহায়তা করে।  

৪। জনুক্রম জীবাণুর জীবন চক্র সম্পূর্ণ করে।  

৫। জনুক্রম প্রজাতিতে বৈচিত্র্য আনে ফলে প্রকরণ সৃষ্টি হয়। 

ম্যালেরিয়া জীবাণুর সুপ্তাবস্থাকাল বা সুপ্তিকাল (Incubation period) 

কোনো পোষক দেহে কোনো রোগের জীবাণু প্রবেশের সময় থেকে সেই পোষকের দেহে উক্ত রোগের লক্ষণ প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত সময়কে রোগের সুপ্তাবস্থাকাল বলে। যেমন : ম্যালেরিয়া জীবাণু মানবদেহে প্রবেশ করার সাথে সাথে মানবদেহে জ্বরের লক্ষণ প্রকাশিত হয় না। জীবাণু মানবদেহে প্রবেশ করার কয়েকদিন পর মানুষের দেহে ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। ম্যালেরিয়া জীবাণু মানুষের দেহে প্রবেশ করার সময় থেকে মানুষে ম্যালেরিয়া জ্বরের লক্ষণগুলো প্রকাশ হওয়া পর্যন্ত সময়কে ম্যালেরিয়া রোগের সুপ্তাবস্থাকাল (Latent period or Incubation period) বা সুপ্তিকাল বলে। কোনো রোগের জন্য সুপ্তিকাল সাধারণভাবে নির্দিষ্ট। 

ম্যালেরিয়া জীবাণুর বিভিন্ন প্রজাতির সুপ্তাবস্থার সময়কাল (The incubation period of different species of malaria germs):  

(i) Plasmodium vivax ১২-২০ দিন 

(ii) Plasmodium falciparum ৮-১৫ দিন  

(iii) Plasmodium ovale ১১-১৬ দিন  

(iv) Plasmodium malariae ১৮-৪০ দিন  

ম্যালেরিয়া রোগের লক্ষণ (Symptoms of malaria) : 

১। প্রাথমিক পর্যায়ে মাথাধরা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব, কোষ্ঠ কাঠিন্য, অনিদ্রা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। 

২। দ্বিতীয় পর্যায়ে রোগীর শীত অনুভূত হয় এবং কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে। জ্বর ১০৫ \mathrm{১০৬}_{0} ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। কয়েক ঘণ্টা পর জ্বর কমে যায়। ৪৮ ঘণ্টা পর পর কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসাই Plasmodium. vivax জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট ম্যালেরিয়ার প্রধান লক্ষণ।

৩। তৃতীয় পর্যায়ে রোগীর দেহে জীবাণুর সংখ্যা অসম্ভবভাবে বেড়ে যাওয়ার কারণে দ্রুত রক্তের লোহিত কণিকা ভাঙতে থাকে, ফলে রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, প্লীহা, যকৃত ও মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়ে রোগীর মৃত্যু ঘটাতে পারে। 

 

ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ (Transmission of Malaria) 

স্ত্রী Anopheles মশকীই ম্যালেরিয়া রোগের বিস্তার ঘটানোর একমাত্র মাধ্যম। পৃথিবীতে প্রায় দু’শত প্রজাতির Anopheles মশকী থাকলেও মূলত: ৬টি প্রজাতিই এ রোগের ব্যাপকভাবে বিস্তার ঘটায় বলে তথ্য পাওয়া গেছে। প্রাজাতিগুলো হলো-  Anopheles culicifacies, A. stephensi, A. fluviatilis, A. dirus, A. sundaicus, A. minimus। 

মানবদেহে ম্যালেরিয়ার জীবাণু প্রবেশের পর বিভিন্ন ধাপ অতিক্রম করে একসময় গ্যামিটোসাইট গঠন করে। Plasmodium vivax হতে সৃষ্ট গ্যামিটোসাইটগুলো মানুষের রক্তে ৭ দিন, কিন্তু Plasmodium falciparum হতে সৃষ্ট গ্যামিটোসাইটগুলো ৩০- ৬০ দিন, এমনকি ১২০ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে। এ সময়ের মধ্যে রোগীর দেহ হতে এরা মশকীর দেহে প্রবেশের সুযোগ পেলে পরবর্তী চক্র সম্পন্ন করতে শুরু করে। 

মশকীর প্রতিবার দংশনে Plasmodium vivax এর অন্তত: ৬টি এবং Plasmodium. falciparum এর অন্তত: ১২টি গ্যামিটোসাইট মশকীর দেহে প্রবেশ করে। রক্তপান করার সময় মশকীর দেহে বিভিন্ন দশার জীবাণু প্রবেশ করলেও একমাত্র গ্যামিটোসাইটগুলো বেঁচে থাকে, অন্যান্য দশায় জীবাণুগুলো মশকীর এনজাইমের ক্রিয়ায় নষ্ট হয়ে যায়। 

গ্যামিটোসাইটগুলো গ্যামিটোগনি ও স্পোরোগনি ধাপের মাধ্যমে অবশেষে স্পোরোজয়েট উৎপন্ন করে মশকীর লালাগ্রন্থিতে অবস্থান করে। এ মশকী কোনো মানুষকে দংশন করলে মানুষ এ জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়। এভাবে ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে এবং ম্যালেরিয়া জন-জনান্তরে ছড়িয়ে পড়ে। 

 

ম্যালেরিয়ার প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ (Prevention & Control of Malaria) 

ম্যালেরিয়া যেহেতু মশকী বাহিত একটি রোগ তাই মশকী প্রতিরোধের মাধ্যমে এ রোগ হতে মুক্ত থাকা সম্ভব। ম্যালেরিয়া প্রতিকার তিনভাবে হতে পারে;  যথা- 

(ক) মশকী নিধন,  

(খ) মশকী হতে আত্মরক্ষা এবং  

(গ) চিকিৎসা। 

(ক) মশকী নিধন (Killing mosquitoes): মশককুলের বংশ পরিবেশ হতে নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব। কিন্তু নিম্নলিখিত পন্থা অবলম্বন এদের বিস্তার রোধ করা যায়- 

(i) প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস (Destruction of breeding grounds): মশকীরা বদ্ধ পচা পানিতে ডিম পাড়ে। তাই বাড়ির আশেপাশের পরিত্যক্ত ডোবা, নালা পরিষ্কার রাখা, যেখানে সেখানে পানি জমতে না দেয়া, বাড়ির আশেপাশের ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল কেটে ফেলার মাধ্যমে মশকীর বসবাস ও প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা সম্ভব। 

(ii) লার্ভা ও পিউপা ধ্বংস করা (Destroying larvae and pupae): পচা পানিতে ডিম ফুটে মশকীর লার্ভা ও পিউপা দশা সৃষ্টি হয়। পানিতে কেরোসিন বা পেট্রোল জাতীয় পদার্থ ছিটিয়ে দিলে এরা অক্সিজেনের অভাবে মারা পড়ে। এছাড়া বিএইচসি (BHC) ,ডায়েলড্রিন (dieldrin) ইত্যাদি কীটনাশক ওষুধ তেলের পানিতে ছিটিয়ে দিলে মশকীর লার্ভা ও পিউপা মারা যায়। পানিতে জুভেনাইল হরমোন ছিটিয়ে দিলে, লার্ভাগুলোর রূপান্তর ব্যাহত হয় ফলে এরা পূর্ণাঙ্গ মশকীতে রূপান্তরিত হতে পারে না। 

(iii) পূর্ণাঙ্গ মশককুল নিধন (Complete killing of mosquitoes): ফগিং মেশিনের মাধ্যমে সালফার ডাই-অক্সাইডের ধোয়া সৃষ্টি করে মশা তাড়ানো বা মেরে ফেলা সম্ভব। এছাড়া বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়ে বা রেডিয়েশন এর মাধ্যমে বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি করে মশকীকুলকে ধ্বংস করা যায়। 

(iv) অধিকাংশ শহর এলাকাতে মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য কীটনাশক ব্যবহার করা হয়। 

উপরোক্ত সবগুলো পদ্ধতিই কমবেশি পানি তথা পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী। তাই যে সকল জলাশয়ে লার্ভা বা পিউপা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ঐ সকল জলাশয়ে গাপ্পি, কই, শিং, খলসে, তেলাপিয়া, পুঁটি, টাকি ইত্যাদি জাতীয় লার্ভিভোরাস মাছ চাষ করলে এরা মশকীর লার্ভা ও পিউপাগুলোকে ভক্ষণ করে। এতে মশকী নিধনের পাশাপাশি পরিবেশও থাকে দূষণমুক্ত। 

(খ) মশকীর দংশনের হাত হতে আত্মরক্ষা (Self-defense from mosquito bites): ঘরের দরজা-জানালায় মাশকীরোধী ঘন তারের নেট ব্যবহার করে মশকীর দংশন হতে আত্মরক্ষা করা যায়। এছাড়া কয়েল বা বিভিন্ন ধরনের স্প্রে ব্যবহার করা বা দেহের অনাবৃত অংশে বিশেষ ধরনের ক্রিম বা লোশন লাগানোর মাধ্যমে মশকীর দংশন হতে বাঁচা যায়। শয়নের সময় মশারি ব্যবহার এবং সন্ধ্যায় ধূপের ধোঁয়া প্রয়োগ করা। 

(গ) ম্যালেরিয়াগস্থ রোগীর চিকিৎসা (Treatment) : ম্যালেরিয়া রোগীকে অবশ্যই উন্নত চিকিৎসা প্রদান করা আবশ্যক। রোগ শনাক্ত করা ও উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান করলে ম্যালেরিয়া রোগ হতে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। সিনকোনা গাছের বাকল হতে তৈরি কুইনাইন ম্যালেরিয়া নিরাময়ের মূল ওষুধ। এ কুইনাইন দ্বারাই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরি হয়েছে। যেমন-ক্লোরোকুইন, নিভাকুইন, কেমোকুইন, অ্যাভলোক্লোর, ম্যাপাক্রিন, প্যালুড্রিন ইত্যাদিসহ ম্যালেরিয়া পরজীবী ধ্বংসের ভালো মানের বেশ কিছু ওষুধ বাজারে পাওয়া যায়। এছাড়া আক্রান্ত রোগীকে যাতে মশকী দংশন করতে না পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দেয়া আবশ্যক, নতুবা দ্রুত রোগের বিস্তার ঘটতে পারে। 

বি. দ্র. সুস্থদেহে সিনকোণা রস কম্পজ্বর সৃষ্টি করে। কম্প জ্বরে (ম্যালেরিয়া) সিনকোণা রস সেবনে রোগ আরোগ্য হয়। এ থেকে হোমিও চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে। 

ম্যালেরিয়ার টিকা (Malarial Vaccine) : দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর গবেষণার পর অবশেষে আবিস্কৃত হয়েছে বিশ্বের  প্রথম ম্যালেরিয়া প্রতিষেধক টিকা “Mosquirix” যা RTS,S নামেও পরিচিত। European Medicine Agency (EMA) ইতোমধ্যেই এ Vaccine-কে স্বীকৃতি দিয়েছে। গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন ও PATH Malaria নামক প্রতিষ্ঠানদ্বয় এ যুগান্তকারী আবিষ্কারে নেতৃত্ব দিয়েছে। চার ডোজের এ টিকা Plasmodium falciparum জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর অ্যান্টিবডি উৎপাদনে সক্ষম। উল্লেখ্য যে, আফ্রিকার সাব-সাহারান অঞ্চলের শিশুরা এ পরজীবী কর্তৃক সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় এবং এতে এদের মৃত্যুর হারও বেশি। তবে বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার প্রভৃতি সাবট্রপিক্যাল অঞ্চলের দেশগুলো এ রোগের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে পরিগণিত।  

 

এক্সোএরিথ্রোসাইটিক (হেপাটিক) এবং এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনির মধ্যে পার্থক্য (Differences between exo-erythrocytic (hepatic) and erythrocytic schizophrenia)

পার্থক্যের বিষয় হেপাটিক সাইজোগনি এরিথ্রোসাইটিক সাইজোগনি
১. কোথায় ঘটে মানুষের যকৃতে সংগঠিত হয়। মানুষের লোহিত কণিকায় ঘটে।
২. মধ্যবর্তী ধাপসমূহ ক্রিপ্টোজয়েট, ক্রিপ্টোমেরোজয়েট ও মেটাক্রিপ্টোমেরোজয়েট নামক ধাপসমূহ পাওয়া যায়। ট্রাফোজয়েট, সিগনেট রিং, সাইজন্ট ও মেরোজয়েট ধাপসমূহ দেখা যায়।
৩. হিমোজয়েন উৎপন্ন হয় না। শেষের দিকে হিমোজয়েন সৃষ্টি হয়।
৪. পোষকদেহে প্রতিক্রিয়া এ চক্র চলাকালে মানুষের জ্বর হয় না। এ চক্র চলাকালে মানবদেহে কাঁপুনিসহ জ্বর হয়।
৫. সাফনার-এর দানা দেখা যায় না। সাইজন্টের বাইরে সাফনার- এর দানা পাওয়া যায়।
৬.  জ্বর জ্বর হয় না। এ চক্র চলাকালে মানবদেহে কাঁপুনিসহ জ্বর হয়।

 

ম্যালেরিয়া পরজীবীর অযৌন ও যৌন চক্রের মধ্যে পার্থক্য (Differences between the asexual and sexual cycles of the malaria parasite)

পার্থক্যের বিষয় অযৌন চক্র (সাইজোগনি) যৌন চক্র (স্পোরোগনি)
১. কোথায় ঘটে মানুষের যকৃত ও লােহিত কণিকায়। মশকীর ক্রপের মধ্যে এবং হিমোসিলে।
২. মধ্যবর্তী ধাপসমূহ মেরোজয়েট, ট্রফোজয়েট, সাইজন্ট, সিগনেট রিং  ও রোজেট এ চক্রের মধ্যবর্তী ধাপ। এ চক্রে গ্যামিট, জাইগোট, উওকিনেট,  উওসিস্ট ও স্পোরোজয়েট দেখা যায়।
৩. সর্বশেষ ধাপ গ্যামিটোসাইট। স্পোরোজয়েট।
৪. হিমোজয়েন এ চক্রের শেষের দিকে হিমোজয়েন সৃষ্টি হয়। কখনোই হিমোজয়েন সৃষ্টি হয় না।
৫. পোষকদেহে প্রতিক্রিয়া কাঁপুনিসহ জ্বর, সে সঙ্গে অন্যান্য উপসর্গ। তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।
৬. চক্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে। ঘটে না।
৭. গ্যামিট সৃষ্টি হয় না। সৃষ্টি হয়।
৮. জাইগোট যেহেতু গ্যামিট সৃষ্টি হয় না তাই জাইগোট উৎপন্ন হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। পুং ও স্ত্রী গ্যামিটের মিলন ঘটিয়ে জাইগোট সৃষ্টি করে।