পরিবেশ এবং জলবায়ু | Environment and Climate
গ্রিন হাউজ
- ১৮৯৬ সালে ‘গ্রিন হাউজ’ শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন সুইডিশ রসায়নবিদ সোভনটে আরহেনিয়াস।
- গ্রিন হাউজ ইফেক্টের জন্য মূলত দায়ী কার্বন ডাই অক্সাইড (CO_2)ও CFC, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, কার্বন মনোঅক্সাইড প্রভৃতি।
- গ্রিন হাউজ ইফেক্টের ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে গিয়ে বাংলাদেশের নিম্নভূমি নিমজ্জিত হবে।
- গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়ার ফলে বরফ গলে গেলে লাভবান হবে— পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক অংশ।
- গ্রিন হাউজ – এক ধরনের কাচের ঘর।
- বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে – মানুষের।
- অতিবেগুনি রশ্মি আসে – সূর্য থেকে।
- গাড়ির কালো ধোঁয়ায় থাকে- কার্বন মনোঅক্সাইড।
- রেফ্রিজারেটরের কম্প্রেসারে থাকে- ফ্রেয়ন নামক তরল।
- বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তরে ফাটলের জন্য দায়ী- ক্লোরোফ্লোরো-কার্বন (CFC)।
এসিড বৃষ্টি
- সালফার ও নাইট্রোজেন অক্সাইডসমূহ বায়ুমণ্ডলে সালফিউরিক এসিড ও নাইট্রিক এসিডে পরিণত হয়ে বৃষ্টির সঙ্গে ভূ-পৃষ্ঠে নেমে আসাকে এসিড বৃষ্টি বলে।
- এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী মূলত সালফার ডাই অক্সাইড।
সবুজ অর্থনীতি
- পরিবেশ সংরক্ষণ করে অর্থনৈতিকপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণে যে অর্থনীতি কাজ করে তাকে সবুজ অর্থনীতি বলে।
- পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সমুদ্রের নিচে মিটিংয়ের আয়োজন করে মালদ্বীপ।
- সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে হিমালয়ের পর্বতমালায় মন্ত্রিপরিষদের মিটিং করে বিশ্বকে নাড়িয়ে দিয়েছিলো নেপাল।
বাংলাদেশের জলবায়ু
- বাংলাদেশের জলবায়ু সাধারণভাবে ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু নামে পরিচিত।
- তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, বায়ুচাপ ও আর্দ্রতার বিশ্লেষণ জলবায়ুর তারতম্যের উপর ভিত্তি করে ক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলের অন্তর্গত বাংলাদেশের জলবায়ুকে যে কতকগুলি শ্রেণিতে বিভক্ত করা যেতে পারে সেগুলি হচ্ছে-
- ক্রান্তীয়-
- উপক্রান্তীয় শুষ্কপ্রায়
- ক্রান্তীয়-উপক্রান্তীয়
- আর্দ্রপ্রায় ক্রান্তীয়-
- উপক্রান্তীয় আর্দ্র ক্রান্তীয়
- সামুদ্রিক ক্রান্তীয়
- বৃষ্টিবহুল উপক্রান্তীয়
- বৃষ্টিবহুল ।
- পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় একটি দেশে মোট ভূমির ২৫% বনভূমি থাকা প্রয়োজন।
- বাংলাদেশে মোট আয়তনের ২৫ ভাগ বনভূমি থাকার প্রয়োজনীয়তা থাকলেও আছে মাত্র ১৭.৬২%।
- সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান—দশম।
- ৫০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকা প্লাবিত হবে যদি—সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা ৩ ফুট বৃদ্ধি পায়।
- বিশ্বব্যাংক জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সাহায্য প্রদান করবে—৩০%।
- বাংলাদেশের জনগণের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে—সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি।
- বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস এপ্রিল।
- শীতলতম মাস জানুয়ারি।
- বাংলাদেশে ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র ৪টি
-
- রাঙ্গামাটি,
- গাজীপুর,
- মহাখালী ও
- সিলেট
- বাংলাদেশে ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র ৪টি
-
- চট্টগ্রাম,
- ঢাকা,
- রংপুর ও
- সিলেট
- বাপা – বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন ; প্রতিষ্ঠিত হয় – ২০০০ খ্রিস্টাব্দে
- বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতি –বেলা (BELA)
- BELA– Bangladesh Environmental Lawyers Association;
- প্রতিষ্ঠিত হয় – ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে
- বাংলাদেশের পরিবেশ আদালত ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে অবস্থিত।
- বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় পরিবেশ নীতি হয় ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে।
আবহাওয়া
- কোনো স্থানের বাতাসের তাপ, উষ্ণতা, চাপ, আর্দ্রতা, মেঘ, বৃষ্টি, জলীয়বাষ্পের পরিমাণ, বায়ু প্রবাহ প্রভৃতির দৈনন্দিন অবস্থা।
জলবায়ু
- কোনো স্থানের ৩০-৪০ বছরের আবহাওয়ার গড়।
বায়ুর আর্দ্রতা
- বাতাসে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে।
দ্রাঘিমা রেখা
- নিয়ামকটি একটি অঞ্চল বা দেশের জলবায়ু নির্ধারণ করে না।
বিবিধ
- সূর্য সারা বছর লম্বভাবে কিরণ দেয় নিরক্ষরেখার উপর।
- সমুদ্র সমতল হতে প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় তাপমাত্রা হ্রাস পায় ৬° সেলসিয়াস।
- বায়ু প্রবাহিত হয় – উচ্চ চাপের স্থান থেকে নিম্নচাপের দিকে।
- সমুদ্রপৃষ্ঠে বায়ুর স্বাভাবিক চাপ ৭৬০ মিলিমিটার পারদ-স্তম্ভের সমান।
- বায়ুচাপ মাপা হয় ব্যারোমিটার দ্বারা।
- বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বাড়লে বায়ুর চাপ কমে যায়।
- ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে বায়ুচাপ ক্রমশ কমতে থাকে।
- উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন ও ছোট রাত্রি ২১ জুন।
- উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন ও বড় রাত্রি ২২ ডিসেম্বর।
অভিবাসন
- অভিবাসনস্থান পরিবর্তনের জন্য আবাসস্থল পরিবর্তনকে বলা হয় অভিবাসন।
উদ্বাস্তু (Refugee)
- বলপূর্বক অভিগমনের ফলে যে সমস্ত ব্যক্তি কোনো স্থানে আগমন করে ও স্থায়ীভাবে আবাস স্থাপন করে তাদেরকে বলে উদ্বাস্তু (Refugee)।
শরণার্থী (Immigrant)
- যারা সাময়িকভাবে আশ্রয় গ্রহণ করে এবং সুযোগমত স্বদেশ প্রত্যাবর্তনেরঅপেক্ষায় থাকে তাদের বলা হয় শরণার্থী (Immigrant)।
অভিযোজন (Adaptation)
- প্রকৃতির পরিবর্তনশীল অবস্থার সাথে জীব জগতকে খাপ খাইয়ে নেয়া।
GreenPeace:
- একটি পরিবেশ আন্দোলন গ্রুপ (নেদারল্যান্ড, ১৯৭১)
IUCN
- বিশ্বব্যাপী প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে কাজ করে (গ্লান্ড, সুইজারল্যান্ড, ১৯৪৮)
NATIONAL & INTERNATIONAL CLIMATE ACTION INITIATIVES (জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু নিয়ন্ত্রণ পদক্ষেপ)
বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কৌশল ও এ্যাকশন ২০০৯ (Bangladesh Climate Change Strategy and Action Plan 2009)
- ৫ জুনকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
- ইউএনইপি (United Nation Environment Programme-UNEP) সদর দপ্তর কেনিয়ার নাইরোবিতে।
মন্ট্রিল প্রটোকল
- ওজোনস্তর রক্ষা বা ওজোনস্তর ক্ষয়কারী বস্তুসামগ্রী ফেজ আউট করার উদ্দেশ্যে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির উদ্যেগে ১৯৮৭ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর কানাডার মন্ট্রিলে স্বাক্ষরিত হয় মন্ট্রিল প্রটোকল।
- প্রটোকলটি স্বাক্ষরের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে জাতিসংঘ ১৬ সেপ্টেম্বরকে আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছে।
ধরিত্রী সম্মেলন ১৯৯২
- ব্রাজিলের রিও ডি জেনেরিওতে প্রথম ধরিত্রী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯২ সালে।
- এখানে ১৭৮টি দেশের সাড়ে তিন হাজার প্রতিনিধি অংশ নেন।
কিয়োটো সম্মেলন ১৯৯৭
- পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রতিরোধ বিষয়ক বিশ্ব সম্মেলন ১১ ডিসেম্বর ‘৯৭ জাপানের প্রাচীন রাজধানী কিয়োটোতে অনুষ্ঠিত হয়।
কোপেনহেগেন সম্মেলন ২০০৯
- ২০০৯ সালের ৭-১৮ ডিসেম্বর ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ১৫তম সম্মেলন।
রিও+২০ সম্মেলন ২০১২
- ১৯৯২ সালের পরে ২০ জুন, ২০১২ সালে পুনরায় ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত হয়।
NATURAL DISASTER AND DISASTER MANAGEMENT (প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং দুর্যোগ মোকাবিলা)
- পৃথিবীতে যে প্রাকৃতিক দুর্যোগটি সবচেয়ে বেশি আঘাত হানে- বন্যা (Flooding)
ঘূর্ণিঝড়
- ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটে প্রশান্ত মহাসাগর, উত্তর ও দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে।
- ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয় নিরক্ষরেখার কাছাকাছি উষ্ণ ও শীতল বায়ুর বিপরীতমুখী প্রবাহ থেকে।
- বাংলাদেশে বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ঘটায় ১৯৭০ সালে সংঘটিত ঘূর্ণিঝড়।
- ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে দুর্যোগের সৃষ্টি হলেও এটি পৃথিবীতে তাপের ভারসাম্য রক্ষা করে।
- সাইক্লোন সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে নিম্নচাপ ও উচ্চ তাপমাত্রা।
- আটলান্টিক মহাসাগর এলাকা তথা আমেরিকার আশেপাশে ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের গতিবেগ যখন ঘণ্টায় ১১৯ কি.মি. এর বেশি হয় তখন জনগণকে এর ভয়াবহতা বুঝাতে হ্যারিকেন শব্দটি ব্যবহার করা হয়।
অঞ্চল | ঘূর্ণিঝড়ের নাম |
বাংলাদেশ ও ভারতীয় অঞ্চলে | সাইক্লোন |
জাপান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে | টাইফুন |
ফিলিপাইনে | বাগুইড বা বোগিও |
অস্ট্রেলিয়ায় | উইলী উইলী |
আমেরিকা ও আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে | হ্যারিকেন |
খরা
- বিশ্বের সর্বত্র খরা নামক প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হানে।
- তবে আফ্রিকার দেশসমূহে এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
- খরার প্রভাবে অগ্নিকাণ্ডের উপদ্রব বেড়ে যায়।
ভূমিকম্প
- বিশ্বে এ যাবৎকালের সর্বাপেক্ষা ভয়াবহ ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে পর্তুগালের লিসবনে ১৭৫৫ সালে।
- রিখটার স্কেলে এর কম্পন মাত্রা ছিল ৮.৪।
- ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রের নাম সিসমোগ্রাফ।
- ভূ-অভ্যন্তরে যেখানে শক্তি বিমুক্ত হয় তাকে বলে ভূমিকম্পের উপকেন্দ্র (Epicenter)।
- বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ফলে বদলে গিয়েছে ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ।
- বাংলাদেশকে ভূমিকম্পীয় অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে ৩টি।
-
- উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চল (মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল)
- মধ্য অঞ্চল (মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল)
- দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল (কম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল)
সুনামি
- সমুদ্র তলদেশে ভূ-কম্পনের ফলে উপরের জলভাগে প্রবল ঢেউয়ের সৃষ্টিকে সুনামি বলে।
- ‘সুনামি’ জাপানি শব্দ, এর অর্থ – পোতাশ্রয়ের ঢেউ।
- সাম্প্রতিককালে ভয়াবহ সুনামি হয় ২০০৪ সালে।
- ২০০৪ সালের সুনামির উৎপত্তি স্থল ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা
- পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে দুর্যোগ প্রতিরোধ
- দুর্যোগ প্রস্তুতি
- দুর্যোগে সাড়াদান
- পুনরুদ্ধার কার্যক্রম