10 Minute School
Log in

বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি (Geography of Bangladesh)

বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান বর্ণনা

  • বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ব-দ্বীপ।
  • বাংলাদেশের ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় অর্ধেক অংশ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা- এই তিনটি বৃহৎ নদীপ্রণালীর সর্বনিম্ন ভাটিতে অবস্থিত।
বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি

Map of Bangladesh

বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চল

পার্ব্যত চট্টগ্রাম, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম জেলার পূর্বাংশ ও কক্সবাজার ও সিলেট জেলার উত্তর-পূর্বাংশ এবং মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণাংশ।

ভূমির অবস্থা এবং গঠনের সময়ানুক্রমিক দিক হতে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতিকে তিনটি প্রধান বিভাগে ভাগ করা যায়- 

  1. টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ।
  2. প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ।
  3. সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি।

 

টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ

  • টারশিয়ারি অর্থ – তৃতীয়।
  • ভূ-তাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ভূমিরূপ গঠিত হয় টারশিয়ারি যুগে।

বাংলাদেশের এ টারশিয়ারি যুগের পাহাড়গুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-

  1. দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ
  2. উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ

 

  • চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে জুম চাষপদ্ধতি দেখা যায়।
  • মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সীমানায় অবস্থিত পাহাড়গুলো কোনোরূপ গিরিশ্রেণি গঠন করেনি। এদেরকে ত্রিপুরার পাহাড় বলা হয়।
  • সম্প্রতি সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় পাওয়া গেছে ইউরেনিয়াম।

প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ

  • প্লাইস্টোসিন হলো বরফ যুগ।
  • প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ অঞ্চলের মাটির রং লাল ও ধূসর।

এই উচ্চভূমিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়-

  1. বরেন্দ্র ভূমি
  2. মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়
  3. লালমাই পাহাড়

 

  • সর্ববৃহৎ প্লাইস্টোসিন যুগের উচু ভূমি – বরেন্দ্রভূমি।
  • বাংলাদেশের সবচেয়ে খরাপ্রবণ অঞ্চল – উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল। 
  • লালমাই পাহাড় কুমিল্লা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত।
  • বরেন্দ্রভূমি বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ এবং বাংলাদেশের গজারী বৃক্ষের কেন্দ্র।
  • ভাওয়াল ও মধুপুরের বনভূমি -শালবৃক্ষের জন্য বিখ্যাত।
  • লালমাই পাহাড়ের মাটি লাল এবং নুড়ি,বালি ইত্যাদি দ্বারা গঠিত।

সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি

  • এ অঞ্চল পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা প্রভৃতি নদ-নদী ও এদের উপনদী ও শাখানদী বাহিত পলিমাটি দ্বারা গঠিত।
  • এ অঞ্চলটি বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানব্যাপী বিস্তৃত।
  • বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের সমভূমিকে সাধারণত ব-দ্বীপ বলা হয়।

সক্রিয় ব-দ্বীপ

  • পূর্বে মেঘনা নদীর মোহনা হতে পশ্চিমে গড়াই মধুমতি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ব-দ্বীপ সমভূমির পূর্বাংশকে সক্রিয় ব-দ্বীপ বলা হয়।

বাংলাদেশের নদ-নদী ( WATER BODIES OF BANGLADESH)

  • বাংলাদেশের নদীমালা এর গর্ব। এখানে প্রায় ৭০০টি নদী-উপনদী সমন্বয়ে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নদীব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।

বাংলাদেশের নদীমালাকে চারটি প্রধান নদীব্যবস্থা বা নদী প্রণালীতে বিভক্ত করা যেতে পারে-

  1. ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী প্রণালী
  2. গঙ্গা-পদ্মা নদী প্রণালী
  3. সুরমা-মেঘনা নদী প্রণালী এবং
  4. চট্টগ্রাম অঞ্চলের নদ-নদীসমূহ।

 

  • বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আন্তর্জাতিক বা আন্তসীমান্ত নদী ৫৭টি।
  • মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা অভিন্ন নদী ৩টি (সাঙ্গু, মাতামুহুরী এবং নাফ)।
  • ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা অভিন্ন নদী ৫৪টি।
  • বাংলাদেশের সবচেয়ে নাব্য নদী- মেঘনা।
  • বৃহত্তম নদী- মেঘনা।
  • দীর্ঘতম নদী- ব্রহ্মপুত্র।
  • প্রশস্ততম নদী- মেঘনা।
  • খরস্রোতা নদী- কর্ণফুলী।
  • গভীরতম নদী- মেঘনা।
নদী বিভক্ত করেছে
নাফ বাংলাদেশ ও মায়ানমারকে
হাড়িয়াভাঙ্গা বাংলাদেশ ও ভারতকে
  • বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে কুলিখ নদী।
  • বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চর রয়েছে যমুনা নদীতে।
  • মেঘনা নদীর ভারতীয় অংশের নাম বরাক।
  • বরাক নদীতেই টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
  • টিপাইমুখ বাঁধ অবস্থিত – ভারতের মণিপুর রাজ্যে।
  • ‘বাকল্যান্ড বাঁধ’ অবস্থিত বুড়িগঙ্গার তীরে।
নদী অপর নাম 
পদ্মা কীর্তিনাশা
যমুনা জোনাই
ব্রহ্মপুত্রে লৌহিত্য
বুড়িগঙ্গা দোলাই

বঙ্গোপসাগর

  • ভারত মহাসাগরের অংশবিশেষ
  • বঙ্গোপসাগরের একটি উল্লেখযোগ্য খাতের নাম Swatch of No Ground যা বাংলায় ‘গঙ্গাখাত’ নামে সুপরিচিত

অন্যান্য

  • বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিল – চলনবিল (পাবনা ও নাটোর জেলা, সিরাজগঞ্জ)
  • বাংলাদেশের বৃহত্তম হাওড় -হাকালুকি (মৌলভীবাজার, সিলেট)
  • বর্তমানে বাংলাদেশে সমুদ্রবন্দর –৩টি (চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা)
  • পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ – বাংলাদেশ
  • বাংলাদেশের বৃহত্তম ব-দ্বীপ- সুন্দরবন
  • বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপ- ভোলা
  • কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ- সেন্টমার্টিন
  • সেন্টমার্টিন দ্বীপের অপর নাম- নারিকেল জিঞ্জিরা
  • এটি বাংলাদেশের সবেচেয়ে ছোট ইউনিয়ন ও সর্ব দক্ষিণের দ্বীপ

নদ-নদীর উৎপত্তি

নদী উৎপত্তিস্থল 
পদ্মা হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ
মেঘনা আসামের নাগা মনিপুর পাহাড়ের দক্ষিণে লুসাই পাহাড়
যমুনা কৈলাশ শৃঙ্গের মানস সরোবর
ব্রহ্মপুত্র কৈলাশ শৃঙ্গের মানস সরোবর
কর্ণফুলী মিজোরামের লুসাই পাহাড়
করতোয়া সিকিমের পর্বত অঞ্চল
তিস্তা সিকিমের পর্বত অঞ্চল
সাঙ্গু আরাকান পাহাড়

 

  • গঙ্গা (পদ্মা) চারটি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত (চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ)।
  • ব্রহ্মপুত্র তিনটি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত (চীন, ভারত ও বাংলাদেশ)।

 

নদীর মিলনস্থল

নদী মিলনস্থল
পদ্মা ও মেঘনা চাঁদপুর
পদ্মা ও যমুনা গোয়ালন্দ
সুরমা ও কুশিয়ারা হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ উপজেলা
মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র ভৈরব বাজার

 

  • বাংলাদেশের জলসীমায় উৎপত্তি ও সমাপ্ত নদী হালদা।
  • বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী।
  • নিঝুম দ্বীপ মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত, হাতিয়া, নোয়াখালী।

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ (RESOURCES OF BANGLADESH)

  • বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল – পাট
  • বাংলাদেশের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল – চা
  • রবি শস্য- শীতকালীন
  • খরিপ শস্য – গ্রীষ্মকালীন
  • সর্বশেষ কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয় – ২০১৯ সালে
  • স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম কৃষিশুমারী – ১৯৭৭
  • সবচেয়ে বেশি চা বাগান আছে এবং উৎপাদন হয় – মৌলভীবাজারে
  • কেন্দ্রীয় গো প্রজনন খামার- সাভারে
  • বাংলাদেশে আমন ধান কাটা হয় অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে
  • বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত ধান – বোরো ধান
  • পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনভূমি থাকা প্রয়োজন – ২৫%
  • বাংলাদেশের আছে – ১৭.৬২%

সুন্দরবন (Mangrove Forest)

  • বাংলাদেশের বৃহত্তম বন সুন্দরবন।
  • সুন্দরবনের আয়তন- ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার।
  • ৬০% বাংলাদেশে পড়েছে, বাকি ৪০% ভারতে।
  • পৃথিবীর বৃহত্তম টাইডাল ও ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন।
  • সুন্দরবনে বাঘ গণনায় ব্যবহৃত হয় পাগমার্ক পদ্ধতি।

বিবিধ

  • অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশের বৃহত্তম বনভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বনভূমি।
  • পার্বত্য বনাঞ্চলকে বলা হয় চিরহরিৎ বন।
  • বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী।
  • বাংলাদেশের চিংড়িকে বলা হয় White Gold।
  • বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র করমজল, সুন্দরবনে অবস্থিত।

খনিজ সম্পদ

  • বাংলাদেশে সর্বপ্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কৃত হয় ১৯৫৫ সালে, সিলেটের হরিপুরে
  • গ্যাস উত্তোলন শুরু হয় – ১৯৫৭ সালে।
  • সবচেয়ে বেশি গ্যাস ব্যবহৃত হয় – বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
  • পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র – রূপপুর (পাবনা)।
  • বাংলাদেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ চালু হয় – নরসিংদীতে।
  • দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র – কক্সবাজারের কুতুবদিয়া।
  • বাংলাদেশে এ পর্যন্ত আবিস্কৃত গ্যাসক্ষেত্র – ২৯টি।
  • বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ – কয়লা।
  • বাংলাদেশের বড় কয়লা খনি – দিনাজপুর জেলার দীঘিপাড়ায়।
  • বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি অবস্থিত – দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থানায়।
  • বাংলাদেশে চুনাপাথর পাওয়া যায় – জয়পুরহাট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, জাফলং, সেন্টমার্টিন ও সীতাকুণ্ডে।
  • চীনামাটি পাওয়া যায় – নেত্রকোণা, নওগাঁ ও চট্টগ্রামে।
  • বাংলাদেশে কঠিন শিলা পাওয়া গেছে – দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায়।
  • বাংলাদেশের দীর্ঘতম গাছের নাম – বৈলাম।
  • বাংলাদেশে সর্বপ্রথম খনিজ তেল পাওয়া যায় – ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে সিলেট জেলার হরিপুরে।
  • সাফারী ও ইকো পার্কের উদ্দেশ্য হলো – বনের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ করা।

আইসিটি বিষয়ক যেকোনো সমস্যায় ঘুরে আসো এই প্লেলিস্টটি থেকেঃ 

এইচএসসি ভূগোল ১ম পত্র  | HSC Geography 1st Paper

এইচএসসি পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই টপিকটি দেখে নাও এক নজরেঃ 

বাংলাদেশের পরিচিতি

এডমিশন ও চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ 

১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com