10 Minute School
Log in

চলন ও অঙ্গচালনা, অক্ষীয় কঙ্কাল, আদর্শ কশেরুকার গঠন

চলন ও অঙ্গচালনা (Locomotion and Movement)

মানব কঙ্কালতন্ত্র (Human Skeletal System)

ভ্রূণীয় মেসোডার্ম থেকে উদ্ভূত অস্থি ও তরুণাস্থি (কার্টিলেজ) নামক যোজক টিস্যু সমন্বয়ে গঠিত যে তন্ত্র দেহের কাঠামো সৃষ্টির মাধ্যমে দেহকে নির্দিষ্ট আকৃতি দান করে, দেহের ভার বহন করে, পেশি সংযোগের স্থান প্রদান করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন অঙ্গসমূহ রক্ষা করে তাকে কঙ্কাল তন্ত্র বলে

  • কঙ্কালতন্ত্রের শ্রেণিবিন্যাস (Classification of Skeletal System)
  1. বহিঃকঙ্কালতন্ত্র (Exoskeletal system) : দেহের বাইরে থেকে এদের দেখা যায় এরা ত্বকের এপিডার্মিস থেকে উদ্ভুত এজন্য এদেরকে ত্বকোদ্ভুত অঙ্গাদি বলে । নখ, দাঁত, লোম প্রভৃতি এ তন্ত্রের অন্তর্গত।
  2. অন্তঃকঙ্কালতন্ত্র (Endoskeletal system) : কঙ্কাল বলতে আমরা সাধারণত অন্তঃকঙ্কালকেই বুঝি। এটি অস্থি, তরুণাস্থি এবং লিগামেন্টের সমন্বয়ে গঠিত। দেহের বাহির থেকে এদের দেখা যায় না। এটি দুটি প্রধানভাগে বিভক্ত- ১. অক্ষীয় কঙ্কাল ও ২. উপাঙ্গীয় কঙ্কাল।
  3. স্প্লাংকনিক কঙ্কালতন্ত্র (Splanknic skeletal system) : এটি অন্তঃকঙ্কালের অংশ হিসেবে পরিচিত হলেও আলাদাভাবে এ বিভাগের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ল্যারিংক্স এর তরুণাস্থি, ট্রাকিয়া, ব্রংকাই প্রভৃতি এ বিভাগের অন্তর্গত।

 

  • কঙ্কালতন্ত্রের উপাদান (Elements of the skeletal system)

          কঙ্কালতন্ত্র পাঁচ ধরনের তন্তুময় ও খনিজসমৃদ্ধ প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত ।

  1. অস্থি (Bone) : অস্থি কঙ্কালতন্ত্রে উপস্থিত সুদৃঢ় যোজক টিস্যু যা প্রধানত ক্যালসিয়াম লবণ দিয়ে গঠিত।
  2. কোমলাস্থি বা তরুণাস্থি (Cartilage) : কোমলাস্থি কঙ্কালতন্ত্রে অবস্থিত স্থিতিস্থাপক ধরনের যোজক টিস্যু তবে এতে সাধারণত কোন ক্যালসিয়াম থাকে না।
  3. লিগামেন্ট (Ligament) : লিগামেন্ট বা অস্থিবন্ধনী হচ্ছে ঘন, শ্বেত বর্ণের তত্ত্বময় ও স্থিতিস্থাপক বন্ধনী যা দিয়ে একটি অস্থি অন্য একটি অস্থির সাথে যুক্ত থাকে এগুলো বিভিন্ন অঙ্গকে সঠিক স্থানে ধরে রাখতে সহায়তা করে।
  4. টেনডন (Tendon) : টেনডন হলো ঘন, মজবুত, শ্বেত বর্ণের নমনীয় ও অস্থিতিস্থাপক তন্তুময় যোজক টিস্যু যেগুলো মাংসপেশির প্রান্তে অবস্থান করে পেশি ও অস্থির মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে ।
  5. অস্থিসন্ধি (Joint) : একটি অস্থি অন্য একটি অস্থির সাথে সংযুক্ত হয়ে যে সন্ধিস্থল গঠন করে তাকে অস্থি বলে। অস্থিসন্ধি থাকার কারণে দেহের বিভিন্ন অঙ্গকে বিভিন্ন মাত্রায় সঞ্চালন করা যায় ফলে চলন, নড়ন, ভারবহন ও বিভিন্ন কাজকর্ম সহজ হয়।
  • কঙ্কালতন্ত্রের প্রধান ভাগ (The main part of the skeletal system)

মানবশিশু জন্মের সময় দেহে প্রায় ৩০০টি অস্থি থাকে। তবে পরিণত মানবকঙ্কাল মোট ২০৬টি অস্থি নিয়ে গঠিত । অস্থির বিভিন্ন স্থানে কোমলাস্থি (তরুণাস্থি) থাকে। মানুষের কঙ্কালতন্ত্রকে প্রধানত দুভাগে ভাগ করা হয়, যেমন-

  1. অক্ষীয় কঙ্কাল (Axial skeleton) : কঙ্কালতন্ত্রের যে অংশগুলো  দেহের  লম্ব অক্ষ  বরাবর অবস্থিত তাদের অক্ষীয় কঙ্কাল বলে । মোট ৮০টি অস্থির সমন্বয়ে অক্ষীয় কঙ্কাল গঠিত। করোটি (skull), মেরুদণ্ড (vertebral column) ও বক্ষপিঞ্জর (thoracic case) দেহের অক্ষীয় কঙ্কাল গঠন করে। 
  2. উপাঙ্গীয় কঙ্কাল (Appendicular skeleton) : কঙ্কালতন্ত্রের যে অংশগুলো অক্ষীয় কঙ্কালের দুপাশে প্রতিসমভাবে অবস্থান করে তাদের উপাঙ্গীয় কঙ্কাল বলে। মোট ১২৬টি অস্থির সমন্বয়ে উপাঙ্গীয় কঙ্কাল গঠিত। বক্ষ অস্থিচক্র (pectoral girdle), উর্ধ্ববাহুর অস্থি (fore limb), শ্রোণিচক্র (pelvic girdle) ও নিম্নবাহুর অস্থি (hind limbs) উপার্জীয় কঙ্কাল গঠন করে। 

মোট ২০৬টি অস্থি নিয়ে গঠিত মানুষের কঙ্কালতন্ত্রের বিভিন্ন অংশকে নিচের ছকে উল্লেখ করা হলো :

১. অক্ষীয় কঙ্কাল (Axial Skeleton)

কঙ্কালতন্ত্রের যে অস্থিগুলো দেহের লম্বঅক্ষ বরাবর অবস্থান করে কোমল, নমনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ রাখে এবং দেহকান্ডের বিভিন্ন অংশকে যুক্ত করে অবলম্বন দান করে সেগুলোকে একত্রে অক্ষীয় কঙ্কাল বলে। অক্ষীয় কঙ্কাল করোটি, মেরুদন্ড এবং বক্ষপিঞ্জর-এ বিভক্ত। নিচে এসব অংশের বর্ণনা দেয়া হলো।

ক. করোটি (Skull) : মুখমণ্ডলীয় ও করোটিকা অস্থি নিয়ে গঠিত মাথার কালিক গঠনকে করোটি বলে। ২৯টি অস্থি নিয়ে করোটি গঠিত । করোটির অস্থিগুলো করোটিকা বা খুলির অস্থি এবং মুখমন্ডলীয় অস্থি এ দুভাগে বিভক্ত।

  1. করোটিকা (Cranium) : করোটির যে অংশ মস্তিষ্ককে আবৃত করে রাখে তাকে করোটিকা বলে। ছয় ধরনের মোট আটটি সুগঠিত, চাপা শক্ত অস্থি নিয়ে করোটিকা গঠিত। অস্থিগুলো খাঁজকাটা কিনারাযুক্ত হওয়ায় একত্রে ঘন সন্নিবেশিত ও একে অন্যের সাথে সূচার সন্ধির (suture joint) মাধ্যমে দৃঢ়সংলগ্ন থাকে। করোটিকা যে সব অস্থি নিয়ে গঠিত সেগুলো হচ্ছে- কপাল নির্মাণকারী বড় ঝিনুকের মতো একটি ফ্রন্টাল (frontal), চারকোণা প্লেটের মতো দুটি প্যারাইটাল (parietal), চার অংশে বিভক্ত দুটি টেমপোরাল (temporal), খোলসের মতো একটি অক্সিপিটাল (occipital), ডানার মতো একটি স্ফেনয়েড (sphenoid) এবং ছিদ্রাল আড়াআড়ি প্লেটের মতো একটি এথময়েড (ethmoid)।

             কাজ : করোটিকা মস্তিষ্ককে আবৃত ও সুরক্ষিত করে।

2.মুখমণ্ডলীয় অস্থি (Facial bones) : করোটিকার সামনের ও নিচের দিকের অংশ মুখমন্ডল। একটি জোড়অস্থি বা ম্যাক্সিলা (উর্ধ্বচোয়াল), U আকৃতির একটি ম্যান্ডিবল (mandible; নিম্নচোয়াল) চারকোণা দুটি জাইগোম্যাটিক (zygomatic), আয়তাকার দুটি ন্যাসাল (nasal) সম্বলিত  ল্যাক্রিমাল  (lacrimal), চারকোণা একটি ভোমার (vomer) এবং অনুলম্ব প্লেটে গঠিত দুটি প্যালেটিন (palatine) নিয়ে মুখমণ্ডল গঠিত।

খ. মেরুদন্ড (Vertebral Column) : অ্যাটলাস (atlas) থেকে কক্কিক্স (coccyx) পর্যন্ত প্রলম্বিত, সুষুম্নাকান্ড (spinal cord)-কে ঘিরে অবস্থিত একসারি কশেরুকা নিয়ে গঠিত এবং দেহের অক্ষকে অবলম্বনদানকারী অস্থিময় ও নমনীয় গঠনকে মেরুদণ্ড বলে। মেরুদন্ডকে শিরপাড়া, স্পাইন, স্পাইনাল ক্যাম প্রভৃতি বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। ৩৩টি অনিয়ত আকৃতির অস্থিবন্ড নিয়ে। মেরুদণ্ড গঠিত । মেরুদন্ডের প্রত্যেকটি অস্থিখন্ডকে কশেরুকা (vertebra, বহুবচনে vertebrae) বলে ।

একটি আদর্শ কশেরুকার গঠন (An ideal vertebral structure)

দেহের বিভিন্ন অঞ্চলের এমনকি একই অঞ্চলের বিভিন্ন কশেরুকায়ও পার্থক্য দেখা যায়। তা সত্ত্বেও সকল কশেরুকাই একটি মৌলিক গড়নের উপর প্রতিষ্ঠিত। নিচে মানুষের একটি আদর্শ কশেরুকার (মধ্য-বক্ষদেশীয় কশেরুকা) বর্ণনা দেয়া হলো ।

  1. সেন্ট্রাম (Centrum) বা ভার্টিব্রাল বডি  (Vertebral body) : এটি কশেরুকার বৃহত্তম ও সম্মুখস্থ স্থূল অংশ, দেখতে ডিম্বাকার রডের একটি খন্ডের মতো । কোমলাস্থি নির্মিত সিমফাইসিস (symphysis) বা আন্তঃকশেরুকীয় চাকতি (intervertebral disc)-র সাহায্যে সমস্ত কশেরুকার দেহ পরস্পরের সঙ্গে আটকে থাকে সেন্ট্রাম শক্ত, পুরু ও স্পঞ্জি অস্থিতে গঠিত ।
  • আর্চ (Arch) : এটি কশেরুকা-দেহের পৃষ্ঠতলে অবস্থিত রিংয়ের মতো। আর্চ নিম্নোক্ত অংশগুলো ধারণ করে।
  • পেডিকল (Pedicle) : কশেরুকা-দেহের উভয় পশ্চাৎ-পার্শ্ব থেকে উত্থিত ও পিছনে বর্ধিত খাটো শক্ত গঠন ৷
  • ট্রান্সভার্স প্রসেস (Transverse process) : উভয় পাশে পেডিকল ও ল্যামিনার সংযোগস্থল থেকে উত্থিত পার্শ্বীয় প্রবর্ধন।
  • ল্যামিনা (Lamina) : উভয় পাশে ট্রান্সভার্স ও স্পাইনাস প্রসেসের মাঝখানে অবস্থিত চওড়া, চাপা, তির্যক ও ঢাল পেটের মতো অস্থি ।
  • আর্টিকুলার প্রসেস (Articular process) : উভয় পাশে ল্যামিনা ও পেডিকলের সংযোগস্থল থেকে উদগত একটি সুপিরিয়র ও একটি ইনফিরিয়র আর্টিকুলার প্রসেস। একটি কশেরুকার সুপিরিয়র আর্টিকুলার প্রসেস অন্য কশেরুকার ইনফিরিয়র আর্টিকুলার প্রসেসের সঙ্গে যুক্ত থাকে ।

চিত্র-১: মানুষের মেরুদন্ড (পার্শ্বদৃশ্য)

  1. স্পাইনাস প্রসেস (Spinous process) : দুই ল্যামিনির (ল্যামিনার বহুবচন) সংযোগস্থল থেকে একটি পশ্চাৎ মধ্যরেখীয় প্রবর্ধন যা নিম্নমুখী প্রসারিত । ২য়-৬ষ্ঠ সারভাইকাল কশেরুকার এ প্রসেস প্রান্তের দিকে দ্বিখন্ডিত। 
  2. কশেরুকার ছিদ্রপথ ও নালি : পেডিকলের ঊর্ধ্ব ও নিম্নদেশে যে খাঁজ (notch) থাকে সম্মিলিতভাবে ইন্টারভার্টিব্রাল ফোরামেন (intervertebral foramen) বা নিউরাল ছিদ্র (neural foramen) গঠন করে। এ ছিদ্রের ভিতর দিয়ে সুষুম্না স্নায়ু ও রক্তবাহিকা অতিক্রম করে। কশেরুকার যে বড় ছিদ্রটি সামনে দেহ, পিছনে আর্চ ও পাশে পেডিকলে নির্মিত, তাকে ভার্টিব্রাল ফোরামেন (vertebral foramen) বলে। সকল কশেরুকার ছিদ্র সম্মিলিতভাবে ভার্টিব্রাল ক্যানেল ( vertebral canal) নির্মাণ করে। এর ভিতরে ঝিল্লি বা মেনিনজেসসহ সুষুম্না কান্ড (spinal cord) ও রক্তনালিকা সুরক্ষিত থ|কে।

চিত্র-২ : একটি আদর্শ কশেরুকা (৫ম থেকে ৮ম বক্ষীয় কশেরুকা)

  • কশেরুকার প্রকারভেদ (Types of Vertebrae)

অবস্থান অনুযায়ী কশেরুকাগুলোকে নিম্নোক্ত ৫টি অঞ্চলে ভাগ করা হয়ে থাকে;

  1. সারভাইকাল (গ্রীবাদেশীয়) কশেরুকা (Cervical vertebrae) …………………৭টি 
  2. থোরাসিক (বক্ষদেশীয়) কশেরুকা (Thoracic vertebrae) …………………..১২টি
  3. লাম্বার (কটিদেশীয়) কশেরুকা (Lumbar vertebrae) …………………………..৫টি
  4. স্যাক্রাল (শ্রোণিদেশীয়) কশেরুকা (Sacral vertebrae) ………………………….১টি (৫টি একীভূত)
  5. কক্কিজিয়াল (পুচ্ছদেশীয়) কশেরুকা (Coccygeal vertebrae) ………………….১টি (৪টি একীভূত) 

পরিণত বয়সে স্যাক্রাল কশেরুকাগুলো একীভূত হয়ে স্যাক্রাম (sacrum) এবং কক্কিজিয়ালগুলো কক্কিক্স (coccyx) গঠন করে । ফলে, সর্বমোট কশেরুকার সংখ্যা কমে ২৬টি হয় ।

  • মেরুদন্ডের কাজ
  • দেহকান্ডের সুষ্ঠু সঞ্চালনে মজবুত ও নমনীয় অবলম্বন হিসেবে কাজ করে ।
  • সুষুম্না কান্ড ও সুষুম্না স্নায়ুমূলকে বেষ্টন ও রক্ষা করে ।
  • মাথাকে অবলম্বন দেয় এবং পিভট (pivot)-এর মতো কাজ করে।
  • দেহের ভঙ্গি দানে ও চলাফেরায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
  • পর্শুকা সংযোগের ক্ষেত্র সৃষ্টি করে দেহের অক্ষরূপে কাজ করে ।

গ. বক্ষপিঞ্জর (Thoracic cage) 

পর্শুকাগুলো একদিকে থোরাসিক কশেরুকা ও অন্যদিকে স্টার্নামের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যে খাঁচার মতো আকৃতি দান করে, তাকে বক্ষপিঞ্জর বলে । মানুষের বক্ষপিঞ্জর একটি উরঃফলক বা স্টার্নাম (sternum), ১২ জোড়া পৰ্শুকা (ribs) এবং ১২টি থোরাসিক কশেরুকা নিয়ে গঠিত হয়।

চিত্র-৩ : বক্ষপিঞ্জর

  1. স্টার্নাম : (বুকের কেন্দ্রীয় সম্মুখ) অংশে অবস্থিত চাপা অস্থিটি স্টার্নাম । এটি ৩ অংশে বিভক্ত- উপরের ত্রিকোণা ম্যানুব্রিয়াম; মাঝের লম্বা দেহ; এবং নিচের ক্ষুদ্র জিফয়েড প্রসেসম্যানুব্রিয়াম দেহের সাথে সূক্ষ্মকোণ সৃষ্টি করে সম্মুখে প্রসারিত। স্টার্নামের ঊর্ধ্ব প্রান্তে একটি খাঁজ থাকে যা জুগুলার নচ নামে পরিচিত এবং পার্শ্ব কিনারায় ক্ল্যাভিকলের এবং ৭ জোড়া পর্শুকার খাঁজ থাকে ।
  2. পর্শুকা: পর্শুকাগুলো লম্বা, সরু, চাপা ও বাঁকা অস্থি মানুষের দেহে ১২ জোড়া পর্শুকা থাকে। একটি আদর্শ পর্শুকা পশ্চাৎপ্রান্তে ফ্যাসেটবাহী মস্তক (ক্যাপিচুলাম), ক্রেস্টবাহী গ্রীবা, সংযোগী তলসহ টিউবার্কল এবং কোণ সৃষ্টি করে বাঁকানো দেহ নিয়ে গঠিত মস্তক থোরাসিক কশেরুকার দেহের সাথে এবং টিউবার্কল দিয়ে একই কশেরুকার ট্রান্সভার্স প্রসেসের সঙ্গে যুক্ত থাকে।

পর্শুকার সম্মুখ প্রান্ত তরুণাস্থিময়। প্রথম ৭ জোড়া পর্শুকা এদের তরুণাস্থি দিয়ে স্টার্নামের সাথে যুক্ত থাকে, এগুলো আসল (প্রকৃত) পর্শুকা। বাকি ৫ জোড়া (৮ম-১২শ) স্টার্নামের সাথে যুক্ত নয় বলে তা নকল পর্শুকা৮ম, ৯ম ও ১০শ পর্শুকা উপরস্থিত পর্শুকার তরুণাস্থির সাথে একীভূত হয়ে কোস্টাল আর্চ (costal arch) নির্মাণ করে । ১১শ ও ১২শ পর্শুকা সামনে মাংসপেশিতে উন্মুক্ত থাকে । এগুলো সরল, ক্ষুদ্র ও ভাসমান পৰ্শুকা নামে অভিহিত)। প্রকৃত পর্শুকার দৈর্ঘ্য উপর থেকে নিচে ক্রমশ বাড়তে থাকে, কিন্তু নকল পর্শুকার ক্ষেত্রে ঘটে উল্টো ঘটনা। পর্শুকার অন্তর্তলের নিচের কিনারায় কোস্টাল খাঁজে স্নায়ু ও রক্তবাহিকা অবস্থান করে। প্রথম পর্শুকা জোড়ার উপরতলে পেশি সংযোজনের জন্য দুটি এবং সাবক্ল্যাভিয়ান ধমনি ও শিরা ধারণের জন্য দুটি খাঁজ থাকে। বহিঃ ও অন্তঃ ইন্টারকোস্টাল পেশি প্রতি দুই কশেরুকার মধ্যে তির্যকভাবে বিন্যস্ত উপরে ও নিচে দুই কোস্টাল তরুণাস্থির মধ্যবর্তী ফাঁকা স্থানটি ইন্টারকোস্টাল স্পেস

চিত্র-৪ : একটি পর্শুকা

বক্ষপিঞ্জরের কাজ : হৃৎপিন্ড, ফুসফুস প্রভৃতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ বক্ষপিঞ্জরের ভিতরে সুরক্ষিত থাকে।