বাংলার ইতিহাস: মুঘল শাসন- ভারত বিভাগ
মুঘল শাসন ও শাসক (Mughal Rule and Ruler)
জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর (১৫২৬-১৫৩০)
- ভারতে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা।
- বাবরের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের নাম ‘তুযুক-ই-বাবুরী’।
- তার সময়ে উত্তর প্রদেশে নির্মাণ করা হয়েছিলে বাবরি মসজিদ।
নাসির উদ্দিন হুমায়ুন (১৫৩০-১৫৫৬)
- বাবরের মৃত্যুর পর দ্বিতীয় মুঘল সম্রাট হিসেবে সিংহাসনে বসেন হুমায়ুন।
- ১৫৪০ সালে কনৌজের যুদ্ধে শের শাহের কাছে পরাজিত হলে তিনি দিল্লি থেকে ক্ষমতাচ্যুত হন। পরবর্তীতে ১৫৫৫ সালে তিনি আবারো ভারতের ক্ষমতায় আসীন হন।
- সম্রাট হুমায়ুন বাংলাকে জান্নাতাবাদ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।
(মুঘল সাম্রাজ্যের মধ্যে ১৫ বছর দিল্লির ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল শূর শাসন (১৫৪০-১৫৫৫ খ্রি.। ১৫৪০ সালের কনৌজের যুদ্ধে শের শাহ মুঘল সম্রাট হুমায়ুনকে পরাজিত করে দিল্লির সিংহাসন দখল করেন। শের শাহ ভারতবর্ষে ঘোড়ার ডাক ব্যবস্থার প্রচলন করেন। সোনারগাঁও থেকে লাহোর পর্যন্ত দীর্ঘ ২৫০০ কি.মি. সড়ক নির্মাণ করেন যার নাম ‘সড়ক-ই-আজম’ যা সমধিক পরিচিত ‘গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড’ হিসেবে।)
জালাল উদ্দিন আকবর (১৫৫৬-১৬০৫)
- আকবরকে মুঘল সম্রাটদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ সম্রাট হিসেবে অভিহিত করা হয়।
- তিনি তীর্থ কর ও জিজিয়া কর রহিত করেন।
- ১৫৮২ সালে তিনি ‘দীন-ই-ইলাহী’ নামক একেশ্বরবাদী নতুন এক ধর্ম প্রচলন করেন।
- আকবরের সময়েই বাংলা সাল গণনা শুরু হয়। প্রথম বাংলা বর্ষপঞ্জীর নাম তারিখ-ই-ইলাহী।
- আকবরের সভাসদের মধ্যে ছিলেন তানসেন যার আসল নাম রামতনু পাণ্ডে। তানসেনকে ‘বুলবুল-ই-হিন্দ’ বলা হয়ে থাকে।
সেলিম নূরউদ্দিন মুহম্মদ জাহাঙ্গীর (১৬০৫- ১৬২৭)
- সম্রাট জাহাঙ্গীরের স্ত্রীর নাম ছিল নূরজাহান।
- জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থের নাম ‘তুজুক-ই-জাহাঙ্গীর’।
- তার সময়ে বাংলার রাজধানী ঢাকায় স্থাপন করা হয় ১৬১০ সালে।
শাহজাহান (১৬২৮-১৬৫৮)
- শাহজাহান ইতিহাসে বিখ্যাত হয়ে আছেন তার সময়ে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপনার জন্য। তাকে ইতিহাসবিদরা অভিহিত করে ‘Prince of Builders’ হিসেবে।
- তিনি তার মৃত স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মরণে নির্মাণ করেন তাজমহল।
- শাহজাহানের মণি-মুক্তা খচিত ময়ূর সিংহাসন জগত বিখ্যাত।
আওরঙ্গজেব (১৬৫৮-১৭০৭)
- ভাইদেরকে পরাজিত করে ‘আলমগীর বাদশাহ গাজী’ উপাধি গ্রহণ করে সিংহাসনে বসেন।
- আওরঙ্গজেব ধর্মপ্রাণ একজন শাসক ছিলেন যে কারণে তাকে ‘জিন্দাপীর’ বলা হয়।
দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ জাফর (১৮৩৭-১৮৫৭)
- দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ ছিলেন শেষ মুঘল সম্রাট।
পানিপথের যুদ্ধসমূহ
পানিপথ দিল্লি থেকে ৯০ কি.মি. উত্তরে হরিয়ানা প্রদেশে অবস্থিত।
- পানিপথের প্রথমযুদ্ধ (১৫২৬ সাল)- প্রথম যুদ্ধ সংগঠিত হয় বাবর ও ইব্রাহীম লোদীর মধ্যে।
- পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ (১৫৫৬ সাল)- আকবরের পক্ষে বৈরাম খান হিমুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং দিল্লি জয় করেন।
- পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ (১৭৬১ সাল) – আফগান আহমদ শাহ আবদালি মারাঠাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং মারাঠাদের পরাজিত করেন।
বাংলায় মুঘল সুবাদার
ইসলাম খান (১৬০৮-১৬১৩ খ্রি.) |
|
শাহ সুজা (১৬৩৯-১৬৬০) |
|
মীর জুমলা (১৬৬০-১৬৬৩) |
|
শায়েস্তা খান (১৬৬৪-৭৮ খ্রি. এবং ১৬৮০-১৬৮৮ খ্রি.) |
|
বারো ভূঁইয়া
মুঘল আমলের প্রথম দিকে বাংলা কয়েকজন প্রতাপশালী জমিদারগণ দ্বারা শাসিত হতো। এরা বারো ভূঁইয়া নামে পরিচিত। জমিদারদের নেতা ছিলেন ঈসা খাঁ। ঈসা খাঁ এর রাজধানী ছিল সোনারগাঁও-এ। ঈসা খাঁ এর মৃত্যুর পর বারো ভূঁইয়াদের নেতা হন মুসা খাঁ। মুসা খাঁ মুঘল সুবেদার ইসলাম খান এর কাছে পরাজিত হয়।
স্থাপত্য | প্রয়োজনীয় তথ্য |
লালবাগ কেল্লা (ঢাকা) |
|
তারা মসজিদ (ঢাকা) |
|
হোসেনি দালান (ঢাকা) |
|
ঢাকা গেট |
|
যোথাবাঈ মহল |
|
লালকেল্লা |
|
দেওয়ান-ই-আম |
|
দেওয়ান-ই-খাস |
|
তাজমহল |
|
বুলন্দ দারওয়াজা |
|
ইউরোপিয়ানদের আগমন
পর্তুগিজদের আগমন
- পর্তুগিজদের মধ্যে সর্বপ্রথম ভারতে আসেন ভাস্কো-ডা-গামা ১৪৯৮ সালের ২৭ মে।
- ইউরোপী বণিকদের মধ্যে সর্বপ্রথম বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে পর্তুগিজরা।
- পর্তুগিজরা বাংলায় পরিচিত ফিরিঙ্গি হিসেবে।
ওলন্দাজদের আগমন
- নেদারল্যান্ডের অধিবাসীদের ডাচ বা ওলন্দাজ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ডাচরা ‘ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে এদেশে আগমন করে ১৬০২ সালে।
- ১৭৫৯ সালে তারা বিদারার যুদ্ধে ইংরেজদের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়।
- ১৮০৫ সালে তারা এই উপমহাদেশ ত্যাগ করে।
দিনেমারদের আগমন
- ডেনমার্কের অধিবাসীরা দিনেমার হিসেবে পরিচিত। তারা ‘ডেনিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে বাণিজ্য শুরু করে।
- ব্যবসায় ব্যর্থ হয়ে ১৮৪৫ সালে ইংরেজদের কাছে কুঠি বিক্রি করে এদেশ তারা ত্যাগ করে।
ইংরেজদের আগমন
- রানী প্রথম এলিজাবেথের থেকে ১৫ বছর মেয়াদি বাণিজ্য সনদ গ্রহণ করে ‘ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে।
- সম্রাট জাহাঙ্গীরের শাসনামলে তারা বাণিজ্য কুঠি স্থাপনের অনুমতি লাভ করে এবং ১৬১২ সালে সুরাটে প্রথম বাণিজ্য কুঠি নির্মাণ করে।
- ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৬৫৮ সালে হুগলিতে বাণিজ্যকুঠি নির্মাণ করে।
- ১৬৯০ সালে কোম্পানির এজেন্ট জব চার্নক কোলকাতা, সুতানটি ও গোবিন্দপুর গ্রামের জমিদারিসত্ত্ব লাভ করে। পরবর্তীতে এই তিনটি গ্রামকে কেন্দ্র করেই কলকাতা নগর গড়ে ওঠে।
ফরাসিদের আগমন
- ইউরোপীয়দের মধ্যে সর্বশেষে আগমন ঘটে ফরাসিদের। ১৬৬৪ সালে তারা ‘ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি’ গঠন করে।
- দাক্ষিণাত্যের কর্নাটকের যুদ্ধসমূহে ফরাসিরা পরাজিত হলে তারা এই দেশ ত্যাগ করে।
বাংলায় নবাবী শাসন
মুর্শিদকুলি খান (১৭০০-১৭২৭ খ্রিস্টাব্দ) | আলীবর্দি খান বিহারের নায়েবে নাজিম ছিলেন। তিনি দুর্বল শাসক সরফরাজ খানকে আক্রমণ করেন এবং বাংলা বিহার উড়িষ্যার নবাব হিসেবে অধিষ্ঠিত হন। |
আলীবর্দি খান (১৭৪০-১৭৫৬ খ্রিস্টাব্দ)
সিরাজউদ্দৌলা (১৭৫৬-১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ) |
নবাব সিরাজউদ্দৌলা এর আসল নাম মীর্জা মুহাম্মদ। তার খালা ঘষেটি বেগম এবং দরবারের প্রভাবশালী অনেকে নবাবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। এই ষড়যন্ত্র যুক্ত ছিল ইংরেজরাও। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি মীর জাফর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে যুদ্ধের ময়দানে নিষ্ক্রিয় থাকেন। যুদ্ধে অসহায়ভাবে পরাজিত হন সিরাজউদ্দৌলা। পরবর্তীতে নবাবকে হত্যা করা হয়। |
মীর কাশিম (১৭৬০-১৭৬৪ খ্রিস্টাব্দ) | তিনি অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা ও মুঘল সম্রাট শাহ আলমের সাহায্য নিয়ে সেনাবাহিনী সংগঠিত করে বক্সারের যুদ্ধে (১৭৬৪ সালে) লিপ্ত হন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। কিন্তু মেজর মনরোর কাছে পরাজিত হন মীর কাশিম। |
ইংরেজ শাসন
রবার্ট ক্লাইভ
ক্লাইভের সময়ে বাংলায় দ্বৈত শাসনের দরুন প্রশাসনিক নানা জটিলতা সৃষ্টি হয় এবং এর ফলে ১৭৭০ সালে (বাংলা ১১৭৬ সনে) দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় বাংলায়।
ওয়ারেন হেস্টিংস
দ্বৈত শাসনের জন্য বাংলায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেওয়ায় ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস দ্বৈত শাসনের অবসান ঘটান। তিনি হন কোম্পানির প্রথম গভর্নর জেনারেল।
লর্ড কর্নওয়ালিস
১৭৮৬ সালে তিনি গভর্নর জেনারেল হিসেবে নিযুক্ত হন। লর্ড কর্নওয়ালিস দশশালা বন্দোবস্ত চালু করেছিলেন। ১৭৯৩ সালে তিনি এই দশশালা ব্যবস্থা চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত ব্যবস্থা হিসেবে ঘোষণা করে এই ব্যবস্থায় জমিদারদের নিজ জমির উপর মালিকানা দান করা হয়।
লর্ড ওয়েলেসলি
তার শাসনামলেই মহীশূরের শাসনকর্তা টিপু সুলতান ইংরেজদের সাথে কয়েক দফা যুদ্ধে লিপ্ত হন। চতুর্থ মহীশূরের যুদ্ধে টিপু সুলতান পরাজিত এবং নিহত হন।
লর্ড বেন্টিংক
লর্ড উইলিয়াম বেন্টিংক সমাজ সংস্কারে কাজ করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো সতীদাহ প্রথার বিলোপ সাধন করেন ১৮২৯ সালে। রাজা রামমোহন রায় এই ব্যাপারে লর্ড বেন্টিংককে সাহায্য করেন।
লর্ড হেনরি হার্ডিঞ্জ
হেনরি হার্ডিঞ্জ এর সময়ে উপমহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি হয় সেটি হলো জম্মু ও কাশ্মীর ব্রিটিশ শাসন অঞ্চলে অন্তর্ভুক্ত হয়।
লর্ড ডালহৌসি
তিনি উপমহাদেশে প্রথম টেলিগ্রাফ লাইন ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করেন। তার শাসনামলে আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বিধবা বিবাহ আইন প্রণয়ন। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহযোগিতায় এই আইনটি চালু করা হয়।
লর্ড ক্যানিং
ক্যানিং এর সময়ে সিপাহী বিদ্রোহ সংগঠিত হয় ১৮৫৭ সালে। তিনি ভারতবর্ষে প্রথম কাগুজে মুদ্রার প্রচলন করেন।
লর্ড কার্জন
লর্ড কার্জনের শাসনামলে ১৯০৫ সালে বাংলা প্রদেশকে দুইভাগে ভাগ করা হয় যা ইতিহাসে বঙ্গভঙ্গ হিসেবে পরিচিত।
লর্ড চার্লস হার্ডিঞ্জ
তার শাসনামলে বঙ্গভঙ্গ রদ করা হয়।
লর্ড মাউন্টব্যাটেন
লর্ড মাউন্টব্যাটেন ছিলেন ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয়। ১৯৪৭ সালের ৩ জুন ভারতকে ধর্মের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তান নামক দু’টি রাষ্ট্র হিসেবে গঠনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
১৯৪৭ সালের ১৮ জুলাই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ‘ভারত স্বাধীনতা আইন, ১৯৪৭’ প্রণীত হয়। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট পাকিস্তান গণপরিষদের কাছে এবং ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের গণপরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তান নামক দুইটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম লাভ হয়।
মাউন্টব্যাটেন স্বাধীন ভারতের প্রথম গভর্নর জেনারেল ছিলেন।
ব্রিটিশ ভারতে বিভিন্ন রাজনৈতিক ঘটনা ও আন্দোলন
কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা
অবসরপ্রাপ্ত ব্রিটিশ সিভিলিয়ান অ্যালান অক্টোভিয়ান হিউম ১৮৮৫ সালে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা। সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান। ব্যারিস্টার উমেশচন্দ্র ব্যানার্জি ১৮৮৫ সালের বোম্বাইতে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী সম্মেলনে প্রথম সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হন। দাদাভাই নওরোজী, ফিরোজ শাহ মেহতা প্রমুখ ব্যক্তি যোগদান করেন। দাদাভাই নওরোজীকে বলা হতো ‘Grand Old Man of India’
বঙ্গভঙ্গ ও স্বদেশী আন্দোলন
১৯০৫ সালে বাংলা প্রদেশকে ভেঙে দুই ভাগে ভাগ করা হয় যা বঙ্গভঙ্গ হিসেবে পরিচিত। আন্দোলনের তীব্রতায় ১৯১১ সালের ১২ ডিসেম্বর রাজা পঞ্চম জর্জ তার অভিষেক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গভঙ্গ রদের ঘোষণা দেন। এর প্রতিক্রিয়ায় মুসলমান সমাজে অসন্তোষ দেখা দেয়।
মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠা
ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ, আগা খান, নওয়াব ভিকার-উল-মূলুক এর উদ্যোগে ১৯০৬ সালের ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘নিখিল ভারত মুসলিম লীগ’। ব্রিটিশ ভারতে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এসেছে এই রাজনৈতিক দল। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠায় তারা মূল ভূমিকা পালন করে।
অসহযোগ আন্দোলন
রাওলাট আইন ও জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ১৯২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর অসহযোগ আন্দোলন ও খিলাফত আন্দোলন যুগপৎভাবে পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯২২ সালে উত্তর প্রদেশে চৌচিরা নামক একটি গ্রামে পুলিশ-জনগণ সংঘর্ষে ২৫ জন পুলিশ ও ইন্সপেক্টর নিহত হলে গান্ধী অসহযোগ আন্দোলন স্থগিত করেন। ১৯২২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অসহযোগ আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
সশস্ত্র বিপ্লবের আন্দোলন
ঢাকার ‘অনুশীলন সমিতি’ এবং কলকাতার ‘যুগান্তর পার্টি’ ছিল বৈপ্লবিক আন্দোলনের দুইটি প্রধান সংগঠন। বিপ্লবী ক্ষুদিরাম ও প্রফুল্ল চাকি ইংরেজ মেজিস্ট্রেট কিংস ফোর্ডকে বিহারের মোজাফফরপুরে হত্যা করতে যেয়ে ব্যর্থ হন। সশস্ত্র সংগ্রামের আরো একজন পুরোধা ব্যক্তি হলেন চট্টগ্রামের মাস্টারদা সূর্যসেন। ১৯৩০ সালের ১৮ এপ্রিল তিনি তার দলবল নিয়ে চট্টগ্রামের অস্ত্রাগার লুন্ঠন করেন। ১৯৩২ সালে সূর্যসেন এর সহযোগী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার পাহাড়তলীর ইউরোপীয়ান ক্লাব আক্রমণ করে।
ব্রিটিশ সরকার সূর্যসেনকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয় এবং ১৯৩৪ সালে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়।
ব্রিটিশ ভারতের কিছু রাজনৈতিক ইস্যু
- ভারত শাসন আইন, ১৯৩৫ ও প্রাদেশিক নির্বাচন
- দ্বিজাতি তত্ত্ব
- লাহোর প্রস্তাব
অবিভক্ত বাংলা
অবিভক্ত বাংলায় প্রথম প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শের-ই-বাংলা একে ফজলুল হক। ১৯৪৬ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে মুসলিম লীগ জয়ী হলে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী অবিভক্ত বাংলার শেষ প্রধানমন্ত্রী/ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন।