10 Minute School
Log in

নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া (Nuclear Reaction)

যে বিক্রিয়ায় কোনো মৌলের নিউক্লিয়াসে পরিবর্তন ঘটে তাকে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া (Nuclear Reaction) বলে। 

নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার ধরন (Types of  Nuclear Reaction)

 নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া দুই প্রকার। যথা-

১.  নিউক্লিয়ার ফিশন ও 

২. নিউক্লিয়ার ফিউশন

নিউক্লিয়ার ফিশন (Nuclear Fission)

যে নিউক্লিয়ার প্রক্রিয়ায় কোনো বড় এবং ভারী মৌলের নিউক্লিয়াস ভেঙ্গে ছোট ছোট মৌলের নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়, তাকে নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়া বলে 

এতে প্রচুর শক্তি ও নিউট্রন উৎপন্ন হয়। উদাহারণ-

{ }_{92}^{235} U+{ }_0^1 n \rightarrow{ }_{56}^{141} B a+{ }_{36}^{92} K r+3{ }_0^1 n

Nuclear Reaction

একটি ছোট নিউট্রন থেকে বড় একটি নিউক্লিয়াসকে আঘাত করে ছোট ছোট নিউক্লিয়াস তৈরীর ছবি

নিউক্লিয়ার ফিউশন (Nuclear Fusion)  

যে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ায় ছোট ছোট নিউক্লিয়াস সমূহ একত্র হয়ে বড় নিউক্লিয়াস গঠন করে তাকে নিউক্লিয়ার ফিউশন বিক্রিয়া বলে। উদাহারণঃ

{ }_1^2 \mathrm{H}+{ }_1^3 \mathrm{H} \longrightarrow{ }_2^4 \mathrm{He}+{ }_0^1 n+\text { প্রচুর শক্তি }

নিউক্লিয়ার চেইন  বিক্রিয়া (Nuclear Chain Reaction

যে বিক্রিয়া একবার চালু হলে তাকে চালু রাখার জন্য অতিরিক্ত কোন শক্তির প্রয়োজন হয় না তাকে নিউক্লিয়ার চেইন বিক্রিয়া(Nuclear Chain Reaction)  বলে।

নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়া একটি চেইন বিক্রিয়ার উদাহারণ।

nuclear chain reaction

নিউক্লিয়ার চেইন বিক্রিয়া দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপদান (Generating Electricity by Nuclear Chain Reaction)

নিউক্লিয়ার ফিশন বিক্রিয়ায় বড় মৌলসমূহ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভেঙে ছোট ছোট নিউক্লিয়াসে পরিণত হয়। এ সময় প্রচুর পরিমাণ শক্তি আলোক রশ্মি হিসেবে নির্গত হয়। এ বিক্রিয়া শিকলের ন্যায় চলতে থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত বিক্রিয়ার মাধ্যমে ভেঙে ছোট পরমাণু হওয়ার মতো পরমাণু অবশিষ্ট থাকে। একে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া বলে। এভাবে ফিশন বিক্রিয়া নতুন নিউক্লিয়াস সৃষ্টির সাথে প্রচুর পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়। আসলে ফিশন বিক্রিয়া হলো তাপউৎপাদী বিক্রিয়া। এক মোল ইউরেনিয়াম 235 নিউক্লিয়ার মাধ্যমে 2.01013 জুল শক্তি উৎপন্ন করে। কিন্তু সমপরিমাণ শক্তি পেতে 2.2107 মোল মিথেন গ্যাস পোড়াতে হয়।

তাছাড়া জ্বালানি পুড়িয়ে শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস উৎপন্ন হয়। তাই নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া কে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা গেলে একদিকে জ্বালানির উপর চাপ কমবে অন্যদিকে বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে তাও পূরণ করা সম্ভব হবে। বর্তমানে উত্তর আমেরিকা তাদের বিদ্যুতের মোট চাহিদার 20% বিদ্যুৎ পারমাণবিক চুল্লি থেকে উৎপন্ন করে থাকে। পারমাণবিক চুল্লির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও অনেক সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে দেখা যায়। ফলে পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয় পদার্থ পরিবেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং জীবকূলের মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে এর ব্যবহার  দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং আমাদের দেশেও এভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেমনঃ রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।

nuclear chain reaction