পদার্থবিজ্ঞান ও অন্যান্য বিজ্ঞান ও জ্ঞানের জগৎ | Physics and World of other Sciences and Knowledge
X-Ray এর ব্যবহার নিউক্লিক এসিডের গঠন জানতে সহায়তা করেছে যা জীবনকার্যের মূল প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়া জীব দেহে সংঘটিত শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া যেমন ব্যাপন (diffusion), অসমোসিস (osmosis) ইত্যাদি পদার্থবিজ্ঞানের নীতি ব্যবহার করে ব্যাখ্যা করা যায়।
রেডিও টেলিস্কোপের ব্যবহার Quasars এবং Pulsars আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং ইহা জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অনেক রহস্য উদঘাটন করতে সহায়তা করেছে।
ফ্যারাডে কর্তৃক আবিষ্কৃত তড়িৎচুম্বকীয় আবেশ (electromagnetic induction) এক অভূতপূর্ব আবিষ্কার যা শুধু মানুষের উন্নয়নই ঘটায়নি, বরং তা প্রযুক্তির মূল ভিত্তি। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে তাপ শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়।
জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানির বিভব শক্তিকে ব্যবহার করে যান্ত্রিক শক্তিকে বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয়। নিউক্লীয় পারমাণবিক চুল্লিতে ফিশন মিথস্ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট নিউক্লীয় শক্তিকে ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
এক্স-রে, আলট্রা-সনোগ্রাফ, সিটিস্ক্যান (CT Scan), এম আর আই (MRI), ইসিজি (ECG), এন্ডোসকোপি, রেডিওথ্যারাপি (Radiotherapy), ইটিটি (ETT), এনজিওগ্রাফি (Angiography) ও আইসোটোপ (Isotope) ব্যবহার করে চিকিৎসকগণ তাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম হচ্ছে। রোগ নির্ণয়ে X-Ray ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ক্যান্সারসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় রেডিওথেরাপি প্রদান করা হয় এবং এতে রেডিও আইসোটোপ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
পদার্থবিজ্ঞানে স্থান, সময় ও ভর (Space, time and mass in physics):
চিরায়িত বলবিদ্যা নিউটনীয় বলবিদ্যা নামে পরিচিত (Classical mechanics is known as Newtonian mechanics)। এই বলবিদ্যায় তিনটি মৌলিক রাশির ধারণা করা হয়েছে। এগুলো হলো স্থান (Space), সময় বা কাল (Time) এবং ভর (Mass)।
ক. স্থান :
বিজ্ঞানী নিউটনের মতে, স্থান একটি পরম জিনিস যা তার নিজের মধ্যেই অবস্থান করে। এটি বাইরের কোনো কিছুর সঙ্গে সম্পর্কীয় নয় এবং পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয় না। যেমন কোনো বস্তুর দৈর্ঘ্য বস্তুর বা পর্যবেক্ষকের গতির উপর নির্ভরশীল নয় এবং স্থির অবস্থায় অপরিবর্তনীয়।
খ. সময় বা কাল :
নিউটনের মতে সময় বা কাল প্রকৃতিগতভাবে একটি পরম রাশি যা বাইরের কোনো কিছুর ওপর নির্ভর না করে সমভাবে এগিয়ে চলে। সুতরাং সময় সর্বজনীন এবং নির্দিষ্ট হারে এগিয়ে চলে যা বস্তু বা পর্যবেক্ষকের গতির উপর নির্ভরশীল নয়। এ থেকে দুটো মন্তব্য করা যায় :
(১) পর্যবেক্ষক চলমান বা স্থির যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন দুটো ঘটনা ঘটার মধ্যবর্তী সময় সকল পর্যবেক্ষকের জন্য একই মনে হবে; এবং
(২) কোনো পর্যবেক্ষকের কাছে দুটো ঘটনা একই সময়ে ঘটলে পর্যবেক্ষকের কাছে সময় একই হবে, তাদের গতীয় অবস্থা যাই হোক না কেন।
গ. ভর :
নিউটনীয় বলবিদ্যায় বস্তুর ভর একটি মৌলিক রাশি যা তার গতির ওপর নির্ভরশীল নয় এবং ভরের নিত্যতা সূত্র অনুসারে কোনো স্বতন্ত্র প্রক্রিয়াধীন বস্তুসমূহের ভর ওই প্রক্রিয়াধীন দুই বা ততোধিক বস্তুর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার দরুন হয়। এর কোনো পরিবর্তন ঘটে না।
আধুনিক ধারণা :
বিজ্ঞানী আইনস্টাইন প্রমাণ করেন যে, চিরায়ত বলবিদ্যার মৌলিক রাশি তিনটি গতির সাথে পরিবর্তন হয়। সুতরাং রাশি তিনটি পরম নয়।
ক. স্থান :
কোনো বস্তুর গতিশীল অবস্থার দৈর্ঘ্য ওই বস্তুর স্থির অবস্থার দৈর্ঘ্যের চেয়ে ছোট হওয়াকে দৈর্ঘ্য সংকোচন (Length contraction) বলে। সুতরাং গতির সাথে বস্তুর দৈর্ঘ্য সংকুচিত হয়।
খ. সময় বা কাল :
কোনো জড় বা স্থির কাঠামোতে সংঘটিত ঘটনা উক্ত কাঠামো সাপেক্ষে গতিশীল অন্য কোনো কাঠামো থেকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে ঘটনার সময় ব্যবধান বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বিষয়টিকে কাল দীর্ঘায়ন বা সময় প্রসারণ বলে। সুতরাং গতির সাথে সময়ের প্রসারণ ঘটে।
গ. ভর :
বস্তু গতিশীল হলে এর ভর বৃদ্ধি পায়। এই ঘটনাকে ভরের আপেক্ষিকতা বা গতিজনিত ভর বৃদ্ধি বলে।
পদার্থবিজ্ঞানের আরো বিষয়