জটিল সংখ্যা (Complex Numbers)
মূলদ ও অমূলদ সংখ্যার সেট মিলে বাস্তব সংখ্যার সেট গঠিত হয়। বাস্তব সংখ্যার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্ম হলো এর বর্গ সব সময় অঋণাত্মক। কিন্তু \sqrt{-1}, \sqrt{-4}, \sqrt{-6} প্রভৃতি এর বর্গ যথাক্রমে -1, -4, -6 প্রভৃতি যা ঋণাত্মক। এ ধরনের সংখ্যার উদ্ভব হয়েছে x^2+1=0, x^2=4, x^2+6=0...... প্রভৃতি সমীকরণ থেকে। এ জাতীয় সমীকরণ সমাধানের চেষ্টার ক্ষেত্রে যে সকল সংখ্যা যা বাস্তব সংখ্যা থেকে ভিন্ন তাই কাল্পনিক (বা জটিল) সংখ্যা।
জটিল সংখ্যা হচ্ছে বাস্তব সংখ্যার বর্ধিত রূপ, যা (i=-1) দ্বারা সূচিত একটি কাল্পনিক এককের সংযুক্তির মাধ্যমে গঠিত। খ্রিস্টপূর্ব 50 অব্দে গ্রিক গণিতবিদ ও প্রকৌশলী আলেকজান্দ্রিয়ার হেরন জটিল সংখ্যার ধারণা দেন। জটিল সংখ্যার যোগ, বিয়োগ, গুণ এবং ভাগ সর্বপ্রথম প্রবর্তন করেন ইতালির গণিতবিদ Rafael Bombelli (1526-1572)। তিনি জটিল সংখ্যার আদর্শরূপ a+ib ব্যবহার করেন।
রেনে দেকার্তে এবং 1777 সালে অয়লার -1 এর জন্য i প্রতীক আবিষ্কার করেন। 1806 সালে রবার্ট আরগাঁ জটিল সংখ্যাকে সমতলে চিত্রের সাহায্যে উপস্থাপন করেন যা Argand Diagram নামে পরিচিত। প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানীরা বীমের বৈশিষ্ট্য ও অনুনাদ বিশ্লেষণে i (জটিল সংখ্যা) ব্যবহার করেন। প্রবাহী পদার্থ, পাইপের ভিতরে পানির প্রবাহ, ইলেকট্রিক সার্কিট, রেডিও তরঙ্গ প্রেরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে জটিল সংখ্যা বিভিন্ন অভিনব সমস্যার সমাধান করে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো জটিল সংখ্যা আবিষ্কার না হলে আমরা মোবাইল ফোনে কথা বলা কিংবা রেডিও শুনতে পারতাম না।
জটিল সংখ্যা (Complex Number):
x, y \epsilon R এবং i=\sqrt{-1} হলে, x+iy আকারের যেকোনো সংখ্যাকে জটিল সংখ্যা বলা হয় এবং একে \mathbb{Z} দ্বারা প্রকাশ করা হয়। বিশিষ্ট গণিতবিদ ওয়েলার “i” প্রতীকটির প্রর্বতক যার বর্গ ঋণাত্মক।
x+iy=z-এ\; x=Real\; Part\; of\; z Re z \equiv (বাস্তব\; অংশ)\\ y=Imaginary\; Part\; of\; z \equiv Im z (কাল্পনিক\; অংশ)x=0 হলে, z কে Pure Imaginary Number (প্রকৃত কাল্পনিক সংখ্যা) বলা হয়।
y=0 হলে, z কে বাস্তব সংখ্যা বলা হয়। \mathbb{R}=x+0.i
- বাউস (Bause) সর্বপ্রথম x+iy আকারের জটিল সংখ্যার প্রবর্তন করেন।
- জটিল সংখ্যার সেটকে \mathbb{C} দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
বাস্তব সংখ্যার ক্রমজোড় হিসেবে জটিল সংখ্যা (Complex numbers as a sequence of real numbers):
z=(x, y) যেখানে- Re(z)=x এবং Im(z)=y
দুটি জটিল সংখ্যা z_1\equiv (x_1, y_1) এবং z_2\equiv (x_2, y_2) সমান হবে যদি তারা জটিল সমতলে একই বিন্দু নির্দেশ করে অর্থাৎ (x_1, y_1)=(x_2,y_2) হয় [x_1=x_2,y_1=y_2]।
জটিল সংখ্যা পদ্ধতি আসলে বাস্তব সংখ্যা পদ্ধতির একটা “Natural Extension” বা “প্রাকৃতিক প্রবৃদ্ধি”।
জটিল সংখ্যার রৈখিক প্রকাশ-আর্গন্ডের চিত্র (Argond’s Diagram):
x অক্ষকে বাস্তব অক্ষ এবং y অক্ষকে কাল্পনিক অক্ষ ধরে যে সমতলে জটিল সংখ্যাসমূহকে চিত্রিত করা হয়, তাকে আর্গন্ডের চিত্র বলা হয়।
বাস্তব অংশ = ভূজ এবং কাল্পনিক অংশ = কোটি
জটিল সংখ্যার ভেক্টর স্থাপন (Vector representation of complex numbers):
কোনো জটিল সংখ্যা z=x+iy=(x, y) কে ভেক্টর OP হিসেবে চিহ্নিত করা যায় যার O আদি বিন্দু এবং P প্রান্ত বিন্দু।
দৈর্ঘ্য OP হলো \vec{OP} বা (z=x+iy) এর পরমমান এবং z=x+iy=\vec{OP} কে P এর অবস্থান ভেক্টর বলা হয়।