জীববৈচিত্র্য | Biodiversity
জীববৈচিত্র্য কী?
প্রকৃতির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন অঞ্চলে বংশবিস্তার করে টিকে থাকার উদ্দেশ্যে জীবের বিভিন্ন প্রজাতির বহিঃঅঙ্গসংস্থান ও অন্তঃঅঙ্গসংস্থান, আকার, আকৃতি, প্রকৃতি ইত্যাদির প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করে অভিযোজিত হওয়ার ফলে জীবদের মধ্যে যে বৈচিত্র্যময়তার উদ্ভব ঘটে তাকে জীব বৈচিত্র্য বলে।
প্রাণি ও উদ্ভিদে জীববৈচিত্র্য
উদ্ভিদ গঠনগত দিক থেকে ৩ প্রকারঃ
১। বীরুৎ
২। গুল্ম
৩। বৃক্ষ
স্পাইরোগাইরা: স্পাইরোগাইরা থ্যালোফাইটা বিভাগভুক্ত, অপুষ্পক, শৈবাল জাতীয় উদ্ভিদ। দেহের পিচ্ছিল আবরণের জন্য স্পাইরোগাইরাকে উজ্জ্বল চকচকে দেখায়, তাই এদের জল রেশম বা পন্ডসিল্ক বলে।
- Phanerogams-গুলো হলো সপুষ্পক উদ্ভিদ
- Cryptogams-গুলো হলো অপুষ্পক উদ্ভিদ।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য
প্রকৃতির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন অঞ্চলে বংশবিস্তার করে টিকে থাকার উদ্দেশ্যে প্রাণী প্রজাতিগুলোর বহিঃঅঙ্গসংস্থান ও অন্তঃঅঙ্গসংস্থান, আকার, আকৃতি, প্রকৃতি ইত্যাদি প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধন করে অভিযোজিত হওয়ার ফলে প্রাণীদের মধ্যে যে বৈচিত্র্যময়তার উদ্ভব ঘটে তাকে প্রাণিবৈচিত্র্য বলে।
প্রাণীর বিভিন্ন অঙ্গের আনুপাতিক আকৃতি, গঠন, আকারের বিবরণ ইত্যাদিকে প্রাণীর প্রতিসাম্য বলে। প্রতিসাম্যের ভিত্তিতে প্রাণী প্রধানত তিন প্রকার । যথা-
১. অপ্রতিসাম্য
২. দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসাম্য
৩. অরীয় প্রতিসাম্য
আকার ও আকৃতির ভিত্তিতে প্রাণী দুই প্রকার :
১. আলোক আণুবীক্ষণিক: অ্যামিবা, হাইড্রা, ড্যাফনিয়া ইত্যাদি।
২. বড় প্রাণী: পিঁপড়া, মশা, জোঁক, সাপ, কুমির, মানুষ ইত্যাদি।
স্বভাবের ভিত্তিতে প্রাণী প্রধানত দুই প্রকার-
১. দিবাচর: হরিণ, কাঠবিড়ালি, গরু, ভেড়া, হাঁস, মুরগি, শকুন ইত্যাদি।
২. নিশাচর: বাঘ, শিয়াল, পেঁচা ইত্যাদি।
খাদ্যের ভিত্তিতে ৩ প্রকার-
১. তৃণভোজী: ছাগল, ভেড়া, গরু, হাতি, ঘোড়া ইত্যাদি।
২. মাংসাশী: বাঘ, সিংহ, শিয়াল, শকুন ইত্যাদি।
৩. সর্বভুক: আরশোলা, কাক, কুকুর ইত্যাদি।
পুষ্টি লাভের ভিত্তিতে প্রাণী ৩ প্রকার :
১. মৃতজীবী: আরশোলা, কাক, শকুন, হায়েনা ইত্যাদি।
২. পরজীবী: গোলকৃমি, উঁকুন ইত্যাদি।
৩. শিকারি প্রাণী: বাঘ, শিয়াল, সিংহ, নেকড়ে ইত্যাদি।
মেরুদণ্ডের ভিত্তিতে প্রাণী ২ প্রকার।
১. অমেরুদণ্ডী প্রাণী: কেঁচো, আরশোলা ইত্যাদি।
২. মেরুদণ্ডী প্রাণী: মানুষ, গরু, ছাগল ইত্যাদি।
মানুষের অর্থনৈতিক গুরুত্বের ভিত্তিতে প্রাণী ২ প্রকার।
১. উপকারি প্রাণী: কেঁচো, খরগোশ, কুকুর, বিড়াল, ছাগল, হরিণ ইত্যাদি।
২. ক্ষতিকর প্রাণী: মশা, মাছি, উইপোকা, ইঁদুর, বাঘ, কৃমি, সাপ ইত্যাদি।
বাসস্থানের ভিত্তিতে প্রাণীর বিভিন্ন প্রকার :
১. স্থলচর: আরশোলা, কুনোব্যাঙ, মানুষ ইত্যাদি।
২. জলচর স্বাদু পানির প্রাণী– হাইড্রা, শিং মাছ, কচ্ছপ, কুমির ইত্যাদি।
৩. সামুদ্রিক পানির প্রাণী- লইট্যা, ডলফিন, জেলিফিশ ইত্যাদি।
৪. খেচর: বাদুড়, চামচিকা, বিভিন্ন পাখি ইত্যাদি।
৫. বৃক্ষবাসী: গেছো ব্যাঙ, অজগর, বানর ইত্যাদি।
৬. মরুবাসী: উট, দুম্বা ইত্যাদি।
৭. গর্তবাসী: ইঁদুর, শিয়াল, প্লাটিপাস ইত্যাদি।
৮. মেরুবাসী: শ্বেত ভাল্লুক, বলগা হরিণ ইত্যাদি।
৯. পর্বতবাসী: গয়াল, পাহাড়ি ছাগল, হাতি ইত্যাদি।
- বাংলাদেশের বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলকে হাওর বেসিন অঞ্চল বলে। এখানকার কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হাওর হলো হাকালুকি হাওর, কাওয়া দীঘি হাওর ইত্যাদি।
- পুরাতন নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়ে যাওয়ার ফলে যে সব অশ্বক্ষুরাকৃতি জলাশয় প্রাকৃতিকভাবে গঠিত হয় তাদের বাওড় বলে। উদাহরণ : বাইশদিয়া, ছোট বাইশদিয়া, বালুহার, মারজাত ইত্যাদি।
- মধুপুর বনাঞ্চল (পর্ণমোচী বনাঞ্চল)টাংগাইল জেলার মধুপুর, জামালপুর, গাজীপুর, ঢাকা ও নরসিংদীর কিছু অংশ নিয়ে মধুপুর গড় গঠিত। এর আয়তন প্রায় ৪,২৪৪ বর্গ কিমি, যা সংলগ্ন প্লাবনভূমির তুলনায় এক থেকে দশ মিটার উঁচু। ইতোপূর্বে জামালপুর থেকে ঢাকা পর্যন্ত প্রায় ১৬০ কি. মি. দীর্ঘ এলাকায় শালবন ছিল, এ বনভূমি এখন টুকরো টুকুরো হয়ে গেছে। চন্দ্রা, রাজেন্দ্রপুর বা ভাওয়ালকে আলাদা বন হিসেবে বর্ণনা করা হলেও এরা মধুপুর গড়েরই অংশ। এর পূর্বাংশ ব্রহ্মপুত্র ও শীতলক্ষ্যা নদী দ্বারা মুল উচ্চভূমি থেকে বিচ্যুত। এগারো সিন্দুর, শিবপুর ও মনোহরদী থানা এবং সোনারগাঁও এ খণ্ডাংশের অন্তগর্ত।
- ম্যানগ্রোভ বনের লোনা পানিতে যে সকল উদ্ভিদ জন্মে তাদেরকে ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ বলে।
অধিকাংশ গাছে ঊর্ধ্বমুখী শ্বাসমূল, ঠেসমূল দেখা যায়। এ অঞ্চলের কিছু কিছু উদ্ভিদ জরায়ুজ অঙ্কুরোদগমের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে থাকে। ম্যানগ্রোভ অঞ্চলের উদ্ভিদগুলোর পাতা সাধারণত পুরু ও রসাল পাতার পৃষ্ঠ মোমে অথবা রোমে আচ্ছাদিত থাকে। স্টোম্যাটা নিমজ্জিত এবং নিম্নতলে বিদ্যমান।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের উপায়-
১. গণসচেতনতা
২. বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন
৩. বন্যপ্রাণীর জন্য অভয়ারণ্য
৪. বৈজ্ঞানিক বন ব্যবস্থাপনা
৫. ক্রয়-বিক্রয় ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ
- ভূতাত্ত্বিক ভাবে সেন্টমার্টিন দ্বীপ একটি মহাদেশীয় দ্বীপ।
- সেন্টমার্টিন দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র কোরাল বা প্রবাল দ্বীপ।
- এর উত্তর অংশ প্রশস্ত এবং জিনজিরা নামে পরিচিত। দ্বীপের দক্ষিণে দিকে একটি ম্যানগ্রোভ বন আছে। জিনজিরাতে একটা মিঠাপানির নিম্নভূমি আছে।