10 Minute School
Log in

বিশ্বের প্রাচীন সভ্যতা | Ancient Civilizations of the World

মানব বিবর্তনের যুগ

প্রাগৈতিহাসিক যুগকে ধরা হয় প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বছর আগে থেকে খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০। এই সময়কালকে ৩টি প্রধান যুগে ভাগ করা হয়- 

  1. প্রস্তর যুগ
  2. ব্রোঞ্জ যুগ
  3. লৌহ যুগ

সিন্ধু সভ্যতা

  • হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো অন্তর্গত – সিন্ধু সভ্যতার।
  • সিন্ধি ভাষায় ‘মহেঞ্জোদারো’ শব্দের অর্থ মৃতের ঢিবি।
  • সিন্ধু সভ্যতা ছিল একটি ব্রোঞ্জ যুগীয় সভ্যতা (৩৩০০ – ১৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ; পূর্ণবর্ধিত কাল ২৬০০ – ১৯০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)। 
  • হরপ্পা ছিল এই সভ্যতার প্রথম আবিষ্কৃত শহরগুলির অন্যতম।

মেসোপটেমিয় সভ্যতা

  • বর্তমান ইরাকের টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদী দুটির মধ্যবর্তী অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল।
  • মেসোপটেমিয়া সভ্যতার মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন হলো সুমেরীয় সভ্যতা। 
  • সুমেরীয়রা কিউনিফর্ম নামে একটি নতুন লিপির উদ্ভাবন করেন। কিউনিফর্মকে বলা হয় অক্ষরভিত্তিক বর্ণমালা
  • জলঘড়ি ও চন্দ্রপঞ্জিকা মেসোপটেমিয় সভ্যতার অবদান। 

ব্যাবিলনীয় সভ্যতা 

  • মধ্য-দক্ষিণ মেসোপটেমিয়া (বর্তমান ইরাক,সিরিয়া) অঞ্চলে খ্রিস্টপূর্ব ১৮৯৪ সালে আক্কাডিয়ান ভাষাভাষি একটি সাংস্কৃতিক অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠেছিল।
  • ব্যাবিলনীয় সভ্যতার স্থপতি ছিলেন বিখ্যাত আমেরাইট নেতা হাম্বুরাবি
  • হাম্বুরাবি লিখিত আইন প্রণয়ন করেন যা ‘হাম্বুরাবি কোড’ হিসেবে পরিচিত।
  • আবিষ্কৃত মোট ১২টি পাথরের টুকরোয় খোদাই করে লেখা ২৮২টি আইন।
  • বর্তমানে এই আইন সংকলনগুলো ল্যুভর মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। 

অ্যাসেরীয় সভ্যতা

  • অ্যাসেরীয় ছিল প্রাচীন নিকট প্রাচ্যের একটি প্রধান সেমিটিক রাজত্ব বা সাম্রাজ্য।
  • বৃত্তকে ৩৬০ ডিগ্রিতে প্রথম ভাগ করে অ্যাসেরীয়রা।
  • পৃথিবীকে প্রথমে তারাই অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশে ভাগ করেছিল। 

ক্যালেডীয় সভ্যতা

  • ব্যাবিলন শহর ঘিরে গড়ে ওঠায় ক্যালডীয় সভ্যতাকে ‘নতুন ব্যাবিলনীয় সভ্যতা’ও বলা হয়।
  • ক্যালেডীয় সভ্যতার স্থপতি সম্রাট নেবুচাদনেজার
  • নেবুচাদনেজার তার সম্রাজ্ঞীর জন্য মনোরম উদ্যান নির্মাণ করেন যা ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান নামে পরিচিত। এটি প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের একটি। 
  • ক্যালেডীয়রা সর্বপ্রথম সপ্তাহকে ৭ দিনে বিভক্ত করে।
  • প্রতিদিনকে ১২ জোড়া ঘণ্টায় ভাগ করার পদ্ধতিও ক্যালেডীয়রা আবিষ্কার করে।
  • ক্যালেডীয়রা ১২টি নক্ষত্রপুঞ্জের সন্ধান পায়। এর থেকেই ১২টি রাশিচক্রের সৃষ্টি হয়।

মিশরীয় সভ্যতা

  • বুক অফ ডেথ মিশরীয় সভ্যতার সাহিত্যের আদিতম নিদর্শন। 
  • মিশরীয় সভ্যতার লিখনপদ্ধতির নাম হায়রোগ্লিফিক
  • ৪২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দতে তারা প্রথম সৌর পঞ্জিকা আবিষ্কার করে। অর্থাৎ, তারা ১২ মাসে ১ বছর, ৩০ দিনে ১ মাস এই জাতীয় গণনারীতি চালু করে।  ৩৬৫ দিনের হিসাবও তারাই প্রথম ব্যবহার করে।

ফিনিশীয় সভ্যতা

  • ফিনিশীয়রা পরিচিত শ্রেষ্ঠতম নাবিক ও জাহাজ নির্মাতা হিসেবে।
  • বর্ণমালার উদ্ভাবন করেন ফিনিশীয়রা।
  • ফিনিশীয়রা ২২টি ব্যঞ্জনবর্ণ উদ্ভাবন করেছিল। এখান থেকে আধুনিক বর্ণমালার সূচনা হয়।  

গ্রিক সভ্যতা

  • সক্রেটিস > প্লেটো >অ্যারিস্টোটল > আলেকজান্ডার।
  • অলিম্পিক খেলার জন্ম প্রাচীন গ্রিসের অলিম্পিয়া নামক স্থানে।
  • ইতিহাস রচনার সূত্রপাত করেছিল গ্রিকরা।
  • ইতিহাসের জনক গ্রিক দার্শনিক হিরোডোটাস।
  • গ্রিকদের ১২জন দেবদেবী ছিল। দেবতাদের রাজা ছিলেন জিউস। অ্যাপোলো ছিলেন সূর্যের দেবতা, পোসিডন ছিলেন সাগরের দেবতা, এথেনা ছিলেন জ্ঞানের দেবী।

রোমান সভ্যতা

  • রোম নগরীর উদ্ভব ৭৫৩ খ্রিস্টপূর্বে। টাইবার নদীর তীরে অবস্থিত রোম শহর। রোম সাম্রাজ্যের পতন ঘটে – ৪৭৬ খ্রিস্টাব্দে।
  • রোম নগরীকে “Roma Aeterna” (শাশ্বত শহর) এবং “Caput Mundi” (বিশ্বের রাজধানী) হিসেবে গণ্য করা হয়, প্রাচীন রোমান সংস্কৃতি দুইটি কেন্দ্রীয় ধারণা।
  • সম্রাট কন্সটান্টাইন এর আমলে রোমান সাম্রাজ্য একটি খ্রিস্টধর্মীয় সাম্রাজ্যে পরিণত হয়। 

চৈনিক সভ্যতা

  • চৈনিক সভ্যতা তাম্রযুগের অন্তর্গত। 
  • চৈনিক ইতিহাসে প্রভাবশালী দার্শনিক ছিলেন কনফুসিয়াস। 
  • সান জু একজন চৈনিক সমরনায়ক। তার রচিত প্রাচীন যুদ্ধবিদ্যার বই “আর্ট অব ওয়ার” বা “রণকৌশল”।
  • এরাই সর্বপ্রথম – আগ্নেয়াস্ত্র, গান পাউডার ও কাগজ আবিষ্কার করে।

পারস্য সভ্যতা

  • বর্তমান ইরান, ইরাক, সিরিয়া, তুরস্কে প্রভৃতি অঞ্চলে গড়ে উঠেছিল পারস্য সাম্রাজ্য। 
  • প্রাচীন পারস্য সভ্যতায় স্থাপত্যকলায় পাথরের অন্যন্য স্থাপত্যশৈলী লক্ষ্য করা যায়। সোনা, রুপার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় এই সভ্যতার মধ্যে। হাতে বোনা কম্বল প্রাচীন পারস্যের অন্যতম একটি আকর্ষণীয় নিদর্শন ছিল।
  • পারস্য সাম্রাজ্যের বিখ্যাত শহর – পার্সিপোলিস, টেসিফন, ইস্পাহান।

ইনকা সভ্যতা

  • দক্ষিণ আমেরিকার পেরু, ইকুয়েডর, বলিভিয়া ও চিলিতে অবস্থিত।
  • প্রাচীন পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্য মাচু পিচু(পেরু) ইনকা সাম্রাজ্যের একটি নিদর্শন।  

অ্যাজটেক সভ্যতা 

  • মধ্য আমেরিকার মেক্সিকো, বেলিজ, গুয়াতেমালা ও হন্ডুরাসে গড়ে ওঠে। 

মায়া সভ্যতা

  • মায়া সভ্যতার অবস্থানও মধ্য আমেরিকায় অবস্থিত। বর্তমানের গুয়েতেমালা, বেলিজ, এল সালভেদর ও হন্ডুরাসের পশ্চিম অঞ্চল এবং মেক্সিকোর কিছু শহর (তাবাসকো ও চিয়াপাস) নিয়ে এই সভ্যতা গড়ে উঠেছিল। 
  • মায়া সভ্যতা স্থাপত্যশৈলী, গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞানে অনেক উন্নতি সাধন করে। তারাও শূন্যের ব্যবহার করেছিল, ৩৬৫ দিনে এক বছরের ক্যালেন্ডারও তারা ব্যবহার করতো। এছাড়াও চকোলেট ও রাবারের আদিরুপের উদ্ভাবনে তাদের উল্লেখযোগ্য অবদান আছে।