10 Minute School
Log in

অরবিট ও অরবিটাল (Orbit and Orbital)

অরবিট ও অরবিটাল (Orbit and Orbital)

বোর পরমাণু মডেল অনুযায়ী নিউক্লিয়াসের চারিদিকে যে বৃত্তাকার কক্ষপথে ইলেকট্রন পরিভ্রমণ করে তাকে অরবিট(Orbit) বলা হয়। এটি একটি দ্বিমাত্রিক ধারণা। বিভিন্ন অরবিটের শক্তি ভিন্ন ভিন্ন হয়। কোনো অরবিটে সর্বোচ্চ 2n সংখ্যক ইলেকট্রন অবস্থান করে । নিউক্লিয়াসের চারদিকে যে ত্রিমাত্রিক স্থানে উচ্চ ইলেকট্রন ঘনত্ব বিশিষ্ট অঞ্চলে ইলেকট্রন পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি তাকে অরবিটাল(Orbital) বলে । ইলেকট্রনের তরঙ্গের বিস্তারকে মেঘ রুপে বিবেচনা করে অরবিটালের ধারণা আনা হয়েছে । ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব যে অংশে সর্বোচ্চ হবে ঐ ত্রিমাত্রিক অঞ্চলকে অরবিটাল (Orbital) বলে। কোনো উপশক্তিস্তরকে অক্ষসহ প্রকাশ করা হলে তা প্রকৃতপক্ষে অরবিটাল নির্দেশ করে। যেমন: p_x, p_y, p_z ইত্যাদি। একই উপশক্তিস্তরের অরবিটালগুলো সমশক্তিসম্পন্ন হতে পারে। তবে চৌম্বকক্ষেত্র প্রয়ােগের মাধ্যমে এদের মধ্যে শক্তির। পার্থক্য তৈরি করা যায়। যেকোনো অরবিটালে সর্বোচ্চ 2টি ইলেকট্রন থাকতে পারে।

এছাড়া ইলেকট্রনের আবর্তনের ফলে একটি চৌম্বক ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়, যার আকর্ষণের প্রভাবে ২টি ইলেকট্রন তাদের মধ্যকার বিকর্ষণ প্রভাবকে অতিক্রম করে একসাথে অবস্থান করতে পারে।

অরবিট ও অরবিটালের পার্থক্য (Differences between orbit and orbitals)

অরবিট ও অরবিটালের পার্থক্য (Differences between orbit and orbitals)

বিভিন্ন প্রকার অরবিটালের আকৃতি(Shape of Orbital)

s অরবিটাল (s Orbital) :

এটি সুষম গোলাকৃতির। এর কেন্দ্রে নিউক্লিয়াস অবস্থিত। সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা l=0 হলে s উপশক্তিস্তর হয়।  এক্ষেত্রে, m=0 হওয়ায় অর্থাৎ একটি মান হওয়ায় এর একটি মাত্র সমবিন্যাস বা ত্রিমাত্রিক বিন্যাস সম্ভব হয়। অর্থাৎ x, y, z অক্ষ বরাবর ইলেকট্রন ঘনত্ব সমানভাবে বিস্তৃত থাকে। প্রধান শক্তিস্তরের মান বৃদ্ধি পেলে s অরবিটালের আকৃতি বড় হবে। 1s , 2s. 3s অরবিটালগুলোর ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব একইভাবে বিস্তৃত নয় । নিউক্লিয়াসের নিকট 1s অরবিটালে ইলেকট্রন মেঘের ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি । 2s অরবিটাল নিউক্লিয়াস থেকে কিছুটা দূরে থাকে। 1s ও 2s এর যে মধ্যবর্তী স্থানে ইলেকট্রন ঘনত্ব প্রায় শূন্য তাকে node বলে। 1s এর মধ্যে কোনো node নেই। 2s এর মধ্যে একটি এবং 3s এর মধ্যে দুটি node আছে। ns অরবিটালে node এর সংখ্যা হল (n-1)

 s অরবিটাল এর আকৃতি (Shape of s Orbital)

s অরবিটাল এর আকৃতি (Shape of s Orbital)

p অরবিটাল(p Orbital) :

সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যার মান l=1 হলে p উপশক্তিস্তর হয়। এক্ষেত্রে, m = -1, 0, +1 অর্থাৎ তিনটি মান হওয়ায় এর তিন প্রকার বিন্যাস সম্ভব। অর্থাৎ তিনটি মান হওয়ায় নিউক্লিয়াসের বিপরীত দিকে দুটি অংশে p অরবিটালের ইলেকট্রন ঘনত্ব সর্বাধিক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এর ফলে তিনটি p অরবিটাল সমশক্তিসম্পন্ন ডাম্বেল আকারের হয়। ডাম্বেলের দুটি অংশ যে বিন্দুতে মিলিত হয় যেখানে নিউক্লিয়াস অবস্থান করে। প্রতিটি ডাম্বেলের 2টি করে লোব থাকে যেখানে ইলেকট্রন ঘনত্ব সর্বোচ্চ পরিমাণে থাকে। এছাড়া এতে একটি কল্পিত তল থাকে যেখানে p অরবিটালের ইলেকট্রন থাকার সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। একে নোডাল তল বলে । যেমন : p_x অরবিটালের নোডাল তল হল yz, এর x অক্ষ বরাবর ইলেকট্রন ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি।

p অরবিটাল এর আকৃতি (Shape of p orbital)

p অরবিটাল এর আকৃতি (Shape of p orbital)

অনুরূপে p_y এবং p_z অরবিটালের নোডাল তল হল xz এবং xy। তিনটি অরবিটাল পরস্পরের উপর লম্বভাবে থাকে এবং নিজেদের অক্ষ বরাবর দিক নির্দেশক হিসেবে থাকে

d অরবিটাল(d Orbital) :

সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা l=2 হলে d উপশক্তিস্তর হয়। এক্ষেত্রে, m = -2,-1, 0, +1, +2। এবং m এর মান হতে দেখা যায়, d উপশক্তিরের 5 প্রকার ত্রিমাত্রিক বিন্যাস সম্ভব। অর্থাৎ d উপশক্তিস্তরের 5 টি সমশক্তির d অরবিটাল আছে। 4টি অরবিটালের আকৃতি ডাবল ডাম্বেলর মত এবং অপরটি শুধুমাত্র একটি ডাম্বেলের মত হয় । এক্ষেত্রে d_{xy} এর চারটি লোব x এবং y অক্ষের মাঝখানে 45° কোণে, d_{yz} এর চারটি লোব y ও z অক্ষের মাঝখানে 45° কোণে অবস্থান করে । d_{zx} এর চারটি লোব x এবং z অক্ষের মাঝেখানে 45° কোণে অবস্থান করে। d_{x^2-y^2} এর চারটি লোব x ও y এবং d_{z^2} মেঘ z অক্ষ বরাবর এবং কিছু ইলেকট্রন মেঘ চক্রাকারে x এবং y অক্ষদ্বয়ের ছেদবিন্দুকে কেন্দ্র করে অবস্থান নেয়।

পাঁচটি d–অরবিটাল এর আকৃতি (Shape of 5 d orbitals)

পাঁচটি d–অরবিটাল এর আকৃতি (Shape of 5 d orbitals)