10 Minute School
Log in

তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnetic Radiation)

তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ (Electromagnetic Radiation) কী?

যে যান্ত্রিক ব্যবস্থাপনায় তড়িৎ ক্ষেত্র ও চৌম্বক ক্ষেত্র পরস্পরের সমকোণে অবস্থান করে যে বিকিরণ(Radiation) উৎপন্ন করে তাকে তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণ(Electromagnetic Radiation) বলে। পরমাণুতে নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ইলেক্ট্রন সর্বদা ঘূর্ণায়মান। ফলে নিউক্লিয়াস এবং ইলেকট্রনের মধ্যে সৃষ্টি হয় চৌম্বক ক্ষেত্র। আর ইলেক্ট্রনের প্রবাহ হলো বিদ্যুৎ। সুতরাং ইলেক্ট্রনের ঘূর্ণনের ফলে বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের উদ্ভব হয়। এ দুটি ক্ষেত্রের মিথষ্ক্রিয়ায় তড়িৎ চৌম্বকীয় বিকিরণের(Electromagnetic Radiation) উৎপত্তি ঘটে।

কম্পাঙ্ক (Frequency, \nu):

তরঙ্গ সঞ্চালনকারী কোনো কণা কর্তৃক প্রতি সেকেন্ডে সম্পাদিত স্পন্দন সংখ্যাকে কম্পাঙ্ক বা ফ্রিকুয়েন্সি বলে। অথবা একটি নির্দিষ্ট বিন্দুর মধ্য দিয়ে এক সেকেন্ডে যতসংখ্যক পূর্ণ তরঙ্গ অতিক্রম করে সে সংখ্যাকে ঐ তরঙ্গের কম্পাংক বলে। অর্থাৎ N/t (স্পন্দন/সময়)। গ্রিক অক্ষর নিউ (\nu) দ্বারা একে প্রকাশ করা হয়। কম্পাঙ্কের একক হচ্ছে, cycle/sec বা হার্টজ (Hertz, Hz)বিকিরিত রশ্মি শক্তিশালী হলে এর কম্পাংক বেশী হয় তাই তরঙ্গ দৈর্ঘ্য কমে যায়। অর্থাৎ

কম্পাঙ্ক, \nu \propto \frac{1}{\lambda}, \nu=\frac{c}{\lambda} এখানে, c হলো ধ্রুবক [c = আলোর বেগ]

তরঙ্গ সংখ্যা (Wave number):

প্রতি সেন্টিমিটার দৈর্ঘ্যে কোনো তরঙ্গ দ্বারা সৃষ্ট পূর্ণ তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের সংখ্যাকে ঐ তরঙ্গের তরঙ্গ সংখ্যা বলে।

\overline{\nu}=\frac{1}{\lambda} আবার, \lambda=\frac{c}{\nu}

\therefore \overline{\nu}=\nu/c

গতিবেগ (Speed, c) :

সব বিকিরণের(Radiation) গতিবেগ, c=3.0\times 10^{8}m/s, c=\nu \times \lambda বা, \nu=c/ \lambda বা, \lambda=c/\nu

কোয়ান্টাম তত্ত্ব (Quantum Theory)

প্লাঙ্কের কোয়ান্টাম তত্ত্ব (Planck’s Quantum Theory of Light):

প্লাঙ্কের কোয়ান্টম তত্ত্ব অনুযায়ী, “আলোক নিরবচ্ছিন্নভাবে নয়, বরং বিচ্ছিন্নভাবে ক্ষুদ্র শক্তির নির্দিষ্ট একক প্যাকেট বা কোয়ান্টা হিসেবে বিকিরিত হয়। বিজ্ঞানী আইনস্টাইন পরে এই কোয়ান্টাম বা শক্তির নির্দিষ্ট একককে কণা হিসেবে উল্লেখ করেন এবং এর নাম দেন ফোটন (Photon)এক ফোটনের শক্তিকে কোয়ান্টা বলে। এক মোল ফোটনের শক্তিকে 1 আইনস্টাইন বলে।

1 আইনস্টাইন = 6.022 \times 10^{23} কোয়ান্টা।

কোয়ান্টাম তত্ত্বের(Quantum Theory) মৌলিক বিষয়গুলো হলো- 

  1. উষ্ণ বস্তুতে বিদ্যমান চার্জকৃত কণার কম্পনের কারণে শক্তি বিকিরিত হয়। 
  2. শক্তির বিকিরণ বা শোষণ বিচ্ছিন্নভাবে ঘটে এবং এটি ক্ষুদ্র শক্তির প্যাকেট বা কোয়ান্টা (Quanta) হিসেবে সংগঠিত হয়।
  3. প্রতিটি কোয়ান্টা একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ শক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট। এ শক্তিকে নিম্নোক্ত সমীকরণ দ্বারা প্রকাশ করা হয়।

E \propto \nu

E=h\nu (১টি ফোটনের শক্তির জন্য প্লাঙ্কের সমীকরণ)

অথবা, E=\frac{hc}{\lambda}     (c=\lambda \nu   বা, \nu=\frac{c}{\lambda})

যেখানে, h = প্লাঙ্কের ধ্রুবক।

\nu = রেডিয়েশনের কম্পাঙ্ক।

 4. বিকিরণের(Radiation) মোট শক্তি কোয়ান্টায়িত অর্থাৎ মোট শক্তি h\nu এর পূর্ণসংখ্যার গুণিতক। এর মান কেবলমাত্র 1h\nu, 2h\nu, বা, 3h\nu ইত্যাদি হতে পারে। কিন্তু h\nu এর ভগ্নাংশের গুণিতক হতে পারবে না। অর্থাৎ, E=nh\nu

5. শক্তির শোষণ বা বিকিরণ(Radiation) ঘটে কোয়ান্টা হিসেবে, কিন্তু সঞ্চালন ঘটে তরঙ্গ হিসেবে।