10 Minute School
Log in

মূল কণিকা (Core Particle)

পরমাণুর মূল কণিকা(Core Particle of Atom) ও তাদের প্রকারভেদ

যে সকল ক্ষুদ্র কণা দ্বারা পরমাণু গঠিত তাদেরকে পরমাণুর মূল কণিকা বলে। মূল কণাগুলোকে তিনভাগে ভাগ করা যায়-

১. স্থায়ী মূল কণিকা(Permanent core particles) : ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন

২. অস্থায়ী মূল কণিকা(Temporary core particles) : পজিট্রন, নিউট্রিনো, এন্টিনিউট্রিনো, মেসন ইত্যাদি।

৩. ভারী কণা বা কম্পোজিট কণা(Heavy or composite particles) : আলফা কণা _{2}^{4}\textrm{He}^{2+} , ডিউটেরণ কণা _{1}^{2}\textrm{H}^{+}

পরমাণুতে বিদ্যমান তিনটি স্থায়ী মূল কণিকার(Permanent Core Particle) পরিচয় নিম্নের সারণির মাধ্যমে তুলে ধরা হলো-

  • তুলে ধরা হলো-

স্থায়ী কণিকার নাম

আবিষ্কার সাল

আবিষ্কারক

আবিষ্কার প্রক্রিয়া

প্রতীক

প্রকৃত ভর

প্রকৃত চার্জ

আপেক্ষিক ভর (amu)

ইলেকট্রন

1897

জে. জে. থমসন

ক্যাথোড রশ্মি পরীক্ষা দ্বারা

e^-

9.11 \times 10^{-28} \mathrm{~g}

-1.6 \times 10^{-19} c

5.488 \times 10^{-4}

প্রোটন

1911

রাদারফোর্ড

ক্যানাল রশ্মি দ্বারা

p \text { বা } H^{+}

1.672 \times 10^{-24} \mathrm{~g}

+1.6 \times 10^{-19}

1.007

নিউট্রন

1932

চ্যাডউইক

Be নিউক্লিয়াস কে \alpha পার্টিকেল দ্বারা হিট করার মাধ্যমে

n

1.675 \times 10^{-24} \mathrm{~g}

নিরপেক্ষ (0)

1.0089

পরমাণুতে বিদ্যমান তিনটি স্থায়ী কণিকা(Permanent Core Particle)

অস্থায়ী মূল কণিকা(Temporary Core Particle) :

যে সকল কণিকা কোনো কোনো মৌলের পরমাণুতে ক্ষণস্থায়ীভাবে অবস্থান করে তাকে অস্থায়ী মূল কণিকা(Temporary Core Particle) বলে। অস্থায়ী কণিকার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো পজিট্রন, মেসন, পাইওন, মিউওন, নিউট্রিনো, এন্টিনিউট্রিনো ইত্যাদি।

আইসোটোপ (Isotopes) :

1913 খ্রিষ্টাব্দে বিজ্ঞানী সডি (Soddy) সর্ব প্রথম আইসোটোপ কথাটির প্রবর্তন করেন। যেসব পরমাণুর পারমাণবিক সংখ্যা একই কিন্তু নিউক্লিয়াসে বিভিন্ন সংখ্যক নিউট্রন থাকার জন্য ভর সংখ্যা ভিন্ন হয় তাদের প্রত্যেককে একে অপরের আইসোটোপ বলা হয়। অর্থাৎ একই মৌলের যেসব পরমাণুর প্রোটন সংখ্যা সমান, কিন্তু ভরসংখ্যা ভিন্ন তাদেরকে পরস্পরের আইসোটোপ বলে  যেমন- হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ আছে। এগুলো হচ্ছে-

হাইড্রোজেন প্রটিয়াম (_{1}^{1}\textrm{H}), ডিউটেরিয়াম (_{1}^{2}\textrm{H}) এবং টিট্রিয়াম (_{1}^{3}\textrm{H})পরস্পরের আইসোটোপ । কারণ এদের প্রোটন সংখ্যা একই কিন্তু ভর সংখ্যা  ভিন্ন। 

আইসোটোপের বৈশিষ্ট্য :

(i) এরা একই মৌলের পরমাণু 

(ii) এদের পারমাণবিক সংখ্যা বা প্রোটন সংখ্যা সমান, কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন হওয়ায় ভর সংখ্যা ভিন্ন। 

(iii) আইসোটোপসমূহ একই মৌলের পরমাণু হওয়ায় পর্যায় সারণিতে এরা একই অবস্থানে থাকে (এ জন্য এদের নাম আইসোটোপ দেওয়া হয়েছে। iso অর্থ একই, topos অর্থ স্থান। এটি গ্রিক শব্দ)।

(iv) এদের রাসায়নিক ধর্ম একই, তবে কতিপয় ভৌত ধর্মে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন, ভারী আইসোটোপের গলনাঙ্ক বা স্ফুটনাঙ্ক – সামান্য বেশি হয়।

আইসোবার(Isobar) :

যেসব ভিন্ন মৌলের পরমাণুর ভর সংখ্যা সমান কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা (বা প্রোটন সংখ্যা) ও নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন, তাদেরকে একে অপরের  আইসোবার বলা হয়। যেমন- _{18}^{40}\textrm{Ar},  _{19}^{40}\textrm{K}  ও  _{20}^{40}\textrm{Ca} পরস্পরের  আইসোবার কেননা Ar, K ও Ca এর পারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন (যথাক্রমে- 18, 19, 20) এবং নিউট্রন সংখ্যাও ভিন্ন (যথাক্রমে 22, 21, 20) । কিন্তু ভর সংখ্যা অভিন্ন (সকলের ক্ষেত্রে 40)।

আইসোবার  বৈশিষ্ট্য:

  1. আইসোবারগুলো ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পরমাণু।
  2. এদের ভর সংখ্যা সমান কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন, তাই এদের প্রোটন সংখ্যা ও নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন।
  3. পর্যায় সারণিতে এরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে থাকে।
  4. এদের সব ভৌত ও রাসায়নিক ধর্ম ভিন্ন।

আইসোটোন (Isotones) :

যেসব ভিন্ন মৌলের পরমাণুর নিউক্লিয়াসে নিউট্রন সংখ্যা সমান থাকে কিন্তু প্রোটন সংখ্যা ও ভর সংখ্যা ভিন্ন, তাদেরকে একে অপরের আইসোটোন বলে। আইসোটোনগুলো ভিন্ন মৌলের পরমাণু। আইসোটোনগুলোর রাসায়নিক ধর্মও পৃথক হয়। উদাহরণ : হাইড্রোজেন _{1}^{3}\textrm{H} এবং হিলিয়ামের _{2}^{4}\textrm{He} পরমাণুদ্বয় পরস্পরের আইসোটোন, কারণ উভয়ের নিউট্রন সংখ্যা অভিন্ন (2)। আবার, _{6}^{14}\textrm{C}_{8}^{12}\textrm{O} পরস্পরের আইসোটোন।

আইসোটোনের  বৈশিষ্ট্য:

  1. আইসোটোনগুলো ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পরমাণু।
  2. এদের ভরসংখ্যা ও পারামাণবিক সংখ্যা ভিন্ন।
  3. পর্যায় সারণিতে এরা ভিন্ন ভিন্ন অবস্থানে থাকে।

পরমাণুর ভর ও আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর

কোনো মৌলের একটি পরমাণুর অন্তর্গত সংশ্লিষ্ট পদার্থসমূহের মোট পরিমাণকে ঐ মৌলের একটি পরমাণুর ভর বলে। যেমন –

H এর একটি পরমাণুর ভর = 0.1673\times10^{-23}g

কোনো মৌলের আপেক্ষিক পারমাণবিক ভর = \frac{ঐ  মৌলের  একটি  পরমাণুর  ভর}{কার্বন−12  আইসোটোপের  একটি  পরমাণুর  ভর\times \frac{1}{12}}

a. m. u বা atomic mass unit বা পারমাণবিক ভর একক

কার্বন-12 আইসোটোপের একটি পরমাণুর ভরের \frac{1}{12} অংশকে 1 a.m.u বলে।

1 a.m.u.=\frac{𝐶−12 এর  একটি  পরমাণুর  ভর}{12}

=\frac{\frac{12}{6.022\times10^{23}}g}{12}

=\frac{1}{6.022\times10^{23}}g =1.66\times10^{-24}g

amu একক ব্যবহার করে একটি পরমাণু বা অণুর ভর নির্ণয় করা যায়

যেমন, O_2 এর আপেক্ষিক পারামাণবিক ভর 16

\therefore O_2 এর 1 টি পরমাণুর ভর =16\times1.66\times10^{-24}g

=2.656\times 10^{-24}g

 

অনুরুপভাবে,

H_2O এর আপেক্ষিক আণবিক ভর =18

\therefore H_2O এর ১ টি অণুর ভর=18amu=18\times 1.66\times 10^{-24}g

=2.98\times10^{-23}g