10 Minute School
Log in

গ্যালিলিওর রূপান্তর (Galilean transformation)

গ্যালিলিওর রূপান্তর (Galilean transformation)

যদি কোনো ঘটনা একই সাথে দুটি পৃথক কাঠামোয় ঘটে, তবে স্বাভাবিকভাবেই দুটি কাঠামোর জন্যে দুই প্রকারের সেট স্থানাঙ্ক পাওয়া যাবে। উক্ত ঘটনার জন্যে দুই সেট স্থানাঙ্কের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করার নিমিত্তে যে সমীকরণ পাওয়া যায়, তাকেই গ্যালিলিওর রূপান্তর সমীকরণ( Galilean transformation equation) বলে।

যদি দুটি কাঠামোই অভ্যন্তরীণ কাঠামো হয়, তবে সে রূপান্তরকেও গ্যালিলিয় রূপান্তর (Galilean transformation) বলে।

মনে করি ভূ-পৃষ্ঠে স্থির অচ-একটি কাঠামো। এর সাপেক্ষে X– অক্ষ বরাবর চলমান চ-কাঠামোর বেগ ϑ । t = 0 সময়ে উভয় কাঠামোর মূল বিন্দু O এবং O’ এক জায়গায় থাকলে t = t সময় পরে O’ বিন্দু O হতে t দূরত্বে অবস্থান করবে। P বিন্দুর স্থানাঙ্ক অচ- কাঠামোতে (x, y, z) হালে t সময়ে ওই বিন্দুর স্থানাঙ্ক চ- কাঠামোতে, x’ = x – ϑt (1)

Galilean-transformation

চ কাঠামো x- অক্ষ বরাবর গতিশীল বলে Y ও Z অক্ষে কোনো পরিবর্তন হবে না; অর্থাৎ

y’ = y         (2)

z’ = z               …     (3)

পূর্বে সকল কাঠামোতে সময় অভিন্ন বলে,

t’ = t     (4)

সুতরাং, অচ- কাঠামোর কোনো সমীকরণকে চ- কাঠামোতে রূপান্তরিত করতে হলে ওপরের সমীকরণগুলো ব্যবহার করতে হবে। এই সমীকরণগুলোকে গ্যালিলিয় রূপান্তর (Galilean transformation) বলা হয়। এই রূপান্তরণে বলবিদ্যার সূত্রসমূহ সকল কাঠামোয় অভিন্ন থাকে।

সমীকরণ (1) হতে (3) সমীকরণগুলোকে সময়ের সাপেক্ষে ব্যবকলন করে অচ ও চ কাঠামোর জন্য বেগের রূপান্তর সমীকরণ পাওয়া যায়, 

\vartheta_{\mathrm{x}}^{\prime}=\frac{d x^{\prime}}{d t}=\frac{d}{d t}(x-v t)=\frac{d x}{d t}-\vartheta=\vartheta_{\mathrm{x}}-\vartheta         (5)

\vartheta_{\mathrm{y}}^{\prime}=\frac{d y^{\prime}}{d t}=\vartheta_{\mathrm{y}}         (6)

\vartheta_{\mathrm{z}}^{\prime}=\frac{d z^{\prime}}{d t}=\vartheta_{\mathrm{z}}         (7)

সমীকরণ (5), (6) ও (7) হলো বেগ রূপান্তরের সমীকরণ। গ্যালিলিও রূপান্তর ও বেগ রূপান্তর উভয়ই আপেক্ষিকতার বিশেষ স্বীকার্য দুটির পরিপন্থী।

গ্যালিলিওর রূপান্তরের সীমাবদ্ধতা (Limitation of Galileo’s transformation)

১। আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের প্রথম স্বীকার্য অনুসারে অচ ও চ কাঠামোত পদার্থবিজ্ঞানের সূত্রগুলো অবশ্যই একই রূপ হবে। কিন্তু তড়িৎ চুম্বকীয় সূত্রগুলোর ক্ষেত্রে এক কাঠামোর অন্য প্রযোজ্য সমীকরণগুলো অপর কাঠামোতে প্রকাশ করতে গেলে ভিন্ন রূপ হয়। এটি অপেক্ষিকতার প্রথম স্বীকার্যের পরিপন্থী।

২। পুনঃ আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের দ্বিতীয় স্বীকার্য অনুসারে অচ ও চ উভয় কাঠামোতে আলোর বেগ একই হবে। কিন্তু গ্যালিলিয় রূপান্তরণে ভিন্ন রূপ হয়।

ব্যাখ্যা: ধরা যাক অচ কাঠামোতে X- অক্ষের দিকে পরিমাপ করে আলোর বেগ পাই c, সমীকরণ (5) অনুসারে চ কাঠামোতে আলোর বেগ হবে c^{\prime}=c-\vartheta ; অর্থাৎ, আলোর বেগ পর্যবেক্ষকের বেগের ওপর নির্ভরশীল যা আপেক্ষিকতার দ্বিতীয় স্বীকার্যের পরিপন্থী।