স্থূলতা (Obesity)
আদর্শ দৈহিক ওজনের ২০% বা তারও বেশি পরিমাণ মেদ দেহে সঞ্চিত হলে তাকে স্থূলতা বলে। পূর্ণবয়স্ক মানুষে দেহের মাত্রাতিরিক্ত ওজন নির্ধারণের জন্য উচ্চতা ও ওজনের যে আনুপাতিক হার উপস্থাপন করা হয় তাকে দেহের ওজন সূচক বা বডি মাস ইন্ডেক্স (Body Mass Index = BMI) বলে।
BMI=\frac{দেহের ওজন (কিলোগ্রাম)}{ব্যক্তির উচ্চতা (মিটার)^2}ক্রমিক | বিএমআই (BMI) | মানুষের শ্রেণি |
1 | <18.5 kg/m2 | শরীরের ওজন কম (Underweight) |
2 | 18.5 -24.99 kg/m2 | স্বাভাবিক ওজন (Normalweight) |
3 | 25.0 -29.99 kg/m2 | অতিরিক্ত ওজন (Overweight) |
4 | 30.0 -34.99 kg/m2 | প্রথম শ্রেণীর স্থূলতা (class 1 obesity) |
5 | 35.0 -39.99 kg/m2 | দ্বিতীয় শ্রেণির স্থূলতা (class 2 obesity) |
6 | ≥40.0 kg/m2 | তৃতীয় শ্রেণীর ঝুঁকিপূর্ণ স্থূলতা (class 3 obesity) |
চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে শাখায় স্থূলতার কারণ, প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও অস্ত্রোপাচার সম্বন্ধে আলোচনা করা হয় তাকে বেরিয়াট্রিকস (Bariatrics) বলে। স্থূলতার কারণে যেসব রোগ হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে করোনারি হৃদরোগ, টাইপ-2 ডায়াবেটিস, ক্যান্সার (স্তন, কোলন), উচ্চরক্তচাপ, স্ট্রোক, যকৃত ও পিত্তথলির অসুখ, স্লিপ অ্যাপনিয়া, অস্টিও-আর্থাইটিস, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি।
স্থূলতার কারণ (Causes of Obesity)
১. জিনগত : দেহে মেদ সঞ্চয় ও বিস্তারের ক্ষেত্রে গুচ্ছ জিন ভূমিকা পালন করে।
২. পারিবারিক জীবনযাত্রা : চর্বিযুক্ত ফাস্টফুড (বার্গার, পিৎজা ইত্যাদি) খাওয়া, ফলমূল, সবজি ও অপরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট (লাল চালের ভাত) না খাওয়া, অ্যালকোহল জাতীয় পানি পান করা; দামি রেস্তোরাঁয় খাওয়ার আগে ক্ষুধাবর্ধক ও খাওয়া শেষে চর্বিযুক্ত ডেসার্ট (dessert) খাওয়া।
৩. আবেগ
৪.কর্মক্ষেত্র
৬. বিশ্রাম
৭. লিঙ্গভেদ : গড়পড়তায় নারীর চেয়ে পুরুষদেহে বেশি পেশি থাকে।
৮. গর্ভাবস্থা
৯. নিদ্রাহীনতা
১০. শিক্ষার অভাব
১১. অসুখ : পলিসিসটিক ওভারি সিনড্রোম (Polycystic Ovary Syndrome) হলে নারীদেহের স্থূলতা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া কুসিং সিনড্রোম (Cushing’s Syndrome), হাইপোথাইরয়েডিজম (Hypothyroidism) হলেও স্থূলতা হতে পারে।
১২. কতক ওষুধ : কর্টিকোস্টেরয়েড, বিষন্নতা দূর করার ওষুধ (অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস), জন্মবিরতিকরণ বড়ি, ইনসুলিন ও কিছু ডায়াবেটিক প্রতিষেধক ওষুধও স্থূলতার কারণ হতে পারে
স্থূলতার কারণে স্বাস্থ্যগত সমস্যা
১. মানুষের গড় আয়ুষ্কাল ৬-৭ বছর কমে যায়।
২. উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরল উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেড়ে যায়।
৩. ইনসুলিনের সাড়া প্রদান হ্রাস পায়। রক্তে শর্করার পরিমাণ অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে।
৪. অতিরিক্ত মেদের কারণে পুরুষদের ৬৪% মেয়েদের ৭৭% পার্সেন্ট ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৫. হার্ট ডিজিজ, মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন, হার্ট ফেইলিওর, গর্ভাবস্থায় জটিলতা, ঋতুস্রাবজনিত অসুস্থ্তা, বন্ধ্যাত্ব, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার, অস্টিওআর্থাইটি্ টাইপ-২ ডায়াবেটিস, শ্বাস প্রশ্বাসের ত্রুটি ইত্যাদি।
স্থূলতা প্রতিরোধ (Prevention)
১. নিয়মিত ব্যায়াম
২.স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যগ্রহণ
৩.খাদ্য নিয়ন্ত্রণ
৪.লোভনীয় খাবার পরিহার
৫.দেহের ওজন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা
৬.চিকিৎসা