10 Minute School
Log in

দ্রাবক নিষ্কাশন (Solvent Extraction)

যে প্রক্রিয়ায় কোনো দ্রবনে একাধিক পদার্থের মিশ্রণ থেকে কোনো উপযুক্ত দ্রাবক ব্যবহার করে মিশ্রণের কোনো উপাদানকে পৃথক করার পদ্ধতিকে দ্রাবক নিষ্কাশন (Solvent Extraction) পদ্ধতি বলে। এই পদ্ধতির মূলনীতি হল পোলার যৌগ পোলার দ্রাবকে এবং অপোলার যৌগ অপোলার দ্রাবকে দ্রবীভূত হয়। এই পদ্ধতিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা:

১। জলীয় দ্রবণ বা তরল দ্রাবকে থেকে নিষ্কাশন

২। কঠিন পদার্থ হতে নিষ্কাশ

কঠিন পদার্থ হতে নিষ্কাশন পদ্ধতিকে সক্সলেট নিষ্কাশন(Soxlet Extraction) পদ্ধতিও বলা হয়। এ পদ্ধতিতে গাছের পাতা, বাকল, শস্যবীজ হতে জৈব যৌগ নিষ্কাশন করা হয়।

জলীয় দ্রবণ থেকে কোন জৈব যৌগ নিষ্কাশনের ক্ষেত্রে জলীয় দ্রবণে অবস্থানরত জৈব যৌগের মধ্যে একটি অপোলার দ্রাবক ইথার যোগ করে পৃথকীকরণ ফানেলে নিয়ে ঝাঁকানো হয়। এতে জৈব যৌগটি জলীয় স্তর ছেড়ে ইথার দ্রাবকে দ্রবীভূত হয়ে যায় এবং দুটি আলাদা স্তর তৈরি হয়। স্তর দুটিকে পরস্পর থেকে পৃথক করে জৈব যৌগটি আলাদা করা হয়।

Solvent extraction method

দ্রাবক নিষ্কাশন প্রণালি (Solvent extraction method)

Flow diagram of solvent extraction

দ্রাবক নিষ্কাশণের প্রবাহ চিত্র (Flow diagram of solvent extraction)

জৈব দ্রাবকে দ্রবীভূত জৈব পদার্থকেও দ্রাবক নিষ্কাশন পদ্ধতির মাধ্যমে আলাদা করা যায়। যেমন: ক্লোরোফর্মে দ্রবীভূত অ্যালকোহল দ্রাবক নিষ্কাশনের সাহায্যে পৃথক করা যায়।

অ্যালকোহল (C2H5OHC_2H_5OH) পানিতে সম্পূর্ণভাবে দ্রবণীয়, কিন্তু ট্রাইক্লারোমিথেন(CHCl3CHCl_3) পানিতে অদ্রবণীয় । সুতরাং উক্ত মিশ্রণের মধ্যে পানি যোগ করে পৃথকীকরণে ফানেলে নিয়ে ভালোমতো ঝাঁকালে অ্যালকোহল দ্রবীভূত হয়ে জলীয় স্তরে চলে যায় এবং ট্রাইক্লেরোমিথেন নিচের স্তরে থাকে (পানি অপেক্ষা ভারী হওয়ার কারণে) অ্যালকোহলযুক্ত জলীয় দ্রবণের মধ্যে ইথার দিয়ে ঝাঁকালে অ্যালকোহল জৈব দ্রাবক ইথারে দ্রবীভূত হয়ে উপরের হালকা স্তরে এবং পানি নিচের স্তরে আলাদা হয়ে যায় । মিশ্রিত স্তর থেকে ইথারীয় স্তরকে পৃথক করে আংশিক পাতন দ্বারা অ্যালকোহল পৃথক হয়।

প্রবাহ চিত্রঃ 

Flow diagram

প্রবাহ চিত্র

পরস্পর অমিশ্ৰণীয় দুটি দ্রাবক A ও B তে কোনো দ্রব যোগ করা হলে ঐ দ্রব তার দ্রাব্যতা অনুসারে উভয় দ্রাবকে একটি নির্দিষ্ট অনুপাতে দ্রবীভূত হবে। উভয় দ্রাবকে কোনো দ্রবের দ্রবীভূত হওয়ার অনুপাত নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ধ্রুব । ধ্রুব এই সংখ্যাকে বন্টন গুণাংক(Distribution Coefficient) বা KDK_D বলে।

অর্থাৎ, KD=A  দ্রাবকে  দ্রবের  ঘনমাত্রাB  দ্রাবকে  দ্রবের  ঘনমাত্রাK_D=\frac{A \;দ্রাবকে\; দ্রবের\; ঘনমাত্রা}{B \;দ্রাবকে\; দ্রবের\; ঘনমাত্রা}

KDK_Dএর মান যত বেশি হবে A দ্রাবকে ততই বেশি পরিমাণ দ্রব দ্রবীভূত হবে।

দ্রাবক নিষ্কাশন সম্পর্কিত বন্টন সূত্র:

“পরস্পর অমিশ্ৰণীয় দুটি তরল দ্রাবকের উভয়টিতে দ্রবীভূত হয় এরূপ কোনো দ্রবকে ঐ তরলদ্বয়ের মিশ্রণে ঝাঁকালে দ্রবটি দ্রাব্যতা অনুসারে তরলদ্বয়ের প্রতিটিতে এমনভাবে বণ্টিত (দ্রবীভূত) হয় যে উভয় তরলে দ্রব কর্তৃক সৃষ্ট দ্রবণের গাঢ়ত্ব/ঘনমাত্রার অনুপাত নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ধ্রুবক।”

যেমন: I2I_2কে পানি ও CCl4CCl_4 এ ঝাঁকানো হলে I2I_2 উভয় তরলে দ্রবীভূত হয়। যদি I2I_2 এর ঘনমাত্রা CCl4CCl_4 ও পানিতে যথাক্রমে C1C_1C2C_2 হয় তবে বন্টন সূত্রানুসারে

KD=C1C2;KD=বন্টণ  গুণাঙ্কK_D=\frac{C_1}{C_2};K_D=বন্টণ\; গুণাঙ্ক

দ্রাবক নিষ্কাশনে লক্ষণীয় বিষয়-

দ্রবণ থেকে দ্রবের পৃথকীকরণ দক্ষতা নির্ভর করে

  1. নিষ্কাশনকারী দ্রাবকে দ্ৰবটির দ্রাব্যতা কত বেশি
  2. নির্দিষ্ট পরিমাণ দ্রাবক দ্বারা দ্রবটি একবারে নিষ্কাশন করার চেয়ে সমপরিমাণ দ্রাবককে কয়েকভাবে ভাগ করে যত বেশি সংখ্যক বার নিষ্কাশন করা যায় তত অধিক পরিমাণ দ্রব নিষ্কাশিত হয়ে আসবে।

প্রশ্ন: 1L জলীয় দ্রবণে 1g  I21g\;I_2 দ্রবীভূত আছে। ঐ দ্রবণকে 50mlCCl450ml CCl_4 দ্রবণে ঝাঁকালে জলীয় দ্রবণে আর কত I2I_2 অবশিষ্ট থাকবে? [CCl4CCl_4H2OH_2O এর মধ্যে I2I_2 এর বন্টন গুণাঙ্ক 80]

ধরি, 50mL CCl4CCl_4 দ্বারা একবার নিষ্কাশন করলে CCl4CCl_4 এর Xg  I2Xg\;I_2 বন্টিত হয়, CCl4CCl_4I2I_2 এর ঘনমাত্রা =X50g/mL\frac{X}{50}g/mL

পানিতে I2I_2 এর ঘনমাত্রা CH2O=1X1000g/mLC_{H_2O}=\frac{1-X}{1000}g/mL

আমরা জানি,  Kd=CCCl4CH2O 80=X501X1000=(X50×10001X) 80=20X1X 8080X=20X 100X=80 X=80100K_d=\frac{C_{CCl_4}}{C_{H_2O}}\ \Rightarrow 80=\frac{\frac{X}{50}}{\frac{1-X}{1000}}=\Big(\frac{X}{50}\times \frac{1000}{1-X}\Big)\ \Rightarrow 80=\frac{20X}{1-X}\ \Rightarrow 80-80X=20X\ \Rightarrow 100X=80\ \Rightarrow X=\frac{80}{100}

অর্থাৎ, জলীয় দ্রবণে অবশিষ্ট I2I_2 এর পরিমাণ = (18)gm=2gm(1-8)gm=2gm