10 Minute School
Log in

ভাইরাস, এদের প্রকারভেদ এবং উপকারিতা ও অপকারিতা

ভাইরাসের প্রকারভেদ (Types of viruses)

১। আকৃতি অনুযায়ী (According to shape)

(i) দণ্ডাকার : এদের আকার অনেকটা দণ্ডের মতো। 

উদাহরণ- টোবাকো মোজাইক ভাইরাস (TMV), আলফা-আলফা মোজাইক ভাইরাস, মাম্পস ভাইরাস। 

(ii) গোলাকার : এদের আকার অনেকটা গোলাকার। 

উদাহরণ-পোলিও ভাইরাস, TIV, HIV, ডেঙ্গু ভাইরাস। 

(iii) ঘনক্ষেত্রাকার/বহুভুজাকার : এসব ভাইরাস দেখতে অনেকটা পাউরুটির মতো। 

যেমন- হার্পিস, ভ্যাকসিনিয়া ভাইরাস। 

(iv) ব্যাঙ্গাচি আকার : এরা মাথা ও লেজ- এ দুই অংশে বিভক্ত। 

উদাহরণ- \mathrm{T}_{2} , \mathrm{T}_{4} , \mathrm{T}_{6}  ইত্যাদি। 

(v) সিলিন্ড্রিক্যাল/সূত্রাকার  : এদের আকার লম্বা সিলিন্ডারের মতো। 

যেমন- Ebola virus ও মটরের স্ট্রিক ভাইরাস। 

(vi) ডিম্বাকার : এরা অনেকটা ডিম্বাকার।  

উদাহরণ- ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস। 

২। নিউক্লিক অ্যাসিডের ধরন অনুযায়ী (According to the types of nucleic acid)

(i) DNA ভাইরাস : যে ভাইরাসে নিউক্লিক অ্যাসিড হিসেবে DNA থাকে তাদেরকে DNA ভাইরাস বলা হয়। 

উদাহরণ- \mathrm{T}_{2}  ভাইরাস, ভ্যাকসিনিয়া, ভ্যারিওলা, TIV (Tipula Iridiscent Virus), এডিনোহার্পিস সিমপ্লেক্স ইত্যাদি ভাইরাস। 

(ii) RNA ভাইরাস : যে ভাইরাসে নিউক্লিক অ্যাসিড হিসেবে RNA থাকে তাদেরকে RNA ভাইরাস বলা হয়। 

উদাহরণ- TMV, HIV, ডেঙ্গু, পোলিও, মাম্পস, র‍্যাবিস ইত্যাদি ভাইরাস। 

৩। বহিস্থ আবরণ অনুযায়ী (According to the external covering)

(i) বহিস্থ আবরণহীন ভাইরাস;

যেমন- TMV, \mathrm{T}_{2}  ভাইরাস।

(ii) বহিস্থ আবরণী ভাইরাস;

যেমন- ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, হার্পিস, HIV ভাইরাস। 

৪। পোষকদেহ অনুসারে (According to the host body)

(i) উদ্ভিদ ভাইরাস : উদ্ভিদদেহে রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে উদ্ভিদ ভাইরাস বলে। 

যেমন- TMV, Bean Yellow Virus (BYV)। ব্যতিক্রম—ফুলকপির মোজাইক ভাইরাস (DNA)। 

(ii) প্রাণী ভাইরাস : প্রাণিদেহে রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসকে প্রাণী ভাইরাস বলে। 

যেমন—HIV, ভ্যাকসিনিয়া ভাইরাস। 

(iii) ব্যাকটেরিওফায বা ফায ভাইরাস : ভাইরাস যখন ব্যাকটেরিয়ার উপর পরজীবী হয় এবং ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে তখন তাকে ব্যাকটেরিওফায বলে।  

যেমন \mathrm{T}_{2} , \mathrm{T}_{4} , \mathrm{T}_{6}  ব্যাকটেরিওফায। 

(iv) সায়ানোফায : সায়ানোব্যাকটেরিয়া (নীলাভ সবুজ শৈবাল) ধ্বংসকারী ভাইরাসকে সায়ানোফায বলে। 

যেমন-LP \mathrm{P}_{1} ,LP \mathrm{P}_{2} , (Lyngbya, Plectonema ও Phormidium নামক সায়ানোব্যাকটেরিয়ার প্রথম অক্ষর দিয়ে নামকরণ করা হয়েছে।)

৫। পোষক দেহে সংক্রমণ ও বংশবৃদ্ধির উপর ভিত্তি করে (Based on infection and reproduction in the host body)

সাধারণ ভাইরাস ও রিট্রোভাইরাস। 

এখানে ভাইরাল RNA থেকে DNA তৈরি হয়। 

৬। অন্যান্য ধরন (Other types)

যে সব ভাইরাস ছত্রাককে আক্রমণ করে থাকে তাদের মাইকোফায (Mycophage) বলে। 

১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে Holmes ব্যাকটেরিয়া আক্রমণকারী ভাইরাসকে Phaginae, উদ্ভিদ আক্রমণকারী ভাইরাসকে Phytophaginae এবং প্রাণী আক্রমণকারী ভাইরাসকে Zoophaginae নামকরণ করেন। 

ভাইরাস কি জীব না জড় (Virus- life or thing)

ভাইরাস জীব এবং জড় উভয় বৈশিষ্ট্যই প্রদর্শন করে। 

ক) ভাইরাসের জড়-রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য (Inorganic-chemical properties of virus): 

১। ভাইরাস অকোষীয় ও অতি আণুবীক্ষণিক। এদের সাইটোপ্লাজম, কোষঝিল্লি, কোষপ্রাচীর, রাইবোসোম, মাইটোকন্ড্রিয়া এসব নেই। 

২। এদের নিজস্ব কোনো বিপাকীয় এনজাইম নেই এবং খাদ্য গ্রহণ করে না ফলে পুষ্টি ক্রিয়াও নেই। 

৩। ভাইরাস জীবকোষের সাহায্য ছাড়া স্বাধীনভাবে প্রজননক্ষম নয়।   

৪। ব্যাকটেরিয়ারোধক ফিল্টারে ভাইরাস ফিল্টারযোগ্য নয়। 

৫। ভাইরাসকে কেলাসিত করা যায়, সেন্ট্রিফিউজ করা যায়, ব্যাপন করা যায়, পানির সাথে মিশিয়ে সাসপেনশন তৈরি করা যায়, তলানিকরণ করা যায়। 

৬। জীবকোষের বাইরে ভাইরাস রাসায়নিক কণার মতো নিষ্ক্রিয়।

৭। ভাইরাসের দৈহিক বৃদ্ধি নেই এবং পরিবেশের উদ্দীপনায় সাড়া দেয় না। 

৮। ভাইরাস রাসায়নিকভাবে প্রোটিন ও নিউক্লিক অ্যাসিডের সমাহার মাত্র। 

৯। ভাইরাস অ্যাসিড, ক্ষার ও লবণ প্রতিরোধে সক্ষম এবং আন্টিবায়োটিক এদের দেহে কোনোরূপ প্রতিক্রিয়া করতে পারে না। 

খ) ভাইরাসের জীবীয় বৈশিষ্ট্য (Biological properties of the virus): 

১। পোষক কোষের অভ্যন্তরে ভাইরাস সংখ্যাবৃদ্ধি (multiplication) করতে পারে। 

২। নতুন সৃষ্ট ভাইরাসে মাতৃ ভাইরাসের বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে। অর্থাৎ একটি ভাইরাস তার অনুরূপ ভাইরাস দিতে পারে। 

৩। ভাইরাসের দেহ জেনেটিক বস্তু DNA বা RNA এবং প্রোটিন দিয়ে গঠিত। 

৪। ভাইরাস সুনির্দিষ্টভাবে বাধ্যতামূলক পরজীবী। 

৫। ভাইরাস পরিব্যক্তি (mutation) ঘটাতে এবং প্রকরণ (variation) তৈরি করতে সক্ষম। 

৬। এদের অভিযোজন ক্ষমতা রয়েছে। 

৭। এদের জিনগত পুনর্বিন্যাস (genetic recombination) ঘটতে দেখা যায়। 

ভাইরাসকে বাধ্যতামূলক পরজীবী বলে কেন? (Why is virus called a mandatory parasite?)

পরজীবী হিসেবে বেঁচে থাকার চরিত্রকে পরজীবিতা বলে। ভাইরাস বাধ্যতামূলক পরজীবী (obligate parasite)। এটি একটি আদি বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ ভাইরাস তার বংশবৃদ্ধি তথা জীবনের লক্ষণ প্রকাশ করার জন্য সম্পূর্ণভাবে অন্য জীবের সজীব কোষের ওপর নির্ভরশীল। অন্য কোনো জীবের (মানুষসহ অন্যান্য প্রাণী, উদ্ভিদ, ব্যাকটেরিয়া, শৈবাল ইত্যাদি) সজীব কোষ ছাড়া কোনো ভাইরাসই জীবের লক্ষণ প্রকাশ করতে পারে না, বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। কোনো আবাদ মাধ্যমে ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি করা বিজ্ঞানীদের পক্ষেও আজ পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। 

ভাইরাসের পরজীবিতা সাধারণত সুনির্দিষ্ট অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট প্রকারের ভাইরাস কোনো সুনির্দিষ্ট জীবদেহে পরজীবী হয় । যে সব ভাইরাস আদি কোষকে আক্রমণ করে, আর যে সব ভাইরাস প্রকৃত কোষকে আক্রমণ করে তারা ভিন্ন প্রকৃতির। প্রকৃতপক্ষে কোনো ভাইরাসের প্রোটিন আবরণটিই নির্ণয় করে তার আক্রমণের সুনির্দিষ্টতা (specificity)। পোষক কোষে কোনো ভাইরাস- প্রোটিনের জন্য রিসেপ্টর সাইট (receptor site) থাকলে তবেই ঐ ভাইরাস ঐ পোষক কোষকে আক্রমণ করতে পারবে। এ জন্যই ঠাণ্ডা লাগার ভাইরাস (cold virus) শ্বাসতন্ত্রের মিউকাস মেমব্রেন কোষকে আক্রমণ করতে পারে, চিকেন পক্স ভাইরাস ত্বক কোষকে আক্রমণ করতে পারে, পোলিও ভাইরাস ঊর্ধ্বতন শ্বাসনালী ও অন্ত্রের আবরণ কোষ, কখনো স্নায়ু কোষকে আক্রমণ করতে পারে। চিকেন পক্স ভাইরাস শ্বাসনালীকে আক্রমণ করতে পারবে না। কারণ শ্বাসনালী কোষে এর জন্য কোনো রিসেপ্টর সাইট নেই, ঠাণ্ডা লাগার ভাইরাস ত্বক কোষকে আক্রমণ করতে পারবে না, কারণ ত্বক কোষে এই ভাইরাসের জন্য কোনো রিসেপ্টর সাইট নেই।

ফায ভাইরাস কেবল ব্যাকটেরিয়া কোষকেই আক্রমণ করে। ফায ভাইরাসের মধ্যে \mathrm{T}_{2} -ব্যাকটেরিওফায E. coli ব্যাকটেরিয়াকেই আক্রমণ করে। TMV ভাইরাস কেবল তামাক গাছকেই আক্রমণ করে। এমনই ভাবে সুনির্দিষ্ট ভাইরাস নির্দিষ্ট প্রকার পোষক কোষকেই আক্রমণ করে থাকে।

ইমার্জিং ভাইরাস (Emerging virus): 

যেসব ভাইরাস প্রথমে এক ধরনের পোষকে রোগ সৃষ্টি করে, কিন্তু পরবর্তীতে নতুন পোষকে রোগ সৃষ্টি করার সক্ষমতা অর্জন করে এবং রোগ সৃষ্টি করে- তাদের ইমার্জিং ভাইরাস বলে। 

 

ভাইরাস

Source: synergiafoundation.org

যেমন- করোনা ভাইরাস (SARS-COV-2) এটা প্রথমে শুধু বানরেই রোগ সৃষ্টি করতো । পরবর্তীতে বিবর্তিত হয়ে মানুষে রোগ সৃষ্টি করছে।  

ভিরিয়ন (Virion) : 

নিউক্লিক অ্যাসিড ও একে ঘিরে অবস্থিত ক্যাপসিড সমন্বয়ে গঠিত এক একটি সংক্রমণ ক্ষমতাসম্পন্ন সম্পূর্ণ ভাইরাস কণাকে ভিরিয়ন বলে। সংক্রমণ ক্ষমতাবিহীন ভাইরাসকে বলা হয় নিউক্লিয়োক্যাপসিড। প্রতিটি ভিরিয়নে সর্বোচ্চ ২০০০ হতে ২১৩০টি ক্যাপসোমিয়ার থাকে। 

ভিরয়েডস (Viroids): 

ভিরয়েডস হলো সংক্রামক RNA। Theodore Diener (US এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্ট) এবং W.S. Rayner ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে ভিরয়েডস আবিষ্কার করেন। ভিরয়েডস হলো এক সূত্ৰক বৃত্তাকার RNA অণু যা কয়েক শত নিউক্লিয়োটাইড নিয়ে গঠিত এবং ক্ষুদ্রতম ভাইরাস থেকেও বহুগুণে ক্ষুদ্র। কেবলমাত্র উদ্ভিদেই ভিরয়েডস পাওয়া যায়। এরা উদ্ভিদ থেকে উদ্ভিদে এবং মাতৃ উদ্ভিদ থেকে সন্তান সন্ততিতে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে। উদ্ভিদ পোষকের এনজাইম ব্যবহার করে এরা সংখ্যাবৃদ্ধি করে। বিজ্ঞানীগণ এখন ধারণা করছেন হেপাটাইটিস-ডি এর কারণ ভিরয়েডস। ভিরয়েড নারিকেল গাছে ক্যাডাং রোগ তৈরি করে। 

প্রিয়নস (Prions): 

সংক্রামক প্রোটিন ফাইব্রিল হলো প্রিয়নস। এটি নিউক্লিক অ্যাসিডবিহীন প্রোটিন আবরণ মানুষের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের Kuru এবং Creutzfeldt রোগ; ভেড়া ও ছাগলের Scrapie রোগ প্রিয়নস দিয়ে হয়ে থাকে। বহুল আলোচিত ‘ম্যাড কাউ’ রোগ সৃষ্টির সাথে প্রিয়নস-এর সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। ১৯৮২ সালে প্রথম Stanley B, Prusiner অতি ক্ষুদ্র প্রকৃতির প্রিয়নস এর অস্তিত্বের কথা বলেন এবং ভেড়ার স্ক্র্যাপি (Scrapie) রোগে প্রথম পর্যবেক্ষণ (study) করা হয়। এজন্য তাকে ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। 

ভাইরাসের উপকারিতা ও অপকারিতা (Advantages and disadvantages of virus)

অপকারিতা (Disadvantages): 

১। ভাইরাস মানবদেহে বসন্ত, হাম, পোলিও, জলাতঙ্ক, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হার্পিস, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ভাইরাল হেপাটাইটিস, ক্যাপোসি সার্কোমা প্রভৃতি মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে থাকে। 

২। বিভিন্ন উদ্ভিদের রোগ সৃষ্টিতে যেমন-সিমের মোজাইক রোগ, আলুর লিফরোল (পাতা কুঁচকাইয়া যাওয়া), পেঁপের লিফকার্ল, ক্লোরোসিস, ধানের টুংরো রোগসহ প্রায় ৩০০ উদ্ভিদ রোগ ভাইরাস দ্বারা ঘটে থাকে। এতে ফসলের উৎপাদন বিপুলভাবে হ্রাস পায়।

৩। গরুর বসন্ত; গরু, ভেড়া, ছাগল, শূকর, মহিষ ইত্যাদি প্রাণীর ‘ফুট এ্যান্ড মাউথ’ রোগ অর্থাৎ এদের পা ও মুখের বিশেষ ক্ষতরোগ (খুরারোগ) এবং মানুষ, কুকুর ও বিড়ালের দেহে জলাতঙ্ক (hydrophobia) রোগ ভাইরাস দিয়েই সৃষ্টি হয়। 

৪। ফায ভাইরাস মানুষের কিছু উপকারী ব্যাকটেরিয়াকেও ধ্বংস করে থাকে। 

৫। HIV ভাইরাস দিয়ে AIDS হয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়।    

৬। Ebola ভাইরাসের আক্রমণে cell lysis হয় বা কোষ ফেটে যায়। 

৭। Zika ভাইরাস মশকীর মাধ্যমে ছড়ায়। মাইক্রোসেফালি ঘটে অর্থাৎ অপরিণত মস্তিষ্ক নিয়ে শিশু জন্মায়। ডেঙ্গুর মত লক্ষণ দেখা যায়। 

৮। নিপা ভাইরাস Paramyxoviridae পরিবারভুক্ত একটি RNA ভাইরাস যার গণ নাম Henipavirus. ১৯৯৯ সালে মালয়েশিয়ায় শূকরের খামারে প্রথম ধরা পড়লেও দ্রুত দক্ষিণ এশিয়ায় ছড়িয়ে পরে। বাদুর এই ভাইরাসটির বাহক এবং কাঁচা খেজুরের রসের মাধ্যমে এ ভাইরাস মানবদেহে সংক্রমিত (অনুপ্রবেশ) হয়। এ ভাইরাসের আক্রমণে শ্বসন জটিলতায় মানুষসহ গৃহপালিত পশুপাখির মৃত্যু ঘটে। 

৯। সম্প্রতি SARS (Severe Acute Respiratory Syndrome) ভাইরাসের কারণে চীন, তাইওয়ান, কানাডা প্রভৃতি দেশে বহু লোকের মৃত্যু হয়েছে। MERS (Middle East Respiratory Syndrome) ভাইরাসও একটি মারাত্মক ভাইরাস। 

১০। বার্ড ফ্লু-একটি ভাইরাসজনিত রোগ। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গে বার্ড ফ্লু মহামারী আকারে হয়েছিল। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রতি বছরই হাজার হাজার মুরগি এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। অ্যাভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা \mathrm{H}_{5} \mathrm{N}_{1} . (Hemaglutinin types-5-Neuraminidase type-1) ভাইরাসের আক্রমণে হাঁস-মুরগিতে বার্ড ফ্লু নামক মারাত্মক রোগের সৃষ্টি হয় যা পোল্ট্রি শিল্পকে ধ্বংস করে।

১১। সোয়াইন ফ্লু- Swine Influenza virus (SIV) দ্বারা সৃষ্টি হয়। ২০০৯ সালের এপ্রিল মাসে সোয়াইন ফ্লু শনাক্ত করা হয়। ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের Subtype \mathrm{H}_{5} \mathrm{N}_{1} \mathrm{H}_{1} \mathrm{N}_{1}  (Hemaglutinin type-1-Neuraminidase type-1) এর কারণে এই ফ্লু ঘটে থাকে। এ ভাইরাস দ্বারা মানুষ ও শূকর আক্রান্ত হয়। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই ভারতে বহু লোক (২১০০) মারা যায় এবং ৩৪,০০০ মানুষ আক্রান্ত হয়। বিশ্বায়নের যুগে এ রোগের দ্রুত বিস্তার ঘটেছে মেক্সিকো থেকে সারাবিশ্বে।

১২। হেপাটাইটিস-বি ভাইরাস দিয়ে মানুষের লিভার ক্যান্সার, পেপিলোমা ভাইরাস দিয়ে এনোজেনিটাল (জরায়ুর মুখ) ক্যান্সার, হার্পিস সিমপ্লেক্স দিয়ে ক্যাপোসি সার্কোমা ইত্যাদি মারাত্মক রোগ হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

১৩। মানুষের অসুস্থ হওয়ার একটি সাধারণ কারণ হলো সর্দিজ্বর (common cold)। বিভিন্ন প্রকৃতির অনেকগুলো ভাইরাস এর জন্য দায়ী; তাই এর জন্য কোনো ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হয়নি। 

১৪। চিকুনগুনিয়া ভাইরাস এর আক্রমণে উচ্চজ্বর, জয়েন্টে ব্যাথা, শরীরে রেশ ওঠা, মাথা ব্যাথা, দুর্বলতা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। 

১৫। হিউম্যান হার্পিস ভাইরাসেসঃ এটি Rhadino গণের এবং DNA ভাইরাস। এর দ্বারা ক্যাপোসি সারকোমা (HIV সম্পর্কিত রোগীদের ত্বক ক্যান্সার) রোগ হয়। 

উপকারিতা (Advantages): 

১। বসন্ত, পোলিও, প্লেগ এবং জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক টিকা ভাইরাস দিয়েই তৈরি করা হয়। 

২। ভাইরাস হতে ‘জন্ডিস’ রোগের টিকা তৈরি করা হয়। 

৩। কলেরা, টাইফয়েড, আমাশয় ইত্যাদি রোগের ওষুধ তৈরিতে ব্যাকটেরিওফায ভাইরাস ব্যবহার করা হয়। 

৪। ভাইরাসকে বর্তমানে বহুল আলোচিত ‘জেনেটিক প্রকৌশল’-এ বাহক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। 

৫। ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণে ভাইরাস ব্যবহার করা হয়। 

৬। কতিপয় ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ দমনেও ভাইরাসের ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। যুক্তরাষ্ট্রে NPV (Nuclear polyhydrosis Virus) কে কীট পতঙ্গনাশক হিসেবে প্রয়োগ করা হয়। 

৭। ফায ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করে ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করে থাকে।  

৮। লাল টিউলিপ ফুলে ভাইরাস আক্রমণের ফলে লম্বা লম্বা সাদা সাদা দাগ পড়ে। একে ব্রোকেন টিউলিপ বলে। এর ফলে ফুলের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় এবং ফুলের মূল্য বেড়ে যায়। 

৯। অস্ট্রেলিয়ার খরগোসের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় ফসলের চরম ক্ষতি হচ্ছিল। Myxovirus-এর সাহায্যে খরগোস নিধন করে তাদের সংখ্যা কমানো হয়েছে। 


নতুন কারিকুলামে ৬ষ্ঠ-৯ম শ্রেণির পড়ালেখা নতুন উদ্যমে শুরু করতে টেন মিনিট স্কুল নতুনরূপে নিয়ে এসেছে ‘অনলাইন ব্যাচ ২০২৪’:


৬ষ্ঠ-৯ম শ্রেণির ‘পোস্টার প্রেজেন্টেশনের দারুন সব টিপস অ্যান্ড ট্রিক্স শিখতে এখনই ভিজিট করুন এই ফ্রি কোর্সটিতেঃ 


এডমিশন ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ


এছাড়াও ১০মিনিট স্কুলের অন্যান্য কোর্স গুলো দেখতে ভিজিট করোঃ www.10minuteschool.com