জুলোজিক্যাল ও বোটানিক্যাল নমেনক্লেচার | Zoological and Botanical Nomenclature
নামকরণ বা নমেনক্লেচার কী?
কোনো প্রাণী বা উদ্ভিদকে নির্দিষ্ট নামে শনাক্তকরণের পদ্ধতিকে বলা হয় নামকরণ বা Nomenclature।
উদ্ভিদের নামকরণের আন্তর্জাতিক নীতিমালাকে বলা হয় International Code of Botanical Nomenclature (ICBN)। আর প্রাণীর ক্ষেত্রে এই নীতিমালাকে বলা হয় International Code of Zoological Nomenclature (ICZN)।
Systema Naturae গ্রন্থের দশম সংস্করণে (১৭৫৮) ক্যারোলাস লিনিয়াস জীবের নামকরণের ক্ষেত্রে দ্বিপদ নামকরণ নীতি প্রবর্তন করেন।
দ্বিপদ নামকরণ রীতি
১। নামকরণে অবশ্যই ল্যাটিন শব্দ ব্যবহার করতে হবে।
২। বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ থাকবে, প্রথম অংশটি গণ (Genus) নাম এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতির (Species) নাম।
৩। জীবজগতের প্রতিটি বৈজ্ঞানিক নামকে অনন্য (unique) হতে হয়। কারণ, একই নাম দুটি পৃথক জীবের জন্য ব্যবহারের অনুমতি নেই।
৪। বৈজ্ঞানিক নামের প্রথম অংশের প্রথম অক্ষর বড় অক্ষর হবে, বাকি অক্ষরগুলো ছোট অক্ষর হবে এবং দ্বিতীয় অংশটির নাম ছোট অক্ষর দিয়ে লিখতে হবে।
৫। বৈজ্ঞানিক নাম মুদ্রণের সময় সর্বদা ইটালিক অক্ষরে লিখতে হবে।
৬। হাতে লেখার সময় গণ ও প্রজাতিক নামের নিচে আলাদা আলাদা দাগ দিতে হবে।
৭। যদি কয়েকজন বিজ্ঞানী একই জীবকে বিভিন্ন নামকরণ করেন, তবে অগ্রাধিকার আইন অনুসারে প্রথম বিজ্ঞানী কর্তৃক প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে।
৮। যিনি প্রথম কোনো জীবের বিজ্ঞানসম্মত নাম দেবেন তার নাম সনসহ উক্ত জীবের বৈজ্ঞানিক নামের শেষে সংক্ষেপে সংযোজন করতে হবে। যেমন ধানের বৈজ্ঞানিক নাম Oryza sativa L.,1753 ।
৫। দ্বিপদ নামকরণের উদাহরণ–
সাধারণ নাম | বৈজ্ঞানিক নাম | সাধারণ নাম | বৈজ্ঞানিক নাম |
গোলআলু | Solanum tuberosum | মৌমাছি | Apis indica |
পেঁয়াজ | Allium cepa | ইলিশ | Tenualosa ilisha |
ধান | Oryza sativa | কুনোব্যাঙ | Bufo/Duttaphrynus melanostictus |
জবা | Hibiscus rosa-sinensis | দোয়েল | Copsychus saularis |
পাট | Corchorus capsularis | মানুষ | Homo sapiens |
আম | Mangifera indica | কলেরা জীবাণু | Vibrio cholerae |
কাঁঠাল | Artocarpus heterophyllus | গম | Triticum aestivum |
শাপলা | Nymphaea nouchali | ভুট্টা | Zea mays |
সাধারণ নাম | বৈজ্ঞানিক নাম | সাধারণ নাম | বৈজ্ঞানিক নাম |
রুই মাছ | Labeo rohita | মসুর | Lens culinaris |
কাতলা | Catla catla | ছোলা | Cicer arietinum |
সিংহ | Panthera leo | মোটর | Pisum sativum |
রয়েল বেঙ্গল টাইগার | Panthera tigris | সোনামুগ | Vigna radiata |
ম্যালেরিয়া জীবাণু | Plasmodium vivax | মাসকলাই | Vigna mungo |
আরশোলা | Periplaneta americana | খেসারি | Lathyrus sativus |
সয়াবিন | Glycine max | লিচু | Litchi chinensis |
তিল | Sesamum indicum | রজনীগন্ধা | Polianthes tuberosa |
পেঁপে | Carica papaya | ঘড়িয়াল | Gavialis gangeticus |
ত্রিপদ নামকরণ
একই প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অঙ্গসংস্থানিক পার্থক্য দেখা দিলে ঐ নির্দিষ্ট উপপ্রজাতির জন্য গণ ও প্রজাতির নাম এর সাথে উপপ্রজাতির নাম (Sub-species) যোগ করে নামকরণ করা হয়, একে ত্রিপদ নামকরণ বলে। পাখি বিজ্ঞানী Schlegel ত্রিপদ নামকরণের প্রবর্তক।
যেমন- চড়ুই পাখির সাধারণ বৈজ্ঞানিক নাম Passer domesticus , কিন্তু নীলনদ এলাকার চড়ুই পাখির বৈজ্ঞানিক নাম Passer domesticus niloticus।
মানুষের শ্রেণিবিন্যাস
রাজ্য (Kingdom) – Animalia
পর্ব (Phylum) – Chordata
শ্রেণি (Class) – Mammalia
বর্গ (Order) – Primate
গোত্র (Family) – Hominidae
গণ (Genus) – Homo
প্রজাতি (Species) – Homo sapiens