10 Minute School
Log in

বায়ুমণ্ডল ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণ

বায়ুমণ্ডল ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণ (Atmosphere and Reasons of Cyclone)

প্রশ্ন-১ : ভূপৃষ্ঠকে গ্যাসীয় পদার্থের অনুপাত অনুসারে শ্রেণীবিভাগ কর।

উত্তর : ১। সমমণ্ডল (Homosphere) এক্ষেত্রে বা এ স্তরে গ্যাসীয় উপাদান সমূহের অনুপাত একই থাকে।

        ২। বিসমমণ্ডল (Heterosphere) এ স্তরে গ্যাসীয় উপাদানসমূহের অনুপাত একই নয়। এ স্তরের
            শুরুতে থাকে \mathrm{O}_{2}, \mathrm{~N}_{2} \text {, এর উপরে } \mathrm{He} এর উপর H পরমাণু থাকে।

প্রশ্ন-২ : সমমণ্ডল বা বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের বর্ণনা দাও।

উত্তর :

স্তরের নাম উচ্চতা তাপমাত্রার সীমা মুখ্য উপাদান
Troposphere বা ক্ষুদ্ধমণ্ডল (0-15)Km 15℃ থেকে -56℃ \mathrm{N}_{2}, \mathrm{O}_{2}, \mathrm{CO}_{2}, \mathrm{H}_{2}
Stratosphere বা ওজোনস্তর (15-50)Km -56℃ থেকে +2℃ O_{3}, O_{2}, N_{2}
Mesosphere (50-85)Km -2℃ থেকে -92℃ O^{+}, O_{2}^{+}, N O^{+}, O_{2}, N_{2}
Thermosphere বা আয়োনোস্ফিয়ার (85-500)Km -92℃ থেকে 1200℃ \mathrm{O}^{+}, \mathrm{O}_{2}^{+}, \mathrm{NO}^{+}

এ স্তরে উপাদান সমূহ প্লাজমা অবস্থায় থাকে।

 

প্রশ্ন-৩ : বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের তাপমাত্রা বিভিন্ন হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরে উপাদানসমূহ একই রকম নয় এবং একই অবস্থায় থাকে না। তাই বিভিন্ন স্তরের বিভিন্ন হয়। ট্রপোস্ফিয়ারের ক্ষেত্রে নিচ থেকে উপরে গেলে তাপমাত্রা কমতে থাকে। দেখা গেছে যে, প্রতি কি.মি. দূরত্বের জন্য তাপমাত্রা (5.5-6.5)℃ হ্রাস পায়। এর কারণ হল- এ স্তরের উপরের করে জলীয় বাষ্প কণা এবং বিভিন্ন ধরনের বায়ু দূষক সমূহ। এরা সূর্য রশ্মি শোষণের কারণে তাপমাত্রা হ্রাস পায়। পরবর্তী স্তর Stratosphere এর ক্ষেত্রে তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। কারণ এ স্তরের উপাদান ওজোন সূর্যের শক্তিশালী UV রশ্মিকে শোষণ করে রাখে। তাই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।

মেসোস্ফিয়ারের ক্ষেত্রে তাপমাত্রা পুনরায় কমে। এর কারণ হল- এ স্তরে ওজোনের পরিমাণ হ্রাস পায় এবং গ্যাসীয় উপাদানসমূহ ধনাত্মক আয়নে পরিণত হতে থাকে। সর্বশেষ স্তর Thermosphere এর ক্ষেত্রে তাপমাত্রা পুনরায় বৃদ্ধি পায়। কারণ এক্ষেত্রে প্লাজমা অবস্থার উপাদানসমূহ তাপ ধরে রাখে। এ স্তরে ধনাত্মক আয়ন ও ইলেকট্রন পাশাপাশি অবস্থান করে কিন্তু প্রশমিত হয় না। তাছাড়া এ স্তরে সূর্য রশ্মি প্রথম প্রবেশ করার কারণেও তাপমাত্রা অন্যান্য স্তর থেকে বেশি বৃদ্ধি পায়।

[গ্যাসীয় অবস্থার পর ধনাত্মক আয়ন ও ইলেকট্রন পাশাপাশি সঞ্চারণশীল ও বিদ্যুৎ নিরপেক্ষরূপে থাকার পদার্থের এরূপ অবস্থাকে প্লাজমা অবস্থা বলে।]

প্রশ্ন-৪ : জলোচ্ছ্বাস বা ঘূর্ণিঝড়ের কারণ ব্যাখ্যা কর।

উত্তর : ঘূর্ণিঝড় শব্দের উৎপত্তি হচ্ছে গ্রিক শব্দ Kyklos থেকে। যার অর্থ হল সর্পের বা সাপের কুণ্ডলী বা (Coil of snakes)। ঘূর্ণিঝড়ের উৎপত্তি হয় স্থলভাগ থেকে অনেক দূরে গভীর সমুদ্র। এ ঝড় সৃষ্টির উপাদান হল উষ্ণ সামুদ্রিক পানি, বায়ুপ্রবাহ ও সৌরশক্তি।

তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে গ্যাসের আয়তন বাড়ে। ফলে গ্যাস এর ঘনত্ব ও চাপ হ্রাস পায়। সমুদ্রপৃষ্ঠের কোন স্থানের বায়ু গরম হলে এর ঘনত্ব হ্রাস পায় তা যখন হালকা হয়ে সমুদ্র পৃষ্ঠের উপর দিয়ে অতিক্রম করে তখন সমুদ্রের বাষ্পীভূত পানি এর সাথে যুক্ত হয় এবং ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ ঘটে।

ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ কালে বাষ্প শীতল হতে থাকে এবং ঘনীভূত হয়ে মেঘমালায় পরিণত হয়। জলীয় বাষ্প যখন মেঘমালায় পরিণত হয় তখন বায়ুতে সুপ্ততাপ অবমুক্ত হয়। এর ফলে মেঘের উপরিভাগ উষ্ণতর হয়। এতে বায়ুর ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। বায়ুর এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহের ফলে বিস্তৃত অঞ্চল থেকে তুলনামুলকভাবে শীতল বায়ু নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে প্রচণ্ড বেগে ধাবিত হয়। পৃথিবীর আবর্তন গতির জন্য দক্ষিণ গোলার্ধে বায়ু ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং উত্তর গোলার্ধে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ধাবিত হয়। এভাবে ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন সৃষ্টি হয়। এ সময় বায়ুর গতিবেগ প্রায় ঘণ্টায় ২০-৪০০ কি.মি. পর্যন্ত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সমুদ্রের জলরাশি ফেঁপে উঠে এবং এর সাথে জোয়ারের পানি মিশ্রিত হয়ে ৫-১০ ফুট জলরাশি নিয়ে উপকূল অঞ্চলে জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি করে।