10 Minute School
Log in

CFC, গ্রীনহাউস গ্যাস

CFC, গ্রীনহাউস গ্যাস (CFC, Green House Gas)

প্রশ্ন-১৫ : CFC কী ? তা কিরূপে ওজোনস্তরের ক্ষতি করে তার কৌশল বর্ণনা কর।

উত্তর : \mathrm{CH}_{4} ও \mathrm{C}_{2} \mathrm{H}_{6} এর ক্লোরোফ্লুরো উদ্ভূত যৌগসমূহকে ক্লোরোফ্লুরো কার্বন বা CFC বলে। এদের অপর নাম ফ্রেয়ন বা ফ্রেয়নস। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল : ফ্রেয়ন-11 \left(\mathrm{CFCl}_{3}\right), ফ্রেয়ন-12 \left(C F_{2} C l_{2}\right) \mid

এর মধ্যে বিভিন্ন ধরণের বন্ধন থাকলেও C-Cl বন্ধনটির বিয়োজনে শক্তির মান সবচেয়ে কম। তাই বন্ধনটি ভেঙ্গে যে Cl ফ্রি রেডিক্যাল তৈরী হয় তা ফ্রি রেডিক্যাল মেকানিজমের মাধ্যমে ওজোনস্তর ধ্বংস করে থাকে। 

C-F=467 K J m o l^{-1} C-H=413 \mathrm{KJmol}^{-1}

C-C l=347 \mathrm{KJmol}^{-1}

C-B r=290 \mathrm{KJmol}^{-1}

 

Br মারাত্মক ক্ষতিকর, C-Br সহজে বিয়োজিত হয়। তাই ব্যবহার করা যায় না।

CFC ওজোনস্তরে C-Cl বন্ধন বিয়োজিত হয়ে Cl ফ্রি রেডিক্যাল তৈরী করে যা নিম্নরূপে বিক্রিয়ার মাধ্যমে ওজোনস্তরের ক্ষতি করে।

CFC | Green House Gas

O_{3}+C l \rightarrow O_{2}+C l O

 

\mathrm{O}_{2} \rightarrow \mathrm{O} .+\mathrm{O}

 

\mathrm{O}+\mathrm{ClO} . \rightarrow \mathrm{Cl} .+\mathrm{O}_{2}

 

\mathrm{O}_{2}+\mathrm{Cl} \rightarrow \mathrm{ClO} .+\mathrm{O}

 

\mathrm{ClO}+\mathrm{O}_{3} \rightarrow \mathrm{ClO}_{2}+\mathrm{O}_{2}

CFC পরিবেশের জন্য খুব ক্ষতিকর হয়। আই এর ব্যবহার হ্রাস পাচ্ছে। প্রতিটি CFC অণু প্রায় ১ লক্ষ ওজোন অণুকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। ফ্রিজ, এসি, জীবাণুনাশক স্প্রে ও Computer যন্ত্রপাতি পরিস্কারের যৌগ তৈরীর কাজে CFC ব্যবহৃত হয়। ওজনস্তরের ক্ষতি না করার জন্য  CFC গ্যাসের পরিবর্তে অন্তত ১ টি H_{2} যুক্ত যৌগ হাইড্রোক্লোরোফ্লোরো কার্বন(HCFC) ব্যবহৃত হয়। HCFC এর প্রতিটি অণুতে ১টি C-H বন্ধন আছে। ট্রপোস্ফিয়ারে মুক্ত মূলক বিক্রিয়ায় উৎপন্ন হাইড্রোক্সিল মুক্ত মূলক C-H বন্ধনের সাথে বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে।

এতে ট্রপোস্ফিয়ারে ওজোনস্তর ক্ষয়কারী Cl. ফ্রি রেডিক্যাল উৎপন্ন হয় এবং স্বল্প স্থায়ীত্বের জন্য স্ট্রাটোস্ফিয়ারে পৌঁছানোর  আগেই তা ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। কারণ স্ট্রাটোস্ফিয়ারে ওজোনস্তর অবস্থান করে। এর ফলে ওজোনস্তর ক্ষয় থেকে রক্ষা পায়। তাছাড়া ট্রপোস্ফিয়ার HCF এর স্থায়িত্ব কম হওয়ায় HCF কে ব্যবহার করার প্রস্তুতি চলছে। এটি অপরিবর্তিত অবস্থায় ওজোন স্তরে পৌছায় না। উল্লেখ্য যে, HCFC এর উৎপাদন খরচ বেশী কিন্তু CFC স্থায়িত্ব যেখানে প্রায় ১০০ বছরের মোট  সেখানে HCFC এর স্থায়িত্ব 2-10 বছর। এ কারণে CFC এর বিপরীতে HCFC বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হলে পরিবেশে যথেষ্ট সুরক্ষিত থাকে।

প্রশ্ন-১৬ : CFC এর নামকরণ পদ্ধতি ব্যাখ্যা কর।

90 + abc = def

উত্তর : d=no. of Carbon atom

       e=no. of H atom        

       f= no. of F atom

       2d  + 2-e-f = no. of Cl atom

উদাহরণ :

CFC-113, এক্ষেত্রে ৯০ এর সাথে ১১৩ যোগ করা হয়।

90+113=203

  1. ofC atom =2 (d)
  2. ofH atom=0 (e)
  3. ofF atom=3 (f)
  4. of Clatom=(2.2+2-0-3)=3
\therefore C_{2} F_{3} C l_{3}

প্রশ্ন-১৭ : গ্রীন হাউজ গ্যাস কী ? 

উত্তর : বায়ুমণ্ডলে  উপস্থিত যে সব গ্যাসীয় \left(\mathrm{CO}_{2}, \mathrm{CFC}, \mathrm{N}_{2} \mathrm{O}_{2}, \mathrm{CO}, \mathrm{O}_{3}\right. ইত্যাদি) পদার্থের আবরণ পৃথিবীকে আচ্ছাদন রূপে ঢেকে রেখে পৃথিবী পৃষ্ট হতে বিকিরিত তাপকে মহাশূন্যে ফিরে যেতে বাধা দেয় এবং বায়ুমণ্ডলেকে উত্তপ্ত রাখে তাদেরকে গ্রীন হাউজ গ্যাস বলে।

প্রশ্ন-১৮ : গ্রীন হাউজ প্রভাব কী ? 

উত্তর : যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সূর্য থেকে আগত সৌর বিকিরণের (UV, IR) কিছু শক্তি বায়ুমণ্ডলের গ্রীন হাউজ গ্যাস \left(\mathrm{CO}_{2}, \mathrm{CFC}, \mathrm{O}_{3}\right) দ্বারা শোষিত হয়ে চারিদিকে বিকিরিত রশ্মির কিছু অংশ পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠে প্রবেশ করে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে তাকে গ্রীন হাউজ প্রভাব বলে।

 

প্রশ্ন-১৯ : গ্রীন হাউজ গ্যসগুলোর উৎস (Sources of green house gases)

উত্তর : ১।  কার্বন ডাইঅক্সাইড \mathrm{CO}_{2} : গ্রীন হাউজ প্রভাব সৃষ্টিতে কার্বন ডাইওক্সাইডের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি (প্রায় 50% বায়ুমণ্ডলে ) \mathrm{CO}_{2}এর উপস্থিতি একান্ত প্রয়োজন, কারণ \mathrm{CO}_{2} ছাড়া উদ্ভিদের পক্ষে সালোক সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া শর্করা খাবার উৎপাদন সম্ভব নয়। নানাবিধ কারণে বায়ুমণ্ডলে\mathrm{CO}_{2}এর আনুপাতিক পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে, কারণ কলকারখানা ও শিল্পে মটরগাড়ী প্রভৃতিতে ব্যাপক পরিমাণ ফসিল জ্বালানি ব্যবহারের ফলে, প্রাকৃতিক কারণেও বায়ুমণ্ডলে \mathrm{CO}_{2}এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

যেমন, বনভূমিতে আগুন ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের সময় প্রচুর পরিমাণ\mathrm{CO}_{2} বায়ুতে মুক্ত হয়। ফলে যে পরিমাণ \mathrm{CO}_{2}উৎপন্ন হচ্ছে বনভূমি হ্রাস পাওয়ার সে পরিমাণ \mathrm{CO}_{2} সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হচ্ছে না। এভাবে \mathrm{CO}_{2} বৃদ্ধির পরিমাণ (বছরে 0.4%) অব্যাহত থাকলে আগামী  একশতকের মধ্যে \mathrm{CO}_{2} পরিমাণ দ্বিগুণ হবে এবং পৃথিবীর তাপমাত্রা প্রায় 3.8℃ বৃদ্ধি পাবে, যা পৃথিবীর প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্য হুমকিস্বরূপ হবে।

২।  মিথেন (\mathrm{CH}_{4}) : গ্রিন হাউজ প্রভাব সৃষ্টিতে \mathrm{CH}_{4}এর অবদান কার্বন ডাইঅক্সাইডের ঠিক পরের অবস্থানে (19%)। বায়ুমণ্ডলে \mathrm{CH}_{4} এর পরিমাণে \mathrm{CO}_{2} এর চেয়ে অনেক কম হলেও \mathrm{CH}_{4} এর তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা \mathrm{CO}_{2} অপেক্ষা প্রায় 25 গুণ। বিভিন্ন ফসলের জমির উচ্ছিষ্ট অংশের ব্যাকটেরিয়া জনিত পচন গাছ – পালা অবিভিন্ন হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশে যায়। তাছাড়া বিভিন্ন জৈব পদার্থ এবং তেল গ্যাস খনি হতে প্রতিনিয়ত\mathrm{CH}_{4} গ্যাস বায়ুতে যুক্ত গ্রীণ হাউজ প্রভাব সৃষ্টি করছে।

2\left[\mathrm{CH}_{2} \mathrm{O}\right] ব্যাকটেরিয়া\mathrm{CH}_{4}+\mathrm{CO}_{2}

বায়ুমণ্ডলে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ বছরে 1% হারে বেড়ে চলেছে।

৩। সি এফ সি (CFC) : গ্রিন হাউজ প্রভাব সৃষ্টিতে CFC এর ভূমিকা প্রায় 16%CFC এর বহুমাত্রিক ব্যবহার রয়েছে যেমন – হিমকারক যন্ত্রে (এসি, রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজ প্রভৃতি) ফোম শিল্পে, খাদ্য সংরক্ষণ, প্রসাধনী কীটনাশকের উৎপাদনে CFC ব্যবহার করা হয়। এ সকল কাজে ব্যবহার, রক্ষণাবেক্ষণ অ মেরামতের কারণে CFC বায়ুমণ্ডলে মিশে গ্রিন হাউজ প্রভাব সৃষ্টি করছে। উল্লেখ্য, CFC এর তাপ ধারণ ক্ষমতা \mathrm{CO}_{2} অপেক্ষা 15-2 হাজার গুণ বেশি। বায়ুমণ্ডলে সি, এফ, সি  যৌগগুলো পরিমাণ বছরে গড়ে 3-4% হারে বেড়ে চলেছে।

৪। ওজোন (O_{3}) : গ্রিন হাউজ প্রভাব সৃষ্টিতে O_{3}3 এর অবদান 8%। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ওজোন গ্যাস সূর্য হতে আগত ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মিকে শোষণ করে পৃথিবীতে জীবন ধারণের অনুকূল পরিবেশে সৃষ্টি করলে ট্রোপোস্ফিয়ারের O_{3} গ্যাস গ্রিন হাউজ গ্যাস হিসেবে কাজ করে। বিভিন্ন মোটরযান, বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও শিল্পে ফসিল জ্বালানির দহনের ফলে প্রচুর পরিমাণ নাইট্রোজেনের বিভিন্ন অক্সাইড \text { ( } N O_{x} \text { ) } উৎপন্ন হয়। এভাবে উৎপন্ন (NOx) বায়ুমণ্ডলের হাইড্রোকার্বন অ অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে ওজোন সৃষ্টি করে। উল্লেখ্য, O_{3} এর তাপধারণ ক্ষমতা \mathrm{CO}_{2} এর চেয়ে প্রায় 10 গুণ বেশি। ট্রোপোস্ফিয়ারের বহুস্থানে ওজোন গ্যাসের বছরে গড় বৃদ্ধি হার 0.4-1%

৫। নাইট্রাস অক্সাইড N_{2} O : গ্রিন হাউজ প্রভাব সৃষ্টিতে N_{2} O এর অবদান প্রায় 5%। মোটরগাড়ি কল-কারখানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যাপক পরিমাণ ফসিল জ্বালানির দহনের সময় প্রচুর পরিমাণ N_{2} O সৃষ্টি হয় যা বায়ুমণ্ডলে যুক্ত হয় দাবানলের সময়ও প্রচুর N_{2} O বায়ুতে মিশে যায়। N_{2} Oএর তাপ ধরে রাখার ক্ষমতা \mathrm{CO}_{2}এর চেয়ে প্রায় 200 গুণ বেশি। তা সত্ত্বেও N2O গ্যাসের বছরে গড় বৃদ্ধির পরিমাণ 0.2-0.3%। 

বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির পরিনাম বা ক্ষতিকর দিক – 

  1. i.  বর্তমান হারে গ্রিন হাউজ গ্যাস বায়ুমণ্ডলে নিঃসরণ হতে থাকলে এ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে পৃথিবীর উষ্ণতা 2-4℃ বৃদ্ধি পাবে।
  2. ii.  মেরু অঞ্চলের পোলার ক্যাপ গলে সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাবে, এতে করে বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মায়ানমার প্রভৃতি সমুদ্র তীরবর্তী দেশের উপকূল অঞ্চল পানিতে ডুবে যাবে। কৃষি জমিতে লবণাক্ত পানি প্রবেশের কারণে ফসল উৎপাদন ব্যাপক পরিমাণে কমে যাবে।
  3. iii.  উত্তর গোলার্ধের মধ্যে অঞ্চলের দেশগুলোতে ঘন ঘন খরা দেখা দিতে পারে। এতে ঐ সব অঞ্চলে ফসল উৎপাদন ব্যাপক হারে হ্রাস পাবে।
  4. iv.  ঘূর্ণিঝড় ও সাইক্লোন আরও বিধ্বংসী হবে এবং দাবানলের কারণে বনভূমি ধ্বংসের সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
  5. v.  যে সব জীব উচ্চ তাপ সংবেদনশীল, তাদের বিলুপ্ত ঘটায় ইকোসিস্টেম চরমভাবে ব্যাহত হবে। জলাভূমিতে উদ্ভিদের পচন বাড়ায় অধিক পরিমাণ মিথেন গ্যাস বায়ুমণ্ডলে নির্গত হবে।

বৈশ্বিক উষ্ণতা হ্রাসের জন্য করনীয় : 

  1. i.  কাঠ, কয়লা, পেট্রোলিয়াম ইত্যাদি ফসিল জ্বালানির ব্যবহার কমিয়ে আনতে হবে।
  2. ii.  চোরাই কাঠ কাটা বন্ধ করতে হবে এবং বনভূমিকে ধংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। 
  3. iii.  বনভূমি বাড়াতে হবে কারণ উদ্ভিদ বায়ুমণ্ডলের \mathrm{CO}_{2} ব্যবহার করে শর্করা উৎপাদন করে। তাই বনভূমি বাড়াতে পারলে বায়ুমণ্ডলে অতিরিক্ত \mathrm{CO}_{2} কমে যাবে, ফলে গ্রিন হাউস প্রভাব সীমার মধ্যে থাকবে।
  4. ivCFC এর উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
  5. v.  বিকল্প শক্তির (সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, নিউক্লিয়ার শক্তি, জোয়ার ভাটার শক্তি প্রভৃতি) ব্যবহার বাড়াতে হবে।

 

প্রশ্ন-২০ : গ্রীন হাউজ গ্যসগুলোর শতকরা পরিমাণ উল্লেখ কর।

উত্তর :

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের অবদান ট্রাপোস্ফিয়ার গড়\mathrm{CO}_{2}  এর সাপেক্ষে তাপ ধারণ ক্ষমতা গ্রিন হাউস ফ্যাক্টর \mathrm{CO}_{2} এর সাপেক্ষে আপেক্ষিক অবদান
CFC 14% 275(CFC-11)

110(CFC-12)

14600

17000

20000 18000

31000

\mathrm{CH}_{4} 18% 10 36 30 6
O_{3} 8-12% 0.2 430 2000 1
\mathrm{N}_{2} \mathrm{O} 6% 10 140 180 350
\mathrm{CO}_{2} 50% or 49% 7 1 1 1
H_{2} O 2% 0.1

 

প্রশ্ন-২১ : CO কে নীরব ঘাতক গ্যাস বলা হয় কেন ?

উত্তর : CO একটি নীরব ঘাতক। কারণ এটি স্বাদ, গন্ধ ও বর্ণহীন বিষাক্ত গ্যাস। মানুষ এর অস্তির টের পায় না। CO এ কার্বনের সর্বোচ্চ যোজনী প্রদর্শিত না হওয়ায় এটি সক্রিয় লিগান্ড হিসেবে জটিল যৌগ গঠন করতে পারে। যেমন রক্তের হিমোগ্লোবিনে আয়রন থাকে। হিমোগ্লোবিন শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে কিন্তু বায়ুতে CO থাকলে (1000 ppm) এটি হিমোগ্লোবিনের সাথে জটিল যৌগ (কার্বক্সিহিমোগ্লোবিন) গঠন করে মানুষের শরীরে অক্সিজেন প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। কারণ অক্সিজেনের চেয়ে CO এর হিমোগ্লোবিনের প্রতি আসক্তি বেশি। বেশি পরিমাণ CO শরীরে প্রবেশ করলে হৃদরোগ হয় এবং অনেক সময় মৃত্যুর পর্যন্ত ঘটে থাকে। স্বল্প পরিমাণ CO (100-500 ppm) শরীরে প্রবেশ করলে বমিভাব, মাথাধরা, মাথা ঝিমঝিম প্রভৃতি উপসর্গ দেখা যায়। CO স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাপক ক্ষতি করে।

উল্লেখ্য ধূমপায়ীদের শরীরে সাধারণ মানুষ অপেক্ষা CO বেশি থাকে। এজন্যে ধূমপায়ী মানুষ খুব সহজে হৃদরোগে আক্রান্ত হয় এবং অনেকে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে এবং মাথার যন্ত্রণায় ভোগে। এ জন্য CO কে নীরব ঘাতক বলা হয়।

\mathrm{O}_{2}+\mathrm{Hb} \rightarrow \mathrm{O}_{2} \mathrm{Hb}(অক্সিহিমোগ্লোবিন)

\mathrm{O}_{2} \mathrm{Hb}+\mathrm{CO} \leftrightharpoons \mathrm{COHb} (কার্বক্সিহিমোগ্লোবিন)+O_{2}

তাছাড়া রক্তের আয়রনের সাথে CO বিক্রিয়া করে আয়রন পেন্টা কার্বনিল \mathrm{Fe}+5 \mathrm{CO} \rightarrow \mathrm{Fe(CO)}_{5} নামক জটিল যৌগ গঠন করতে পারে বলে বাতাসের ৮০০ ভাগের ১ ভাগ CO হলে ১-২ ঘণ্টার মধ্যে সকল শ্বাসগ্রহণকারী প্রাণী মারা যায়। CO\mathrm{CO}_{2}এর নিরাপদ মাত্রা যথাক্রমে 40  5000 ppm। অতিরিক্ত CO উদ্ভিদের নাইট্রোজেন সংযোজন পদ্ধিতিতে বাধা দেয়।