দৃঢ়তা প্রদান ও চলন (Firmness and Locomotion)
কঙ্কালতন্ত্র (Skeletal system)
যে তন্ত্র দেহের কাঠামো গঠন করে, নির্দিষ্ট আকৃতি দেয় এবং বিভিন্ন অঙ্গকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে এবং চলনে সাহায্য করে, তাকে কঙ্কালতন্ত্র বলে।
কঙ্কালের কাজ (Skeletal work):
দেহকাঠামো গঠন: কঙ্কাল মানবদেহকে একটি নির্দিষ্ট আকার ও কাঠামো দান করে।
রক্ষণাবেক্ষণ ও ভারবহন
নড়াচড়া ও চলাচল
লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদন: অস্থিমজ্জা থেকে লোহিত রক্তকণিকা উৎপন্ন হয়।
খনিজ লবণ সঞ্চয়: অস্থি ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি খনিজ লবণ সঞ্চয় করে রাখে।
অস্থি ও তরুণাস্থির মধ্যে পার্থক্য (The difference between bone and cartilage)
তুলনীয় বিষয় |
অস্থি (Bone) |
তরুণাস্থি (Cartilage) |
সংজ্ঞা | যোজক কলার রূপান্তরিত রূপ | যোজক কলার ভিন্নরূপ |
মাতৃকা | কঠিন ও ভঙ্গুর | কোমল ও স্থিতিস্থাপক |
কোষসমূহ | অস্টিওসাইট
অস্টিওব্লাস্ট অস্টিওক্লাস্ট |
কনড্রোসাইট |
আবরণ | পেরিঅস্টিয়াম | পেরিকন্ড্রিয়াম |
প্রকারভেদ | ২ প্রকার। যথা:
১) নিরেট অস্থি ২) স্পঞ্জি অস্থি |
৪ প্রকার। যথা:
স্বচ্ছ, চুনময়, শ্বেততন্তুময়,পীততন্তুময় |
অবস্থান | অস্থি থাকে দেহের অন্তঃকঙ্কালরূপে | অস্থির সংযোগস্থলে |
কাজ |
|
সংযোগস্থলের স্থিতিস্থাপকতা নিয়ন্ত্রণ করে। |
অস্থিসন্ধি (Bone Joint)
দুই বা ততোধিক অস্থির সংযোগস্থলকে অস্থিসন্ধি বলে।
বিভিন্ন প্রকার অস্থিসন্ধি (Different types of bone joints):
i. নিশ্চল অস্থিসন্ধি (Fixed joint): করোটিকা অস্থিসন্ধি
ii. ঈষৎ সচল অস্থিসন্ধি (Slightly movable joint): মেরুদন্ডের অস্থিসন্ধি
iii. পূর্ণ সচল অস্থিসন্ধি (Freely movable joint): সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি
a) বল ও কোটর সন্ধি (Ball & Socket joint): কাঁধ (স্কন্ধ) ও ঊরুসন্ধি
b) কব্জা সন্ধি (Hinge joint):হাতের কনুই, জানু ও আঙ্গুলিতে এ সন্ধি দেখা যায়।
সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি (Synovial joint): দুই বা ততোধিক অস্থির বহির্ভাগ মিলিত হয়ে যে অস্থিসন্ধি গঠন করে তাকে সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলে।
সরল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি: একটি অস্থিসন্ধিতে দুটি মাত্র অস্থির বহির্ভাগে এসে মিলিত হয়ে একটি সরল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি গঠন করে।
জটিল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি: যখন দুইয়ের অধিক অস্থি মিলিত হয়, তখন একে জটিল সাইনোভিয়াল অস্থিসন্ধি বলে।
টেনডন ও লিগামেন্টের মধ্যে পার্থক্য (The difference between a tendon and a ligament)
তুলনীয় বিষয় |
টেনডন |
লিগামেন্ট |
সংজ্ঞা | মাংসপেশির প্রান্তভাগ রজ্জুর মত শক্ত হয়ে অস্থিগোত্রের সাথে সংযুক্ত হয়। | দৃঢ় ও স্থিতিস্থাপক বন্ধনী দ্বারা অস্থি সমূহ পরস্পরের সাথে যুক্ত হয়। |
গঠন উপাদান | শ্বেততন্তুময় যোজক টিস্যু | শ্বেততন্তুময় ও পীততন্তুময় |
স্থিতিস্থাপকতা | নেই | আছে |
তন্তু | শ্বেতবর্ণ শাখাবিহীন | পীতবর্ণ শাখাযুক্ত |
কাজ | দেহ কাঠামো গঠন, অস্থির সংযোগস্থলে দৃঢ়তা | হাড়কে আটকে রাখে। |
অস্টিওপোরোসিস (Osteoporosis)
অস্টিওপোরোসিস হচ্ছে ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগ।
কারণ (Causes):
- দেহে খনিজ লবণ বিশেষ করে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কারণে এ রোগটি হয়।
- নারীদের মেনোপজ হওয়ার পর অস্থির পুরুত্ব কমতে থাকে।
লক্ষণ (Symptoms):
- অস্থি ভঙ্গুর হয়ে যায়, ঘনত্ব কমতে থাকে
- পেশির শক্তি কমতে থাকে
- পিঠের পিছন দিকে ব্যথা অনুভব হয়
- অস্থিতে ব্যথা অনুভব হয়।
রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা গেঁটেবাত (Rheumatoid Arthritis)
লক্ষণ (Symptoms):
- অস্থিসন্ধি বা গিঁটে প্রদাহ বা ব্যথা হয়।
- অস্থিসন্ধিগুলো শক্ত হয়ে যায়
- অস্থিসন্ধি নাড়াতে কষ্ট হয়।
- গিঁট ফুলে যায়।