10 Minute School
Log in

গ্রহের গতি সম্পর্কিত কেপলারের ৩ টি সূত্র (Kepler’s 3 Laws about Motion of the Planets)

ষোড়শ শতাব্দীতে ডেনমার্কের জ্যোতির্বিদ টাইকোব্রাহে (Tycho-Brahe) মঙ্গল গ্রহের গতিবিধি লক্ষ করেন এবং কিছু তথ্য সংগ্রহ করেন। তার এ গবেষণা লব্ধ তথ্য এবং অন্যান্য পর্যবেক্ষণের সাহায্যে 1618 খ্রিস্টাব্দে ডেনমার্কের অপর জ্যোতির্বিদ জোহান কেপলার (Johann Kepler) সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, গ্রহগুলো কোনো এক বলের প্রভাবে সূর্যকে কেন্দ্র করে অবিরাম ঘুরছে। এই সম্পর্কে তিনি তিনটি সূত্র প্রদান করেন। তার নাম অনুসারে এই তিনটি সূত্রকে কে কেপলার এর গ্রহ সম্পর্কীয় গতিসূত্র (Kepler’s laws of planetary motion) বলা হয়। সূত্র তিনটি নিম্নে আলোচিত হলো— 

(১) উপবৃত্ত সূত্র (Kepler’s Law of ellipse):

    প্রতিটি গ্রহ সূর্যকে উপবৃত্তের ফোকাসে রেখে একটি উপবৃত্তাকার পথে প্রদক্ষিণ করছে।

(২) ক্ষেত্রফল সূত্র (Kepler’s Law of area):

    গ্রহ এবং সূর্যের সংযোগকারী ব্যাসার্ধ রেখা সমান সময়ে সমান ক্ষেত্রফল অতিক্রম করে। 

(৩) সময়ের সূত্র (Kepler’s Law of time):

    প্রতিটি গ্রহের পর্যায়কালের বর্গ সূর্য হতে তার গড় দূরত্বের ঘনফলের সমানুপাতিক। 

ব্যাখ্যা( Explanation of Kepler’s Law):

১ম সূত্র: এই সূত্র সূর্যের চারদিকে গ্রহের কক্ষপথের আকৃতি প্রকাশ করে। মনে করি \mathbf{S} এবং \mathbf{S'} একটি উপবৃত্তের দুটি নাভি। ধরি \mathbf{S}  নাভিটি সূর্যের ফোকাসে অবস্থিত। কেপলারের প্রথম সূত্র অনুসারে যেকোনো গ্রহ সূর্যকে \mathbf{S}  বিন্দুতে রেখে একটি উপবৃত্তাকার পথে ঘুরছে।

Kepler's law
যেহেতু ৪ একটি ধ্রুব সংখ্যা, সেহেতু, \mathrm{T}^{2} 8 \mathrm{a}^{3}

২য় সূত্র: এই সূত্র কক্ষীয় বেগ এবং সূর্য ও গ্রহের মধ্যবর্তী দূরত্বের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করে। মনে করি কোনো গ্রহ t সময়ে P অবস্থান হতে Q অবস্থানে আসে। যদি একই সময়ে ঐ গ্রহ M  অবস্থান হতে R অবস্থানে আসে, তবে কেপলারের দ্বিতীয় সূত্র হতে পাই, POS-এর ক্ষেত্রফল এবং MSR -এর ক্ষেত্রফল সমান হবে।

৩য় সূত্র: এই সূত্র গ্রহের কক্ষপথের আকার এবং অতিক্রান্ত সময়ের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন হয়। মনে করি T গ্রহের পর্যায়কাল অর্থাৎ সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে যে সময় লাগে তার মান T । যদি 2s পরাক্ষের দৈর্ঘ্য হয়, তবে কেপলারের তৃতীয় সূত্র হতে আমরা পাই, \mathrm{T}^{2} 8 \mathrm{a}^{3}

উক্ত সমীকরণ হতে কেপলারের তৃতীয় সূত্রটিকে সামান্য পরিবর্তন করে নিম্নরূপে লিখা যায়-

প্রতিটি গ্রহের পর্যায়কালের বর্গ গ্রহের কক্ষপথের পরাক্ষের অর্ধেকের ঘন-এর সমানুপাতিক।

উপরের সূত্র থেকে দেখা যায় যে, কোনো গ্রহের আবর্তন কাল এবং সূর্য থেকে এর গড় দূরত্ব জানা থাকলে অন্য যেকোনো গ্রহের আবর্তন কাল পর্যবেক্ষণ করে সূর্য থেকে এই দ্বিতীয় গ্রহের গড় দূরত্ব নির্ণয় করা যায়।

কেপলারের সূত্র বিশ্লেষণে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি লক্ষণীয়:

(১) গ্রহের আবর্তন কাল এর ভরের উপর নির্ভর করে না। 

(২) সূর্য থেকে গ্রহের গড় দূরত্ব যত কম হয় অর্থাৎ গ্রহ সূর্যের যত নিকটে থাকে এর আবর্তনকাল তত কম হয়।