10 Minute School
Log in

সাইটোপ্লাজমের ক্ষুদ্র অঙ্গাণুসমূহ (Microscopic Organelles of Cytoplasm)

সেন্ট্রিয়োল (Centriole)

গঠন ও ধরণ (Structure and Type) :

সেন্ট্রিয়োল আবরণী বেষ্টিত নয় এবং এতে কোনো DNA বা RNA থাকে না। সেন্ট্রিয়োল প্রাচীর ৯টি ত্রয়ী অণুনালিকা দিয়ে গঠিত। প্রত্যেক অণুনালিকা সমদূরে অবস্থিত এবং প্রতিটি তিনটি করে উপনালিকা নিয়ে গঠিত। সেন্ট্রিয়োলের চারপাশে অবস্থিত গাঢ় তরল পদার্থকে সেন্ট্রোস্ফিয়ার বলে। সেন্ট্রোস্ফিয়ার সেন্ট্রিয়োল ধারণ করে। সেন্ট্রোস্ফিয়ার ও সেন্ট্রিয়োলকে একত্রে সেন্ট্রোসোম বলে।

রাসায়নিক গঠন (Chemical Composition) : সেন্ট্রিয়োল সাধারণত প্রোটিন, লিপিড ও ATP নিয়ে গঠিত।

Microscopic Organelles of Cytoplasm (সেন্ট্রোসোম ও সেন্ট্রিওল)

কাজ :

  • কোষ বিভাজনের সময় মাকুতন্তু গঠন করা। 
  • কোষ বিভাজনে সাহায্য করা। 
  • সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলাযুক্ত কোষে সিলিয়া ও ফ্ল্যাজেলা সৃষ্টি করা।
  • শুক্রাণুর লেজ গঠন করা ।

মাইক্রোটিউবিউলস (Microtubules)

গঠন ও ধরণ (Structure and Type) :

ভৌত গঠন (Physical Structure) : মাইক্রোটিউবিউলস দেখতে লম্বা, শাখাহীন, ফাঁপা টিউব জাতীয়। 

রাসায়নিক গঠন (Chemical Composition) : প্রতিটি মাইক্রোটিউবিউলসে ১৩টি প্রোটোটিউবিউল সর্পিলাকারে সজ্জিত থাকে। মাইক্রোটিউবিউলসের প্রতিটি প্রোটোটিউবিউল ডাইমেরিক প্রোটিন দিয়ে গঠিত। এদের প্রতিটি প্রোটিন অণু \alpha-\beta(আলফা-বিটা) টিউবিউলিন প্রোটিন অণু দিয়ে গঠিত।

Microscopic Organelles of Cytoplasm (মাইক্রোটিউবিউলস)

কাজ :

  • ফ্ল্যাজেলা, সিলিয়া ইত্যাদির বিচলনে সাহায্য করে।
  • কোষ বিভাজনের সময় মাকুযন্ত্র গঠন করে; সেন্ট্রোমিয়ারের সাথে সংযুক্ত হয়ে ক্রোমোসোমকে পৃথক করতে এবং বিপরীত মেরুতে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
  • মাইক্রোফাইব্রিলের বিন্যাস নির্দেশ করে। এরা কোষ প্রাচীর গঠনেও সাহায্য করে।
  • সেল মেমব্রেন, নিউক্লিয়ার এনভেলপ ও অন্যান্য অঙ্গাণুর সাথে সংযুক্ত থেকে এদের সাথে যোগাযোগ ও পরিবহন কার্যে সাহায্য করে। 
  • এরা সাইটোস্কেলিটন বা কোষীয় কঙ্কাল হিসেবে কাজ করে এবং কোষকে দৃঢ়তা প্রদান করে।
  • যোগাযোগ ও পরিবহনে সাহায্য করে।

মাইক্রোফিলামেন্ট (Microfilament)

গঠন ও ধরণ (Structure and Type) :

মাইক্রোফিলামেন্ট সরু, লম্বা, সংকোচনশীল ও প্যাঁচানো দ্বিতন্ত্রী। এরা অ্যাকটিন ও মায়োসিন প্রোটিন দিয়ে গঠিত।

Microscopic Organelles of Cytoplasm (মাইক্রোফিলামেন্ট)
কাজ :
  • কোষের আকৃতি দান ও যান্ত্রিক দৃঢ়তা প্রদানে অংশগ্রহণ করে।
  • এরা সাইটোপ্লাজমীয় চলন, ফ্যাগোসাইটোসিস, পিনোসাইটোসিস ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ করে। 
  • এরা কোষের সাইটোকাইনেসিস ঘটিয়ে কোষ বিভাজনে সহায়তা করে।
  • কোষীয় অঙ্গাণুর অবস্থান পরিবর্তনে অংশগ্রহণ করে।
  • এরা ক্রোমোসোমের বিপরীত মেরুতে চলনে সাহায্য করে।

ইন্টারমিডিয়েট ফিলামেন্ট (Intermediate filament)

গঠন ও ধরণ (Structure and Type) :

এগুলো মাইক্রোটিউবিউলস ও মাইক্রোফিলামেন্টের মধ্যবর্তী এক ধরনের তন্তু। এগুলো প্রোটিন দিয়ে গঠিত। বিভিন্ন কোষে চার ধরনের ইন্টারমিডিয়েট ফিলামেন্ট পাওয়া যায়, যেমন- কেরাটিন, ল্যামিনিন, নিউরোফিলামেন্ট এবং ভাইমেন্টিন। 

Microscopic Organelles of Cytoplasm (ইন্টারমিডিয়েট ফিলামেন্ট)

কাজ :

(i) এরা কোষের আকৃতি দান ও যান্ত্রিক দৃঢ়তা প্রদানে অংশগ্রহণ করে।

(ii) কোষের অন্যান্য তন্ত্রকে যথাস্থানে রাখতে সহায়তা করে।

পারঅক্সিসোম (Peroxisome)

গঠন ও ধরণ (Structure and Type) :

অমসৃণ এন্ডোপ্লাজমিক রেটিকুলামের আউটপকেটিং-এর মাধ্যমে এরা তৈরি হয়। এরা এক আবরণী বিশিষ্ট, ব্যাস ০.২-১৭ μm, ভেতরে দানাদার। এর ভেতরে ক্রিস্টাল বা দানার আকারে সঞ্চয়ী এনজাইম জমা থাকে। এর মধ্যে catalase প্রধান এনজাইম।

Microscopic Organelles of Cytoplasm (পারঅক্সিসোম)

কাজ :

catalase এনজাইমের সাহায্যে H2O2, কে H2OO2, এ রূপান্তর করে কোষকে রক্ষা করে। এছাড়া কোষে অক্সিজেনের ঘনত্ব নিয়ন্ত্রণ করাও এদের কাজ। এছাড়া কো-এনজাইম NAD পুনঃউৎপাদন, DNA এবং  RNA এর নাইট্রোজেন ক্ষারসমূহ ভাঙা এবং পুনঃউৎপাদন।

গ্লাইঅক্সিজোম (Glyoxisome)

গঠন ও ধরণ (Structure and Type) :

গ্লাইঅক্সিজোম এক আবরণীবিশিষ্ট, গোলাকার, ডিম্বাকার বা ষড়ভুজাকার স্নেহ পদার্থসমৃদ্ধ অঙ্গাণু। এদের মাতৃকা দানাদার এবং কখনও কেন্দ্রে কোর অংশ দেখা যায়। অক্সিডেশন ও গ্লাইঅক্সালো চক্রের বিভিন্ন ধরনের এনজাইম, যেমন- আইসোসাইট্রেট, ম্যালেট সিন্থেটেজ, গ্লাইকোলো অক্সিডেজ এবং ক্যাটালেজ প্রভৃতি থাকে।  

Microscopic Organelles of Cytoplasm (গ্লাইঅক্সিজোম)

কাজ :

  1. প্রধানত চর্বি বা লিপিড বিপাক নিয়ন্ত্রণ করা
  2. গ্লাইঅক্সালেট চক্রের মাধ্যমে শ্বসন বস্তু জারিত করে শক্তি উৎপন্ন করে। 
  3. বীজের অঙ্কুরোদগমকালে লিপিডকে ভেঙে চিনিতে পরিণত করা যাতে করে ফটোসিনথেসিসের মাধ্যমে নিজের খাদ্য তৈরির আগ পর্যন্ত অঙ্কুরিত চারার বৃদ্ধি হতে থাকে। 
  4. এ অঙ্গাণুর সাহায্যে অ্যামিনো অ্যাসিডের বিপাক ঘটে।

কোষগহ্বর (Cell Cavity)

গঠন ও ধরণ (Structure and Type) :

সাইটোপ্লাজমে(Cytoplasm) দৃশ্যত যে ফাঁকা অংশ দেখা যায় তাই কোষ গহ্বর। প্রোটোপ্লাজম দিয়ে গঠিত যে পাতলা পর্দা কোষ গহ্বরকে বেষ্টন করে থাকে তাকে টনোপ্লাস্ট (tonoplast) বলে। এ পর্দা রাবার জাতীয়। কোষ গহ্বরের অভ্যন্তরের রসকে কোষরস বলে। কোষ রসে পানি, নানা প্রকার অজৈব লবণ, জৈব অ্যাসিড, শর্করা, আমিষ ও চর্বি জাতীয় বিভিন্ন যৌগিক পদার্থ, বিভিন্ন প্রকার রং ইত্যাদি বিদ্যমান থাকে।

Microscopic Organelles of Cytoplasm (কোষ গহ্বর)

কাজ :

  • কোষরস ধারণ করা। 
  • প্রয়োজনীয় বর্জ্য পদার্থ ধারণ করা। 
  • এরা কোষের অভ্যন্তরের pH রক্ষা করে। 
  • এরা কোষের ভেতরের পানির চাপ রক্ষা করে।