10 Minute School
Log in

আধুনিক বিজ্ঞান, রোগ ও অন্যান্য (Modern science, disease and others)

সংক্রামক রোগ (Infectious diseases)

  • কলেরা– এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া অন্ত্রে সংক্রমিত হবার ফলে সৃষ্ট পানিবাহিত রোগ।
  • মাম্পস- ভাইরাস সৃষ্ট কর্ণ গ্রন্থির প্রদাহজনিত ছোঁয়াচে রোগ।
  • র‍্যাবিস বা জলাতঙ্ক– র‍্যাবিস ভাইরাস (কুকুর বা বিড়াল এই ভাইরাস বহনকারী) সৃষ্ট রোগ।
  • জলবসন্ত– ভাইরাস সংক্রমিত এক ধরনের রোগ।

ব্যাকটেরিয়া সৃষ্ট কয়েকটি রোগ (Several diseases caused by bacteria)

যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, কলেরা, ডিপথেরিয়া, আমাশয়, ধনুষ্টংকার, হুপিং কাশি, মেনিঞ্জাইটিস। 

মশার কামড়ে সৃষ্ট কয়েকটি রোগ (Some diseases caused by mosquito bites)

  • ডেঙ্গু (এডিস মশার কামড়ে হয়)– ডেঙ্গু ফ্লেভিভাইরাস গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত এক ধরনের আর. এন. এ ভাইরাস
  • ম্যালেরিয়া– এনোফিলিস মশার কামড়ে সৃষ্ট রোগ।

করোনা ভাইরাস সমগোত্রীয় ভাইরাসের একটি বড় পরিবার, যেগুলি সাধারণ সর্দিজ্বর থেকে শুরু করে মিডল ইস্ট রেসপিরেটরি সিন্ড্রোম (মার্স) ও সিভিয়ার অ্যাকিউট রেস্পিরেটরি সিন্ড্রোমের (সার্স) মতো মারাত্মক রোগ সৃষ্টি করে।

কোভিড-১৯ (Covid-19)

গবেষণায় জানা গেছে যে, কোভিড-১৯ (Covid-19) ভাইরাস স্টিল অথবা প্লাস্টিকের ওপর ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত, পিতলের ওপর ৪ ঘণ্টা পর্যন্ত, কাচের ওপর ৪ দিন, কাপড়ের ওপর ২ দিন, কার্ডবোর্ডের ওপর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে। 

সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রাখতে হয়। RT-PCR (Reverse Transcription Polymerase Chain Reaction) টেস্টের মাধ্যমে করোনা শনাক্ত করা যায়।

মা ও শিশু স্বাস্থ্য

মা ও শিশু স্বাস্থ্য (Maternal and Child Health – MCH) এর মূল বিষয় দুইটি-

(ক) ম্যাটারনিটি সেবা

ম্যাটারনিটি চক্র- 

১। নিষেককালীন সেবা 

২। গর্ভকালীন সেবা 

৩। প্রসবকালীন সেবা 

৪। প্রসবপরবর্তী সেবা 

৫। দুই প্রসবের মধ্যবর্তী সেবা 

(খ) নবজাতকের সেবা।

ইমিউনাইজেশন এবং ভ্যাকসিনেশন

  • রোগ প্রতিরোধের জন্য ইমিউনাইজিং এজেন্ট শরীরে প্রবেশ করানোকে ইমিউনাইজেশন বলে। ইমিউনিটি দুই ধরনের। যথা – জন্মগত ও অর্জিত।
  • দেহে যখন কোনো রোগ/জীবাণু/ভাইরাস প্রভৃতি প্রবেশ করে, তখন তাদের প্রতিহত করার জন্য লিম্ফোসাইট শ্বেত কণিকা থেকে এক ধরনের প্রোটিন জাতীয় পদার্থ উৎপন্ন হয়। এদেরকে এন্টিবডি বলে।
  • এন্টিসেপটিক – জীবাণুর বিস্তার সীমিত করে। যেমন- পোভিডন আয়োডিন, আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল, পটাশিয়াম পারম্যাংগানেট।
  • এন্টিবায়োটিক – বিভিন্ন ছত্রাক বা জীবাণু দ্বারা তৈরীকৃত জীবাণুর বিরুদ্ধে দেহে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম এক ধরনের ঔষধ। যেমন- পেনিসিলিয়াম।

হেপাটাইটিস-বি টিকা (হেপ বি – Vaccine)

সকল নবজাতকের হাসপাতাল থেকে ডিসচার্জ হওয়ার আগে হেপাটাইটিস-বি ভ্যাকসিন (হেপ বি) নেয়া উচিত। এছাড়া হেপ এ-1 এবং হেপ এ-2 টিকাগুলো ১২ মাস পরই দিয়ে দিতে হবে।

ডিপিটি টিকা (DPT vaccine)

ডি তে ডিপথেরিয়া, পি তে পারটুসিস বা হুপিং কাশি এবং টি তে টিটেনাস। তিনটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ রোগের নাম। পারটুসিস টিকা দেয়ার সময় অনেকে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। যাদের এ প্রবণতা বেশি বা শরীর দুর্বল তাদের শুধু ডিপথেরিয়া ও টিটেনাস বা ধনুষ্টংকারের টিকা দেয়া হয়।

  • শিশুর ১৫ মাস বয়সে হামের টিকা দিতে হয়।
  • টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে তিন ধরনের টিকা আছে। একটি মুখে খাওয়ার এবং বাকি দুটি ইনজেকশন। দুই বছরের বেশি বয়সী শিশুরা এ টিকা নিতে পারে। টিকা কার্যকর থাকে তিন বছর।
  • রোটা ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া প্রাণঘাতক হতে পারে। তাই ডায়রিয়ার প্রতিষেধক হিসেবে বাচ্চাদের রোটা ভাইরাস এর প্রতিষেধক রোটাভাইরাস ভ্যাকসিন বা আরভি দিতে হবে। ডায়রিয়ার প্রতিষেধকের টিকা তিনটি ডোজে নিতে হয়। প্রথম ডোজ ৬ থেকে ১২ সপ্তাহের বয়সের মধ্যে দিতে হবে। পরবর্তী ডোজ ১০ সপ্তাহ/৪ মাসের মাঝে দিতে হবে।
  • নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী প্রধান দুই ভাইরাস হলো নিউমোকক্কাস (স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনি) ও স্ট্যাফাইলোকক্কাস
  • সাধারণত অনূর্ধ্ব পাঁচ বছরের শিশুদের এর জন্য সিজনাল অ্যান্টিভাইরাল ভ্যাকসিন বা নিউমোক্কাল ভ্যাকসিন দিতে হয়।
  • ইনফ্লুয়েঞ্জা একটি ছোঁয়াচে ব্যাধি। এই রোগের জন্য সাধারণত দুই ধরনের টিকা আছে-  আইআইভি ও এলএআইভি।

IIV – Inactivated Influenza Vaccines (আইআইভি ) 

LAIV – Live Attenuated Influenza Vaccines (এলএআইভি) 

  • চিকেন পক্স বা জল বসন্ত একটি ভাইরাস সৃষ্ট সংক্রামক রোগ। এটি প্রতিরোধ করতে শিশুর জন্মের ১২ মাস পরে এবং ৪-১২ বছরের মাঝে দুই ডোজে টিকা দিতে হয়।

এম.এম.আর. টিকা (M.M.R. Vaccine)

এম.এম.আর মূলত মাম্পস, মিজলস এবং রুবেলা রোগের টিকা। এই রোগগুলোর টিকা প্রধানত ৪ থেকে ৬ বছরের মাঝেই দিয়ে দিতে হয়।

এইচ আই ভি ভাইরাস ও এইডস

  • রেট্রোভাইরাসরোধী (Antiretroviral drug) ওষুধ HIV ভাইরাসটির সংক্রমণজনিত অসুস্থতা এবং মৃত্যু প্রবণতা দুটোই কমায় কিন্তু নিয়মিতভাবে এই চিকিৎসা সেবা সব দেশে পাওয়া যায় না। মূলত এইডস একটি রোগ নয়, এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাবজনিত নানা রোগের সমাহার।
  • এইচ.আই.ভি. -১ দ্বারা আক্রান্ত এবং চিকিৎসা না হওয়া বেশিরভাগ মানুষ এইডস রোগের শিকার হয় এবং তাদের বেশিরভাগ মারা যায় সুযোগসন্ধানী সংক্রমণ অথবা ম্যালিগন্যানসির (Malignancy) প্রভাবে যা ক্রমশ কমতে থাকা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ফলাফল।
  • বায়ু, জল, খাদ্য অথবা সাধারণ ছোঁয়ায় বা স্পর্শে এইচআইভি ছড়ায় না।

সুনির্দিষ্টভাবে যে যে উপায়ে এইচআইভি ছড়াতে পারে তা হলো:

১) এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত রোগীর রক্ত সুস্থ ব্যক্তির দেহে পরিসঞ্চালন করলে।

২) আক্রান্ত ব্যক্তি কর্তৃক ব্যবহৃত সুচ বা সিরিঞ্জ অন্য কোনো সুস্থ ব্যক্তি ব্যবহার করলে।

৩) আক্রান্ত ব্যক্তির কোনো অঙ্গ অন্য ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপন করলে। 

৪) এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে (গর্ভাবস্থায়, প্রসবকালে বা সন্তানের মায়ের দুধ পানকালে)। 

৫) অনিরাপদ দৈহিক মিলন করলে(যৌন মিলন কতটা স্থায়ী কিংবা বীর্যপাত হলো কি না তার উপরে এর সংক্রমণ নির্ভর করে না, অরক্ষিত যৌন মিলনে অধিকাংশ সময়ে এর সংক্রমণ ঘটতে পারে)।

  • HIV-1 আক্রান্ত রোগীদের অতি প্রয়োজনীয় ওষুধ ‘নেভিরাপিন’ কিন্তু এটি HIV-2 এর বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না।
  • সম্প্রতি অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে অনেক রোগী সফলতা পেয়েছেন । তাই অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা “Bone marrow transplant”-কে ভাবা হচ্ছে এইডসের বিরুদ্ধে আবিষ্কৃত সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসা ।

যক্ষ্মা

  • যক্ষ্মা (ইংরেজি: Tuberculosis বা টিবি) একটি সংক্রামক রোগ যার কারণ মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস (Mycobacterium tuberculosis) নামের জীবাণু।
  • বিসিজি টিকা হলো যক্ষ্মার প্রতিষেধক। শিশুর জন্মের ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই টিকা দিতে হয়।
  • যক্ষ্মার ঔষধ – আইসোনিয়াজাইড, রিফামপিসিন, পাইরাজিনামাইড, ইথামবিউটল, স্ট্রেপটোমাইসিন।

পোলিও

  • পোলিও নামক ভাইরাস জীবাণুঘটিত সংক্রামক ব্যাধি পোলিওমাইলাইটিস (Poliomyelitis) এর সচরাচর ব্যবহৃত সংক্ষিপ্ত নাম। এই ভাইরাস প্রান্তীয় স্নায়ু নিউরনের মাইয়েলিনসমূহকে ধ্বংস করে ফেলে। এই মাইয়েলিনের প্রদাহ থেকেই মায়েলাইটিস কথাটি এসেছে। এর ফলে আক্রান্ত স্থানে যে পরিণতি পরিলক্ষিত হয় সেটাই হচ্ছে শিথিল (Flaccid) পক্ষাঘাত বা পোলিও।
  • পোলিও ভাইরাস এক ধরনের RNA ভাইরাস, মানবদেহে যার সুপ্তকাল ৭-১৪ দিন।
  • রোগের বৈশিষ্ট্য- জ্বর, মাথাব্যথা, ঘাড় এবং পিছনের পেশি শক্ত হওয়া, CSF এ প্রোটিন এবং কোষ বেড়ে যাওয়া, ফ্ল্যাসিড প্যারালাইসিস।
  • দুইভাবে পোলিও টিকা দেয়া যেতে পারে। যথা- ও.পি.ভি. এবং আই.পি.ভি. ।
  • ও.পি. ভি. হলো ওরাল পোলিও ভ্যাকসিন যা মুখে খাওয়ানো হয়ে থাকে এবং আই. পি. ভি. হলো ইনএক্টিভেটেড পোলিও ভ্যাকসিন যা ইনজেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়।
  • সিডিউল- ৪টি ডোজ (জন্মের ৬ সপ্তাহ পর শুরু করে প্রতি ৪ মাস অন্তর দিতে হবে)

পালন

  • মৌমাছিপালন (Apiculture) হলো উন্নত পদ্ধতিতে মৌমাছির লালন-পালন ও মৌচাকের যত্নের মাধ্যমে তাদের তৈরি মধু আহরণ ও সংরক্ষণ।
  • বাণিজ্যিক হিসাবে বাংলাদেশে Apis cerana indica সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মৌমাছি প্রজাতি। অধিকন্তু একটি বন্য প্রজাতিও (Apis dorsata) আছে যেটি প্রধানত বনাঞ্চল, বিশেষত সুন্দরবন, মধুপুর ও বাংলাদেশের অন্যান্য জঙ্গলের কাছাকাছি বাস করে।
মৌমাছির চাষ  এপিকালচার (মৌমাছির ল্যাটিন নাম হলো Apis)
রেশমের (পোকার) চাষ সেরিকালচার (সিল্ক এর ল্যাটিন নাম হলো Sericum)
মৎস্য চাষ পিসিকালচার (মাছের ল্যাটিন নাম হলো Pisci (Pisces)
উদ্যান বিদ্যা হর্টিকালচার (ল্যাটিন Hortus শব্দের অর্থ হলো বাগান)
পাখিপালন বিদ্যা  এভিকালচার (পাখির ল্যাটিন নাম হলো Aves)
চিংড়ি পালনবিদ্যা প্রনকালচার (Prawn-Culture)
মু্ক্তা চাষ পার্লকালচার (Pearl-Culture)
ব্যাঙ চাষবিদ্যা ফ্রগকালচার (Frog Culture)