10 Minute School
Log in

উদ্ভিদজগৎ

বিভিন্ন ধরণের উদ্ভিদ

সর্বাধিক মিল সম্পন্ন একটি বা কয়েকটি প্রজাতি মিলে একটি গণ সৃষ্টি করে। যেমন, বট, অশ্বত্থ, ডুমুর এই তিনটি পৃথক প্রজাতি মিলে Ficus নামক একটি গণ সৃষ্টি করে।

কোনো অঞ্চলের প্রকৃতি ও সেই প্রকৃতিতে স্বাভাবিকভাবে অবস্থানরত উদ্ভিদকুলকে Flora এবং প্রাণীকুলকে Fauna বলে। 

মরুজ পরিবেশে যে সকল উদ্ভিদ জন্মায় তাদেরকে মরুজ উদ্ভিদ (Xerophyte) বলে। যেমন, Banksia, Nerium, Dasylirion ইত্যাদি। যে সকল উদ্ভিদের ক্রমাগমন শুষ্ক ও মরুময় নিবাসে হয় তাদেরকে মরু সিরি (Xerosere) বলে।

মরু সিরির ধাপগুলো নিম্নরূপ –

১. ক্রাস্টোজ লাইকেন দশা: Rhizocarpon, Lecidia ইত্যাদি। 

২. ফলিওজ লাইকেন দশা: Dermatocarpon, Paramelia ইত্যাদি।

৩. মস দশা: Polytrichum, Tortula ইত্যাদি।

৪. বীরুৎ দশা:  Croton ইত্যাদি।

৫. গুল্ম দশা: Solanum, Cassia ইত্যাদি। 

৬. চূড়ান্ত অরণ্য ভূমি: Tectona grandis, Shorea robusta ইত্যাদি।

পুকুর, হ্রদ, বিল-ঝিল ইত্যাদি অগভীর জলাশয়ে উদ্ভিদমুক্ত পরিবেশে উদ্ভিদ সম্প্রদায়ের আগমন এবং দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে পর্যায়ক্রমিক ধাপগুলো অতিক্রমের মাধ্যমে একটি স্থায়ী ও চূড়ান্ত অরণ্যভূমি সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে জলসিড়ি (Hydrosere) বলে।

জলসিড়ির ধাপগুলো নিম্নরূপ: 

১. ফাইটোপ্লাঙ্কটন পর্যায়: বিভিন্ন ধরনের শৈবাল।

২. নিমজ্জিত পর্যায়: Hydrilla, Najas ইত্যাদি।

৩. ভাসমান পর্যায়: Trapa, Nymphaea ইত্যাদি। 

৪. নলখাগড়া পর্যায়: Typha, Runex ইত্যাদি 

৫. বনভূমি পর্যায়: Marsilea, Populus ইত্যাদি। 

৬. তৃণভূমি পর্যায়: Carex, Fucus ইত্যাদি।

পর্ণমোচী বা পত্রঝরা উদ্ভিদ: এ সকল উদ্ভিদের পাতা বছরের কোনো না কোনো সময় ঝরে পড়ে বলে এদেরকে পর্ণমোচী বা পত্রঝরা উদ্ভিদ বলে। মধুপুর ও ভাওয়াল বনাঞ্চলে এ ধরনের উদ্ভিদ পাওয়া যায়।

চিরহরিৎ বনভূমিতে জন্মায়— মেহগনি, শাল, সেগুন, জলপাই, পাইন, জারা, বট, গজারি ইত্যাদি উদ্ভিদ। বাংলাদেশে পাবর্ত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চল চিরহরিৎ বনাঞ্চল।

যে সকল উদ্ভিদ অন্য কোনো উদ্ভিদের উপর জন্মায় কিন্তু উক্ত উদ্ভিদ হতে কেবল আশ্রয় গ্রহণ করে তাদেরকে পরাশ্রয়ী উদ্ভিদ (Epiphyte) বলে। এরা আশ্রয় দাতা উদ্ভিদের উপর জীবনচক্র সম্পন্ন করে কিন্তু উক্ত উদ্ভিদের তেমন কোনো ক্ষতি করে না। যেমন—Usnea, Alectoria, Bromeliads, অর্কিড ইত্যাদি।

বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ

  • তেল জাতীয় শস্য: সরিষা, তিল, চিনাবাদাম, রেজি, সয়াবিন, নারিকেল ইত্যাদি।
  • মসলা উৎপাদনকারী উদ্ভিদ: রসুন, হলুদ, লবঙ্গ, পিঁয়াজ, মরিচ, আদা, গোল মরিচ, ধনিয়া, তেজপাতা, মৌরি ইত্যাদি।
  • পানীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী উদ্ভিদ: চা, কফি ইত্যাদি।
  • গুড় ও চিনি উৎপাদনকারী উদ্ভিদ: আখ, খেজুর, তাল ইত্যাদি।
  • ভেষজ বা ঔষধি উদ্ভিদ: তুলসী, বাসক, সর্পগন্ধা, কুরচি, কালমেঘ, পিয়াজ, রসুন, অর্জুন মুক্তাকরি, ধুতুরা, নিশিন্দা, থানকুনি, যষ্ঠিমধু প্রভৃতি।
  • ডাল উৎপাদনকারী উদ্ভিদ: মটর, মসুর, মাষকলাই, সোনামুগ, ছোলা, খেসারি, অড়হর ইত্যাদি ডাল জাতীয় শস্য। ডাল উৎপাদনকারী সকল উদ্ভিদ Leguminosae গোত্রের অধীন Papilionideae উপগোত্রের অন্তর্ভুক্ত।
  • তন্তু ও আঁশ উৎপাদনকারী উদ্ভিদ: পাট, মেসতা পাট, শন পাট, কার্পাস, শিমুল ইত্যাদি।
  • কাষ্ঠ উৎপাদনকারী উদ্ভিদ : সেগুন, চাপালিশ, গর্জন, সুন্দরী, শাল, কড়ই, মেহগনি, কাঁঠাল, শিশু, জামরুল ইত্যাদি।
  • উদ্দীপক দ্রব্য উৎপাদনকারী উদ্ভিদ: তামাক, গাঁজা প্রভৃতি।
  • শাক-সবজি জাতীয় উদ্ভিদ: ডাঁটা, বেগুন, পটল, গোল আলু, ঢেঁড়স, শিম, বরবটি, লাউ, কুমড়া, মুলা, টমেটো ইত্যাদি।
  • খাদ্য উৎপাদনকারী উদ্ভিদ : ধান, গম, যব, ভুট্টা, কাউন, চিনা ইত্যাদি।
  • কিউকারবিট : কুমড়া।
  • ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ : ধান, বাঁশ।

উদ্ভিদের প্রাণ আছে এ কথা প্রথম বলেন ভারতীয় বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসু। 

উদ্ভিদ দুটি ভাগে বিভক্ত- সপুষ্পক উদ্ভিদ এবং অপুষ্পক উদ্ভিদ। যেসব উদ্ভিদে ফুল ও ফল হয় তাদের সপুষ্পক উদ্ভিদ এবং যে সব উদ্ভিদের ফুল বা ফল কিছুই হয় না তাদের অপুষ্পক উদ্ভিদ বলে।

যে বীজে একটি বীজপত্র থাকে তাকে একবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে। যেমন – গম, ভুট্টা, নারিকেল, ধান, লিচু ইত্যাদি। 

জলজ উদ্ভিদ সহজে পানিতে ভাসতে পারে। কারণ এদের কাণ্ডে বায়ুকুঠুরী থাকে। কচুরিপানা পানিতে ভাসে এর কাণ্ড ফাঁপা বলে । 

  • দ্রুত বৃদ্ধি সম্পন্ন গাছ হলো ইপিল ইপিল।

অভিস্রবণ, প্রস্বেদন, শ্বসন ও সালোকসংশ্লেষণ

একই বায়ুমণ্ডলীয় চাপ, তাপমাত্রা এবং একই দ্রাবক বিশিষ্ট দুটি ভিন্ন ঘনত্বযুক্ত দ্রবণ একটি বৈষম্যভেদ্য ঝিল্লী দিয়ে পাশাপাশি পৃথক থাকলে দ্রাবক পদার্থ (পানি) যে প্রক্রিয়ায় কম ঘনত্বের দ্রবণ বেশি ঘন দ্রবণ এর দিকে ব্যাপিত হয় তাকে অভিস্রবণ বলে। অভিস্রবণের সময় কেবলমাত্র পানি পাতলা দ্রবণ থেকে গাঢ় দ্রবণের দিকে প্রবাহিত হয়। অভিস্রবণ দুই প্রকার। যথা-

(i) অন্তঃঅভিস্রবণ ও 

(ii) বহিঃঅভিস্রবণ।

  • পটোমিটার নামক যন্ত্রের সাহায্যে বিভিন্ন আবহাওয়ায় প্রস্বেদনের তুলনামূলক হার নির্ণয় করা হয়।

ইমবাইবিশন

  • উদ্ভিদ দেহের কোষ প্রাচীর, প্রোটোপ্লাজম ইত্যাদির পানি শোষণ প্রক্রিয়া ইমবাইবিশন বলে।
  • উদ্ভিদের মূল রোমের কোষ প্রাচীর দিয়ে মাটি থেকে পানি পরিশোষণের প্রথম পদক্ষেপ হচ্ছে ইমবাইবিশন।
  • বীজের অঙ্কুরোদগমের পূর্বে অবশ্যই বীজের ইমবাইবিশন প্রক্রিয়ায় পানি পরিশোষণ করতে হয়।

ব্যাপন

তাপমাত্রা, ঘনত্বের তারতম্য, দূরত্ব, মাধ্যমের ঘনত্ব, বায়ুমণ্ডলের চাপ ইত্যাদি ব্যাপনের গতি নিয়ন্ত্রণকারী প্রভাবক। খাদ্যরস ব্যাপন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বেশি ঘন এলাকা থেকে অপেক্ষাকৃত কম ঘন এলাকায় সঞ্চালিত হয়।

সালোকসংশ্লেষণ

6CO_2+12H_2O+তাপ\to C_6H_{12}O_6+6H_2O+6O_2

প্রধান উপাদান

  • পানি (H_2O)
  • কার্বন ডাই অক্সাইড (CO_2)
  • সূর্যালোক
  • ক্লোরোফিল

সাহায্যকারী উপাদান

  • কো-এনজাইম
  • ADP( Adenosine Diphosphate)
  • NADP( Nicotinamide Adenine Dinucleotide Phosphate)
  • RuBP( Ribulose Bisphosphate)

লাল আলোতে সালোকসংশ্লেষণ বেড়ে যায়। 

উদ্ভিদের সবুজ অংশ বিশেষ করে পাতায়, কচি সবুজ কাণ্ডে, সবুজ বীজপত্রে সালোকসংশ্লেষণ হয়, কিন্তু উদ্ভিদের মূলে হয় না।

সালোকসংশ্লেষণ এর জন্য সুবিধাজনক তাপমাত্রা ২২-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পাতার প্যালিসেড প্যারেনকাইমা কোষে (মেসোফিলে) সালোকসংশ্লেষণ ঘটে।

সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া ২টি পর্যায়ে সম্পন্ন হয়-

  • আলোক নির্ভর পর্যায়– সূর্যের আলোর উপস্থিতিতে পানি ভেঙে ADP এর সাথে অজৈব ফসফেট যুক্ত হয়ে ATP তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়াকে ফটোফসফোরাইলেশন বলে।
  • অন্ধকার পর্যায়– অন্ধকার পর্যায়ে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড ব্যবহার করে উদ্ভিদ শর্করা তৈরি করে, একে কেলভিন-ব্যাশাম চক্র বলে।  
    • সালোকসংশ্লেষণের অন্ধকার পর্যায়ে ব্যবহৃত গতিপথ – 
      • C3 উদ্ভিদ: ক্যালভিন চক্র – ধান, গম, আলু, সয়াবিন, যব, বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ ইত্যাদি।
      • C4 উদ্ভিদ: হ্যাচ ও স্ল্যাক চক্র – আখ, ভুট্টা, জোয়ার, আনারস, বাঁধাকপি ইত্যাদি।

ছত্রাক, শৈবাল ও ফার্ন

শৈবাল

  • শৈবালের মূল, কাণ্ড, পাতা নেই। 
  • শৈবাল স্বভোজী উদ্ভিদ।
  • এদের কোষ প্রাচীর প্রধানত সেলুলোজ দিয়ে গঠিত। 
  • কোষে সঞ্চিত খাদ্য প্রধানত শ্বেতসার। সামুদ্রিক শৈবালে আয়োডিন পাওয়া যায় ।
  • এরা অঙ্গজযৌন ও অযৌন প্রক্রিয়ায় বংশ বৃদ্ধি করে।
  • শৈবাল সম্পর্কিত আলোচনা করা হয় ফাইকোলোজিতে। 
  • স্পাইরোগাইরা (Spirogyra), পলিসাইনিয়া (Polysiphonia), ন্যাভিকুলা (Navicula) প্রভৃতি শৈবালের উদাহরণ।

লাইকেন

শৈবাল ও ছত্রাকের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ ধরনের উদ্ভিদকে লাইকেন বলা হয় ।

ক্লোরেলা

ক্লোরেলা এক প্রকার সবুজ এককোষী শৈবাল। এতে বিভিন্ন প্রকার অ্যামিনো এসিড থাকায় একে প্রোটিন খাদ্যের আদর্শ উৎস বলে। ক্লোরেলায় ভিটামিন A, B, C ও K বিদ্যমান। পানি শোধনসহ মহাকাশযান ও ডুবোজাহাজের পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখতে এবং মহাকাশচারীদের খাদ্যের অভাব মেটাতে ক্লোরেলা ব্যবহৃত হয়।

ছত্রাক

ছত্রাক একটি সমাঙ্গদেহী অপুষ্পক উদ্ভিদ। এদের কোষ প্রাচীর কাইটিন নির্মিত এবং কোষে সঞ্চিত খাদ্য গ্লাইকোজেন। এরা অঙ্গজ, যৌন ও অযৌন সব ধরনের প্রক্রিয়ায় বংশ বৃদ্ধি করে।

পেনিসিলিন

১৯২৯ সালে Alexander Fleming সর্বপ্রথম Penicillium notatum হতে পেনিসিলিন আবিষ্কার করেন। Penicillium একটি মৃতজীবী ছত্রাক।

ঈস্ট 

Saccharomyces বা ঈস্ট নামক ছত্রাক পৃথিবীর সর্বত্রই পাওয়া যায়। এদের কোষ প্রাচীর মৃত বা প্রোটিন, লিপিড, কাইটিন ও পলিস্যাকারাইড নিয়ে গঠিত। রুটি ও মদ তৈরিতে ঈস্ট বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয়।

ফার্ন

ফার্নবর্গীয় উদ্ভিদের মূল, কাণ্ড এবং পাতা থাকে তবে এদের ফুল ও ফল হয় না। 

উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশ

পাতা

একটি আদর্শ পাতার তিনটি অংশ থাকে।

  • পত্রমূল, 
  • পত্রবৃন্ত ও 
  • পত্রফলক। 

পাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে পত্রফলক।

পাতা সূর্যালোক ও ক্লোরোফিলের সাহায্যে খাদ্য প্রস্তুত করে বলে পাতাকে উদ্ভিদের রান্নাঘর বলে। ক্লোরোপ্লাস্টের উপাদান হলো স্টোমা। পাতার ক্লোরোফিল সূর্যরশ্মির ফোটন কণা শোষণ করে।

  • পাথরকুচি গাছের পাতা থেকে বংশবিস্তার হয়।
  • উদ্ভিদের বৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি হয় কাণ্ড শীর্ষে।
  • প্রচুর সূর্যালোক পাবার জন্য গাছের পাতা চ্যাপ্টা ও প্রসারিত হয়। পত্ররন্ধ্র ঘেরা থাকে রক্ষীকোষ দ্বারা। পত্ররন্ধ্র খোলা থাকে দিনের বেলায়।
  • পাতাকে সতেজ রাখে প্রধানত পটাসিয়াম।

ফুল

  • অপুষ্পক উদ্ভিদ: যে উদ্ভিদের ফুল হয় না, তারা অপুষ্পক উদ্ভিদ। যেমন: মস, লাইকেন প্রভৃতি। 
  • সপুষ্পক উদ্ভিদ: যে উদ্ভিদের ফুল হয়, তারা সপুষ্পক উদ্ভিদ। একটি আদর্শ ফুলের ৫টি অংশ থাকে: 
    • পুষ্পপত্র, 
    • বৃতি, 
    • দলমণ্ডল, 
    • পুংস্তবক ও 
    • স্ত্রীস্তবক। 

যে ফুলে এ পাঁচটি অংশ তাকে তাকে সম্পূর্ণ ফুল বলে। 

লিঙ্গভিত্তিক বিভাজন:

  • একলিঙ্গ ফুল- ঝিঙা, লাউ, কুমড়া প্রভৃতি। 
  • উভয়লিঙ্গ ফুল- সরিষা, ধুতুরা, জবা প্রভৃতি।

মঞ্জরীপত্র– পুষ্প বা পুষ্পবিন্যাসের গোড়ায় বা মঞ্জরীদণ্ড পর্বসন্ধিতে অবস্থিত পাতাকে মঞ্জরীপত্র বলে।

বৃন্তভিত্তিক বিভাজন:

  • সবৃন্তক ফুল- ধুতরা, জবা। 
  • অবৃন্তক ফুল- কচু, রজনীগন্ধা।

যে ফুল কখনই প্রস্ফুটিত হয় না তাকে ক্লিস্টোগ্যামি বলে। সাধারণত রাত্রে প্রস্ফুটিত হয় প্রাণী পরাগী ফুল

ক্রোমোপ্লাস্টের জন্য ফুল বিচিত্র বর্ণের হয়।

  • ক্লোরোফিল নামক বর্ণ কণিকার উপস্থিতির কারণে ক্লোরোপ্লাস্টের বর্ণ সবুজ হয়। 
  • জ্যান্থোফিল নামক বর্ণ কণিকার উপস্থিতির কারণে ক্রোমোপ্লাস্ট-এর বর্ণ হলুদ হয়।
  • ক্যারোটিন নামক বর্ণ কণিকার উপস্থিতির জন্য ক্রোমোপ্লাস্ট-এর বর্ণ লাল হয়। 
  • সায়ানিন নামক বর্ণ কণিকার উপস্থিতির জন্য ক্রোমোপ্লাস্ট-এর বর্ণ নীল হয়।

সবুজ বর্ণের পাপড়িকে বলা হয় সেপালয়েডফুল ফোটাতে সাহায্যকারী হরমোন হলো ফ্লোরিজেন।

ফল

আদর্শ ফলের তিনটি অংশ –

  • বহিঃত্বক, 
  • মধ্যত্বক ও 
  • অন্তঃত্বক। 

পৃথিবীতে সর্বাধিক উৎপাদিত হয় কলা। 

বীজ ভিত্তিক বিভাজন

  • নগ্নবীজী উদ্ভিদ: এদের দেহ মূল, কাণ্ড, পাতায় বিভক্ত করা যায়। এদের ফুলের গর্ভাশয় থাকে না। এজন্য এদের ফুল হয় কিন্তু ফল হয় না। যেমন: সাইকাস, পাইনাস।
  • আবৃতবীজী উদ্ভিদ: এদের দেহ মূল, কাণ্ড, পাতায় বিভক্ত করা যায়। এদের ফুল ও ফল হয়। এটি দুই ধরনের: একবীজপত্রী ও দ্বিবীজপত্রী।
    • একবীজপত্রী উদ্ভিদ: যে সকল উদ্ভিদের ফলে একটিমাত্র বীজপত্র থাকে তাদের একবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে। যেমন: খেজুর, বরই, নারিকেল, ধান, গম, যব, ভুট্টা, ইক্ষু, কচু, বাঁশ প্রভৃতি।
    • দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ: যে সকল উদ্ভিদের ফলে দুইটি বীজপত্র থাকে তাদের দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে। যেমন: আম, কাঁঠাল, ভুট্টা, শিম, মটর, ছোলা, সরিষা, সূর্যমুখী, লাউ, কুমড়ো, ঢেঁড়স, জবা, ধুতুরা প্রভৃতি।

নিষেক ব্যতীত বীজহীন ফল উৎপাদন করাকে পার্থেনোকার্পি বা বীজহীন ফলোৎপাদন বলা হয়। অক্সিন প্রয়োগে এই পদ্ধতিতে শসা, আঙ্গুর, টমেটো প্রভৃতি ফল উৎপাদন করা যায় ।

নাশপাতি গাছ সবচেয়ে বেশিদিন ফল দেয়। প্রায় ৩০০ বছর বেঁচে থেকে ফল দেয়।

যে বীজের মধ্যে বহুবীজপত্র থাকে তাদের বহুবীজপত্রী উদ্ভিদ বলে। যেমন- পাইন ইত্যাদি।

ভার্নালাইজেশন ও ফটোপিরিয়ডিজম

ভার্নালাইজেশন

যে প্রক্রিয়ার দ্বারা বীজ বপনের আগে প্রয়োজনমত নিম্ন বা উচ্চতাপ প্রয়োগ করে স্বাভাবিক সময়কালের পূর্বে উদ্ভিদের ফুল ফোটানো হয় তাকে ভার্নালাইজেশন বলে।

ফটোপিরিয়ডিজম

দিবা ও রাত্রিকালের তুলনামূলক দৈর্ঘ্যের প্রতি কোনো উদ্ভিদের সাড়া দেয়ার প্রবণতাকে ফটোপিরিয়ডিজম বলে। অ্যালার্ড (Allard) ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে উদ্ভিদের পুষ্প ধারণের উপর ভিত্তি করে এই নামকরণ করেন।

ফটোপিরিয়ডিজমের  উপর ভিত্তি করে উদ্ভিদকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা – 

১. ছোট দিনের উদ্ভিদ (Short day plants): এদের পুষ্প ধারণের জন্য ছোট দিন ও বড় রাত্রির প্রয়োজন হয়। যেমন- পাট, তামাক, আলু, কফি, চন্দ্রমল্লিকা, সয়াবিন প্রভৃতি।

২. বড় দিনের উদ্ভিদ (Long day plants): এদের পুষ্প ধারণের জন্য বড় দিন এবং ছোট রাত্রির প্রয়োজন। যেমন- মুলা, গম, ভুট্টা, রাই প্রভৃতি। 

৩. নিরপেক্ষ দিনের উদ্ভিদ (Day-neutral plants): এদের পুষ্প ধারণের জন্য অধিক বা স্বল্প আলোক প্রাপ্তি কোনো বিষয় না। যেমন— শসা, তুলা, মটর, সূর্যমুখী প্রভৃতি।