শব্দ প্রকরণ
শব্দের গঠনমূলক শ্রেণিবিভাগ (Structural classification of word)
- দুই প্রকার:
 
| মৌলিক শব্দ | সাধিত শব্দ | 
| যেসব শব্দ বিশ্লেষণ করা যায় না বা ভেঙে আলাদা করা যায় না, সেগুলোকে মৌলিক শব্দ বলে। | যেসব শব্দকে বিশ্লেষণ করা হলে আলাদা অর্থবোধক শব্দ পাওয়া যায়, সেগুলোকে সাধিত শব্দ বলে। | 
| মৌলিক শব্দগুলোই হচ্ছে ভাষার মূল উপকরণ। | সাধারণত একাধিক শব্দের সমাস হয়ে কিংবা প্রত্যয় বা উপসর্গ যোগ হয়ে সাধিত শব্দ গঠিত হয়ে থাকে। | 
| গোলাপ, নাক, লাল, তিন। | চাঁদমুখ, নীলাকাশ, ডুবুরি, চলন্ত, প্রশাসন, গরমিল। | 
শব্দের অর্থমূলক শ্রেণিবিভাগ ( Semantic Classification of word )
তিন প্রকার:
| যৌগিক শব্দ | রূঢ়ি শব্দ | যোগরূঢ় শব্দ | 
| যে সকল শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক অর্থ একই রকম, সেগুলোকে যৌগিক শব্দ বলে। | যে শব্দ প্রত্যয় বা উপসর্গযোগে মূল শব্দের অনুগামী না হয়ে অন্য কোনো বিশিষ্ট অর্থ জ্ঞাপন করে, তাকে রূঢ়ি শব্দ বলে। | সমাস নিষ্পন্ন যে সকল শব্দ সম্পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অনুগামী না হয়ে কোনো বিশিষ্ট অর্থ গ্রহণ করে, তাদের যোগরূঢ় শব্দ বলে | 
| গায়ক = গৈ+ণক (অক) – অর্থ: গান করে যে।  
 বাবুয়ানা= বাবু+আনা – অর্থ: বাবুর ভাব।  | গবেষণা= (গো+এষণা), অর্থ- গরু খোঁজা; বর্তমান অর্থ: ব্যাপক অধ্যয়ন ও পর্যালোচনা। | পঙ্কজ- পঙ্কে জন্মে যা (উপপদ তৎপুরুষ সমাস)। শৈবাল, শালুক, পদ্মফুল প্রভৃতি নানাবিধ উদ্ভিদ পঙ্কে জন্মে থাকে। কিন্তু পঙ্কজ শব্দটি একমাত্র পদ্মফুল অর্থেই ব্যবহৃত হয়। তাই পঙ্কজ একটি যোগরূঢ় শব্দ। | 
শব্দের উৎসমূলক শ্রেণিবিভাগ (Etymological Classification of Word)
পাঁচ প্রকার:
- তৎসম শব্দ – যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে সরাসরি বাংলায় এসেছে এবং যাদের রূপ অপরিবর্তিত রয়েছে। যেমন: চন্দ্র, নক্ষত্র, মনুষ্য ইত্যাদি।
 - অর্ধ-তৎসম – বাংলা ভাষায় যেসব সংস্কৃত শব্দ কিছুটা পরিবর্তিত আকারে ব্যবহৃত হয় তাদের বলা হয় অর্ধ-তৎসম শব্দ। যেমন: গিন্নী, ছেরাদ্দ, জ্যোছনা, বোষ্টম, কুচ্ছিত ইত্যাদি।
 - তদ্ভব শব্দ – যেসব শব্দের মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায়, কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তন ধারায় প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে। যেমন: হাত, চামার ইত্যাদি।
 - দেশি শব্দ – বাংলাদেশের আদিম অধিবাসীদের (যেমন: কোল, মুন্ডা প্রভৃতি) ভাষা ও সংস্কৃতির কিছু কিছু উপাদান বাংলায় রক্ষিত রয়েছে। এই শব্দগুলোকে দেশি শব্দ বলে। যেমন – কুলা, চোঙ্গা, টোপর, গঞ্জ, ডাব, ডাগর ইত্যাদি।
 - বিদেশি শব্দ –
 
- আরবি শব্দ – কুরআন, কিয়ামত, উকিল, ওজর ইত্যাদি।
 - ফারসি শব্দ – পয়গম্বর, ফেরেশতা, চশমা, তারিখ, বদমাশ, রফতানি ইত্যাদি।
 - ইংরেজি শব্দ – ইউনিয়ন, নভেল, আফিম (Opium), অফিস (Office) ইত্যাদি।
 - পর্তুগিজ শব্দ – আনারস, আলপিন, আলমারি ইত্যাদি।
 - ওলন্দাজ- ইস্কাপন, টেক্কা, তুরুপ ইত্যাদি।
 - ফরাসি- কার্তুজ, কুপন ইত্যাদি।
 - চিনা- চা, চিনি ইত্যাদি।
 - তুর্কি- চাকর, চাকু ইত্যাদি।
 
শব্দের শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করো- Word।