10 Minute School
Log in

স্থিতি, গতি, বল,মহাকর্ষ, সরল দোলক

সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে পারিপার্শ্বের সাপেক্ষে যখন কোনো বস্তুর অবস্থানের পরিবর্তন ঘটে না তখন তাকে স্থিতিশীল বস্তু বলে। স্থিতিশীল বস্তুর অবস্থার পরিবর্তন না ঘটাকে স্থিতি বলে। উদাহরণ: ঘরবাড়ি, গাছপালা, পাহাড় পর্বত ইত্যাদি স্থির বস্তু। 

পারিপার্শ্বিক বস্তুর সাপেক্ষে সময়ের সঙ্গে যে বস্তু অবস্থানের পরিবর্তন হয় সেই বস্তুকে গতিশীল বস্তু বলে এবং তার অবস্থাকে গতি বলা হয়। উদাহরণচলন্ত বাস, চলন্ত ট্রেন ইত্যাদির গতিশীল বস্তু।

  • পৃথিবীতে পরম গতি পরম স্থিতি বলে কোনো কিছু নেই, সবকিছুই আপেক্ষিক। 

গতি প্রধানত তিন প্রকারের হতে পারে। যথা- 

  • চলন গতি – কোনো বস্তু যদি এমনভাবে চলতে থাকে যাতে করে বস্তুর সব কণা একই সময়ে একই দিকে সমান দূরত্ব অতিক্রম করে তাহলে ওই গতিকে চলন গতি বলে। উদাহরণ- যেকোনো পড়ন্ত বস্তুর গতি বা ঢিল ছোঁড়ার গতি।
  • ঘূর্ণন গতি- যখন কোনো বস্তু কোনো নির্দিষ্ট বিন্দু বা রেখা থেকে বস্তু কণাগুলোর দূরত্ব অপরিবর্তিত রেখে ওই বিন্দু বা রেখাকে কেন্দ্র করে ঘোরে তখন সে বস্তুর গতিকে ঘূর্ণন গতি বলে। উদাহরণ- বৈদ্যুতিক পাখার ঘূর্ণন। 
  • জটিল বা মিশ্র গতি- চলন এবং ঘূর্ণন গতির  মিশ্রণ। উদাহরণ- গাড়ির চাকার ঘূর্ণন।

সরণ– কোনো গতিশীল বস্তু যখন একটি নির্দিষ্ট দিক বরাবর স্থান পরিবর্তন করে তখন তাকে সরণ বলে। সরণ একটি ভেক্টর রাশি সরণের একক মিটার।

দ্রুতি- কোনো বস্তু একক সময়ে যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে দ্রুতি বলে। দ্রুতি একটি স্কেলার রাশি দ্রুতির একক মিটার/সেকেন্ড।

বেগ- কোনো বস্তুর সময়ের সাপেক্ষে সরণের হারকে বেগ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, কোন বস্তু একক সময়ে একটি নির্দিষ্ট দিক বরাবর যে দূরত্ব অতিক্রম করে তাকে বেগ বলে। বেগ একটি ভেক্টর রাশি

ত্বরণ- একক সময়ে কোনো বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে ত্বরণ বলে। 

  • ত্বরণ একটি ভেক্টর রাশি। 
  • ত্বরণের মাত্রা সমীকরণ হল বেগ (L/T) এবং সময়ের(T) মাত্রার ভাগফল। 
  • চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ানোর পর সেটা দিয়ে কাগজের টুকরোকে আকর্ষণ বা চুম্বক দিয়ে অন্য চুম্বককে আকর্ষণ এগুলো তড়িৎ চৌম্বক বলের ফলে হয়।  
  • ভরবেগের একক হলো- kg m/s।
  • সৃষ্টিজগতের সবচেয়ে শক্তিশালী বল হলো সবল নিউক্লিয় বল।  
  • বলের একক নিউটন এবং কাজের একক জুল। 
  • সূর্য থেকে আলো ও তাপ তৈরি হয় সবল নিউক্লিয় বল দিয়ে। 

ঘর্ষণ বল- একটি ভরের উপর বল প্রয়োগ করলে ঘর্ষণের জন্যে বিপরীত দিকে একটি বল তৈরি হলে তাকে ঘর্ষণ বল বলে। 

মহাকর্ষ বল- মহাবিশ্বের যে কোনো দুইটি বস্তু একটি আরেকটিকে আকর্ষণ করে, তাদের মধ্যকার এই আকর্ষণ বলকে বলে মহাকর্ষ বল। মহাকর্ষের কারণেই পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলি সূর্যের চারিদিকে ঘূর্ণায়মান থাকে। 

  • স্যার আইজাক নিউটন ১৬৮৭ খ্রিষ্টাব্দে তার ফিলোসফিয়া ন্যাচারালিস প্রিন্সিপিয়া ম্যাথামেটিকা গ্রন্থে এ বিষয়ে ধারণা প্রদান করেন৷

অভিকর্ষ বল- পৃথীবী তার কেন্দ্রাভিমুখে সকল বস্তুকে যে বল দ্বারা আকর্ষণ করে সেই বলকে অভিকর্ষ বল বলে। 

  • বিজ্ঞানী নিউটন সর্বপ্রথম মহাকর্ষ বলের গাণিতিক ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন। 
  • মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে একক ভরের কোনো বস্তু স্থাপন করলে এর উপর যে বল প্রযুক্ত হয় তাকে ঐ ক্ষেত্রের জন্য, ঐ বিন্দুর আকর্ষণ বল বা মহাকর্ষীয় প্রাবল্য বলে।
  • মহাকর্ষীয় প্রাবল্য একটি ভেক্টর রাশি। মহাকর্ষীয় প্রাবল্য নির্ণয় সূত্র: E= F/m। 
  • অসীম দূরত্ব থেকে একক ভরের কোনো বস্তুকে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে মহাকর্ষীয় বল দ্বারা যে পরিমাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়, তাকে ঐ বিন্দুর মহাকর্ষীয় বিভব বলে। 
  • মহাকর্ষীয় বিভব একটি স্কেলার রাশি,এর কোন দিক নেই। এর একক হলো JKg^{-1}। 
  • মহাকর্ষীয় বলের কারণে গ্যালাক্সির ভিতর নক্ষত্রেরা ঘুরতে থাকে কিংবা সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবী ঘোরে, পৃথিবীকে কেন্দ্র করে চাঁদ ঘোরে। 
  • মহাকর্ষীয় ধ্রুবক G এর মান 6.67\times 10^{-11} NM^2Kg^{-2}

সরল দোলক

  • একটি ভারী আয়তনহীন বস্তুকে অপ্রসারণশীল, ওজনহীন ও নমনীয় সুতার সাহায্যে ঝুলিয়ে দিলে এটি যদি ঘর্ষণ এড়িয়ে স্বাধীনভাবে দুলতে থাকে তবে তাকে সরল দোলক বলে। 
  • সরল দোলকের মূলত দুইটি অংশ থাকে- বব এবং ঝুলন বিন্দু । 
  • যে ভারী বস্তুটিকে সুতার সাহায্যে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় সেটিকে বব বলে। 
  • কোনো দৃঢ় অবলম্বনের যে নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে বব ঝোলানো হয় তাকে ঝুলন বিন্দু বলে। 
  • কার্যকরী দৈর্ঘ্য (Effective Length): ঝুলন বিন্দু থেকে ববের ভরকেন্দ্র পর্যন্ত দূরত্বকে কার্যকরী দৈর্ঘ্য বা দোলক দৈর্ঘ্য বলে। একে L দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
  • বিস্তার (Amplitude): সরল দোলকের সাম্যাবস্থান থেকে যে কোনো এক দিকের সর্বোচ্চ দূরত্বকে বিস্তার বলে।
  • পূর্ণ দোলন (Complete Oscillation): বব এক প্রান্ত হতে অপর প্রান্তে গিয়ে আবার আগের প্রান্তে ফিরে আসলে তাকে পূর্ণ দোলন বলে।
  • দোলন কাল (Time Period): একটি পূর্ণ দোলন সম্পন্ন করতে সরল দোলকের যে সময় লাগে তাকে দোলনকাল বলে। একে T দ্বারা প্রকাশ করা হয়।