10 Minute School
Log in

জলবায়ু পরিবর্তন

বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন (Climate Change in Bangladesh)

পরিবেশ, আবহাওয়া ও জলবায়ু

  • পরিবেশকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
  • কোনো স্থানের বাতাসের তাপ, উষ্ণতা, চাপ, আর্দ্রতা, মেঘ, বৃষ্টি, জলীয়বাষ্পের পরিমাণ, বায়ু প্রবাহ প্রভৃতির দৈনন্দিন অবস্থাকে ঐ স্থানের আবহাওয়া বলে।
  • কোন একটি অঞ্চলের ৩০/৪০ বছরের গড় আবহাওয়াকে জলবায়ু বলা হয়।
  • আবহাওয়া সম্পর্কিত বিজ্ঞান- মেটিওরোলজী
  • বাতাসে জলীয়বাষ্পের উপস্থিতিকে বায়ুর আর্দ্রতা বলে।
  • বায়ু প্রবাহিত হয়— উচ্চ চাপের স্থান থেকে নিম্নচাপের দিকে।
  • বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বাড়লে বায়ুর চাপ কমে যায়।
  • ভূপৃষ্ঠ থেকে উপরের দিকে বায়ুচাপ ক্রমশ কমতে থাকে।
  • বায়ুচাপ মাপা হয় ব্যারোমিটার দ্বারা।

বাংলাদেশের জলবায়ু

  • বাংলাদেশের জলবায়ু- সমভাবাপন্ন
  • বাংলাদেশের বার্ষিক গড় তাপমাত্রা- ২৬.০১° সেলসিয়াস।
  • বাংলাদেশের গড় বৃষ্টিপাত – ২০৩ সেন্টিমিটার।
  • সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়- সিলেট অঞ্চলে।
  • বাংলাদেশের উষ্ণতম মাস- এপ্রিল ।
  • বাংলাদেশের শীতলতম মাস- জানুয়ারি।
  • বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর- আগারগাঁও, ঢাকা।
  • বাংলাদেশে ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র- ৪টি (চট্টগ্রাম,ঢাকা, রংপুর ও সিলেট)।
  • বাংলাদেশে আবহাওয়া স্টেশন— ৪১টি।
  • বাংলাদেশের জলবায়ুকে তিনটি ঋতুতে ভাগ করা যায়- গ্রীষ্মকাল, বর্ষাকাল, শীতকাল

বৈশ্বিক উষ্ণতা

  • বৈশ্বিক উষ্ণতা বলতে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে বোঝানো হয়।
  • বৈশ্বিক উষ্ণতার কারণে পৃথিবীর জলবায়ু ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হচ্ছে।
  • বৈশ্বিক উষ্ণতার মূল কারণ হচ্ছে- বায়ুতে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়া। এটি গ্রিন হাউস ইফেক্ট নামেও পরিচিত।

গ্রিন হাউজ গ্যাস

  • সুইডিশ রসায়নবিদ আরহেনিয়াস সর্বপ্রথম গ্রিনহাউজ কথাটি ব্যবহার করেন ১৮৯৬ সালে।
  • প্রকৃতপক্ষে গ্রিন হাউজ হলো এমন একটি কাঁচের তৈরি এবং শীতপ্রধান দেশে ব্যবহৃত এক ধরনের ঘর যার ভেতরে গাছপালা লাগানো হয়।
  • গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে এমন একটি ধরনের প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ভূপৃষ্ঠ হতে বিকিরিত তাপ বায়ুমন্ডলে গ্রিন হাউজ গ্যাস দ্বারা শোষিত হয়ে পুনরায় বায়ুমন্ডলে ফিরে আসে এবং ভূপৃষ্ঠকে উষ্ণ রাখে।

এসিড বৃষ্টি

  • মূলত সালফার ডাই অক্সাইড এসিড বৃষ্টির প্রধান উপাদান।

ওজোন স্তর

  • ভূপৃষ্ঠ থেকে ৬৫ মাইল উপরে বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে ওজোন স্তর অবস্থিত।
  • ওজোন অক্সিজেনের একটি রূপভেদ, এর সংকেত- O_3
  • ১৯৭৩ সালে সর্বপ্রথম ওজোন স্তর ধ্বংসের কারণ হিসেবে CFC- কে চিহ্নিত করা হয়।

অতিবেগুনি রশ্মি (UV ray)

  • এটি এক ধরনের তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ।
  • সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের ক্যান্সারের জন্য দায়ী।

পরিবেশ বিষয়ক সম্মেলন

মন্ট্রিল প্রটোকল
  • এই চুক্তিতে স্বাক্ষরিত দেশের সংখ্যা ১৯৭টি।
  • মন্ট্রিল প্রটোকলের পুরো নাম Montreal Protocol on Substances that Deplete the Ozone Layer
কিয়োটো প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয় জাপানের কিয়োটো শহরে, ১১ ডিসেম্বর, ১৯৯৭ সালে। ২০১২ সালে কাতারের দোহায় অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে দ্বিতীয় প্রতিশ্রুত মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে।
ভিয়েনা কনভেনশন জাতিসংঘের ওজোন স্তরের সুরক্ষা এবং সংরক্ষণ বিষয়ক একটি কনভেনশন।
ধরিত্রী সম্মেলন (The Earth Conference ) ১৯৯২ সালের ৩-৪ জুন ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে দুটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়- ‘আবহাওয়া পরিবর্তন সংক্রান্ত চুক্তি’ (Convention on Climate Change) এবং ‘প্রাণিজগতের বৈচিত্র্য সংক্রান্ত চুক্তি‘ (Convention on Biological Diversity)।
COP- 21 (Conference of Parties)
  • ২০১৭ সালের ২রা জুন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেন।
  • ২০২১ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পুনরায় প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।

পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক দিবসসমূহ

তারিখ দিবসের নাম তারিখ দিবসের নাম
২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব জলাভূমি দিবস ২৯ জুলাই বিশ্ব বাঘ দিবস
৩ মার্চ বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস
১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক নদী রক্ষা দিবস ২২ এপ্রিল বিশ্ব ধরিত্রী দিবস
২১ মার্চ বিশ্ব বন দিবস ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ব পর্যটন দিবস
২২ মার্চ বিশ্ব পানি দিবস অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ব প্রতিবেশ দিবস
২৩ মার্চ বিশ্ব আবহাওয়া দিবস ৪ অক্টোবর বিশ্ব প্রাণী দিবস

পরিবেশ বিষয়ক আন্তর্জাতিক দশক সমূহ

দশক উপজীব্য
২০০৫-২০১৫ ‘জীবনের জন্য পানি’ কর্মপরিকল্পনা দশক
২০১০-২০২০ ‘খরা ও মরুকরণের বিরুদ্ধে আন্দোলন’ দশক
২০১১-২০২০ আন্তর্জাতিক জীববৈচিত্র্য দশক
২০১৪-২০২৪ ‘সবার জন্য টেকসই জ্বালানি’ দশক
২০১৬-২০২৫ জাতিসংঘ ও পুষ্টি উন্নয়ন দশক
২০১৮-২০২৮ ‘টেকসই উন্নয়নের জন্য পানি’ দশক
২০২১-২০৩০ ‘ইকোসিস্টেম পুনরুদ্ধার’ এর  দশক

বাংলাদেশে অবস্থিত পরিবেশ বিষয়ক সংস্থাসমূহ

  • বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ম্যানেজমেন্ট ফোর্স
  • বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন 
  • বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল ল’ইয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (BELA)
  • বাংলাদেশ পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা
  • পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন

বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ

ঘূর্ণিঝড় (Cyclone)  সাধারণভাবে ঘূর্ণিঝড়কে সাইক্লোন বা ট্রপিক্যাল সাইক্লোনও  বলা হয়ে থাকে। সাইক্লোন সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে—নিম্নচাপ ও উচ্চ তাপমাত্রা। নিরক্ষরেখার ০ ডিগ্রি থেকে ৫ ডিগ্রির মধ্যে কোনো ঘূর্ণিঝড় হতে দেখা যায় না। নিরক্ষরেখার ১০ ডিগ্রি থেকে ৩০ ডিগ্রির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় হতে দেখা যায় । পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে সাইক্লোন বিভিন্ন নামে পরিচিত-

  • বাংলাদেশ ও ভারতীয় অঞ্চলে – সাইক্লোন।
  • জাপান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে – টাইফুন।
  • ফিলিপাইনে – বাগুইড বা বোগিও।
  • অস্ট্রেলিয়ায় – উইলী উইলী।
  • আমেরিকা ও আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে – হ্যারিকেন।
সুনামি (Tsunami) 
  • ‘সুনামি’ জাপানি শব্দ, এর অর্থ- পোতাশ্রয়ের ঢেউ।
  • সমুদ্র তলদেশে ভূ-কম্পনের ফলে উপরের জলভাগে প্রবল ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়, একে সুনামি বলে।
  • সাম্প্রতিককালে ভয়াবহ সুনামি হয় ২০০৪ সালে।
  • সাধারণত ৭.৫ মাত্রার ভুমিকম্পের সাথে সুনামি সংঘটিত হয়।
বন্যা ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত হয়—শতাব্দীর ভয়াবহতম বন্যা।
খরা
  • আফ্রিকার দেশসমূহে খরার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি।
  • খরার প্রভাবে অগ্নিকাণ্ডের উপদ্রব বেড়ে যায়।
  • খরা প্রধান অঞ্চলের ফসল- পেঁয়াজ এবং গম।
  • বাংলাদেশে খরার জন্য দায়ী – পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের মেরু অঞ্চলে সৃষ্ট এল-নিনো (El-Nino)।
ভূমিকম্প
  • ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রের নাম- সিসমোগ্রাফ
  • ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণায়ক যন্ত্রের নাম- রিখটার স্কেল
  • বাংলাদেশে ভূমিকম্পের ফলে বদলে গিয়েছে- ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ। (১৮৯৭ সালে)

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ব্যবহৃত সংকেতসমূহ

নদীবন্দর ও সমুদ্র বন্দরের জন্য সতর্কতা সংকেত আলাদা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ব্যবহৃত সংকেত সর্বমোট ১১টি। 

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রসমূহ

  • সার্ক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কেন্দ্র অবস্থিত- নয়াদিল্লি।
  • সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্র (SMRC) অবস্থিত— আগারগাঁও, ঢাকা।
  • মহাকাশ গবেষণা এবং দূর অনুধাবন কেন্দ্র (Space Research and Remote Sensing Organization)-  SPARRSO বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি  প্রতিষ্ঠান।
  • দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো: ১৯৯৩ সালে গঠিত হওয়া এই ব্যুরো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন।
  • বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র: এটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন। এটি বন্যা সংক্রান্ত পূর্বাভাস প্রদান এবং সেটি প্রচারের ব্যবস্থা করে।