কম্পিউটার পেরিফেরালস ও কম্পিউটার আর্কিটেকচার(পর্ব- ৩)
পোর্ট (Port)
- কম্পিউটারে পোর্ট হলো এক ধরনের পয়েন্ট বা সংযোগমুখ। কম্পিউটারের সিস্টেম ইউনিটের সাথে কী-বোর্ড, মাউস, স্পীকার, স্ক্যানার ইত্যাদি যন্ত্রের সংযোগ পয়েন্ট থাকে। এই সংযোগ পয়েন্টকে বলা হয় পোর্ট।
মেল প্লাগ (Male plug)
- যে প্লাগে পিন লাগানো থাকে তাকে বলে মেল প্লাগ।
ফিমেল প্লাগ (Female plug)
- যে প্লাগে ছিদ্র থাকে তাকে বলা হয় ফিমেল প্লাগ (Female plug)।
সংযোগের প্রকৃতি অনুসারে পোর্ট বিভিন্ন ধরনের :
- প্যারালাল পোর্ট,
- সিরিয়াল পোর্ট,
- ইউএসবি পোর্ট,
- মনিটর পোর্ট,
- কী-বোর্ড পোর্ট,
- নেটওয়ার্কিং পোর্ট,
- অডিও পোর্ট,
- ভিডিও পোর্ট,
- গেম পোর্ট
- মাউস পোর্ট ইত্যাদি।
প্যারালাল পোর্ট:
- যে সমস্ত পোর্টে তথ্য সমান্তরালভাবে আদান-প্রদান করতে পারে তাকে প্যারালাল পোর্ট বলে।
- এই পোর্টের সূচনা হয় প্রিন্টার ব্যবহারের জন্য।
- এর নাম হয় প্রিন্টার পোর্ট।
- এর লজিক্যাল নাম LPT (Line Print Terminal)
এই ধরনের পোর্টে তিনটি পৃথক রেজিস্টার থাকে। যথা-
- ডেটা রেজিস্টার ;
- স্ট্যাটাস রেজিস্টার ;
- কন্ট্রোল রেজিস্টার ।
সিরিয়াল পোর্ট :
- যে পোর্টের মধ্য দিয়ে ডেটাসমূহ এক বিট এক বিট করে চলাচল করতে পারে তাকে সিরিয়াল পোর্ট বলে।
- এটি কম্পিউটারের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পোর্ট।
- প্যারালাল পোর্টের তুলনায় এই পোর্টে ডেটা চলাচলের গতি কম।
- যে সব ডিভাইসের মধ্য দিয়ে ডেটাসমূহ সিরিয়াল পদ্ধতিতে চলাচল করে তাকে সিরিয়াল কমিউনিকেশন ডিভাইস বলে।
- আই.বি.এম. কম্প্যাটেবল কম্পিউটারে ২৫-পিন অথবা ৯-পিন-এর ডি-টাইপ কানেক্টর ব্যবহৃত হয়।
ইউএসবি পোর্ট :
- U.S.B. Port-এর পূর্ণ অর্থ হচ্ছে Universal Serial Bus port সিস্টেম ইউনিটের সাথে ইউএসবি বাস ও ইউএসবি সাপোর্টেড ডিভাইসসমূহের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার জন্য মাদার বোর্ডের সাথে যে পোর্ট ব্যবহার করা হয় তাকে ইউএসবি পোর্ট বলা হয় ।
মনিটর পোর্ট :
- মনিটর পোর্টের সাহায্যে কম্পিউটারে সিপিইউ-এর সাথে মনিটর যুক্ত করা হয়।
কী-বোর্ড পোর্ট :
- সিস্টেম ইউনিটের পেছনের প্রান্তে ৫-পিন বিশিষ্ট DIN পোর্টের মাধ্যমে কী-বোর্ডকে কম্পিউটারের সাথে সংযোগ দেওয়া হয়।
- বর্তমানে PS/2 টাইপের কী-বোর্ড পোর্ট ব্যবহৃত হয়। এই জন্য মাদারবোর্ডে ৫-পিনের সিরিয়াল পোর্টের পাশাপাশি ৬-পিনের বিশেষ সিরিয়াল PS/2 পোর্টও থাকে। এতে ৬-পিন বিশিষ্ট DIN কালেক্টর ব্যবহৃত হয়।
নেটওয়ার্কিং পোর্ট:
- পিসিতে নেটওয়ার্কিং-এর জন্য নেটওয়ার্কিং কার্ড ব্যবহার করা হয়। যেমন- LAN Card.
অডিও পোর্ট :
- মাল্টিমিডিয়া পিসিতে ফোন এবং মাইক্রোফোন উভয় ধরনের পোর্টই যুক্ত থাকে। অডিও ইন করার জন্য অডিও পোর্ট, অডিও আউট করার জন্য অডিও আউট বা স্পিকার পোর্ট ব্যবহার করা হয় ।
ভিডিও পোর্ট:
- মাল্টিমিডিয়া পিসিতে ভিডিও-এর জন্য আলাদা কার্ড ব্যবহার করা হয়। ভিডিও ইন বা আউটপুট পোর্ট ব্যবহার করা হয় ।
গেম পোর্ট :
- কম্পিউটারে গেম যথার্থ উপভোগ করার জন্য ব্যবহার করা হয় জয়স্টিক নামে একটি ডিভাইস। এই ডিভাইস ব্যবহারের জন্য মাদারবোর্ডের সাথে যে পোর্ট থাকে তাকেই বলে গেম পোর্ট।
মাউস পোর্ট :
- পার্সোনাল কম্পিউটারে ব্যবহৃত মাউস পোর্টসমূহ সাধারণত সিরিয়াল পোর্টের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। সাধারণত ৯-পিন-এর সিরিয়াল পোর্টের সাথে মাউসের সংযোগ দেওয়া হয়। পার্সোনাল কম্পিউটারে PS/2 টাইপের পোর্ট ব্যবহৃত হয়।
- প্রাণীদেহের সাথে কম্পিউটারের তুলনা করলে বলা যায়, কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার হচ্ছে দেহ আর সফটওয়্যার হচ্ছে প্রাণশক্তি।
- কম্পিউটার সফটওয়্যার বলতে একগুচ্ছ কম্পিউটার প্রোগ্রাম, কর্মপদ্ধতি ও ব্যবহারবিধিকে বোঝায়, যার সাহায্যে কম্পিউটারে কোনো নির্দিষ্ট প্রকারের কাজ সম্পাদন করা যায়।
- অপারেটিং সিস্টেম কম্পিউটারের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকারের সফটওয়্যার চালানো ও সার্বিকভাবে কম্পিউটার পরিচালনার জন্য এক প্রকারের সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলিকে বলা হয় অপারেটিং সিস্টেম।
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার
- প্রয়োজন ও চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন সময় বিভিন্ন প্রকারের সফটওয়্যার তৈরি করা হয় যা অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার নামে পরিচিত।
সফটওয়্যার প্রধানত ২ প্রকার-
- সিস্টেম সফটওয়্যার/ অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার
- এপ্লিকেশন সফটওয়্যার
- সিস্টেম সফটওয়্যার/ অপারেটিং সিস্টেম সফটওয়্যার/ OS।
- সিস্টেম সফটওয়্যার একটি কম্পিউটার সফটওয়্যার যেটার নকশা করা হয়েছে কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারকে পরিচালনা করার জন্য এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যারগুলোকে কাজ করার উপযোগী পরিবেশ প্রদানের জন্য।
উদাহরণ:
- উইন্ডোজ
- ম্যাক
- ইউনিক্স
- লিনাক্স (মুক্ত অপারেটিং সিস্টেম)
অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার
- এপ্লিকেশন সফটওয়্যার তৈরি করা হয় ব্যবহারকরীর চাহিদা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য। কম্পিউটারের আরও কিছু সফটওয়্যার-
BIOS (Basic Input/Output System)
- কম্পিউটার চালু করলে সর্বপ্রথম BIOS কাজ শুরু করে
- কম্পিউটারের ROM এ BIOS সংরক্ষিত থাকে। BIOS কে ফার্মওয়্যারও বলা হয়।
বুট (Boot)
- এ সময় কম্পিউটারের প্রধান মেমোরি থেকে অপারেটিং সিস্টেমকে RAM এ নিয়ে আসে
Assembler
- কম্পিউটারের নির্দেশকে 0 এবং ১ এ পরিণত করে।
কম্পিউটার আর্কিটেকচার
IPOS cycle= Input, Processing, Output and Storage
কম্পিউটার সিস্টেমের কাজ ৪টি
- ইনপুট
- প্রসেসিং
- আউটপুট
- স্টোরেজ
কম্পিউটারে ব্যবহৃত সকল ভৌত যন্ত্রপাতি ও ডিভাইস তিন ভাগে বিভক্ত-
সিপিইউ (CPU)
- কম্পিউটারের যে অংশ ডেটা প্রক্রিয়াকরণের কাজ করে থাকে, তাকে সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বলে।
- কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় অংশ হলো সিপিইউ।
- কম্পিউটারের কাজ করার গতি ও ক্ষমতা সিপিইউ’র উপর নির্ভরশীল।
- স্মৃতি, ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইসগুলোর কাজ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
- সিপিইউ কম্পিউটারের ‘ব্রেইন’ ও ‘হৃদপিন্ড’ স্বরূপ।
সিপিইউ তিনটি অংশ নিয়ে গঠিত-
- নিয়ন্ত্রণ অংশ বা কন্ট্রোল ইউনিট
- গাণিতিক যুক্তি অংশ বা Arithmetic Logic Unit (ALU)
- রেজিস্টার সেট
নিয়ন্ত্রণ অংশ (Control Unit)
- এটি রেজিস্টারসমূহ এবং গাণিতিক যুক্তি অংশের মধ্যে ডেটার আদান-প্রদান তদারকি করে এবং গাণিতিক অংশ কী কাজ করবে তার ইন্সট্রাকশন প্রদান করে
গাণিতিক যুক্তি অংশ (Arithmetic Logic Unit)
- এটি কম্পিউটারের ইন্সট্রাকশনগুলোর নির্বাহ (Execution) কাজ করার জন্য মাইক্রোঅপারেশনগুলো পালন করে।
রেজিস্টার সেট
- প্রক্রিয়াকরণের সময় অস্থায়ীভাবে ডেটা সংরক্ষণের জন্য সিপিইউ এর ভিতরে ইলেকট্রনিক সার্কিট দিয়ে গঠিত রেজিস্টারসমূহ প্রয়োজন হয়।
মাইক্রোপ্রসেসর
- আইসি প্রযুক্তির উন্নতির ধারায় কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশের সকল উপাদানকে একটি মাত্র চিপে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছে। একে মাইক্রোপ্রসেসর বলে।
VLSI (Very Large Scale Integration)
- মাইক্রো কম্পিউটারের সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট VLSI প্রযুক্তির মাধ্যমে একীভূত করে মাইক্রো প্রসেসর তৈরি করা হয়
- মাইক্রো কম্পিউটারের ক্ষমতা মূলত প্রসেসরের উপর নির্ভরশীল।
- সি.পি.ইউ এর এই অংশই মূলত কম্পিউটারের ব্রেইন।
মাদারবোর্ড
কম্পিউটারের প্রধান প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডকে বলা হয়। মাদারবোর্ডকে অনেকে Mainboard বা সিস্টেমবোর্ড ও বলে থাকে।
পাওয়ার সাপ্লাই
মাদার বোর্ডে যুক্ত থাকে যা কেসিং এর সাথেই সংযুক্ত করা হয়ে থাকে।
- এটি প্রাপ্ত AC current কে DC current এ পরিণত করে এবং কম্পিউটারের বিভিন্ন অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
অ্যাডাপ্টর
- Sound Card
- LAN Card/ Network Interface Card
- Fax Modem
- VGA/AGP Card
- TV Tuner Card/ Tv card
- Capture Card
- Jack card
- USB card