10 Minute School
Log in

তড়িৎ প্রবাহ এবং ইলেক্ট্রনিক্স

পরিবাহীর ক্ষুদ্রতম প্রস্থচ্ছেদের মধ্য দিয়ে একক সময়ে যে পরিমাণ চার্জ প্রবাহিত হয় তাকে তড়িৎ প্রবাহ বলে। বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করেন টমাস আলভা এডিসন বিদ্যুৎকে মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানোতে টমাস আলভা এডিসনের অবদান সবচেয়ে বেশি।

  • পরিবাহীতার অবস্থাভেদে পদার্থকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যথা- 

পরিবাহী (Conductor)

যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ অতি সহজেই প্রবাহিত হতে পারে, তাদেরকে পরিবাহী বা সুপরিবাহী বলে। যেমন সোনা, রূপা, তামা, অ্যালুমিনিয়াম, দস্তা, নিকেল, সীসা, পিতল, প্লাটিনাম, রং, ম্যাঙ্গানিজ, অ্যাসিড, লবণ, ভেজা মাটি, নিয়ন, মারকারি, মানবদহে, অম্ল,ক্ষার ইত্যাদি। সকল ধাতু বিদ্যুৎপরিবাহী এবং অধাতুর মধ্যে গ্রাফাইট বিদ্যুৎ পরিবাহী। রূপার বিদ্যুৎ পরিবাহিতা সবচেয়ে বেশি। তামা উত্তম বিদ্যুৎ পরিবাহক।  

অর্ধপরিবাহী (Semi-conductor)

যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ আংশিকভাবে চলাচল করতে পারে অর্থাৎ এমন কিছু পদার্থ আছে যাদের রোধ অত্যন্ত বেশি হওয়া সত্ত্বেও প্রবাহ চালক রূপে এদেরকে ব্যবহার করা যায় তাদেরকে অর্ধপরিবাহী বলে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে অর্ধপরিবাহীর পরিবাহকত্ব বৃদ্ধি পায় এবং আপেক্ষিক রোধ হ্রাস পায়। যেমন–  জার্মেনিয়াম, সিলিকন, পানি, তুলা, অ্যালকোহল, গন্ধক, গ্যালিয়াম, আর্সেনাইড ইত্যাদি।

পরিবাহী (Insulator)

যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ সাধারণত চলতে পারে না, বিদ্যুৎপ্রবাহ চালনার জন্য অতি উচ্চবিভব প্রান্তের প্রয়োজন, তাদেরকে অপরিবাহী বা অন্তরক বলে। যেমনকাচ, প্লাস্টিক, শুষ্ক বাতাস, চীনামাটি, কাগজ, রাবার, ইবোনাইট, মোম, রজন, পেপার ওয়েট, পেপার, অভ্র, পোর্সেলিন, শুষ্ক কাঠ ইত্যাদি।

বিদ্যুতের দুই ধরনের ধর্ম রয়েছে, যথা- 

১. আকর্ষণ ধর্ম: বিপরীতধর্মী চার্জ পরস্পরকে আকর্ষণ করে। 

২. বিকর্ষণ ধর্ম: সমজাতীয় চার্জ পরস্পরকে বিকর্ষণ করে।

  • বিদ্যুৎ দুই প্রকার, যথা- স্থির বিদ্যুৎ ও চল বিদ্যুৎ।
  • যেখানে উৎপত্তি সেখানেই নিষ্পত্তি হয় বলে এই প্রকার বিদ্যুৎকে স্থির বিদ্যুৎ বলে। স্থির বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ভ্যান ডি গ্রাফ (Van de graaff) কর্তৃক জেনারেটর যন্ত্র ব্যবহার উল্লেখযোগ্য।
  • যে বিদ্যুৎ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে প্রবাহিত হতে পারে তাকে চল বিদ্যুৎ বলে। রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় তেল, কয়লা, গ্যাস ইত্যাদি পুড়িয়ে বা নদীর স্রোতের সাহায্যে এ বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়।
  • চল বিদ্যুৎ দুই প্রকার, যথা- একমুখী প্রবাহ এবং পরিবর্তী প্রবাহ। 

একমুখী প্রবাহ (ডি.সি কারেন্ট)

ডি.সি. কথাটির পূর্ণরূপ Direct Current বা একমুখী প্রবাহ অথবা অনুবর্তী প্রবাহ । বিদ্যুৎ যদি সর্বদা একই দিকে প্রবাহিত হয় বা সময়ের সাথে যদি বিদ্যুৎ প্রবাহের দিকের কোনো পরিবর্তন না হয় তাহলে সেই প্রবাহকে ডি.সি. বা একমুখী প্রবাহ বলে। ব্যাটারি ও ডায়নামো থেকে ডি.সি. প্রবাহ পাওয়া যায়। এ বিদ্যুৎ উৎসের এক প্রান্তে ধনাত্মক ও অপর প্রান্ত ঋণাত্মক হয়। 

উদাহরণ- একমুখী প্রবাহ যা আমরা ব্যাটারি থেকে পেয়ে থাকি।   

ডি. সি. সরবরাহের সুবিধা

  • ব্যাটারি চার্জার, তড়িৎপ্রলেপন, ইলেক্ট্রোটাইপিং, তড়িৎপদ্ধতিতে ধাতুর শোধন প্রভৃতি কাজে ডি. সি. সরবরাহ প্রয়োজন। 
  • ডি. সি. সরবরাহে একটি মোটা তার হলেই চলে কিন্তু . সি. সরবরাহে অনেকগুলো সরু সরু তারের সমবায়ে প্রেরক তার গঠন করা হয়। 
  • একই ভোল্টেজে . সি. অপেক্ষা ডি. সি. কম বিপদজনক।

পরিবর্তী প্রবাহ (. সি. কারেন্ট)

.সি. কথাটির পূর্ণরূপ হল Alternating Current বা পরিবর্তী প্রবাহ। যদি বিদ্যুৎ প্রবাহের দিক একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর পরিবর্তিত হয় তাহলে সেই প্রবাহকে .সি. বা পরিবর্তী প্রবাহ বলে। আধুনিক সব তড়িৎ সরবরাহ হলো পরিবর্তী প্রবাহ।

. সি. সরবরাহের সুবিধা

  • ট্রান্সফর্মারের সাহায্যে . সি. ভোল্টেজ উচ্চ মান হতে নিম্নে অথবা নিম্ন মান হতে উচ্চে রূপান্তরিত করা সহজ। 
  • দূরদূরান্তে তড়িৎশক্তি প্রেরণের ব্যাপারে . সি. সরবরাহ ব্যবস্থা ডি. সি. অপেক্ষা অনেক কম ব্যয়বহুল। কারণ এক্ষেত্রে লাইনতার হিসেবে খুব সরু তার ব্যবহার করা যায়।
  • . সি.-কে সহজে একমুখীকারকের (Rectifier) সাহায্যে রূপান্তরিত করা সম্ভব। 
  • . সি. মোটর অন্যান্য যন্ত্রপাতি নির্মাণ করা অনেক সহজ; তাছাড়া যন্ত্রপাতিগুলো অনেক বেশি টেকসই হয় এবং এদের প্রতি খুব বেশি নজর দেয়ার প্রয়োজন হয় না।
  • পরিবর্তী প্রবাহমাত্রা হ্রাস করার জন্য নিরোধককুণ্ডলী (Choke coil) অথবা ধারক ব্যবহার করা যেতে পারে এবং সে ক্ষেত্রে শক্তির অবক্ষয় হয় অতি সামান্য কিন্তু সমপ্রবাহ মাত্রা হ্রাস করতে হলে রোধক ব্যবহার করতে হয় এবং সেক্ষেত্রে তাপজনিত শক্তিক্ষয় প্রচুর পরিমাণে হয়। 
  • বিভব হল বৈদ্যুতিক চাপ।
  • অসীম থেকে প্রতি একক ধনাত্মক আধানকে তড়িৎ ক্ষেত্রের কোনো বিন্দুতে আনতে যে কাজ সম্পন্ন হয় তাকে তড়িৎ বিভব বলে। একে V দ্বারা প্রকাশ করা হয়। অসীম থেকে q পরিমাণ আধান তড়িৎ ক্ষেত্রের কোন বিন্দুতে আনতে যদি w পরিমাণ কাজ সম্পাদন করতে হয়, তাহলে বিভব V = w/q হবে।
  • এস আই পদ্ধতিতে বিভবের একক ভোল্ট 
  • বাংলাদেশে বাসাবাড়িতে ২২০ ভোল্টেজের তড়িৎ ব্যবহার করা হয়।

অ্যামিটার

যে যন্ত্রের সাহায্যে বর্তনীর তড়িৎ প্রবাহ সরাসরি অ্যাম্পিয়ার এককে পরিমাপ করা হয় তাকে অ্যামিটার বলে।

ভোল্টমিটার

যে যন্ত্রের সাহায্যে বর্তনীর যে কোন দুই বিন্দুর মধ্যকার বিভব পার্থক্য। সরাসরি ভোল্ট এককে নির্ণয় করা হয়, তাই ভোল্টমিটার।

  • গ্যালভানোমিটারে কুণ্ডলীর বিক্ষেপ নির্ণয়ের জন্য একটি সূচক বা কাঁটা লাগানো থাকে।
  • বিদ্যুৎ প্রবাহের আন্তর্জাতিক একক হলো অ্যাম্পিয়ার।
  • বর্তনীতে দুটো বিন্দুর মধ্যে বৈদ্যুতিক চাপের পার্থক্য পরিমাপের জন্য ভোল্ট একক ব্যবহৃত হয়। ভোল্টেজ পরিমাপের জন্য ভোল্টমিটার ব্যবহার করা হয়। 

যে যন্ত্রের সাহায্যে কোনো বস্তুতে চার্জের অস্তিত্ব, প্রকৃতি এবং পরিমাণ জানা যায় তাকে তড়িৎবীক্ষণ যন্ত্র বলে। ব্যবহার: চার্জের অস্তিত্ব নির্ণয়, প্রকৃতি নির্ণয়, চার্জের পরিমাণ নির্ণয়, বিভিন্ন পদার্থের তড়িৎ পরিবাহিতার তুলনা প্রভৃতি।

  • একটি আহিত বস্তুকে কোনো পরিবাহকের নিকটে রেখে আহিত বস্তুর প্রভাবে পরিবাহকটিকে আহিত করার পদ্ধতিকে তড়িৎ আবেশ বলে।
  • যে তড়িৎ ব্যবস্থা চার্জ সংরক্ষণ করতে পারে এবং পরবর্তী সময়ে তা ব্যবহার করে শক্তি উৎপাদন করতে পারে তাকে ধারক বলে।
  • ১৭৯৪ সালে আলেসান্দ্রো ভোল্টা সর্বপ্রথম তড়িৎ কোষ আবিষ্কার করেন। এটি সরলতম তড়িৎ কোষ। ব্যাটারিতে তামার পাত ধনাত্মক পাত এবং দস্তার পাত ঋণাত্মক পাত হিসেবে কাজ করে। তরল হিসেবে সালফিউরিক এসিড ব্যবহার করা হয়। ব্যাটারির ধনাত্মক প্রান্তকে অ্যানোড এবং ঋণাত্মক প্রান্তকে ক্যাথোড বলে। এ ব্যাটারি থেকে ডিসি কারেন্ট পাওয়া যায়। ব্যাটারির তড়িচ্চালক বল ১.৫ ভোল্ট। 
  • স্টোরেজ ব্যাটারিতে সীসার ইলেকট্রোডের সাথে সালফিউরিক এসিড ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে সৌর চুল্লীতে স্টোরেজ ব্যাটারি ব্যবহার করে ডি.সি বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

ড্রাইসেল ব্যাটারি

সাধারণ ড্রাইসেলে কার্বন দণ্ড ধনাত্মক পাত এবং দস্তার কৌটা ঋণাত্মক পাত হিসেবে কাজ করে। কার্বন দণ্ডের চারপাশে থাকে কার্বন গুঁড়া ও ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড। ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইড ছেদন নিবারক হিসেবে কাজ করে।

দস্তার কৌটা, কার্বন গুঁড়া এবং ম্যাঙ্গানিজ ডাইঅক্সাইড মাঝে অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইডের ঘন পেস্ট থাকে যা বিদ্যুৎ উত্তেজক হিসেবে কাজ করে। কার্বন ক্যাথোড এবং দস্তা অ্যানোড হিসেবে কাজ করে।

বজ্রপাতের কারণে চার্জগ্রস্ত মেঘ সূচীমুখের সংস্পর্শে এসে দণ্ড বেয়ে মাটিতে চলে যায়। এতে ঘর-বাড়ি বা অট্টালিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।

বজ্রঝড় (Thunderstorms) এক ধরনের ক্রান্তীয় ঝড়। বজ্রপাত ও বিদ্যুৎ চমকানো সহযোগে সংঘটিত ভারী বর্ষণ অথবা শিলাবৃষ্টি বজ্রঝড় নামে পরিচিত। গ্রীষ্মের উষ্ণ ও আর্দ্র দিনে উত্তপ্ত বায়ু হালকা হয়ে উপরে উঠতে থাকে এবং দ্রুত ঠাণ্ডা হয়ে গাঢ় কৃষ্ণ বর্ণের বজ্রমেঘ উৎপন্ন করে।

গাঢ় কৃষ্ণ বর্ণের এই বজ্রমেঘ সচরাচর উল্লম্বভাবে প্রায় ৮ কিমি দীর্ঘ এবং প্রায় ৫ কিমি পর্যন্ত প্রশস্ত হয়ে থাকে। সাধারণত একেকটি পৃথক বজ্রঝড় নিয়ে একটি সম্মিলিত বজ্রঝড় সৃষ্টি হয় যা প্রায় ৩০ কিমি পর্যন্ত প্রশস্ত হতে পারে এবং ৫ ঘণ্টারও অধিককাল স্থায়ী হয়। 

বৈদ্যুতিক ক্ষমতা (Electric power): বিদ্যুৎ প্রবাহের ফলে একক সময়ে সম্পন্ন কাজকে বা তড়িৎশক্তি ব্যয়ের হারকে ক্ষমতা বলে । তড়িৎ প্রবাহের ফলে t সেকেন্ডে w জুল পরিমাণ কাজ সম্পন্ন হলে ক্ষমতা P = w/t

  •  কাজ করার হারকে ক্ষমতা বলে। সুতরাং, কাজ = ক্ষমতা x সময় বা, W = p x t বিদ্যুৎ প্রবাহের ক্ষেত্রে এই কাজকেই ব্যয়িত শক্তি বলে ।
  • ওয়াট সেকেন্ড বা জুল (J)।
  • ক্ষমতার একক কিলোওয়াট এবং সময়ের একক ঘণ্টা হিসেবে প্রকাশ করলে শক্তির একক কিলোওয়াট-ঘণ্টা (Kilowatt-hour) এককে প্রকাশিত হয়। একে এককে ইউনিট বলে। 
  • বিদ্যুৎ শক্তি পরিমাপের একক  কিলোওয়াট-ঘণ্টা বা বোর্ড অব ট্রেড ইউনিট। 
  • এক কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তড়িৎ যন্ত্র এক ঘণ্টায় যে শক্তি ব্যয় করে তাকে এক কিলোওয়াট-ঘণ্টা বলে।
  • আমরা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করার সময় শক্তি হিসেবে কিলোওয়াট-ঘণ্টায় বিল পরিশোধ করি; একে বোর্ড অব ট্রেড ইউনিট (B.O.T unit) বা সংক্ষেপে ইউনিট বলে। 
  • ব্যাটারির তড়িচ্চালক বল 1.5 volt এর অর্থ হল ব্যাটারির পজেটিভ মেরু থেকে নেগেটিভ মেরুতে 1 কুলম্ব পরিমাণ তড়িৎ চালনা করতে 1.5 জুল কাজ করতে হয়।
  • পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য তড়িৎ প্রবাহ বিঘ্নিত হয় তাকে রোধ (Resistance) বলে। ১৮২৬ খ্রিস্টাব্দে বিশিষ্ট জার্মান পদার্থবিদ জর্জ সাইমন ওহম সর্বপ্রথম বস্তুর রোধ-এর তত্ত্বটি আবিষ্কার করেন। 
  • বালবের আলোর ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি এবং স্থায়িত্বের জন্য বাল্ব বায়ুশূন্য না করে নিষ্ক্রিয় গ্যাস ভর্তি করা হয়।
  • বৈদ্যুতিক বাল্ব আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন।

বৈদ্যুতিক বাতির গায়ে 220V-100W লেখার অর্থ 

  • 220v-100W লেখার V দ্বারা ভোল্ট এবং W দ্বারা ওয়াট বোঝানো হয়। ভোল্ট হলো বৈদ্যুতিক চাপের একক এবং ওয়াট হলো বৈদ্যুতিক ক্ষমতার একক।
  • বালবটির সঙ্গে 220 ভোল্ট বিভব-পার্থক্যবিশিষ্ট লাইনের দু’প্রান্ত যোগ করলে প্রতি সেকেন্ডে 100 জুল বৈদ্যুতিক শক্তি খরচ হবে এবং এতে এর ঔজ্জ্বল্য সবচেয়ে বেশি হবে।
  • 220 ভোল্টের বেশি বিভব-পার্থক্য বিশিষ্ট লাইনের সঙ্গে যোগ করলে বাল্বের ফিলামেন্ট নষ্ট হয়ে যেতে পারে। 
  • কোনো কারণে বিপরীতধর্মী তড়িতের দু’টি লাইনের মধ্যে সরাসরি সংযোগ ঘটলে সমগ্র লাইনের রোধ খুব কমে যায়। ফলে লাইনে তড়িৎ প্রবাহ হঠাৎ খুব বেড়ে যায়। এতে প্রচুর তাপ উৎপন্ন হয় এবং লাইনে আগুন ধরে যায় একে শট সার্কিট বলে।
  • সার্কিট ব্রেকার এমন এক প্রকার বৈদ্যুতিক সুইচ যা কোনো স্থানে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট দেখা দিলে মূল উৎস হতে সেই স্থানকে আপনা থেকেই বিচ্ছিন্ন করে দেয়। 
  • বৈদ্যুতিক বর্তনীতে ব্যবহৃত নিম্ন গলনাঙ্কের ছোট সরু ধাতব তার হচ্ছে ফিউজ। 
  • নিরাপত্তা ফিউজ ২৫ শতাংশ টিন ও ৭৫ শতাংশ সীসা দিয়ে তৈরি।
  • একটি ফিউজের গায়ে লেখা রয়েছে ৬ অ্যাম্পিয়ার লেখার অর্থ হলো- ফিউজের মধ্য দিয়ে ৬ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত বিদ্যুৎ প্রবাহ নিরাপদ। এর অধিক হলে ফিউজটি পুড়ে যাবে। 
  • বৈদ্যুতিক মেইন লাইনের সাথে চীনামাটির হোল্ডারে একটি সরু এবং কম গলানাংকের তার যুক্ত থাকে। একে ফিউজ তার বলে। ফিউজ টিন ও সীসার সংকর ধাতুর তৈরি একটি তার।
  • বৈদ্যুতিক মোটর হলো এমন একটি কৌশল এবং ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক্তি যান্ত্রিক শক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
  • মোটরে প্রবাহিত তড়িৎ এর ধরন অনুযায়ী মোটর সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- এসি মোটর ও ডিসি মোটর।
  • ট্রান্সফরমার একটি ইলেক্ট্রিক্যাল যন্ত্র যা পরিবর্তনশীল বিদ্যুৎকে (Alternating current) এক ভোল্টেজ থেকে অন্য ভোল্টেজে রূপান্তরিত করে।
  • ট্রান্সফরমারে দুটি উইন্ডিং থাকে, প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি উইন্ডিং। 
  • ট্রান্সফরমারের ভোল্টেজ পরিবর্তনের হার প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি কয়েলের প্যাঁচ সংখ্যার হারের উপর নির্ভর করে।
  • যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে খুব সহজে তড়িৎপ্রবাহ চলাচল করতে পারে তাদেরকে পরিবাহী পদার্থ বলে। যেমন: সোনা, তামা, রূপা, অ্যালুমিনিয়াম।
  • যে সকল পদার্থের মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চলাচল করতে পারে না  তাদেরকে অপরিবাহী বা অন্তরক পদার্থ বলে। যেমন: রাবার, প্লাস্টিক, কাঠ, কাঁচ।
  • বিদ্যুৎ পরিবাহীতার দিক থেকে পরিবাহী ও অপরিবাহী বস্তুর মাঝামাঝি অবস্থার বস্তুকে সেমিকন্ডাক্টর বা অর্ধ-পরিবাহী বলে। 
  • ট্রানজিস্টর: দুই ধরনের অর্ধপরিবাহী দিয়ে গঠিত যন্ত্র হলো ট্রানজিস্টর। ট্রানজিস্টরে একই অর্ধপরিবাহীর দুটি স্তরের মধ্যে অপর একটি অর্ধপরিবাহীর স্তর জোড়া লাগানো হয়। দুটি p- টাইপ সিলিকন বারের মধ্যে একটি n-টাইপ বার কিংবা দুটি n- টাইপ বারের মধ্যে একটি p- টাইপ সিলিকন বার যুক্ত করে যথাক্রমে p-n-p ও n-p-n  ট্রানজিস্টর তৈরি করা হয়। কাজেই ট্রানজিস্টর দুটি p-n জংশন থাকে। ট্রানজিস্টর ক্ষুদ্র অন্তর্গামী তরঙ্গকে বহির্গামীতে বিবর্ধিত করে। এজন্য এটি ইলেকট্রনিক বিবর্ধক ও সুইচ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। 
  • যে যন্ত্রের সাহায্যে পরিবর্তী প্রবাহ বা এ.সি. প্রবাহকে একমুখী প্রবাহ বা ডি.সি. প্রবাহে পরিবর্তিত করা হয় তাকে রেকটিফায়ার বলে। 
  • অ্যামপ্লিফাই শব্দের অর্থ বিবর্ধন এবং অ্যামপ্লিফায়ার হলো বিবর্ধক। বিদ্যুৎশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে যে যন্ত্র এর ইনপুটে প্রদত্ত সিগন্যালকে বিবর্ধিত করে তাকে অ্যামপ্লিফায়ার বলে। ট্রানজিস্টর এক ধরনের অ্যামপ্লিফায়ার। অনেকগুলো ট্রানজিস্টর যুক্ত করে অ্যামপ্লিফায়ার তৈরি করা হয় । 
  • ডায়োড একটি দু’প্রান্তবিশিষ্ট ইলেক্ট্রনিক উপাদান যার রোধ শূন্য বা শূন্যের কাছাকাছি। একটি p- টাইপ অর্ধপরিবাহক ও একটি n- টাইপ অর্ধপরিবাহক পাশাপাশি জোড়া বা স্পর্শ লাগিয়ে p-n জাংশন ডায়োড তৈরি করা হয়। p-n জাংশন ডায়োড পর্যাবৃত্ত তড়িৎ প্রবাহকে এক দিকে প্রবাহিত করে। তাই এর নাম অর্ধপরিবাহক রেকটিফায়ার। এটি তড়িৎপ্রবাহকে একমুখীকরণে ব্যবহৃত হয়। ডায়োড সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় রেকটিফায়ার হিসেবে। যে যন্ত্র (ইলেক্ট্রনিক বর্তনী) পরিবর্তী বিদ্যুৎ প্রবাহকে (A.C. current) একমুখী বিদ্যুৎ প্রবাহে (D.C. current) পরিণত করে তাকে রেক্টিফায়ার বলে।
  • ইন্ট্রিগ্রেটেড সার্কিট হলো সে বর্তনী যাতে বর্তনী উপাংশগুলো একটি ক্ষুদ্র অর্ধপরিবাহক চিপে (সাধারণত সিলিকনের) বিশেষ প্রক্রিয়ায় গঠন করা হয় যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঐ চিপের অংশ। ইন্ট্রিগ্রেটেড সার্কিট অনেকগুলো যন্ত্র যেমন – রোধক, ধারক, ডায়োড, ট্রানজিস্টর ইত্যাদি এবং এদের আন্তঃসংযোগ ক্ষুদ্র প্যাকেজ হিসেবে থাকে যাতে এরা একটি পূর্ণ ইলেকট্রনিক কার্যাবলি সম্পন্ন করতে পারে।
  • VLSI এদের বৈশিষ্ট্য হলো এতে ১০০০ এর অধিক যুক্তি গেইট (Logic Gate) থাকে।