বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি (Geography of Bangladesh)
বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান বর্ণনা
- বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ব-দ্বীপ।
- বাংলাদেশের ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় অর্ধেক অংশ গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র এবং মেঘনা- এই তিনটি বৃহৎ নদীপ্রণালীর সর্বনিম্ন ভাটিতে অবস্থিত।
বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চল
পার্ব্যত চট্টগ্রাম, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম জেলার পূর্বাংশ ও কক্সবাজার ও সিলেট জেলার উত্তর-পূর্বাংশ এবং মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণাংশ।
ভূমির অবস্থা এবং গঠনের সময়ানুক্রমিক দিক হতে বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতিকে তিনটি প্রধান বিভাগে ভাগ করা যায়-
- টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ।
- প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ।
- সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি।
টারশিয়ারি যুগের পাহাড়সমূহ
- টারশিয়ারি অর্থ – তৃতীয়।
- ভূ-তাত্ত্বিকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ভূমিরূপ গঠিত হয় টারশিয়ারি যুগে।
বাংলাদেশের এ টারশিয়ারি যুগের পাহাড়গুলোকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়-
- দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ
- উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়সমূহ
- চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলে জুম চাষপদ্ধতি দেখা যায়।
- মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সীমানায় অবস্থিত পাহাড়গুলো কোনোরূপ গিরিশ্রেণি গঠন করেনি। এদেরকে ত্রিপুরার পাহাড় বলা হয়।
- সম্প্রতি সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় পাওয়া গেছে ইউরেনিয়াম।
প্লাইস্টোসিন কালের সোপানসমূহ
- প্লাইস্টোসিন হলো বরফ যুগ।
- প্লাইস্টোসিনকালের সোপানসমূহ অঞ্চলের মাটির রং লাল ও ধূসর।
এই উচ্চভূমিকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়-
- বরেন্দ্র ভূমি
- মধুপুর ও ভাওয়ালের গড়
- লালমাই পাহাড়
- সর্ববৃহৎ প্লাইস্টোসিন যুগের উচু ভূমি – বরেন্দ্রভূমি।
- বাংলাদেশের সবচেয়ে খরাপ্রবণ অঞ্চল – উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল।
- লালমাই পাহাড় কুমিল্লা শহরের পশ্চিমে অবস্থিত।
- বরেন্দ্রভূমি বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ এবং বাংলাদেশের গজারী বৃক্ষের কেন্দ্র।
- ভাওয়াল ও মধুপুরের বনভূমি -শালবৃক্ষের জন্য বিখ্যাত।
- লালমাই পাহাড়ের মাটি লাল এবং নুড়ি,বালি ইত্যাদি দ্বারা গঠিত।
সাম্প্রতিককালের প্লাবন সমভূমি
- এ অঞ্চল পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা প্রভৃতি নদ-নদী ও এদের উপনদী ও শাখানদী বাহিত পলিমাটি দ্বারা গঠিত।
- এ অঞ্চলটি বাংলাদেশের অধিকাংশ স্থানব্যাপী বিস্তৃত।
- বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের সমভূমিকে সাধারণত ব-দ্বীপ বলা হয়।
সক্রিয় ব-দ্বীপ
- পূর্বে মেঘনা নদীর মোহনা হতে পশ্চিমে গড়াই মধুমতি নদী পর্যন্ত বিস্তৃত ব-দ্বীপ সমভূমির পূর্বাংশকে সক্রিয় ব-দ্বীপ বলা হয়।
বাংলাদেশের নদ-নদী ( WATER BODIES OF BANGLADESH)
- বাংলাদেশের নদীমালা এর গর্ব। এখানে প্রায় ৭০০টি নদী-উপনদী সমন্বয়ে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ নদীব্যবস্থা গড়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের নদীমালাকে চারটি প্রধান নদীব্যবস্থা বা নদী প্রণালীতে বিভক্ত করা যেতে পারে-
- ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদী প্রণালী
- গঙ্গা-পদ্মা নদী প্রণালী
- সুরমা-মেঘনা নদী প্রণালী এবং
- চট্টগ্রাম অঞ্চলের নদ-নদীসমূহ।
- বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত আন্তর্জাতিক বা আন্তসীমান্ত নদী ৫৭টি।
- মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসা অভিন্ন নদী ৩টি (সাঙ্গু, মাতামুহুরী এবং নাফ)।
- ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা অভিন্ন নদী ৫৪টি।
- বাংলাদেশের সবচেয়ে নাব্য নদী- মেঘনা।
- বৃহত্তম নদী- মেঘনা।
- দীর্ঘতম নদী- ব্রহ্মপুত্র।
- প্রশস্ততম নদী- মেঘনা।
- খরস্রোতা নদী- কর্ণফুলী।
- গভীরতম নদী- মেঘনা।
নদী | বিভক্ত করেছে |
নাফ | বাংলাদেশ ও মায়ানমারকে |
হাড়িয়াভাঙ্গা | বাংলাদেশ ও ভারতকে |
- বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছে কুলিখ নদী।
- বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চর রয়েছে যমুনা নদীতে।
- মেঘনা নদীর ভারতীয় অংশের নাম বরাক।
- বরাক নদীতেই টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
- টিপাইমুখ বাঁধ অবস্থিত – ভারতের মণিপুর রাজ্যে।
- ‘বাকল্যান্ড বাঁধ’ অবস্থিত বুড়িগঙ্গার তীরে।
নদী | অপর নাম |
পদ্মা | কীর্তিনাশা |
যমুনা | জোনাই |
ব্রহ্মপুত্রে | লৌহিত্য |
বুড়িগঙ্গা | দোলাই |
বঙ্গোপসাগর
- ভারত মহাসাগরের অংশবিশেষ
- বঙ্গোপসাগরের একটি উল্লেখযোগ্য খাতের নাম Swatch of No Ground যা বাংলায় ‘গঙ্গাখাত’ নামে সুপরিচিত
অন্যান্য
- বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিল – চলনবিল (পাবনা ও নাটোর জেলা, সিরাজগঞ্জ)
- বাংলাদেশের বৃহত্তম হাওড় -হাকালুকি (মৌলভীবাজার, সিলেট)
- বর্তমানে বাংলাদেশে সমুদ্রবন্দর –৩টি (চট্টগ্রাম, মংলা ও পায়রা)
- পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ – বাংলাদেশ
- বাংলাদেশের বৃহত্তম ব-দ্বীপ- সুন্দরবন
- বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপ- ভোলা
- কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ- সেন্টমার্টিন
- সেন্টমার্টিন দ্বীপের অপর নাম- নারিকেল জিঞ্জিরা
- এটি বাংলাদেশের সবেচেয়ে ছোট ইউনিয়ন ও সর্ব দক্ষিণের দ্বীপ
নদ-নদীর উৎপত্তি
নদী | উৎপত্তিস্থল |
পদ্মা | হিমালয়ের গঙ্গোত্রী হিমবাহ |
মেঘনা | আসামের নাগা মনিপুর পাহাড়ের দক্ষিণে লুসাই পাহাড় |
যমুনা | কৈলাশ শৃঙ্গের মানস সরোবর |
ব্রহ্মপুত্র | কৈলাশ শৃঙ্গের মানস সরোবর |
কর্ণফুলী | মিজোরামের লুসাই পাহাড় |
করতোয়া | সিকিমের পর্বত অঞ্চল |
তিস্তা | সিকিমের পর্বত অঞ্চল |
সাঙ্গু | আরাকান পাহাড় |
- গঙ্গা (পদ্মা) চারটি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত (চীন, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশ)।
- ব্রহ্মপুত্র তিনটি দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত (চীন, ভারত ও বাংলাদেশ)।
নদীর মিলনস্থল
নদী | মিলনস্থল |
পদ্মা ও মেঘনা | চাঁদপুর |
পদ্মা ও যমুনা | গোয়ালন্দ |
সুরমা ও কুশিয়ারা | হবিগঞ্জ জেলার আজমিরিগঞ্জ উপজেলা |
মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র | ভৈরব বাজার |
- বাংলাদেশের জলসীমায় উৎপত্তি ও সমাপ্ত নদী হালদা।
- বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালী।
- নিঝুম দ্বীপ মেঘনা নদীর মোহনায় অবস্থিত, হাতিয়া, নোয়াখালী।
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ (RESOURCES OF BANGLADESH)
- বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল – পাট
- বাংলাদেশের দ্বিতীয় অর্থকরী ফসল – চা
- রবি শস্য- শীতকালীন
- খরিপ শস্য – গ্রীষ্মকালীন
- সর্বশেষ কৃষিশুমারি অনুষ্ঠিত হয় – ২০১৯ সালে
- স্বাধীনতা পরবর্তী প্রথম কৃষিশুমারী – ১৯৭৭
- সবচেয়ে বেশি চা বাগান আছে এবং উৎপাদন হয় – মৌলভীবাজারে
- কেন্দ্রীয় গো প্রজনন খামার- সাভারে
- বাংলাদেশে আমন ধান কাটা হয় অগ্রহায়ণ-পৌষ মাসে
- বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি উৎপাদিত ধান – বোরো ধান
- পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বনভূমি থাকা প্রয়োজন – ২৫%
- বাংলাদেশের আছে – ১৭.৬২%
সুন্দরবন (Mangrove Forest)
- বাংলাদেশের বৃহত্তম বন সুন্দরবন।
- সুন্দরবনের আয়তন- ১০,০০০ বর্গ কিলোমিটার।
- ৬০% বাংলাদেশে পড়েছে, বাকি ৪০% ভারতে।
- পৃথিবীর বৃহত্তম টাইডাল ও ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবন।
- সুন্দরবনে বাঘ গণনায় ব্যবহৃত হয় পাগমার্ক পদ্ধতি।
বিবিধ
- অঞ্চল হিসেবে বাংলাদেশের বৃহত্তম বনভূমি পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের বনভূমি।
- পার্বত্য বনাঞ্চলকে বলা হয় চিরহরিৎ বন।
- বাংলাদেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদী।
- বাংলাদেশের চিংড়িকে বলা হয় White Gold।
- বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি কুমির প্রজনন কেন্দ্র করমজল, সুন্দরবনে অবস্থিত।
খনিজ সম্পদ
- বাংলাদেশে সর্বপ্রথম গ্যাসক্ষেত্র আবিস্কৃত হয় ১৯৫৫ সালে, সিলেটের হরিপুরে
- গ্যাস উত্তোলন শুরু হয় – ১৯৫৭ সালে।
- সবচেয়ে বেশি গ্যাস ব্যবহৃত হয় – বিদ্যুৎ উৎপাদনে।
- পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র – রূপপুর (পাবনা)।
- বাংলাদেশের প্রথম সৌরবিদ্যুৎ চালু হয় – নরসিংদীতে।
- দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র – কক্সবাজারের কুতুবদিয়া।
- বাংলাদেশে এ পর্যন্ত আবিস্কৃত গ্যাসক্ষেত্র – ২৯টি।
- বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ – কয়লা।
- বাংলাদেশের বড় কয়লা খনি – দিনাজপুর জেলার দীঘিপাড়ায়।
- বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি অবস্থিত – দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর থানায়।
- বাংলাদেশে চুনাপাথর পাওয়া যায় – জয়পুরহাট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, জাফলং, সেন্টমার্টিন ও সীতাকুণ্ডে।
- চীনামাটি পাওয়া যায় – নেত্রকোণা, নওগাঁ ও চট্টগ্রামে।
- বাংলাদেশে কঠিন শিলা পাওয়া গেছে – দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায়।
- বাংলাদেশের দীর্ঘতম গাছের নাম – বৈলাম।
- বাংলাদেশে সর্বপ্রথম খনিজ তেল পাওয়া যায় – ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে সিলেট জেলার হরিপুরে।
- সাফারী ও ইকো পার্কের উদ্দেশ্য হলো – বনের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ করা।
আইসিটি বিষয়ক যেকোনো সমস্যায় ঘুরে আসো এই প্লেলিস্টটি থেকেঃ
এইচএসসি ভূগোল ১ম পত্র | HSC Geography 1st Paper
এইচএসসি পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই টপিকটি দেখে নাও এক নজরেঃ
এডমিশন ও চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ
- ভার্সিটি B Unit + গুচ্ছ এডমিশন কোর্স – ২০২৩
- বিসিএস প্রিলি লাইভ কোর্স
- ব্যাংক জবস কোর্স
- প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা কোর্স – ২০২৩
- সরকারি চাকরি প্রস্তুতি বেসিক কোর্স
- English for Govt. Jobs
- GK for Govt. Jobs
১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com