10 Minute School
Log in

মাইটোসিস | Mitosis

মাইটোসিস (Mitosis) এর বৈশিষ্ট্য :

  • এ প্রক্রিয়ায় প্রতিটি ক্রোমোজোম লম্বালম্বিভাবে তথা অনুদৈর্ঘ্যে দুটি ক্রোমাটিডে বিভক্ত হয়।
  • প্রতিটি ক্রোমাটিড তথা অপত্য ক্রোমোজোম তার নিকটস্থ মেরুতে পৌঁছে দুটি অপত্য নিউক্লিয়াসের সৃষ্টি করে। কাজেই দুটি অপত্য কোষে ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান থাকে।
  • অপত্য কোষগুলো মাতৃকোষের সমগুণ সম্পন্ন হয়, কারণ জীবের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রক জিনসমূহ বহনকারী ক্রোমোজোমগুলোর প্রতিটি লম্বালম্বিভাবে বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য কোষের নিউক্লিয়াসে যায়।
  • অপত্য কোষের ক্রোমোজোম (Chromosome) সংখ্যা মাতৃকোষের ক্রোমোজোম সংখ্যা সমান থাকে।

অপত্য কোষ বৃদ্ধি পেয়ে মাতৃকোষের সমান আয়তনের হয়।

মাইটোসিস এর ধাপ সমূহ (Steps of mitosis)

প্রোফেজ (Prophase)

  • ক্রোমোজোমের জল বিভাজন হয় (dehydration)।
  • ক্রোমোজোম মোটা, খাটো, সংকুচিত হয়ে দৃষ্টিগোচর হয়।
  • Cdk (সাইক্লিন ডিপেন্ডেন্ট কাইনেজ) এর জন্য ফসফোরাইলেশন ঘটে।
  • ক্রোমাটিডে বিভক্ত হয়।
  • স্পিন্ডল তন্তু সৃষ্টির সূচনা হয়।

প্রো-মেটাফেজ (Pro Metaphase)

  • স্পিন্ডল যন্ত্র তৈরি সম্পন্ন হয়।
  • নিউক্লিয়াস ও নিউক্লিয়ার মেমব্রেন বিলুপ্ত হয়।
  • ক্রোমোজোমীয় নৃত্য দেখা যায়।
  • ট্র্যাকশন ফাইবারের সাহায্যে ক্রোমোজোম সেন্ট্রোমিয়ারে সঙ্গে যুক্ত হয় (কাইনেটোকোর প্রোটিনে)।

মেটাফেজ (Metaphase)

  • কোষ বিভাজনের মেটাফেজ দশায় স্পিন্ডল যন্ত্রের বিষুবীয় অঞ্চলে ক্রোমোসোমের বিন্যস্ত হওয়াকে মেটাকাইনেসিস বলে।
  • এ পর্যায়ে ক্রোমাটিডগুলো সবচেয়ে বেশি মোটা, খাটো ও স্পষ্ট দেখা যায়। ক্রোমোসামের খাটো ও মোটা হওয়াকে বলা হয় কন্ডেনসেশন (Condensation)।
  • একটি অতিমাত্রায় কয়েলিং (coiling) প্রক্রিয়ায় এটি হয়ে থাকে তাই একে বলা হয় সুপার কয়েলিং। 
  • মেটাফেজ পর্যায়ের শেষ ভাগে প্রতিটি সেন্ট্রোমিয়ার সম্পূর্ণ বিভক্ত হয়ে দুটি অপত্য সেন্ট্রোমিয়ার সৃষ্টি করে। 

এনাফেজ (Anaphase)

  • এ পর্যায়ে অপত্য ক্রোমোসোমসমূহ বিষুবীয় অঞ্চল থেকে মেরুমুখী চলতে শুরু করে। 
  • অপত্য ক্রোমোসোমের মেরু অভিমুখী চলনে সেন্ট্রোমিয়ারই অগ্রগামী থাকে এবং বাহুদ্বয় অনুগামী হয়, ফলে সেন্ট্রোমিয়ারের অবস্থান অনুযায়ী ক্রোমোসোমগুলো ইংরেজি V (মেটাসেন্ট্রিক), L (সাবমেটাসেন্ট্রিক), J (অ্যাক্রোসেন্ট্রিক) ও I (টেলোসেন্ট্রিক) অক্ষরের মতাো দেখায়। অপত্য ক্রোমোসোমগুলো মেরুর কাছাকাছি পৌছালেই অ্যানাফেজ তথা গতিপর্যায়ের সমাপ্তি ঘটে।

টেলোফেজ (Telophase)

  • অপত্য ক্রোমোসোমসমূহ দুই বিপরীত মেরুতে স্থির অবস্থান নেয় এবং ক্রোমোসোমগুলোতে আবার জলযোজন (hydration) ঘটে।
  • এ পর্যায়ের শেষের দিকে দুই মেরুতে ক্রোমোসোমগুলোর চারদিকে নিউক্লিয়ার এনভেলপ এবং স্যাট ক্রোমোসোমের গৌণ কুঞ্চনে নিউক্লিয়োলাসের পুনঃআবির্ভাব ঘটে। 

মাইটোসিস নিয়ে অন্যান্য তথ্য (Other information on mitosis)

অনিয়মিত মাইটোসিস :

একটি কোষের বিভাজন নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন যেন অপ্রয়োজনীয়ভাবে কোষের সংখ্যা বেড়ে না যায়। অস্বাভাবিকভাবে কোষের সংখ্যা বেড়ে গেলে আমরা সেই ঘটনাকে ‘ক্যান্সার’ (Cancer) বলি। কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজিত হয়ে টিউমার সেল তৈরি করে। (একে orcogenesis বলে)

কোষ বিভাজনের ধাপে ধাপে কিছু ‘চেক পয়েন্ট’ থাকে যা কোষের বিভাজনকে নিয়ন্ত্রণ করে। এই কাজে জড়িত থাকে কিছু প্রোটিন, যাদের Tumor Supressor Protein বলে। P^{53} এদের মধ্যে অন্যতম। এই প্রোটিনটি অকার্যকর হয়ে গেলে : ‘চেক পয়েন্ট’ এ কোষ বিভাজনকে নিয়ন্ত্রন করার ক্ষমতা হারিয়ে যায়। তখন মাইটোসিস হয় ইচ্ছেমতো। তৈরি হয় টিউমার।

কিছু জিন বা জিনের পরিবর্তন (Mutafion) এর কারণে কোষ চক্র বিনষ্ট হয়। আর এই ঘটনার পেছনে কিছু পদার্থ ভূমিকা রাখে, যেগুলোকে মিউটাজেন বলে।

কোষের মৃত্যু :

  1. Necrosis : পুষ্টির অভাবে কোষের মৃত্যু।
  2. Apoplesis : জেনেটিক্যাল মৃত্যু।

মাইটোটিক ইনডেক্স :

Mitotic Index (MI) =\frac{মাইটোসিসরত\; কোষ\; সংখ্যা}{মোট\; কোষ\; সংখ্যা}