10 Minute School
Log in

শব্দ প্রকরণ

শব্দের গঠনমূলক শ্রেণিবিভাগ (Structural classification of word)

  • দুই প্রকার: 
মৌলিক শব্দসাধিত শব্দ
যেসব শব্দ বিশ্লেষণ করা যায় না বা ভেঙে আলাদা করা যায় না, সেগুলোকে মৌলিক শব্দ বলে।যেসব শব্দকে বিশ্লেষণ করা হলে আলাদা অর্থবোধক শব্দ পাওয়া যায়, সেগুলোকে সাধিত শব্দ বলে। 
মৌলিক শব্দগুলোই হচ্ছে ভাষার মূল উপকরণ। সাধারণত একাধিক শব্দের সমাস হয়ে কিংবা প্রত্যয় বা উপসর্গ যোগ হয়ে সাধিত শব্দ গঠিত হয়ে থাকে।
গোলাপ, নাক, লাল, তিন।চাঁদমুখ, নীলাকাশ, ডুবুরি, চলন্ত, প্রশাসন, গরমিল।

শব্দের অর্থমূলক শ্রেণিবিভাগ ( Semantic Classification of word )

তিন প্রকার:

যৌগিক শব্দরূঢ়ি শব্দযোগরূঢ় শব্দ 
যে সকল শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক অর্থ একই রকম, সেগুলোকে যৌগিক শব্দ বলে। যে শব্দ প্রত্যয় বা উপসর্গযোগে মূল শব্দের অনুগামী না হয়ে অন্য কোনো বিশিষ্ট অর্থ জ্ঞাপন করে, তাকে রূঢ়ি শব্দ বলে। সমাস নিষ্পন্ন যে সকল শব্দ সম্পূর্ণভাবে সমস্যমান পদসমূহের অনুগামী না হয়ে কোনো বিশিষ্ট অর্থ গ্রহণ করে, তাদের যোগরূঢ় শব্দ বলে
গায়ক = গৈ+ণক (অক) – অর্থ: গান করে যে।

 

বাবুয়ানা= বাবু+আনা – অর্থ: বাবুর ভাব।

গবেষণা= (গো+এষণা), অর্থ- গরু খোঁজা; বর্তমান‍ অর্থ: ব্যাপক অধ্যয়ন ও পর্যালোচনা।পঙ্কজ- পঙ্কে জন্মে যা (উপপদ তৎপুরুষ সমাস)। শৈবাল, শালুক, পদ্মফুল প্রভৃতি নানাবিধ উদ্ভিদ পঙ্কে জন্মে থাকে। কিন্তু পঙ্কজ শব্দটি একমাত্র পদ্মফুল অর্থেই ব্যবহৃত হয়। তাই পঙ্কজ একটি যোগরূঢ় শব্দ।

শব্দের উৎসমূলক শ্রেণিবিভাগ (Etymological Classification of Word)

পাঁচ প্রকার: 

  1. তৎসম শব্দ – যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে সরাসরি বাংলায় এসেছে এবং যাদের রূপ অপরিবর্তিত রয়েছে। যেমন: চন্দ্র, নক্ষত্র, মনুষ্য ইত্যাদি।
  2. অর্ধ-তৎসম –    বাংলা ভাষায় যেসব সংস্কৃত শব্দ কিছুটা পরিবর্তিত আকারে ব্যবহৃত হয় তাদের বলা হয় অর্ধ-তৎসম শব্দ। যেমন: গিন্নী, ছেরাদ্দ, জ্যোছনা, বোষ্টম, কুচ্ছিত ইত্যাদি।
  3. তদ্ভব শব্দ – যেসব শব্দের মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায়, কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তন ধারায় প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়েছে। যেমন: হাত, চামার ইত্যাদি।
  4. দেশি শব্দ – বাংলাদেশের আদিম অধিবাসীদের (যেমন: কোল, মুন্ডা প্রভৃতি) ভাষা ও সংস্কৃতির কিছু কিছু উপাদান বাংলায় রক্ষিত রয়েছে। এই শব্দগুলোকে দেশি শব্দ বলে। যেমন – কুলা, চোঙ্গা,‌ টোপর, গঞ্জ, ডাব, ডাগর ইত্যাদি।
  5. বিদেশি শব্দ – 
  •  আরবি শব্দ – কুরআন, কিয়ামত, উকিল, ওজর ইত্যাদি।
  •  ফারসি শব্দ – পয়গম্বর, ফেরেশতা, চশমা, তারিখ, বদমাশ, রফতানি ইত্যাদি।
  •  ইংরেজি শব্দ – ইউনিয়ন, নভেল, আফিম (Opium), অফিস (Office) ইত্যাদি। 
  •  পর্তুগিজ শব্দ – আনারস, আলপিন, আলমারি ইত্যাদি।
  •  ওলন্দাজ- ইস্কাপন, টেক্কা, তুরুপ ইত্যাদি।
  •  ফরাসি- কার্তুজ, কুপন ইত্যাদি।
  •  চিনা- চা, চিনি ইত্যাদি।
  •  তুর্কি- চাকর, চাকু ইত্যাদি।

শব্দের শ্রেণীবিভাগ সম্পর্কে আরো জানতে ক্লিক করো- Word