10 Minute School
Log in

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবোটিক্স (Virtual Reality, Artificial Intelligence & Robotics)

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? (What is Virtual Reality?)

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি? ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি বলতে কি বুঝায়? প্রকৃত অর্থে বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের ন্যায় চেতনা উদ্রেককারী বিজ্ঞান নির্ভর কল্পনাকে Virtual Reality বলে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে মূলত কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত Simulation বা Modelling এর মাধ্যমে একটি কৃত্রিম ত্রিমাত্রিক পরিবেশ তৈরি করা হয় যেখানে বাস্তবের ন্যায় অনুভূতি পাওয়া যায়। 

প্রয়োজনীয় উপকরণ:

Head Mounted Display বা Headset যার মাধ্যমে ত্রিমাত্রিক ভার্চুয়াল দৃশ্য অবলোকন করা যায়, হাতে Data Gloves যা দ্বারা ভার্চুয়াল পরিবেশের বিভিন্ন কাজের নির্দেশনা দেওয়া যায়, এমনকি তা স্পর্শের অনুভূতিও প্রদান করে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগ (Virtual Reality Applications):

  • ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং মোটর ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ।
  • ফ্লাইট সিমুলেশনের মাধ্যমে বিমান পরিচালনা প্রশিক্ষণ।
  • নভোচারীদের ভার্চুয়াল পরিবেশে মহাকাশে অভিযান পরিচালনা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান।
  • সিমুলেটেড সার্জারির মাধ্যমে নতুন ডাক্তার কিংবা মেডিকেল শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান।
  • সামরিক বাহিনীতে যুদ্ধ পরিচালনা, অস্ত্র চালনা, আধুনিক যুদ্ধাস্ত্রের ব্যবহার, যুদ্ধ জাহাজ পরিচালনা, বিভিন্ন যুদ্ধসামগ্রী ব্যবহার প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নত প্রশিক্ষণ প্রদান।
  • কোনো পণ্য উৎপাদনের পূর্বে পণ্যের মান ও গুণাগুণ পরীক্ষার জন্য ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে তা জনসম্মুখে উপস্থাপন।
  • বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় কম্পিউটার গেইম তৈরি।
  • জাদুঘরে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি প্রয়োগের মাধ্যমে দর্শনার্থীদের জন্য ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় উপস্থাপন।
  • সিনেমার ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্য ধারণে কিংবা বিভিন্ন ত্রিমাত্রিক অ্যানিমেশন সিনেমা তৈরি।
  • স্থাপত্য ও নগর পরিকল্পনায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটির প্রয়োগে নকশা প্রণয়ন কিংবা বিভিন্ন নগর উন্নয়ন রূপরেখার কাল্পনিক রূপদান। 

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির নেতিবাচক প্রভাব : 

  • সমাজে Dehumanization বা মনুষ্যত্বহীনতার মতো ব্যাপারগুলো বৃদ্ধি পাবে।
  • একে অপরের মাঝে পারস্পরিক Interaction এর অভাবে সমাজে অনিশ্চয়তা বিরাজ করবে।
  • ইচ্ছেমতো কল্পনার জগতে বিচরণের সুযোগ লাভের ফলে মানুষ বাস্তবতার অনুভূতি সম্পর্কে উদাসীন থাকবে।
  • মানুষের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তির ক্ষতি হতে পারে। 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি? (What is Artificial Intelligence?)

একজন মানুষ যেভাবে চিন্তা-ভাবনা করে কৃত্রিম উপায়ে কোনো যন্ত্র বা কম্পিউটারে সেরূপ বুদ্ধিমত্তা অর্জনের রূপদান করাকেই Artificial Intelligence বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মূলত কোনো যন্ত্রের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, উপলব্ধি সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন, অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগানো, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, উদ্ভুত কোনো নতুন পরিস্থিতিতে সাড়া প্রদান প্রভৃতি বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা করে থাকে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক হলেন অ্যালান টুরিং। ১৯৫০ সালে তার উদ্ভাবিত ‘টুরিং টেস্ট’ এর মাধ্যমে কোনো যন্ত্রের চিন্তা করার ক্ষমতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করা হয়, যেমন- PROLOG, LISP, CLISP, Java, C/C++ ইত্যাদি। 

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ :

প্রধানত রোবটিক্সে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়। এছাড়াও এক্সপার্ট সিস্টেম, ফাজি লজিক, নিউরাল নেটওয়ার্ক, প্রাকৃতিকভাবে ভাষার প্রক্রিয়াকরণ, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ইত্যাদি ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বিশেষ ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।  

রোবোটিক্স কাকে বলে? (Robotics)

রোবোটিক্স হলো প্রযুক্তির এমন একটি শাখা যেখানে রোবটের নকশা বা ডিজাইন, গঠন ও কাজ, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা প্রক্রিয়া প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে  আলোচনা করা হয়। পাশাপাশি এতে রোবটসমূহের নিয়ন্ত্রণ, সেন্সরি ফিডব্যাক এবং তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত কম্পিউটার সিস্টেমগুলো সম্পর্কেও গবেষণা করা হয়।

রোবটের নিজস্ব কোনো বিবেক-বুদ্ধি থাকে না। অর্থাৎ, রোবট নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো কাজ করতে পারে না। এক্ষেত্রে তাই রোবটে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়। বিশেষ করে উপলব্ধি সম্পর্কিত বিষয়ে, কোনো রোবটের কাজের ধারা কেমন হবে কিংবা উদ্ভূত কোনো নতুন পরিস্থিতিতে কীভাবে সাড়া প্রদান করবে এই বিষয়গুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে একটি রোবটে আগে থেকেই ঠিক করে দেয়া থাকে।

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি কি | কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কি | রোবোটিক্স কাকে বলে

Robotics

একটি সাধারণ রোবটে নিচের প্রধান উপাদানগুলো থাকে-

  • Power System : সাধারণত রিচার্জেবল লেড এসিড ব্যাটারি দিয়ে পাওয়ার দেয়া হয়। 
  • Actuator : রোবটের হাত-পা নড়াচড়া করার জন্য কিছু বৈদ্যুতিক মোটরের সমন্বয়ে তৈরি বিশেষ ব্যবস্থা। একে রোবটের হাত ও পায়ের পেশি বলেও অভিহিত করা হয়। 
  • Sensing : বিভিন্ন ধরনের Sensor ব্যবহারের মাধ্যমে রোবটেও অনুভূতি তৈরি করা যায়।  
  • Manipulation : রোবটের আশেপাশের বস্তুগুলোর অবস্থান পরিবর্তন পদ্ধতি। রোবটের হাত-পা সাধারণত এই কাজ করে থাকে।

রোবটিক্সের ব্যবহার – 

  • শিল্প-কারখানায় পণ্য উৎপাদন, প্যাকেজিং থেকে শুরু করে পরিবহনসহ বিভিন্ন কাজে।
  • যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধযান পরিচালনায়, বিশেষ করে Drone সহ দূর নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন রোবটের ব্যবহার। 
  • চিকিৎসা ক্ষেত্রে সার্জারির কাজে।
  • কম্পিউটার মাদারবোর্ড বা অন্যান্য সার্কিট তৈরির মতো অতি সূক্ষ্ম কাজে।
  • নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টরসহ বিভিন্ন বিপদজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে।
  • বিভিন্ন মহাকাশ গবেষণা ও অভিযান পরিচালনায়।
  • বোমা নিস্ক্রিয়করণ, ভূমি মাইন সনাক্তকরণ, ঝুঁকিপূর্ণ মিলিটারি অভিযানসহ বিভিন্ন সামরিক কাজে। 
  • খনি কিংবা সমুদ্রের তলদেশে অভিযানসহ বিভিন্ন দুর্গম স্থানে কাজের ক্ষেত্রে। 
  • নিরাপত্তা প্রদানের কাজে।
  • বাসাবাড়িতে কাজের লোকের বিকল্প হিসেবে।  

রোবট ব্যবহারে অসুবিধা – 

  • রোবট নিজে থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্বাধীনভাবে কোনো কাজ করতে পারে না। ফলে একটি রোবট দিয়ে ইচ্ছেমতো সকল কাজ করা সম্ভব নয়। 
  • রোবট নির্মাণ প্রক্রিয়া অত্যন্ত ব্যয়বহুল।
  • রোবট নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনবলের প্রয়োজন। 
  • বিভিন্ন ক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহার বৃদ্ধির ফলে মানুষের কর্মসংস্থান হারানোর সম্ভাবনা রয়েছে। 

এইচএসসি পরীক্ষার ICT বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো দেখে নাও এক নজরেঃ

HSC ICT নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলোর ভিজিট করো নিচের প্লে লিস্টটিতেঃ

 

এইচএসসি ও এডমিশন পরীক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ

১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com