10 Minute School
Log in

মোবাইল ফোনের বিভিন্ন প্রজন্ম | Generations of Mobile Phones

প্রথম প্রজন্ম (First Generations):

১৯৭৯ সালে এশিয়ার সবচেয়ে বড় টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি জাপানের NTTC (Nippon Telegraph Telephone Corporation) বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মোবাইল ফোন উৎপাদন শুরু করে। ১৯৮৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম Motorola Dyna TAC নামে মোবাইল ফোন ব্যবহার শুরু হয়। প্রথম প্রজন্মের প্রযুক্তি ১৯৭৯ সালে শুরু হয়ে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বহাল ছিল।

বৈশিষ্ট্য :

  • রেডিও সিগন্যাল হিসেবে এনালগ সিগন্যালের ব্যবহার।
  • অপেক্ষাকৃত কম ব্যান্ডের সিগন্যাল ফ্রিকোয়েন্সির ব্যবহার।
  • FDMA (Frequency Division Multiple Access) পদ্ধতির ব্যবহার।
  • সেমিকন্ডাক্টর ও মাইক্রোপ্রসেসর প্রযুক্তির ব্যবহার।
  • আন্তর্জাতিক রোমিং সুবিধা না থাকা।
  • কথা বলার সময় অবস্থান পরিবর্তন হলে ট্রান্সমিশন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 
  • Handset Interoperability না থাকা অর্থাৎ হ্যান্ডসেটে যেকোনো মোবাইল অপারেটর কোম্পানির নেটওয়ার্ক ব্যবহারের সুবিধা না থাকা।
  • অন্য মোবাইল ট্রান্সমিটার দ্বারা সৃষ্ট রেডিও ইন্টারফারেন্স নেই।
  • সাধারণ টেলিফোনের তুলনায় এই প্রজন্মের মোবাইল ফোনের আকার ছোট ও ওজনে হালকা। 

দ্বিতীয় প্রজন্ম (Second Generations):

এনালগ এর পরিবর্তে ডিজিটাল ট্রান্সমিশনের মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রজন্মের ফোন চালু হয়। মূলত ভয়েসকে Noise মুক্ত করার মাধ্যমে এ প্রজন্মের মোবাইল ফোনের আবির্ভাব ঘটে। এ প্রজন্মের মেয়াদ ১৯৯১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত।

বৈশিষ্ট্য :

  • রেডিও সিগন্যাল হিসেবে ডিজিটাল সিস্টেমের ব্যবহার।
  • GSM (Global System for Mobile Communication) ও CDMA (Code Division Multiple Access) প্রযুক্তির ব্যবহার।
  • সীমিত আকারে আন্তর্জাতিক রোমিং সুবিধা।
  • GSM পদ্ধতিতে ডেটা ও ভয়েস প্রেরণ করা সম্ভব হয়। 
  • GSM স্ট্যান্ডার্ডে Handset Interoperability বা সিম কার্ড ব্যবহারের সুবিধা। CDMA স্ট্যান্ডার্ডে এই সুবিধা নেই।
  • মোবাইল ডেটা স্থানান্তরের জন্য প্যাকেট সুইচ নেটওয়ার্ক এবং ভয়েস কল স্থানান্তরের জন্য কোর সুইচ নেটওয়ার্ক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। 
  • এ প্রজন্ম থেকেই প্রিপেইড সিস্টেম চালু হয়।
  • SMS, MMS এবং ভয়েস মেইল ব্যবহারের সুবিধা।
  • মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন।
  • কথা বলার সময় অবস্থান পরিবর্তন হলে ট্রান্সমিশন অবিচ্ছিন্ন থাকে। 
  • সমসাময়িক অন্যান্য সকল ফোনের চেয়ে আকারে ছোট এবং ওজনে হালকা। 

তৃতীয় প্রজন্ম (Third Generations) :

২০০১ সালে জাপানের NTTC DoCoMo কোম্পানি পরীক্ষামূলকভাবে তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোন চালু করে। তৃতীয় প্রজন্মের মোবাইল ফোনের প্রযুক্তিগত পার্থক্য হলো, সার্কিট সুইচিং ডেটা ট্রান্সমিশনের পরিবর্তে প্যাকেট সুইচিং ডেটা ট্রান্সমিশন।

বৈশিষ্ট্য :

  • ডেটা রূপান্তরের কাজে Packet Switching ও Circuit Switching উভয় পদ্ধতিই ব্যবহৃত হয়।
  • উচ্চগতি সম্পন্ন ডেটা স্থানান্তর। ব্যান্ডউইডথ ২ mbps এর অধিক।
  • চ্যানেল একসেস TD-SCDMA, TD-CDMA পদ্ধতির।
  • ব্যাপক আন্তর্জাতিক রোমিং সুবিধা।
  • ভিডিও কলের ব্যবহার শুরু।
  • নেটওয়ার্কে GPRS ও EDGE পদ্ধতির ব্যবহার।
  • মডেম সংযোজনের মাধ্যমে মোবাইল ফোনেই ইন্টারনেট ব্যবহার।
  • FOMA (Freedom of Multiple Access) প্রযুক্তি ব্যবহার করে মোবাইল ব্যাংকিং, ই-কমার্স,ই-মেইল সহ অন্যান্য ইন্টারনেট ভিত্তিক সুবিধা প্রদান।
  • উচ্চ স্পেকট্রাম কর্মদক্ষতা। 
  • মোবাইল ফোনেই ইন্টারনেট ব্রাউজিং, টিভি দেখা, গান শোনা প্রভৃতি করা যায়।  

চতুর্থ প্রজন্ম (Fourth Generations):

চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুরু হয় ২০০৯ সালে। এ প্রজন্মের মোবাইল ফোনের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এতে সার্কিট সুইচিং বা প্যাকেট সুইচিং এর পরিবর্তে ইন্টারনেট প্রটোকল ভিত্তিক নেটওয়ার্কের ব্যবহার করা হয়। যার ফলে এই প্রজন্মের মোবাইল ফোন সমূহে আলট্রা-ব্রডব্যান্ড গতির ইন্টারনেট সুবিধা পাওয়া যায়।

বৈশিষ্ট্য :

  • IP (Internet Protocol) নেটওয়ার্কের ব্যবহার।
  • ডেটা ট্রান্সফার রেট প্রায় ১ Gbps।
  • হাই ডেফিনিশন মোবাইল টিভি, ভিডিও কনফারেন্সিং, থ্রিডি টেলিভিশন এবং গেমিং ইত্যাদির ব্যবহার শুরু।
  • Bluetooth, WLAN, GPS (Global Positioning System), WCDMA, GPRS (General Packet Radio Service) প্রভৃতি ওয়্যারলেস সিস্টেম সাপোর্টের জন্য নেটওয়ার্কে SDR (Software Defined Radio) প্রযুক্তির ব্যবহার।