10 Minute School
Log in

নেটওয়ার্ক সংশ্লিষ্ট ডিভাইস (Network related devices)

Network related devices
মডেম (Modem) :

মডেম শব্দটি  Modulator ও  Demodulator এর সংক্ষিপ্তরূপ। Modulator এর  কাজ হচ্ছে ডিজিটাল সিগন্যালকে অ্যানালগ সিগন্যালে রূপান্তর করা এবং Demodulator এর কাজ হচ্ছে অ্যানালগ সিগন্যালকে ডিজিটাল সিগন্যালে রূপান্তর করা। টেলিফোন লাইন কিংবা ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযোগের জন্য Modem একটি অপরিহার্য ডিভাইস। মূলত টেলিফোন লাইনের মধ্য দিয়ে Analog Signal আদান-প্রদান হয়। কিন্তু কম্পিউটার বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইসসমূহে Digital Signal ব্যবহৃত হয়। তাই ডেটা কমিউনিকেশনের জন্য প্রেরক প্রান্তে মডেম Analog Signal কে Digital Signal এ পরিণত করে, একে Modulation বলে। এরপর এই Analog Signal গ্রাহক প্রান্তে পৌঁছানোর পর মডেমের সাহায্যে তাকে আবার Digital Signal এ পরিণত করা হয়, একে Demodulation বলে। 

Network related devices:  Modem

Network Interface Card (NIC) :

নেটওয়ার্কে কম্পিউটারগুলো কেবল দিয়ে যুক্ত হলেও এই কেবলগুলো কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করতে হলে একটি বিশেষ ধরনের ইলেকট্রনিক সার্কিট ব্যবহার করতে হয়। এই ইলেকট্রনিক সার্কিটকে বলা হয় নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড (NIC)। এ কার্ডকে LAN Card বা Network Adapter ও বলা হয়। অধিকাংশ NIC কম্পিউটারের মাদারবোর্ডের সাথে বিল্ট-ইন অবস্থায়  থাকে। NIC তে ৪৮ বিটের একটি অদ্বিতীয় কোড থাকে। এই অদ্বিতীয় কোডকে MAC (Media Access Control) অ্যাড্রেস বলে। NIC মূলত মডেমের কাজ করে থাকে। একে তাই ইন্টারনাল মডেমও বলা যেতে পারে। 

হাব (Hub) :

কোনো কম্পিউটার নেটওয়ার্কের আওতাধীন ডিভাইস সমূহকে একত্রে সংযুক্ত করার কাজে Hub ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে স্টার টপোলজির ক্ষেত্রে হাব হচ্ছে কেন্দ্রীয় কানেকটিভ ডিভাইস। মূলত Hub কোনো প্রেরক হতে ডেটা গ্রহণ করলে নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত সকল ডিভাইসেই সে ডেটাটি প্রেরণ করে। অর্থাৎ সিগন্যাল Broadcast করে থাকে। কার্যকারিতার ভিত্তিতে Hub কে দুইভাগে ভাগ করা হয় – 

  1. সক্রিয় Hub : সক্রিয় Hub তার কাছে আসা সংকেতকে বিবর্ধিত করে মূল সিগন্যাল থেকে নয়েজ বা অপ্রয়োজনীয় সংকেত বাদ দিয়ে তারপর তা প্রেরণ করে। এজন্য এই ধরনের Hub কে Intelligent Hub বলা হয়।
  2. নিষ্ক্রিয় Hub : নিষ্ক্রিয় Hub ডেটা সিগন্যালকে কোনোরূপ পরিবর্তন না করেই গ্রাহক কম্পিউটারে প্রেরণ করে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে কোনো সিগন্যাল প্রসেসিং বা সংকেতের মান বিবর্ধিত করার সুযোগ থাকে না। 
Network related devices: Hub

সুবিধা :

  • একাধিক ডিভাইসকে যুক্ত করতে পারে।
  • বিভিন্ন ধরনের মাধ্যমকে যুক্ত করতে পারে।
  • দামে সস্তা।

অসুবিধা :

  • সংকেত শুধু টার্গেট পোর্টে না গিয়ে সকল পোর্টে যায়।
  • নেটওয়ার্কে ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়।
  • ডেটা আদান-প্রদানে সংঘর্ষ বা কলিশনের সম্ভাবনা থাকে।
  • ডেটা ফিল্টারিং করা সম্ভব হয় না।

সুইচ (Switch) :

Switch ও hub এর মতো নেটওয়ার্কের আওতাধীন ডিভাইস সমূহকে একত্রে সংযুক্ত করার কাজে ব্যবহৃত হয়। তবে এক্ষেত্রে পার্থক্য হলো Hub যেখানে সিগন্যাল ব্রডকাস্ট করে থাকে, Switch সেখানে প্রাপ্ত সিগন্যাল কেবলমাত্র নির্দিষ্ট টার্গেট কম্পিউটারেই প্রেরণ করে। এজন্য Switch কে Intelligent Device বলা হয়। এছাড়া সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য সুইচ সংকেত আদান প্রদানের এলাকাকে পৃথক পৃথক সেগমেন্টে ভাগ করে।

Network related devices: Switch

সুবিধা :

  • শুধুমাত্র টার্গেট পোর্টে সংকেত পাঠায়।
  • ডেটা সংঘর্ষ বা কলিশনের সম্ভাবনা কম থাকে।
  • ভার্চুয়াল ল্যান ব্যবহার করে ব্রডকাস্ট নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • একই সাথে বিভিন্ন স্পীড লেভেল সাপোর্ট করে।

অসুবিধা :

  • একাধিক নেটওয়ার্কের সাথে সংযুক্ত করতে পারে না।
  • হাবের তুলনায় দাম বেশি।
  • কনফিগারেশন অপেক্ষাকৃত জটিল।
  • ডেটা ফিল্টারিং সম্ভব নয়।

রাউটার (Router) :

রাউটার দুটি ভিন্ন নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। একই ধরনের একাধিক  ভিন্ন ভিন্ন LAN সংযুক্ত করে বড় একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে রাউটার ব্যবহৃত হয়। রাউটার একটি বুদ্ধিমান ডিভাইস হিসেবে একটা ডেটা কোন পথে পাঠালে সবচেয়ে সুবিধাজনক সেটি নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অর্থাৎ ডেটা স্থানান্তরের জন্য সহজ ও কম দূরত্বের পথটি বেছে নেয়। রাউটার নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করতে এক ধরনের এড্রেস ব্যবহার করে যেটাকে Network Address Translation (NAT) বলে।

Network related devices: Router

সুবিধা :

  • একাধিক নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
  • ডেটা সংঘর্ষ বা কলিশনের সম্ভাবনা কমায়।
  • ডেটা ফিল্টারিং করা সম্ভব হয়।
  • শুধুমাত্র আইপি এড্রেস (IP) সংকেত পাঠায়।
  • ভিন্ন ভিন্ন গঠনের নেটওয়ার্ক সংযুক্ত করতে পারে যেমন: ইথারনেট, রিং, টোকেন ইত্যাদি।

অসুবিধা :

  • দাম তুলনামূলকভাবে বেশি।
  • কনফিগারেশন পদ্ধতি কিছুটা জটিল।
  • ভিন্ন ভিন্ন প্রটোকলবিশিষ্ট নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারে না।
  • অপেক্ষাকৃত ধীরগতি সম্পন্ন। 

গেটওয়ে (Gateway) :

ভিন্ন ভিন্ন প্রটোকলবিশিষ্ট নেটওয়ার্ক রাউটার দিয়ে সংযুক্ত করা যায় না। এক্ষেত্রে ভিন্ন প্রটোকল বিশিষ্ট দুই বা ততোধিক নেটওয়ার্ককে যুক্ত করতে Gateway ব্যবহার করা হয়। গেটওয়ে PAT (Protocol Address Translation) ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করে থাকে।

Network related devices: gateway

সুবিধা :

  • হাব, সুইচ এবং রাউটার ইত্যাদি ডিভাইসসমূহ প্রোটোকল ট্রান্সলেশনের সুবিধা না দিলেও Gateway এই সুবিধা দেয়।
  • ভিন্ন প্রটোকলবিশিষ্ট একাধিক নেটওয়ার্কের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে পারে।
  • ডেটা সংঘর্ষ বা কলিশনের সম্ভাবনা কমায়।

অসুবিধা :

  • দাম তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
  • কনফিগারেশন পদ্ধতি জটিল।

ব্রিজ (Bridge) :

Bridge মূলত একাধিক নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করে থাকে। এটি Hub বা Switch এর মতোই। তবে পার্থক্য হচ্ছে, Hub বা Switch যেখানে একাধিক ডিভাইসকে সংযুক্ত করে, সেখানে Bridge একাধিক নেটওয়ার্ককে সংযুক্ত করে একটি বৃহৎ নেটওয়ার্ক তৈরি করে। Bridge তিন ধরনের হয়ে থাকে –

Network related devices: Bridge
  1. Local Bridge : সরাসরি LAN এর সাথে যুক্ত থাকে।
  2. Remote Bridge : দুটি LAN এর মধ্যে Wide Area Network তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। 
  3. Wireless Bridge : একাধিক LAN যুক্ত করা বা LAN এর দূরবর্তী কোনো স্টেশন সংযুক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। 

রিপিটার (Repeater) :

নেটওয়ার্কে ক্যাবলের মধ্যে দিয়ে সংকেত পাঠানো হলে সংকেতটি একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব যাওয়ার পর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সে সংকেত থেকে তথ্য উদ্ধার অসম্ভব হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে Repeater মূলত এ দুর্বল সংকেতকে পুনরায় শক্তিশালী করে তোলে অর্থাৎ সংকেতকে ইলেকট্রিক্যালি এমপ্লিফাই করে পুনরায় তা নেটওয়ার্কে প্রেরণ করে। বিশেষত অধিক দূরত্বে সিগন্যাল প্রেরণে Repeater ব্যবহার করা হয়।