মোবাইল যোগাযোগ | Mobile Communication
মোবাইল কমিউনিকেশন বলতে দুটি চলনশীল ডিভাইস বা একটি চলনশীল এবং অন্য একটি স্থির ডিভাইসের মধ্যে তারবিহীন যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বোঝায়। মোবাইল যোগাযোগ ব্যবস্থায় মূলত সেলুলার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে Full Duplex Mode এ ডেটা আদান-প্রদান করা হয়।
Cellular Network :
মোবাইল ফোন সার্ভিস প্রোভাইডার তার সার্ভিস এলাকাকে ছোট ছোট কিছু অংশে বিভক্ত করে। এ ছোট অংশগুলোকে বলে সেল(Cell)। এজন্যই মোবাইল ফোনকে সেল ফোনও বলা হয়। একটি এন্টেনা ও ছোট নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থাকে, যাকে Base Station বলে। প্রতিটি বেস স্টেশন একটি মোবাইল সুইচিং সেন্টার দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যেখানে কল সংযোগ, বিলিং সিস্টেম, কল ইনফরমেশন রেকর্ডিং প্রভৃতি কম্পিউটারাইজড পদ্ধতিতে নিয়ন্ত্রিত হয়। সেলুলার ফোনে মূলত Radio Frequency ব্যবহার করা হয়।
Cell Signal Encoding :
Cell Signal Encoding বলতে মূলত এনকোডিং পদ্ধতিতে বিভিন্ন ট্রান্সমিটার থেকে প্রেরিত সিগন্যাল সমূহকে পৃথক করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এক্ষেত্রে নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে সেল সিগন্যাল এনকোডিং করা হয় –
- FDMA (Frequency Division Multiple Access) : এক্ষেত্রে প্রতি সেলে ব্যবহৃত ট্রান্সমিটিং এবং রিসিভিং Frequency প্রতিবেশী প্রত্যেক সেলে ব্যবহৃত Frequency থেকে আলাদা হয়।
- CDMA (Code Division Multiple Access) : এক্ষেত্রে প্রতি সেলে Frequency সমূহকে ব্যবহারকারীর মধ্যে কতগুলো একক কোডে ভাগ করা হয়।
Mobile Unit
মোবাইল বা সেলুলার ফোনে প্রধান তিনটি অংশ থাকে –
- Control Unit
- Transceiver
- Antenna System
এছাড়াও অন্য উপাদানগুলোর মধ্যে থাকে –
- প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহের জন্য একটি ব্যাটারি।
- ইনপুট মেকানিজম হিসেবে Key Pad বা Touch Screen।
- GSM মোবাইল ফোনের জন্য একটি SIM (Subscriber Identity Module) কার্ড এবং CDMA ডিভাইসের জন্য R-UIM (Removable User Identity Module) কার্ড।
- কিছু স্যাটেলাইট ফোন ডিভাইস IMEI (International Mobile Equipment Identity) নম্বর দ্বারা অদ্বিতীয়ভাবে চিহ্নিত করা থাকে।
Cellular Phone Technology
প্রচলিত মোবাইল ফোন প্রযুক্তিকে প্রধানত দুইটি ভাগে ভাগ করা যায় –
- GSM (Global System for Mobile Communication)
- CDMA (Code Division Multiple Access)
GSM (Global System for Mobile Communication)
GSM হচ্ছে মূলত FDMA ও TDMA এর একটি সম্মিলিত চ্যানেল অ্যাকসেস পদ্ধতি। GSM প্রযুক্তির তৃতীয় প্রজন্মের ভার্সনকে UMTS (Universal Mobile Telecommunication System) বলে।
সুবিধা :
- আন্তর্জাতিক রোমিং সুবিধা, কারণ GSM প্রযুক্তি পৃথিবীর প্রায় ২১৮টি দেশে ব্যবহৃত হয়।
- যেকোনো SIM কার্ড সহজেই ব্যবহার।
- অধিক দক্ষ ও কার্যকরী ফ্রিকোয়েন্সি।
- উচ্চ গুণগত মান সম্পন্ন নিরবিচ্ছিন্ন ট্রান্সমিশন।
- Frequency-hopping সুবিধা, অর্থাৎ কম ফ্রিকোয়েন্সিতে সমস্যা হলে ফ্রিকোয়েন্সি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেড়ে যায়।
- GPRS (General Packet Radio Service) এবং EDGE (Enhanced Data Rate for GSM Evolution) সুবিধা প্রদান।
- উচ্চমানের ডেটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
- সহজেই মোবাইলে সেট পরিবর্তন করার সুবিধা।
অসুবিধা :
- কভারেজ এরিয়া ৩৫ কিলোমিটারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
- ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন অত্যধিক।
- বিদ্যুৎ খরচ তুলনামূলকভাবে বেশি, যা গড়ে প্রায় ২ ওয়াট।
- পালস ট্রান্সমিশন টেকনোলজি ব্যবহারের ফলে হাসপাতাল, বিমান প্রভৃতি স্থানে মোবাইল ফোন ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা।
CDMA (Code Division Multiple Access)
মাল্টিপল একসেস বলতে একসাথে একাধিক ব্যবহারকারী অ্যাকসেস করতে পারে এরকম বোঝায়। এটি একাধিক ব্যবহারকারীকে একই ফ্রিকুয়েন্সি ব্যান্ড শেয়ার করার সুযোগ দিয়ে থাকে, তাই একে Multiple Access পদ্ধতি বলা হয়। CDMA যে পদ্ধতিতে ডেটা আদান-প্রদান করে থাকে তাকে Spread Spectrum বলে। এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীকে একটি কোড দেওয়া হয় যা কেবলমাত্র রিসিভার প্রান্তেই পুনরুদ্ধার করা সম্ভব।
সুবিধা :
- ট্রান্সমিশন পাওয়ার কম হওয়ায় রেডিয়েশন কম থাকে।
- অপেক্ষাকৃত ভালো মানের কল পাওয়া যায়।
- ব্যান্ডউইডথে CDMA প্রযুক্তি GSM হতে ৪ থেকে ৫ গুণ বেশি ধারণক্ষম।
- কভারেজ এরিয়া ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত।
- ব্যাটারির আয়ুষ্কাল বেশি।
- ডেটা ট্রান্সফার রেট প্রায় ১৫৪-৬১৪ kbps পাওয়া যায়।
অসুবিধা :
- আন্তর্জাতিক রোমিং সুবিধা নেই।
- যেকোনো মোবাইল সেট ব্যবহারের সুবিধা নেই।
- ব্যবহারকারী বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে ট্রান্সমিশনের গুণগত মান হ্রাস পায়।
- এই প্রযুক্তির জনপ্রিয়তা ও ব্যবহার তুলনামূলক কম।
CDMA প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ট্রান্সমিশন পাওয়ার কম থাকায় কথা বলার সময় রেডিয়েশন কম হয়। এছাড়া সিস্টেমে কম পাওয়ার দরকার হওয়ায় ব্যাটারির আয়ুষ্কাল বৃদ্ধি পায় এবং দীর্ঘক্ষণ ধরে কথা বলা যায়, যা মূলত পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই এই প্রযুক্তির ফোন সমূহকে Green Phone বলা হয়।