10 Minute School
Log in

নেটওয়ার্ক টপোলজি ও ক্লাউড কম্পিউটিং (Network Topology & Cloud Computing)

নেটওয়ার্ক টপোলজি কি? (What is Network Topology?)

কোনো নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত কম্পিউটার সমূহ একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকার কৌশলকেই নেটওয়ার্ক টপোলজি (Network Topology) বলা হয়।

নেটওয়ার্ক টপোলজি কত প্রকার? (Types of Network Toplogy)

কম্পিউটার নেটওয়ার্কে সাধারণত নিম্নোক্ত ছয় ধরনের নেটওয়ার্ক টপোলজি ব্যবহার করা যায় –

  • স্টার টপোলজি বা নেটওয়ার্ক
  • রিং টপোলজি বা নেটওয়ার্ক
  • বাস টপোলজি বা নেটওয়ার্ক
  • মেশ টপোলজি বা নেটওয়ার্ক
  • ট্রি টপোলজি বা নেটওয়ার্ক
  • Hybrid Network
নেটওয়ার্ক টপোলজি কি

                                                          Types of Network Topology

স্টার টপোলজি বা নেটওয়ার্ক (Star Toplogy Network):

এই ধরনেরনেটওয়ার্ক টপোলজিতে কোনো নেটওয়ার্কের আওতাধীন কম্পিউটার সমূহ কেন্দ্রীয়ভাবে একটি Hub বা Switch এর মাধ্যমে পরস্পর যুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে কোনো কম্পিউটার ডেটা ট্রান্সফার করতে চাইলে সেটি প্রথমে Hub বা Switch এ পাঠানো হয়। এরপর Hub বা Switch সে ডেটা প্রাপক ডিভাইসে প্রেরণ করে।

সুবিধা ও অসুবিধাসমূহঃ

সুবিধাসমূহ

অসুবিধাসমূহ

  • কোনো একটি কম্পিউটার নষ্ট হলেও নেটওয়ার্কের বাকি কম্পিউটারগুলোর কাজ প্রভাবিত হয় না।
  • একই নেটওয়ার্কে বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা যায়।
  • যেকোন সময় কোনো কম্পিউটার যোগ করা বা বাদ দেওয়া যায়, এতে নেটওয়ার্ক প্রভাবিত হয় না।
  • কেন্দ্রীয়ভাবে নেটওয়ার্ক রক্ষণাবেক্ষণ বা সমস্যা নিরূপণ করা সহজ।
  • Hub বা Switch এর সংখ্যা বাড়িয়ে নেটওয়ার্কে অধিক সংখ্যক কম্পিউটার যুক্ত করা যেতে পারে।
  • কেন্দ্রীয় Hub বা Switch নষ্ট হয়ে গেলে সমস্ত নেটওয়ার্কটি অচল হয়ে পড়ে।
  • প্রচুর পরিমাণে ক্যাবল ব্যবহৃত হওয়ায় এটি একটি ব্যয়বহুল পদ্ধতি। 

 

রিং টপোলজি বা নেটওয়ার্ক (Ring Topology Network) :

এই ধরনের নেটওয়ার্ক টপোলজিতে নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত প্রতিটি কম্পিউটার বৃত্তাকারভাবে পরস্পর সংযুক্ত থাকে। অর্থাৎ প্রতিটি কম্পিউটার ক্যাবলের সাহায্যে তার পার্শ্ববর্তী দুটি কম্পিউটারের সাথে সরাসরি সংযুক্ত হয়ে একটি লুপ বা রিং এর ন্যায় গঠন তৈরি করে। এই টপোলজিতে সিগন্যালের একমুখী বা একটি নির্দিষ্ট দিকে ট্রান্সমিশন হয়।

সুবিধা ও অসুবিধাসমূহঃ

সুবিধাসমূহ

অসুবিধাসমূহ

  • নেটওয়ার্কে কম্পিউটারের সংখ্যা বাড়লেও এর দক্ষতা খুব বেশি প্রভাবিত হয় না।
  • নেটওয়ার্কে কোনো সার্ভার কম্পিউটারের প্রয়োজন হয় না।
  • ডেটা ট্রান্সমিশনে প্রতিটি কম্পিউটারই সমান অ্যাকসেস পায়, অর্থাৎ কোনো একটি কম্পিউটার আধিপত্য বিস্তার করতে পারে না। 
  • যেকোনো একটি মাত্র কম্পিউটার নষ্ট হলেই পুরো নেটওয়ার্কটি অচল হয়ে যায়।
  • কোনো সমস্যা দেখা দিলে তা নিরুপণ করা বেশ জটিল।
  • নেটওয়ার্কে কোনো কম্পিউটার যোগ বা অপসারণ করলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কের কার্যক্রম ব্যহত হয়।

বাস টপোলজি বা নেটওয়ার্ক (Bus Topology Network):

এই ধরনের নেটওয়ার্ক টপোলজিতে একটি সংযোগ লাইনেই নেটওয়ার্কের আওতাধীন সকল কম্পিউটার যুক্ত থাকে। এক্ষেত্রে সংযোগ লাইনটিকে সাধারণত Bus বলা হয়। Bus নেটওয়ার্কে একটি কম্পিউটার কোনো ডেটা প্রেরণ করলে সেটি সংযোগ লাইনের মধ্য দিয়ে সকল কম্পিউটারেই পৌছে। তবে যে কম্পিউটারের উদ্দেশ্যে ডেটা পাঠানো হয়, কেবলমাত্র সেটিই সে ডেটা গ্রহণ করে থাকে। 

সুবিধা ও অসুবিধাসমূহঃ

সুবিধাসমূহ

অসুবিধাসমূহ

  • কোনো কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলে সহজেই তা নেটওয়ার্ক হতে বিচ্ছিন্ন করা যায়। এতে অন্য কম্পিউটারের কার্যক্রম ব্যহত হয় না।
  • সহজেই কোনো কম্পিউটারকে নেটওয়ার্কে যুক্ত করা যায়।
  • কম তারের প্রয়োজন হয়, ফলে খরচ কম।
  • নেটওয়ার্কের Bus সহজে সম্প্রসারণ করা যায়। দুটো পৃথক ক্যাবলকে একটি BNC Barrel Connector দিয়ে জোড়া লাগিয়ে একটি লম্বা ক্যাবল রূপ দেওয়া যায় এবং এতে আরও অধিক সংখ্যক কম্পিউটারকে সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়।
  • Bus সম্প্রসারণের জন্য প্রয়োজনে রিপিটার ব্যবহার করা যায়। 
  • একই সময়ে কেবল একটিমাত্র কম্পিউটার ডেটা পাঠাতে পারে।
  • মূল ক্যাবল বা সংযোগ লাইনটি নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্কটি অচল হয়ে যায়।
  • কম্পিউটার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ডেটা ট্রান্সমিশন বিঘ্নিত হয়।
  • ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য কোন সমন্বয়ের ব্যবস্থা থাকে না। যে কোনো কম্পিউটার যে কোনো সময়ে ডেটা ট্রান্সমিশন করার কারণে প্রচুর ব্যান্ডউইথ নষ্ট হয়। 
  • বাস টপোলজিতে সৃষ্ট সমস্যা নির্ণয় তুলনামূলক বেশ জটিল।

মেশ টপোলজি বা নেটওয়ার্ক (Mesh Topology Network):

এই ধরনের নেটওয়ার্ক টপোলজিতে নেটওয়ার্কের আওতাধীন প্রতিটি কম্পিউটারই একে অপরের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকে। 

সুবিধা :

  • কোনো একটি সংযোগ লাইন নষ্ট হয়ে গেলেও বিকল্প সংযোগ লাইন ব্যবহার করে ডেটা ট্রান্সমিশন অব্যাহত থাকে।
  • একটি কম্পিউটার নষ্ট হয়ে গেলেও বাকি নেটওয়ার্কে তেমন অসুবিধা হয় না।
  • যেকোনো দুটি নোডের মধ্যে অত্যন্ত দ্রুতগতিতে ডেটা আদান-প্রদান করা যায়।
  • ডেটা কমিউনিকেশনে নিশ্চয়তা অনেক বেশি থাকে।
  • নেটওয়ার্কের যেকোনো সমস্যা খুব সহজে সমাধান করা যায়।
  • অবকাঠামো অনেক শক্তিশালী।

অসুবিধা :

  • নেটওয়ার্ক ইনস্টলেশন ও কনফিগারেশন বেশ জটিল।
  • সংযোগ লাইনগুলোর দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ায় খরচ বেশি হয়। 

ট্রি টপোলজি বা নেটওয়ার্ক (Tree Topology Network) :

এই ধরনের নেটওয়ার্ক টপোলজি Hierarchical Topology হিসেবেও পরিচিত। Tree Topology তে নেটওয়ার্কের আওতাধীন প্রতিটি কম্পিউটার পরস্পরের সাথে গাছের শাখা-প্রশাখার ন্যায় বা বিভিন্ন স্তরে বিন্যস্ত থাকে, বিধায় একে Tree Topology বলা হয়। একাধিক হাব ব্যবহার করে সমস্ত কম্পিউটারগুলোকে একটি বিশেষ স্থানে সংযুক্ত করা হয় যাকে Root বলা হয়। ট্রি সংগঠনে এক বা একাধিক স্তরের কম্পিউটার হোস্ট কম্পিউটারের সাথে যুক্ত থাকে।

সুবিধা :

  • নতুন শাখা-প্রশাখা সৃষ্টির মাধ্যমে সহজেই নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করা যায়। 
  • নতুন কোনো নোড সংযুক্ত করলে অথবা অপসারণ করলে নেটওয়ার্কের স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোনো অসুবিধা হয় না।
  • অফিস ব্যবস্থাপনার কাজে এই ধরনের টপোলজি বেশি উপযোগী।

অসুবিধা :

  • তুলনামূলকভাবে কিছুটা জটিল ধরনের।
  • Root বা সার্ভার কম্পিউটারে কোনো সমস্যা হলে নেটওয়ার্কটি অচল হয়ে যায়।

Hybrid Network :

ভিন্ন ধরণের একাধিক নেটওয়ার্কের সমন্বয়ে যে নতুন নেটওয়ার্ক গঠিত হয় তাকে Hybrid Network বলা হয়। ইন্টারনেটকে হাইব্রিড নেটওয়ার্ক হিসেবে অভিহিত করা যায়। কেননা এতে প্রায় সব ধরনের টপোলজি নেটওয়ার্কই সংযুক্ত আছে। হাইব্রিড নেটওয়ার্কের সুবিধা ও অসুবিধা নির্ভর করে ঐ নেটওয়ার্কে ব্যবহার করা টপোলজির উপর।

সুবিধা :

  • প্রয়োজন অনুযায়ী নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে।
  • কোনো সমস্যা সহজেই নির্ণয় করা যায়। 
  • নেটওয়ার্কের কোনো একটি অংশ নষ্ট হয়ে গেলে সম্পূর্ণ নেটওয়ার্ক বিঘ্নিত হয় না।

অসুবিধা :

  • নেটওয়ার্কের নকশা বা ডিজাইন করা একটু জটিল।
  • প্রচুর ক্যাবল ও নেটওয়ার্কিং ডিভাইস প্রয়োজন হওয়ায় খরচ বেশি। 

ক্লাউড কম্পিউটিং কী? (What is Cloud Computing?)

বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটার রিসোর্স যেমন নেটওয়ার্ক, সার্ভার, স্টোরেজ, সফটওয়্যার প্রভৃতি সার্ভিস সহজে, ক্রেতার সুবিধা অনুসারে, চাহিবামাত্র এবং ব্যবহার অনুযায়ী ভাড়া দেয়ার সিস্টেমকেই বলা হয় ক্লাউড কম্পিউটিং। ক্লাউড কম্পিউটিং এর প্রধান তিনটি বৈশিষ্ট্য হলো –

  1. Resource Scalability : ক্রেতার ছোট বা বড় যেকোনো চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। অর্থাৎ ক্রেতা ঠিক যতটুকু সার্ভিস চাইবে, সার্ভিসদাতা সেই পরিমাণ সার্ভিস দিতে পারবে।
  2. On Demand : On Demand মানে যখন চাইবে তখন দেওয়া। অর্থাৎ ক্রেতা যখন চাইবে, তখনই সেবা দিতে হবে। ক্রেতা তার ইচ্ছা অনুযায়ী চাহিদা বাড়াতে বা কমাতে পারবে।
  3. Pay as you Go : এর মানে হচ্ছে ক্রেতাকে আগে থেকে কোন সার্ভিস চার্জ দেওয়া লাগবে না। ক্রেতা যতটুকু রিসোর্স যত সময়ের জন্য ব্যবহার করবে কেবলমাত্র তার জন্যই পেমেন্ট দিতে হবে।

Cloud Computing কে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায় – 

  1. Private Cloud : যখন বড় কোনো সংস্থা নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন পরিষেবা মেটানোর জন্য ক্লাউড সিস্টেম তৈরি করে তখন তাকে Private Cloud বলে। এই ধরনের ক্লাউড সিস্টেম সাধারনত অভ্যন্তরীণভাবে একটি সংস্থায় নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করা হয়। এক্ষেত্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত সুরক্ষিত থাকে। তবে একটু বেশি ব্যয়বহুল পদ্ধতি। তাছাড়া নিজস্ব ডেটা সেন্টার বসাতে হয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য দক্ষ জনবলের প্রয়োজন হয়। 
  2. Public Cloud : এই ধরনের ক্লাউড সিস্টেমে বিভিন্ন সার্ভিস সমূহ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে। অর্থাৎ এই ক্লাউডের সার্ভিসগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কেউ ব্যবহার করতে পারে। যেমন পাবলিক ক্লাউডের উদাহরণ হচ্ছে Microsoft, Amazon, Google ইত্যাদি। এদের নিজস্ব ডেটা সেন্টার আছে যেখানে ডেটা জমা থাকে এবং প্রয়োজনে প্রসেস করা যায়।
  3. Hybrid Cloud : হাইব্রিড ক্লাউড বলতে দুই বা ততোধিক ক্লাউডের সংমিশ্রণকে বোঝায়। এক্ষেত্রে দুই বা ততোধিক ক্লাউডের সমন্বয়ের ফলে মূলত এর ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায়।

Cloud Computing এর সার্ভিস মডেলকে তিন ভাগে ভাগ করা যায় – 

  • অবকাঠামোগত সেবা (Infrastructure as a Service-IaaS)
  • প্লাটফর্মভিত্তিক সেবা (Platform as a Service-PaaS)
  • সফটওয়্যার সেবা (Software as a Service-SaaS)

Cloud Computing এর সুবিধা :

  • ছোট ও প্রাথমিক উদ্যোক্তারা সহজেই ব্যবসা করার সুযোগ পায়।
  • সবসময় ব্যবহার করা যায়।
  • যেকোনো স্থান থেকে সুবিধা ভোগ করা যায়।
  • কম সংখ্যক জনবল লাগে।
  • নিজস্ব কোনো হার্ডওয়্যারের প্রয়োজন হয় না। 
  • স্বয়ংক্রিয়ভাবে সফটওয়্যার আপডেট হয় এবং সহজেই তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
  • হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার এবং লাইসেন্স ফি এর জন্য অধিক অর্থ ব্যয় করতে হয় না।
  • অপারেটিং খরচ তুলনামুলক কম।

অসুবিধা :

  • ক্লাউডে আপলোড করা তথ্য কোথায় জমা হলো জানা যায় না।
  • ক্লাউডে তথ্যের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা কম (যেহেতু তথ্য সার্ভিসদাতার কাছে চলে যাচ্ছে)।
  • তথ্যের উপর ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
  • ক্লাউডে ব্যবহৃত প্রোগ্রাম বা সফটওয়্যারের উপর ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণ থাকে না।
  • ক্লাউড সাইটে সমস্যা দেখা দিলে ব্যবহারকারীরা তার সার্ভিস থেকে বঞ্চিত হন।

 

এইচএসসি পরীক্ষার ICT বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো দেখে নাও এক নজরেঃ


 

HSC ICT নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলোর ভিজিট করো নিচের প্লে লিস্টটিতেঃ


 

এইচএসসি ও এডমিশন পরীক্ষার্থীদের জন্য আমাদের কোর্সসমূহঃ


 

আমাদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট কোর্সসমূহঃ


 

 

১০ মিনিট স্কুলের ক্লাসগুলো অনুসরণ করতে ভিজিট: www.10minuteschool.com